রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

আঞ্চলিক রাজনীতিতে বাংলাদেশের গুরুত্ব বাড়ছে

  
             

চীনের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর ও গোয়ায় ব্রিকস-বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে বাংলাদেশের যোগদানের মধ্য দিয়ে আঞ্চলিক রাজনীতিতে বাংলাদেশের গুরুত্ব বেড়েছে। বাংলাদেশ ব্রিকসের সদস্য নয়। কিন্তু বিমসটেক বা ‘বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি সেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন’ এর গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। ১৯৯৭ সালে সংস্থাটি গঠনের পর থেকে বাংলাদেশ অন্তত দুইটি সেক্টরে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রথমটি হচ্ছে, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ আর দ্বিতীয়টি পরিবেশ সংক্রান্ত। বিশ্বের বড় অর্থনীতির জোট হতে যাচ্ছে ব্রিকস। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৪২ ভাগ মানুষ আর ১৬ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি নিয়ে ব্রিকস গড়ে উঠছে। আর এখন ব্রিকস-বিমসটেক শীর্ষ বৈঠকের মধ্য দিয়ে ব্রিকসের মতো বড় অর্থনৈতিক জোটের সঙ্গে বাংলাদেশ সম্পৃক্ত হলো। নিঃসন্দেহে তা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় অবদান রাখবে। একই সঙ্গে ৩০ বছর পর চীনা প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর প্রমাণ করেছে, আঞ্চলিক রাজনীতিতে বাংলাদেশের অবস্থান কত শক্তিশালী। এর আগে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ও ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী (আন্তর্জাতিক সহযোগিতা) রোয়ি স্টুয়ার্টও বাংলাদেশ ঘুরে গেছেন। এর মাঝে জন কেরির সফর ছিল বেশ গুরুত্বপূর্ণ।
জন কেরির ঢাকা সফর অনেক আগেই প্রত্যাশিত ছিল। গত ৪ বছরে এটা ছিল কোনো মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দ্বিতীয় ঢাকা সফর। ২০১২ সালের মে মাসে তৎকালীন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটন ঢাকা সফর করে গেছেন। হিলারি ক্লিনটন বর্তমানে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী হিসেবে নভেম্বরের (২০১৬) প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে জন কেরির সফর ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেরির সঙ্গে এসেছিলেন নিশা দেশাই বিসওয়াল, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দক্ষিণ এশিয়া সংক্রান্ত সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী। নিশা দেশাই এর আগে একাধিকবার বাংলাদেশ সফর করেছেন এবং বাংলাদেশ সম্পর্কে তার যথেষ্ট ধারণা রয়েছে। সুতরাং কেরি তার ঢাকা সফরে যখন নিশা দেশাইকে সঙ্গে নিয়ে আসেন, তখন বুঝতে হবে যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন বাংলাদেশকে কত গুরুত্ব দেয়। মূলত এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল ঘিরে যুক্তরাষ্ট্রের যে নীতি, তাতে বাংলাদেশ একটি শক্ত অবস্থানে আছে। দক্ষিণ চীন সাগরে উত্তেজনা ও ভারত মহাসাগরে চীনা নৌবাহিনীর তৎপরতার প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে বাংলাদেশের গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশ যে উন্নয়নের ক্ষেত্রে বড় অগ্রগতি অর্জন করেছে, এটা কেরি স্বীকার করেছেন। এটা বাংলাদেশের জন্য একটি প্লাস পয়েন্ট। কেননা বিশ্ব অর্থনীতিতে যখন এখনও শ্লথ চলছে, তখন বাংলাদেশ তার জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ ভাগের উপরে ধরে রেখেছে। তৈরি পোশাক নিয়ে হাজারটা প্রতিবন্ধকতার মাঝেও যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাকের রফতানি বেড়েছে। বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য বাংলাদেশের অনুকূলে। ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করেছে ৩ হাজার ৫২ দশমিক ২ মিলিয়ন ডলারের পণ্য, আর আমদানি করেছে ৪৩৯ দশমিক ৮ মিলিয়ন ডলারের পণ্য। অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে মাত্র ৬ মাসে ঘাটতির পরিমাণ ২ হাজার ৬১২ দশমিক ৫ মিলিয়ন ডলার। ২০১৫ সালে ঘাটতি ছিল ৫ হাজার ৪৮ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ শক্ত অবস্থানে আছে। সুতরাং কেরি যখন বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রশংসা করেন, তখন সত্যটাই তিনি তুলে ধরেছিলেন। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, ২০১২ সালে হিলারি ক্লিনটনের ঢাকা সফরের সময় তিনি বাংলাদেশকে একটি ‘সফট পাওয়ার’ এর সঙ্গে তুলনা করেছিলেন। অর্থাৎ বিশ্ব আসরে বাংলাদেশ যে একটি শক্তি এবং বিশ্বকে নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা যে রয়েছে, হিলারি ক্লিনটন সেটা স্বীকার করে গিয়েছিলেন। আর আজ ৪ বছর পর কেরিরও স্বীকারোক্তি মিলল। চীনা প্রেসিডেন্টও ঢাকায় এটা স্বীকার করে গেলেন।
কেরির ঢাকা সফরে জঙ্গিবাদের উত্থানের প্রশ্নটিও এসেছিল। জঙ্গি দমনে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা চেয়েছে। বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে একসঙ্গে কাজ করতে ও গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় করতেও দুই দেশ রাজি হয়েছে। বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত সুবিধা চেয়েছে। জঙ্গিবাদ, জেএসপি সুবিধা ইত্যাদি প্রশ্নে বাংলাদেশ তার অবস্থান পরিবর্তন করেনি এবং যুক্তরাষ্ট্র কার্যত বাংলাদেশের এই ভূমিকাকে সমর্থন করে গেছে। একটা জিনিস আমাদের ভুলে গেলে চলবে না। সত্তর দশকের বাংলাদেশ আর আজকের বাংলাদেশ এক নয়। বাংলাদেশ আজ বিশ্বকে দিতে পারে। বাংলাদেশের সামর্থ্য বেড়েছে। বিশ্ব শান্তি রক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দক্ষতা, যোগ্যতা ও নেতৃত্ব দেয়ার সক্ষমতা আজ বিশ্বে স্বীকৃত। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রশংসা করার মতো। সুতরাং যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়োজন রয়েছে বাংলাদেশকে। বাংলাদেশ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম সংলাপ পার্টনার। নিরাপত্তা ইস্যুতে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র প্রতি বছর একবার সংলাপে মিলিত হয়। দক্ষিণ চীন সাগর এবং সেই সঙ্গে ভারত মহাসাগরে চীনের নৌবাহিনীর ভূমিকার ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্র সন্দিহান। বাংলাদেশ নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকে তার ভূমিকা পালন করে আসছে। দক্ষিণ চীন সাগরের অর্থনৈতিক ভিত্তি এবং ভারত মহাসাগরের স্ট্র্যাটেজিক গুরুত্ব দিনে দিনে বাড়ছেই। ফলে খুব সঙ্গত কারণেই চীনের যে এ অঞ্চলের ব্যাপারে আগ্রহ থাকবে, সেটাই স্বাভাবিক। দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে চীন-যুক্তরাষ্ট্র যে দ্বন্দ্ব, সেই দ্বন্দ্বে বাংলাদেশ শরিক হয়নি। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ঘটনায় হস্তক্ষেপের কোনো নজির নেই। বাংলাদেশ তার জাতীয় স্বার্থকে বিবেচনা করেই তার পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনা করে। চীনের সঙ্গে সম্পর্কের প্রশ্নে এ জাতীয় স্বার্থকেই প্রাধান্য দিয়েছে বেশি। চীনা প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফরের সময় যে ক’টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে, তার প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ তার জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েছে বেশি। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে এ জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নটি প্রাধান্য পেয়েছে বেশি। বাংলাদেশ ‘ছোট’ দেশ হতে পারে। কিন্তু উঠতি অর্থনীতির ১১টি দেশের মাঝে বাংলাদেশ রয়েছে। আমরা চীনের অভিজ্ঞতাকে বাংলাদেশের উন্নয়নে কাজে লাগাতে পারি। বাংলাদেশ আগামীতে বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি বড় অবদান রাখবে। যে ১১টি দেশকে আগামীতে অন্যতম অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে, বাংলাদেশ তার অন্যতম। বাংলাদেশের এ উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় চীন আমাদের সহযাত্রী হতে পারে। উন্নয়নের একটা অন্যতম শর্ত হচ্ছে, এক অঞ্চলের সঙ্গে অন্য অঞ্চলকে সংযুক্ত করা ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন। চীন এ ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। চীন এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি সেতু নির্মাণ করে দিয়েছে, যাতে বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার যথেষ্ট উন্নতি হয়েছে। চীন এখন বড় শিল্পের দিকে ঝুঁকছে। ছোট ছোট কলকারখানা চীন অন্য দেশে সরিয়ে নিচ্ছে। এক্ষেত্রে কম্বোডিয়া উপকৃত হচ্ছে। আমরাও এ সুযোগটি গ্রহণ করতে পারি। আমরা চীনাদের জন্য বেশ কয়েকটি রফতানি প্রক্রিয়াকরণ শিল্পাঞ্চল (ইপিজেড) প্রতিষ্ঠা করতে পারি। এমনকি চীনাদের সহযোগিতা নিয়ে আমরা বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রও চালু করতে পারি। আমাদের রয়েছে একটি শক্তিশালী তরুণ প্রজন্ম। কিন্তু এ প্রজন্ম প্রশিক্ষিত নয়। দক্ষ নয়। যুক্তিহীনভাবে তথাকথিত বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি নিয়ে এ তরুণ প্রজন্ম বাংলাদেশে বেকার সমস্যাকে প্রকট করছে। আমরা এ তরুণ প্রজন্মকে একটি প্রশিক্ষত জনশক্তি হিসেবে গড়ে তুলতে পারিনি। এক্ষেত্রে চীনের সহযোগিতা আমরা নিতে পারি। চীনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আমাদের প্রতিকূলে। এ বাণিজ্যিক ভারসাম্যহীনতা কমিয়ে আনতে হবে। চীন যে ৫ হাজার পণ্যের (বাংলাদেশী) চীনা বাজারে প্রবেশের (শুল্কমুক্ত) সুযোগ করে দিয়েছিল, আমরা তা কাজে লাগাতে পারিনি। অর্থাৎ ওই ৫ হাজার পণ্যের মাঝে অনেক পণ্যই বাংলাদেশ উৎপাদন করে না। এক্ষেত্রে পণ্যের বহুমুখীকরণের ওপর জোর দিতে হবে। শুধু তৈরি পোশাক আর ওষুধ রফতানির ওপর নির্ভরশীল হলে চলবে না। এজন্য চীনের অভিজ্ঞতা আমাদের কাজে লাগাতে হবে। চীন আফ্রিকায় বিপুল বিনিয়োগ করছে। সে তুলনায় বাংলাদেশে দেশটির বিনিয়োগ কম। এটা আমাদের এক ধরনের ব্যর্থতা। চীনা প্রেসিডেন্টের ঢাকা সফর আমাদের একটা সুযোগ করে দিয়ে গেল। এ  সুযোগ আমাদের কাজে লাগাতে হবে। চীন তার ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ কর্মসূচির আওতায় ৬১টি দেশের সঙ্গে রেল ও সড়কপথে সংযুক্ত হচ্ছে। একই সঙ্গে ‘মেরিটাইম সিল্ক রুট’ এর মাধ্যমে ইউরোপ হয়ে আফ্রিকা, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত হচ্ছে চীন। চীন এরই মধ্যে ১২টি দেশের সঙ্গে শুল্কমুক্ত বাণিজ্যিক চুক্তি স্বাক্ষর করেছে। আরও বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের উদ্যোগ নিয়েছে। আমাদের ব্যর্থতা এখানেই যে, কোনো একটি ক্ষেত্রেও আমরা চীনের এ প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত নই। চীনের ‘মেরিটাইম সিল্ক রুট’ এর সঙ্গে বাংলাদেশ সংযুক্ত হলে   উপকৃত হবে। চীনের সঙ্গে শুল্কমুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে পারলে আমাদের পণ্যের একটি বাজার সৃষ্টি হতে পারত চীনে। এ থেকে আমরা কিছুটা পিছিয়ে আছি।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে চীনের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয়া হয়। বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ক্ষেত্রে ভারতকে তুলনামূলকভাবে বেশি গুরুত্ব দিলেও নিকট প্রতিবেশী দেশ হওয়ায় চীনের সঙ্গেও সম্পর্ক রেখে একটি ভারসাম্যমূলক পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে আসছে। তবে চীন বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেয় বেশি। চীনের পররাষ্ট্রনীতিতে ‘অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ঘটনায় হস্তক্ষেপের’ কোনো নজির নেই। চীনের বর্তমান পররাষ্ট্রনীতির ধারাকে কোনো কোনো চীনা পর্যবেক্ষক ‘চীনা মার্শাল প্লান’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী ইউরোপকে পুনর্গঠনে যুক্তরাষ্ট্র একটি মহাপরিকল্পনা প্রণয়ন করেছিল, যা ‘মার্শাল প্লান’ নামে অভিহিত হয়েছিল। অনেকটা সেই পরিকল্পনার ধাঁচেই চীন এখন পুনর্গঠন ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, যা চিহ্নিত করা হচ্ছে ‘চায়না মার্শাল প্লান’ হিসেবে। প্রেসিডেন্ট শি এ পরিকল্পনার তিনটি অংশের কথা উল্লেখ করেছেন। যেমনÑ অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ঘটনায় হস্তক্ষেপ না করা, অন্য কোনো দেশকে ‘প্রভাব বলয়’ এর আওতায় না নেয়া এবং অন্য দেশে আধিপত্য ও কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা না করা। সাম্প্রতিক চীন পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যে সম্পর্ক রক্ষা করছে, তাতে এ নীতি প্রতিফলিত হচ্ছে। তাই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্কের ক্ষেত্রে এ ‘আধিপত্য’ বা ‘কর্তৃত্ব’ করার প্রশ্নটি কখনও বড় হয়ে দেখা দেয়নি। যেহেতু বাংলাদেশ আঞ্চলিক রাজনীতিতে একটি বড় অবদান রাখছে এবং উঠতি অর্থনৈতিক শক্তি হিসেবে বাংলাদেশ আজ স্বীকৃত। সুতরাং বাংলাদেশকে তার অবস্থান ধরে রাখতে হলে তার পররাষ্ট্রনীতি সেই আঙ্গিকে সাজাতে হবে। চীনের প্রেসিডেন্টের বাংলাদেশ সফর এবং ব্রিকস-বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ এখন তার অবস্থান শক্তিশালী করল।
Daily Alokito Bangladesh
23.10.2016

0 comments:

Post a Comment