রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

যুক্তরাষ্ট্র-কিউবা সম্পর্ক কোন পথে


সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার শাসনামলে কিউবার সঙ্গে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করে যে ঐতিহাসিক যাত্রা তিনি শুরু করেছিলেন, তা এখন ভেস্তে যেতে বসেছে। ২০১৫ সালে ওবামা কিউবার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষ্যে নির্বাহী আদেশ জারি করেছিলেন; কিন্তু মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে সেসব কর্মসূচি বাস্তবায়নকে ট্রাম্প প্রশাসন এখন ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিলেন। ট্রাম্প গত সপ্তাহে কিউবার সঙ্গে বাণিজ্য ও প্রমাণের ক্ষেত্রে নতুন নীতি ঘোষণা করেছেন। ট্রাম্প ঘোষিত নীতি অনুযায়ী মার্কিন নাগরিকদের কিউবা ভ্রমণ আরও কঠিন পর্যবেক্ষণের আওতায় আনা হবে এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের ওপর আরও কড়াকড়ি ব্যবস্থার আরোপ করা হবে। শীর্ষ স্থানীয় ঔপনাসিক কর্মকর্তারা বলেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প মনে করেন ভ্রমণ ও বাণিজ্যের ফলে মার্কিন অর্থ কিউবার সেনাবাহিনীর হাতে যাচ্ছে। আর তা বন্ধ করতেই তিনি এ ধরনের ব্যবস্থা নিয়েছেন। এই যুক্তি কতটুকু গ্রহণযোগ্য, তা একটি বড় প্রশ্ন এখন। তবে বাস্তবতা হচ্ছে ট্রাম্পের এই সিদ্ধান্ত যুক্তরাষ্ট্র কিউবা সম্পর্ক একটি অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ল এখন। এই অনিশ্চয়তা এ অঞ্চলের রাজনীতিতে প্রভাব ফেলতে পারে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ছাত্রদের কাছে যুক্তরাষ্ট্র কিউবা সম্পর্ক অনেক দিন ধরেই আলোচনার একটি বিষয়। কিউবা কী আদৌ তার সমাজতান্ত্রিক নীতি পরিত্যাগ করবে, নাকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আবারও হাভানায় সরকারের উৎখাতের উদ্যোগ নেবে_ এসব প্রশ্ন বার বার মিডিয়ায় ও বিভিন্ন পর্যবেক্ষকের লিখনীতে উঠে আসছিল। ১৯৯১ সালের ডিসেম্বওে পূর্ব ইউরোপে সোভিয়েত ধাচের সমাজতন্ত্রের পতনের রেশ ধরে সোভিয়েত ইউনিয়নে যখন সমাজতন্ত্রের পতন ঘটল, তখন বলতে গেলে সারাবিশ্বের দৃষ্টি একরকম নিবদ্ধ ছিল কিউবার দিকে। কেননা কিউবা ছিল সোভিয়েত সমাজতন্ত্রের অন্যতম সম্পর্ক এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের মিত্র। দ্বিতীয় প্রশ্ন ছিল কিউবার অর্থনীতির অন্যতম উৎস্য এবং সেই সঙ্গে নিরাপত্তার অন্যতম গ্রান্টার ছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন। সোভিয়েত ইউনিয়নের অবর্তমানে অর্থনৈতিকভাবে কিউবা টিকে থাকতে পারবে কিনা- এ প্রশ্নটিও বার বার উচ্চারিত হয়েছিল একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের। আগ্রাসনের মুখে থেকে কিউবা তার অস্তিত্ব টিকে রাখতে পারবে কিনা, এটা নিয়েও প্রশ্ন ছিল। আরও একটি প্রশ্ন সমাজতান্ত্রিক বিশ্বে আলোচিত হচ্ছিল তা হচ্ছে কিউবা কী আদৌ তার সমাজতান্ত্রিক নীতিতে কোনো পরিবর্তন আনবে? কেননা চীন ও ভিয়েতনামের মতো দেশেও স্নায়ুযুদ্ধের অবসানের পর সেখানে পরিবর্তন এসেছে। এই দুটি দেশ এখন আর ধ্রুপদি মার্কসবাদ অনুসরণ করে না। তাই খুব সংগত কারণেই প্রশ্ন ছিল কিউবা চীন বা ভিয়েতনামের পথ অনুসারণ করবে কিনা? কিউবা চীনের মতো সবকিছু উন্মুক্ত করে দেয়নি; কিন্তু সেখানে পরিবর্তন এসেছে।
কিউবা-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রধান অন্তরায় ছিল কিউবার নিরাপত্তাহীনতা। যুক্তরাষ্ট্র কখনোই কিউবার একটি সমাজতান্ত্রিক সরকারকে স্বীকার করে নেয়নি। বরং কিউবায় বিপ্লবের পর (১৯৫৯), কিউবা সরকার যখন ল্যাটিন আমেরিকাজুড়ে বিপ্লব ছড়িয়ে দিতে চাইল, চে গুয়েভারা যখন 'বিপ্লব' সম্পন্ন করার জন্য কিউবা সরকারের মন্ত্রিত্ব ত্যাগ করে বলিভিয়ায় গেলেন সেখানেই তাকে পরে হত্যা করা হয়। তখন যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন ক্ষমতাসীনদের কাছে ভিন্ন একটি বার্তা পেঁৗছে দিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র কখনোই চায়নি তার প্রভাবাধীন এলাকায় অন্য কোনো শক্তি প্রভাব খাটাক।
মনরো ডকট্রিক এর আদলে যুক্তরাষ্ট্র চেয়েছে এ এলাকায় তথা ল্যাটিন আমেরিকায় তার পূর্ণ কর্তৃত্ব। কিন্তু কিউবার বিপন্ন যুক্তরাষ্ট্রের এই হিসাব নিকাশ এ বড় বাধা হয়ে দাঁড়ায়। যুক্তরাষ্ট্র কিউবা বিপ্লবের মাত্র দু'বছরের মাঝে ১৯৬১ সালে ভাড়াটে কিউবানদের দিয়ে কিউবা সরকারকে উৎখাতের চেষ্টা চালায়। সিআইএর অর্থে পরিচালিত এই অভিযান অব পিগসের অভিযান হিসেবে খ্যাত। বলাই বাহুল্য ওই অভিযান ব্যর্থ হয়েছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র থেমে থাকেনি। ঠিক এর পরের বছর ১৯৬২ সালের অক্টেবরে কিউবা সংকট একটি পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনার জন্ম দিয়েছিল। ওই সময় যুক্তরাষ্ট্র অভিযোগ করেছিল কিউবায় সোভিয়েত ইউনিয়ন পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র বসিয়েছে যা তার নিরাপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ। সোভিয়েত ইউনিয়ন কিউবায় ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপন করেছে। এটা বিবেচনায় নিয়েই যুক্তরাষ্ট্র একটি নৌ-অবরোধ আরোপ করে যাতে করে কিউবায় কোনো ধরনের সামরিক মারণাস্ত্র সরবরাহ করা না যায়। এই নৌ অবরোধ আনেকটা সোভিয়েত ইউনিয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রকে একটি যুদ্ধের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়। সোভিয়েত ইউনিয়ন তখন দাবি করে যুক্তরাষ্ট্রকে তুরস্ক থেকে তাদের পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রত্যাহার করে নিতে হবে। দীর্ঘ ১৩ দিন এই নৌ অবরোধ বহাল ছিল। অবশেষে যুক্তরাষ্ট্র তুরস্ক থেকে মিসাইল প্রত্যাহার করে নিলে সোভিয়েত ইউনিয়নও কিউবা থেকে ক্ষেপণাস্ত্রগুলো সরিয়ে নেয়। এর মধ্য দিয়ে পারমাণবিক যুদ্ধের সম্ভাবনা কমে গেলেও সংকট থেকে গিয়েছিল। যুক্তরাষ্ট্র কিউবার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করে। দীর্ঘ ৫৪ বছর ধরে এই অর্থনৈতিক অবরোধের বিরুদ্ধে কিউবা যুদ্ধ করে আসছিল।
প্রেসিডেন্ট ওবামা সম্পর্কোন্নয়নেরও বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের কথা বলেছিলেন। এটি করা তার জন্য খুব সহজ ছিল না। কেননা ওমাবাকে এ সংক্রান্ত একটি আইন পাস করতে হতো। কিন্তু সমস্যাটা ছিল কংগ্রেসে। তার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা ছিল না। কংগ্রেসের উভয় কক্ষ এখন নিয়ন্ত্রণ করত রিপাবলিকানরা। রিপাবলিকানরা ওবামার উদ্যোগের ব্যাপারে খুশি ছিলেন না। আমি একাধিক কংগ্রেস সদস্য তথা সিনেটরের বক্তব্য দেখেছি, যেখানে তারা নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে ওবামার ওই উদ্যোগের সমালোচনা করেছেন। সিনেটর জন ম্যাককেইন ও সিনেটর লিডসে গ্রাহাম এক বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ওবামার বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ওই সিদ্ধান্ত বিশেষ যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবকে সংকুচিত করবে। অন্যদিক সিনেটর রয় বস্নান্ট মনে করেন এই ঘোষণা রাউল ক্যাস্ত্রোকে ক্ষমতায় রাখতে সাহায্য করবে। ডেমোক্রেট দলীয় সিনেটর রবাট মেনডেজ মনে করেন প্রেসিডেন্ট ওবামার ওই সিদ্ধান্ত হচ্ছে কিউবার মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ও স্বৈরশাসনকে স্বীকার করে নেয়ার শামিল। সিনেটর মেনডেজ নিজে কিউবান- আমেরিকান। এতে করে যা হবার তাই হয়েছিল_ কিউবার ওপর থেকে বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার সংক্রান্ত কোনো আইনকেই কংগ্রেস অনুমোদন দেয়নি। ফলে ওবামার ঘোষণা ও উদ্যোগ শেষ পর্যন্ত একটি ঘোষণা হিসেবেই থেকে গিয়েছিল কাগজ কলমে। যুক্তরাষ্ট্রের আইন এনে তাদের দাবি কিউবায় আরও বেশি গণতন্ত্রায়ন। আরও বেশি অর্থনৈতিক উদারীকরণ। মানবাধিকার পরিস্থিতির আরও উন্নতি। একই সঙ্গে রাজনৈতিক সংস্কার। এটাই হচ্ছে মোদ্দা কথা। বাণিজ্য নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের শর্তে কিউবা সবকিছু উন্মুক্ত করে দেয়নি। সোভিয়েত ইউনিয়নে গর্বাচেভের সংস্কার কর্মসূচির ফলাফল তাদের অজানা নয়। সংস্কার রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক, আনতে গিয়েই সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে গিয়েছিল। চীন ও ভিয়েতনামে অর্থনৈতিক সংস্কার এসেছে; কিন্তু রাজনৈতিক সংস্কার সেখানে আসেনি। অর্থাৎ সোভিয়েত ইউনিয়নের সংস্কার কর্মসূচির 'পেরেসক্রোইকা' বাস্তবায়ন হয়েছে। কিন্তু 'গ্রাসনোস্ট' কার্যকর হয়নি। রাজনৈতিক সংস্কার আসেনি। কিউবাতে কোনোটাই আসেনি। চীন তার সংস্কার কর্মসূচির সফল বাস্তবায়নের মাধ্যমে বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র চীন থেকে এখন ঋণ গ্রহণ করছে। ভিয়েতনামও কম যায়নি। যে ভিয়েতনাম প্রায় ৪০ বছর আগেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে 'যুদ্ধ' করেছে, তারাই আজ যুক্তরষ্ট্রের অন্যতম মিত্র। ভিয়েতনামের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যের পরিমাণ ব্যয় ৩০ বিলিয়ন ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি পোশাকের যে বিশাল চাহিদা আর একটি বড় অংশ ভিয়েতনাম সরবরাহ করছে। এখানে রাজনীতি আগ্রাধিকার পায়নি। পেয়েছে বাণিজ্য। এখন কিউবা কী প্রতিক্রিয়া দেখায়, তাও দেখার বিষয়। তবে হুট করে দু'দেশের সম্পর্কে কোনো বড় পরিবর্তন আসেনি। প্রেসিডেন্ট রাহুল ক্যাস্ত্রো অনেক আগেই জানিয়ে দিয়েছিলেন ওবামার ওই প্রস্তাবের ভিত্তিতে কিউবার রাষ্ট্র ব্যবস্থায় কোনো পরিবর্তন আসবে না। কিউবার জনগণ এখনও কিউবার সরকারকে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। তবে এটাও ঠিক বিশ্বায়নের এই যুগে কিউবা 'একা একা' চলতে পারবে না। দেশটিকে 'দুয়ার উন্মুক্ত' করে দিতে হবেই। দেশের অর্থনীতির শতকরা ৮০ ভাগ এখনো সরকার নিয়ন্ত্রিত। কিছু কিছু ক্ষুদ্র ব্যবসা বেসরকারি খাতে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। সারাদেশে এ সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ ৫০ হাজার। বেসরকারি খাত সম্প্রসারনের সুযোগ রয়েছে। বিশেষ করে ট্যুারিজম খাত। এ খাত কিছুটা উন্মুক্ত করা হয়েছে। আরও উম্মুক্ত করা হলে, যুক্তরাষ্ট্রের হোটেল চেন ব্যবসায়ীরা ওই খাতে বিনিয়োগে এগিয়ে আসবে। কিউবারত সীমিত আকারে ডলার বাণিজ্য হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানরত কিউবান আমেরিকান পাঠানো অর্থ এখন নিয়মিত কিউবাতে আসছে। ক্রেডিট কার্ড ব্যবহৃত হচ্ছে। তবে একটা সমস্যা রয়েছে। কিউবা প্রতিদিন এক লাখ ব্যারেল তেল অত্যন্ত কম মূল্যে ভেনিজুয়েলা থেকে পেয়ে আসছে। এর বিনিময়ে কিউবা ডাক্তার, নার্স, শিক্ষক দিচ্ছে। এইসব ডাক্তার নার্স আর শিক্ষক এখন ভেনিজুয়েলার হয়ে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে কাজ করছে। পুরো ব্যয়বার বহন করছে ভেনিজুয়েলা। প্রয়াত হুগো শ্যাভেজ এই পরিকল্পনা শুরু করলেও বর্তমান প্রসিডেন্ট মাদুরো এই পরিকল্পনা টিকিয়ে রাখতে পারছেন না। কেননা ভেনিজুয়েলার রম রমা তেল ব্যবসার দিন শেষ। অর্থনীতি আগের মতো আর শক্তিশালী নয়। রাজধানী কারাকাসে বিশাল বিশাল ভবন খালি পরে আছে। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা আসছেন না। রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়ছে। এরই মাঝে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভেনিজুয়েলার সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। ভেনিজুয়েলার ওপর বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা আবারও করা হয়েছে। যখন ওবামা কিউবার সঙ্গে সম্পর্কে উন্নত করার উদ্যোগ নিয়েছেলেন। তার ঠিক একদিন পর ১০ ডিসেম্বর ২০১৫ এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। এ নিষেধাজ্ঞা আরোপের ঘটনাকে যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর মেনডেজ ভেনিজুয়েলার জনগণের বিজয় হিসেবে চিহ্নিত করেছিলেন। গত এপ্রিল থেকেই সেখানে অসন্তোষ চলছে। যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করার পর ভেনিজুয়েলার পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। ফলে কিউবা ভেনিজুয়েলা থেকে আর্থিক সহযোগিতা পাবার সম্ভাবনা কম। এমনি এক পরিস্থিতিতে ট্রাম্প কিউবার সঙ্গে বাণিজ্য সম্পর্ক নিয়ে নতুন নীতি ঘোষণা করেছেন। ফলে কিউবা যে নতুন করে সংকটের মধ্যে পড়তে যাচ্ছে। তা বলার আর অপেক্ষা রাখে না। দু'দেশের মাঝে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এখনো অনেক বিষয় রয়ে গেছে। ওবামা প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন তিনি কিউবাকে রাষ্ট্র পরিচালিত সন্ত্রাসবাদের তালিকা থেকে বাদ দেবেন। ট্রাম্প এটি করবেন কি-না, তা নিশ্চিত নয়। দ্বিতীয়ত, বৈধ কাগজপত্র ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের আশ্রয় নেয়া কিউবানদের দেশে ফেরত পাঠাবেন না। এমন একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন ওবামা। কিন্তু ট্রাম্প কী এই সিদ্ধান্ত বহাল রাখবেন? এমনিতেই ৬টি মুসলমান দেশের নাগরিকদের যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের ব্যাপারে ট্রাম্প সুপ্রিম কোর্টের রায়ে কিছুটা হলেও বিজয়ী হয়েছেন । তখন অবৈধ কিউবানদের ব্যাপারে তিনি যদি সিদ্ধান্ত না নেন, তাহলে প্রশ্ন উঠবেই। ট্রাম্প অনেককিছুই বদলে দিতে চান। তার অনেক সিদ্ধান্ত বিশ্বে নানা বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। এখন এর সঙ্গে যোগ হলো কিউবা প্রশ্ন। ট্রাম্পের সাম্প্র্রতিক সিদ্ধান্ত রাউল ক্যাস্ত্রোর সরকারেকে একটি 'চাপ'-এর মুখে রাখল। এর ফলে কিউবা-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক এবং ল্যাতিন আমেরিকায় এর প্রভাব আগামীতে বারবার আলোচিত হতে থাকবে।
Daily Jai Jai Din10.07.2017

0 comments:

Post a Comment