রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

ভারত-চীন দ্বন্দ্বে বাংলাদেশের অবস্থান স্পর্শকাতর

| ২২ মার্চ ২০১৫, রবিবার
<a href="http://platinum.ritsads.com/ads/server/adserve/www/delivery/ck.php?n=a52828b8&cb=INSERT_RANDOM_NUMBER_HERE" target="_blank"><img src="http://platinum.ritsads.com/ads/server/adserve/www/delivery/avw.php?zoneid=785&cb=INSERT_RANDOM_NUMBER_HERE&n=a52828b8" border="0" alt="" /></a>
সর্বশেষ সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া যে নমনীয়তা দেখিয়েছেন তাতে সরকারের সাড়া দেয়া উচিত। তিনি সেখানে তিন দফা দিয়েছেন। দুটি অনায়াসে মেনে নিতে পারে সরকার। যেমন গ্রেপ্তারকৃত সকল নেতাকর্মীকে মুক্তি ও সভা-সমাবেশ করতে দেয়া। এক্ষেত্রে বিএনপি চলমান কর্মসূচি স্থগিত করতে পারে। আসতে পারে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে। সরকার দুই দফা মেনে নিয়ে আলোচনার একটি ক্ষেত্র তৈরি করতে পারে।
মানবজমিনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক তারেক শামসুর রেহমান এসব কথা বলেন। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন স্টাফ রিপোর্টার নুর মোহাম্মদ।
অধ্যাপক তারেক শামসুর রেহমান বলেন, বর্তমান সংকট থেকে উত্তরণের পথ একটাই। সরকারকে এগিয়ে আসতে হবে। সরকারই দেশের অভিভাবক। তাদেরকেই উদ্যোগ নিতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে সকল দলের অংশগ্রহণের একটি নির্বাচন। কিন্তু সরকার এই মুহূর্তে সেটি চাচ্ছে না। তিনি বলেন, বিদেশীদের হস্তক্ষেপ বা উপদেশ বর্তমান সংকট সমাধানে কোন ভূমিকা পালন করবে না। এই সংকটের সমাধান দুটি বড় দলকে মিলে করতে হবে। এক্ষেত্রে সংলাপের কোন বিকল্প নেই। যেকোন পর্যায়ে হউক এটা করতে হবে। সহিংসতার প্রতি মানুষের কোন সমর্থন নেই। এই সহিংস ঘটনাবলী আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতি উন্নত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভাষায় একটি কথা আছে ‘কনফিডেন্স বিল্ডিং মেজার্ড’ অর্থাৎ ‘আস্থার সম্পর্ক গড়ে তোলা’। একটি গণতান্ত্রিক পরিবেশে এই আস্থার সম্পর্কটি থাকে। আস্থার সম্পর্ক না থাকলে গণতন্ত্র বির্নিমাণ করা যায় না। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এই আস্থার পরিবেশটি জরুরি।
সমাধান কূটনীতিকরা করতে পারবে না তারাও জানে। কারণ স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্রে কূটনীতিকরা সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে পারে না। এক্ষেত্রে বিদেশীরা বলতে পারে এটা কর, ওটা কর। জাতিসংঘ বলতে পারে সংকট আছে। কিন্তু কোন এখতিয়ার নেই সরাসরি হস্তক্ষেপ করার। এরপরও তারা যদি কোন ফয়সালা করে তাতে আমাদের এখানে বাজে সংস্কৃতি জন্ম দেবে। ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের বাংলাদেশ সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভারত চাচ্ছে ভারত মহাসাগর সংশ্লিষ্ট দেশগুলো নিয়ে একটি লিডারশিপ তৈরি করা। সে লিডারশিপ তাদের হাতে রাখা। এটি মোদি সরকারের নতুন নীতি। ভারত মহাসাগরকে কেন্দ্র করে ভারত ও চীন পরস্পর শক্তি ও প্রভাব বিস্তার করার প্রতিযোগিতায় নেমেছে। ভারত চাচ্ছে ভারত মহাসাগরকে সামনে রেখে এ অঞ্চলে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা। যাতে চীন কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে না পারে। এতে সঙ্গত কারণে ভারত-চীন এক ধরনের দ্বন্দ্বে জড়িয়ে যাবে। সেখানে বাংলাদেশ খুব স্পর্শকাতর অবস্থানে থাকবে। তাই অনেকটা সাবধানে এগুতে হবে আমাদের। আমাদের পররাষ্ট্রনীতি এমনভাবে পরিচালনা করতে হবে যাতে কোন পক্ষকে সমর্থন না করা হয়। কৌশলগত কারণে যদি চীনকে সমর্থন না করি তবে ভারতকে যেন সমর্থন না করা হয়। আর পশ্চিমারা বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চাচ্ছে এখানে ভারতকেন্দ্রিক একটি বলয় গড়ে তুলতে। এ জন্য ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি করছে। আগামী দিনে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক আরও গাঢ় হবে। এরফলে মার্কিন কর্তৃত্বটা প্রতিষ্ঠা হতে পারে এ অঞ্চলে। উদ্দেশ্য চীনকে এ অঞ্চলে কোণঠাসা করে রাখা।

এই বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

0 comments:

Post a Comment