বাংলাদেশে অবস্থানরত ১৮টি দেশের রাষ্ট্রদূতরা গত ৩ মার্চ বেগম জিয়ার সঙ্গে তার কার্যালয়ে দেখা করেছেন। ওই প্রতিনিধি দলে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত থাকলেও ভারতীয় হাইকমিশনার ছিলেন না। পরে তারা একটি বিবৃতিও দেন। তারা বলেছেন, গত ১ মার্চ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পরই এর ধারাবাহিকতায় তারা বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা করলেন। এত ব্যাপকসংখ্যক মিশনপ্রধানের একসঙ্গে বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা করা সঙ্গত কারণেই নানা প্রশ্নের জন্ম দেবে। প্রথমত, বর্তমান রাজনৈতিক সংকটে বিদেশি দাতাগোষ্ঠী যে উদ্বিগ্ন, এটা প্রমাণিত হলো। দ্বিতীয়ত, তারা বড় দুটি দলের মাঝে (আওয়ামী লীগ ও বিএনপি) যে আস্থার সম্পর্ক চান, তারা সাক্ষাৎকারের সময় এই বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তৃতীয়ত, বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা করার মধ্য দিয়ে তারা একটি ‘মেসেজ’ অন্তত দিতে চেয়েছেন যে, চলমান সংকটের অবসানে বেগম জিয়া একটি ফ্যাক্টর। চতুর্থত, তাদের বিবৃতি কিংবা বক্তব্যে সরাসরি তারা ‘সংলাপ’ বা ‘মধ্যবর্তী’ নির্বাচনের কথা বলেননি। যদিও এর আগে তারা এ ধরনের কথা বলেছেন।
এখন তাদের এই ‘উদ্যোগ’ কি আদৌ কোনো ফল বয়ে আনবে? তারা যে ‘আস্থার সম্পর্কের’ কথা বলছেন, তা কি প্রতিষ্ঠিত হবে? মন্ত্রীদের কথাবার্তায় এটি স্পষ্ট নয়। বরং প্রধানমন্ত্রীসহ সিনিয়র একাধিক মন্ত্রী সংলাপের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন। চলমান সহিংসতার জন্য বিএনপিকে দায়ী করা হচ্ছে। তাহলে কোন দিকে যাচ্ছে দেশ? আর কতদিন চলবে এই অবরোধ ও হরতালের রাজনীতি। সাধারণ মানুষ এখন জিম্মি। তাদের ভয় ও শঙ্কা নেই এটা বলা যাবে না। শঙ্কা আছে। ভয় আছে। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাসা থেকে বের হচ্ছে না। এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। সে কারণেই এক সময় গুজব উঠেছিল যে, সরকার জরুরি অবস্থা জারি করতে পারে! এটা সাংবিধানিকভাবেই বৈধ।
সংবিধানের ১৪১ক ধারায় স্পষ্ট বলা আছে, ‘রাষ্ট্রপতির নিকট যদি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এমন জরুরি অবস্থা বিদ্যমান রহিয়াছে, যাহাতে যুদ্ধ বা বহিরাক্রমণ বা অভ্যন্তরীণ গোলযোগের দ্বারা বাংলাদেশ বা উহার যে কোনো অংশের নিরাপত্তা বা অর্থনৈতিক জীবন বিপদের সম্মুখীন, তাহা হইলে তিনি অনাধিক একশত কুড়ি দিনের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করিতে পারিবেন।’ তবে এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিস্বাক্ষর ও সম্মতির প্রয়োজন রয়েছে। তবে সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর জরুরি অবস্থা জারির বিষয়টি ভাবনার সুযোগ নেই। কিন্তু দুটি বিষয় আমাদের ভাবনায় ফেলে দিয়েছে। বিএনপিঘেঁষা শত নাগরিক কমিটি, বিশেষ করে এর আহ্বায়ক অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ কিছুদিন আগে সরকার ও বিএনপির মধ্যে সংলাপের আয়োজন করতে জাতিসংঘের মহাসচিবকে একটি চিঠি দিয়েছিলেন। জাতিসংঘের ঢাকাস্থ প্রতিনিধি ক্রিস্টিনা রোডার হাতে তারা চিঠিটি তুলে দেন ৪ ফেব্রুয়ারি। অধ্যাপক আহমদ যথেষ্ট অভিজ্ঞ মানুষ। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছেন। এভাবে চিঠি লেখা যায় কি না কিংবা দেশের কোনো অভ্যন্তরীণ ঘটনায় হস্তক্ষেপ (!) করতে বিদেশি কোনো সংস্থাকে আমন্ত্রণ জানানো যায় কি না, এটা নিয়ে তিনি যথেষ্ট অভিজ্ঞ। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক তিনি। গণতন্ত্র নিয়ে তার একাধিক গ্রন্থ রয়েছে। আমি নিজে তার ছাত্র। সন্দেহ নেই, দেশ এক বড় ধরনের রাজনৈতিক সংকটে রয়েছে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন আছে। সরকার যেভাবে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে, সেটাও ভালো কোনো সংবাদ নয়। তাই বলে আমি বিদেশি হস্তক্ষেপ চাইতে পারি না!
বাংলাদেশে অবস্থানরত ১৮টি দেশের রাষ্ট্রদূতরা গত ৩ মার্চ বেগম জিয়ার সঙ্গে তার কার্যালয়ে দেখা করেছেন। ওই প্রতিনিধি দলে যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত থাকলেও ভারতীয় হাইকমিশনার ছিলেন না। পরে তারা একটি বিবৃতিও দেন। তারা বলেছেন, গত ১ মার্চ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পরই এর ধারাবাহিকতায় তারা বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা করলেন। এত ব্যাপকসংখ্যক মিশনপ্রধানের একসঙ্গে বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা করা সঙ্গত কারণেই নানা প্রশ্নের জন্ম দেবে। প্রথমত, বর্তমান রাজনৈতিক সংকটে বিদেশি দাতাগোষ্ঠী যে উদ্বিগ্ন, এটা প্রমাণিত হলো। দ্বিতীয়ত, তারা বড় দুটি দলের মাঝে (আওয়ামী লীগ ও বিএনপি) যে আস্থার সম্পর্ক চান, তারা সাক্ষাৎকারের সময় এই বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। তৃতীয়ত, বেগম জিয়ার সঙ্গে দেখা করার মধ্য দিয়ে তারা একটি ‘মেসেজ’ অন্তত দিতে চেয়েছেন যে, চলমান সংকটের অবসানে বেগম জিয়া একটি ফ্যাক্টর। চতুর্থত, তাদের বিবৃতি কিংবা বক্তব্যে সরাসরি তারা ‘সংলাপ’ বা ‘মধ্যবর্তী’ নির্বাচনের কথা বলেননি। যদিও এর আগে তারা এ ধরনের কথা বলেছেন।
এখন তাদের এই ‘উদ্যোগ’ কি আদৌ কোনো ফল বয়ে আনবে? তারা যে ‘আস্থার সম্পর্কের’ কথা বলছেন, তা কি প্রতিষ্ঠিত হবে? মন্ত্রীদের কথাবার্তায় এটি স্পষ্ট নয়। বরং প্রধানমন্ত্রীসহ সিনিয়র একাধিক মন্ত্রী সংলাপের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়েছেন। চলমান সহিংসতার জন্য বিএনপিকে দায়ী করা হচ্ছে। তাহলে কোন দিকে যাচ্ছে দেশ? আর কতদিন চলবে এই অবরোধ ও হরতালের রাজনীতি। সাধারণ মানুষ এখন জিম্মি। তাদের ভয় ও শঙ্কা নেই এটা বলা যাবে না। শঙ্কা আছে। ভয় আছে। প্রয়োজন ছাড়া মানুষ বাসা থেকে বের হচ্ছে না। এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি হয়েছে। সে কারণেই এক সময় গুজব উঠেছিল যে, সরকার জরুরি অবস্থা জারি করতে পারে! এটা সাংবিধানিকভাবেই বৈধ। সংবিধানের ১৪১ক ধারায় স্পষ্ট বলা আছে, ‘রাষ্ট্রপতির নিকট যদি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এমন জরুরি অবস্থা বিদ্যমান রহিয়াছে, যাহাতে যুদ্ধ বা বহিরাক্রমণ বা অভ্যন্তরীণ গোলযোগের দ্বারা বাংলাদেশ বা উহার যে কোনো অংশের নিরাপত্তা বা অর্থনৈতিক জীবন বিপদের সম্মুখীন, তাহা হইলে তিনি অনাধিক একশত কুড়ি দিনের জন্য জরুরি অবস্থা ঘোষণা করিতে পারিবেন।’ তবে এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিস্বাক্ষর ও সম্মতির প্রয়োজন রয়েছে। তবে সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পর জরুরি অবস্থা জারির বিষয়টি ভাবনার সুযোগ নেই। কিন্তু দুটি বিষয় আমাদের ভাবনায় ফেলে দিয়েছে। বিএনপিঘেঁষা শত নাগরিক কমিটি, বিশেষ করে এর আহ্বায়ক অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ কিছুদিন আগে সরকার ও বিএনপির মধ্যে সংলাপের আয়োজন করতে জাতিসংঘের মহাসচিবকে একটি চিঠি দিয়েছিলেন। জাতিসংঘের ঢাকাস্থ প্রতিনিধি ক্রিস্টিনা রোডার হাতে তারা চিঠিটি তুলে দেন ৪ ফেব্রুয়ারি। অধ্যাপক আহমদ যথেষ্ট অভিজ্ঞ মানুষ। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছেন। এভাবে চিঠি লেখা যায় কি না কিংবা দেশের কোনো অভ্যন্তরীণ ঘটনায় হস্তক্ষেপ (!) করতে বিদেশি কোনো সংস্থাকে আমন্ত্রণ জানানো যায় কি না, এটা নিয়ে তিনি যথেষ্ট অভিজ্ঞ। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের শিক্ষক তিনি। গণতন্ত্র নিয়ে তার একাধিক গ্রন্থ রয়েছে। আমি নিজে তার ছাত্র। সন্দেহ নেই, দেশ এক বড় ধরনের রাজনৈতিক সংকটে রয়েছে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন আছে। সরকার যেভাবে পরিস্থিতি সামাল দিচ্ছে, সেটাও ভালো কোনো সংবাদ নয়। তাই বলে আমি বিদেশি হস্তক্ষেপ চাইতে পারি না! এটা আমাদের রাজনৈতিক দৈনতা। আমাদের সমস্যা আমাদেরই মোকাবেলা করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি শুভবুদ্ধির উদয় হবেই। সুতরাং বান কি মুনকে চিঠি দেওয়া অর্থহীন। আরও একটি সংবাদেও আমি উদ্বিগ্ন। অনলাইন সংবাদ সংস্থা বিডিনিউজ একটি সংবাদ পরিবেশন করেছে গত ৫ ফেব্রুয়ারি। তাতে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ওবামার জানুয়ারিতে নয়াদিল্লি সফরের সময় তিনি বাংলাদেশের বিষয়াবলি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মতবিনিময় করেছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা কাউন্সিলে দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক জ্যেষ্ঠ পরিচালক ফিল রাইনার ওয়াশিংটনে ৩ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্যটি জানিয়েছেন (যায়যায়দিন ৫ ফেব্রুয়ারি)। এর পেছনে সত্যতা কতটুকু আছে আমরা জানতে পারব না। তবে নিঃসন্দেহে তা উদ্বেগ সৃষ্টি করার জন্য যথেষ্ট। কেননা বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ই গুরুত্বপূর্ণ। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে নানা ইস্যুতে আমাদের সংকট চলছে। এমনকি ‘সকল দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন’-এর যে কথা যুক্তরাষ্ট্র সরকার বলে আসছে, তা থেকে যুক্তরাষ্ট্র এতটুকুও সরে আসেনি। অন্যদিকে পার্শ্ববর্তী দেশ হিসেবে বাংলাদেশের ব্যাপারে ভারতের প্রভাব অনেক বেশি। ভারত খুব সঙ্গত কারণেই বাংলাদেশে একটি বন্ধুপ্রতিম সরকার চায়। অনেক পর্যবেক্ষকেরই ধারণা, ভারত বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন একটি সরকারকেই দেখতে চায়। বাংলাদেশে বিএনপির ব্যাপারে ভারতের নীতিনির্ধারকদের তেমন আপত্তি না থাকলেও জামায়াতের ব্যাপারে তাদের আপত্তি রয়েছে। ফলে ২০-দলীয় জোটের ব্যাপারে ভারতের নীতিনির্ধারকদের অনেক হিসাব-নিকাশ আছে। ভারত তার জাতীয় স্বার্থে নীতি প্রণয়ন করে। জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে বিজেপির নেতৃত্বাধীন সরকারের কোনো পার্থক্য নেই। ফলে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারত বরাবরই একটি ফ্যাক্টর থাকবে।
একটা প্রশ্ন এখন বিভিন্ন মহলে আলোচিত হচ্ছেÑ আর তা হচ্ছে সংকট থেকে উত্তরণের পথ কী? এটা সত্য সরকার সাংবিধানিকভাবেই ক্ষমতায় আছে। সংবিধান অনুযায়ীই একটা নির্বাচন হয়েছে গেল বছরের ৫ জানুয়ারি। ওই নির্বাচনে সব দল অংশ না নিলেও নির্বাচন ছিল সাংবিধানিকভাবে বৈধ। কিন্তু ওই নির্বাচন গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করতে পারেনি। কেননা গণতন্ত্রে ‘কনফিডেন্স বিল্ডিং মেজারস’-এর যে কথা বলা হয়, তা রক্ষিত হয়নি। অর্থাৎ বিশ্বাস ও আস্থা স্থাপিত হয়নি। বিএনপিসহ আরও কয়েকটি দল নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তখন অবশ্য বলা হয়েছিল, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন ‘নিয়ম রক্ষার নির্বাচন’। আমরা সেটাই ধরে নিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম সরকার এক বছরের মধ্যে আরেকটি নির্বাচনের কথা বলবে। কিন্তু সরকারের নীতিনির্ধারকরা প্রায় সবাই বলছেন পরবর্তী নির্বাচন হবে ২০১৯ সালে। সংবিধান আমাদের এ কথাটাই বলেÑ ৫ বছর পরপর নির্বাচন। এটাই গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি। কিন্তু বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলের আন্দোলন এখন একটি ‘নয়া নির্বাচন’কে কেন্দ্র করে। আর সংকটটা তৈরি হয়েছে সেখানেই। দুটি বড় দল, আওয়ামী লীগ তথা সরকার আর বিএনপি তথা ২০ দল আজ নো রিটার্নের পর্যায়ে চলে গেছে। কেউ কাউকে এতটুকু স্পেস দিতে চাচ্ছে না। সরকার তার অবস্থানে অনড়। আর বিএনপিও এতটুকু পিছুপা হচ্ছে না। যদিও এটা সত্য, মাঠে বিএনপির নেতাকর্মীদের আদৌ দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু হরতাল-অবরোধের আহ্বান আসছে। আর সংবাদপত্রের মাধ্যমেই মানুষ জানছে পরবর্তী সপ্তাহের হরতালের খবর। ফলে বিদেশি দাতাগোষ্ঠী যে উদ্বিগ্ন থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। সর্বশেষ খবরে দেখলাম জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থার হাইকমিশনার জেইড রাড হুসেইন বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চলমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে উপায় বের করার পরামর্শ দিয়েছেন। বেগম জিয়ার সঙ্গে বিদেশি দূতদের দেখা করা আর জেইড রাড হুসেইনের পরামর্শ মূলত একই সূত্রে গাঁথা। বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রগুলো চাচ্ছে একটা সমঝোতা।
এটা সত্যিই দুঃখজনক যে, আমরা আমাদের সমস্যা নিজেরা সমাধান করতে পারছি না। এভাবে বিদেশিদের হস্তক্ষেপ আমাদের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিকে কতটুকু উন্নত করবে, এটা আমাদের রাজনীতিবিদরা নিশ্চয়ই উপলব্ধি করবেন। গত ৮ মার্চ পর্যন্ত অবরোধের ৬২ দিন অতিক্রম করেছে। আর হরতালের ব্যাপ্তি বেড়েছে ৬ মার্চ পর্যন্ত। রোববার থেকে আবারও হরতালের ডাক দেওয়া হয়েছে। ঢাকা শহরের দিকে তাকালে বোঝা যায়, হরতাল সেভাবে পালিত হচ্ছে না। কিন্তু হরতাল-অবরোধের মধ্যে গাড়িতে পেট্রলবোমা হামলার সংখ্যা বাড়ছে। অবরোধ আর হরতালের যে পরিসংখ্যান সংবাদপত্রগুলো আমাদের দিচ্ছে, তাতে দেখা যায় অবরোধের ৫৭ দিন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন ১১৫ জন, এর মাঝে ‘আগুন বোমায়’ মারা গেছেন ৬৪ জন। ক্রসফায়ারে মারা গেছেন ৩১ জন। ৭৯১টি গাড়িতে আগুন লাগানো হয়েছে। আর ভাঙচুর হয়েছে ১০২৯টি। এই পরিসংখ্যান আমাদের কোনো আশার কথা বলে না। এর শেষ কোথায়, তাও আমরা জানি না। আমরা শুধু প্রত্যাশা করতে পারি এই পরিস্থিতি আমাদের কাম্য নয়। কিন্তু সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আমজনতার নেই। সিদ্ধান্ত নেবে সরকার আর বিএনপি। এ জন্যই আস্থার সম্পর্কটা গড়ে তোলা জরুরি। এটা দেশের স্বার্থে, গণতন্ত্রের স্বার্থে, উন্নয়নের স্বার্থে। এই আস্থা রাখা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
Daily Amader Somoy
09.03.15
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment