রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

আইএসের দাবিকে আমরা কতটুকু গুরুত্বের সঙ্গে নেব?


বাংলাদেশে বিদেশি হত্যাকা-, খ্রিস্টানধর্ম প্রচারক বা ফাদারদের হত্যা বা হত্যাচেষ্টার খবর যখন আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রচারিত হয়ে বলা হচ্ছিল এসব কর্মকা-ের সঙ্গে ইসলামিক স্টেট বা আইএসের জঙ্গিরা জড়িত, তখন সরকারের পক্ষ থেকে বার বার বলা হচ্ছিল এ সংগঠনের অস্তিত্ব বাংলাদেশে নেই। কিন্তু অতিসম্প্রতি আইএসের মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত 'দাবিক'-এর সর্বশেষ সংখ্যায় (১৪তম) জনৈক শেখ আবু ইবরাহিম আল হানিফ নামে এক ইসলামী জঙ্গির সাক্ষাৎকার প্রচার করে বলা হয় তিনি বাংলাদেশের আইএসের প্রধান। ওই সাক্ষাৎকারে আবু ইবরাহিম আল হানিফ বাংলাদেশে আইএসের স্ট্রাটেজির কথাও উল্লেখ করেন। তাতে বলা হয়, বাংলাদেশে শক্ত ঘাঁটি করতে চায় আইএস। এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে 'হিন্দু ভারত' ও 'বৌদ্ধ বার্মা'য় জিহাদ পরিচালনা করবে জঙ্গি সংগঠনটি। এ সংবাদটি বাংলাদেশের পত্রপত্রিকায় ছাপা হলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আবারো বলেছেন এ সংগঠনটির কোনো অস্তিত্ব বাংলাদেশে নেই। প্রশ্ন হচ্ছে, এ ধরনের সংবাদগুলোকে আমরা কিভাবে ব্যাখ্যা করব? বিশ্বের প্রায় প্রতিটি অঞ্চলে আইএসের সন্ত্রাসী কর্মকা-ের খবর আমরা সংবাদপত্র থেকে পাঠ করছি। সুতরাং কোনো অবস্থাতেই সর্বশেষ সাক্ষাৎকারটিকে হালকাভাবে নেয়ার সুযোগ নেই। নেয়া ঠিকও হবে না।

ইউরোপে কিংবা পশ্চিম আফ্রিকায় অতিসম্প্রতি ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসবাদী কর্মকা-ে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, সেখানে সন্ত্রাসীরা একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। সন্ত্রাসীরা প্যারিস কিংবা ব্রাসেলসের সমাজজীবনের কত গভীরে প্রবেশ করেছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায়। গোয়েন্দাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে একাধিক স্থানে আক্রমণ চালানো হয়েছিল। খোদ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ওলাঁদ যখন একটি স্টেডিয়ামে ফুটবল ম্যাচ উপভোগ করছিলেন, ওই স্টেডিয়ামের বাইরে তখন তিন আত্মঘাতী বোমারু নিজেদের বিস্ফোরণের মাধ্যমে উড়িয়ে দিয়েছিল। গোয়েন্দারা এটা অাঁচ করতে পারেননি। চিন্তা করা যায় সন্ত্রাসীরা কালাশনিকভ রাইফেল ব্যবহার করে পাখির মতো নির্বিচারে একটি কনসার্ট হলে মানুষ হত্যা করেছিল! ওই রাইফেল সিরিয়া থেকে আসেনি। সংগ্রহ করা হয়েছিল ফ্রান্সের ভেতর থেকেই। ফ্রান্সে যে এ রকম একটি হামলা হতে পারে তা ইসলামিক স্টেটের প্রপাগান্ডা ম্যাগাজিন 'দাবিকে' ফেব্রুয়ারির সপ্তম সংখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছিল। ফ্রান্স কেন, পুরো ইউরোপীয় রাষ্ট্র তথা যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতা এখানেই যে 'দাবিকে' অভিযুক্ত আবাউদের (ফ্রান্সে তার পরিচিতি ছিল আবু উমর আল বালঝিকি নামে) সাক্ষাৎকার ছাপা হলেও তা প্রতিরোধে তারা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি। যেমনটি তারা নিতে পারেনি নিউইয়র্কের 'টুইন টাওয়ার'-এর ক্ষেত্রে। টুইন টাওয়ার হামলার ১৫ বছর পর ব্রাসেলসে বড় ধরনের একটি সন্ত্রাসী কর্মকা- সংঘটিত হলো। এর পরপরই আইএসের অপারেটিভরা ক্যালিফোর্নিয়ায় সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছিল।
২০০১ সালে অস্তিত্ব ছিল আল-কায়েদার। আজ দৃশ্যপটে আবির্ভূত হয়েছে ইসলামিক স্টেট। টার্গেট একটাই_ মুসলিমবিরোধী একটা জনমত গড়ে তোলা। ২০০১ সালের পর দীর্ঘদিন মুসলিমবিরোধী একটা মনোভাব যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘদিন মুসলমানরা, যারা সবাই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক, তারা সেখানে একটা আতঙ্কের মধ্যে ছিলেন। সে পরিবেশ থেকে বের হয়ে এসে মুসলমানরা যখন মার্কিন সমাজে তাদের অবস্থান শক্তিশালী করেছেন, ঠিক তখনই ক্যালিফোর্নিয়ায় সন্ত্রাসী কর্মকা-ে আইএসের সম্পৃক্ততা 'আবিষ্কৃত' হয়েছিল।
আইএসের কর্মকা- এখন অনেক দেশেই ছড়িয়ে পড়ছে। আইএস এখন 'দূরবর্তী খিলাফত' প্রতিষ্ঠার কথা বলছে। ২০১৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর আইএস মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় তথাকথিত 'খিলাফত' প্রতিষ্ঠার যে ম্যাপ প্রকাশ করেছে তাতে উপমহাদেশের দেশগুলোও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ফ্রান্স ও বেলজিয়ামে যে হামলা চালানো হয়েছিল তা 'খিলাফত' প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে করা হয়েছিল বলে আইএসের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। ইউরোপে তারা যে 'খিলাফত' প্রতিষ্ঠা করতে চায় তাকে তারা বলছে 'এমিরাত অব আন্দালুসিয়া'। ঠিক তেমনি পাকিস্তান ও আফগানিস্তান নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছে 'খোরাসান রাজ্য', যা ইসলামিক খিলাফতের অংশ। মধ্য এশিয়ার একটি ঐতিহাসিক অঞ্চল ছিল খোরাসান। মধ্যযুগে যেমনটা ছিল তেমনি করে ইরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, প্রায় সমগ্র আফগানিস্তান, দক্ষিণ তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান, ভারত ও চীনের একটা অংশকে খোরাসানের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এখানে আরো একটি বিষয় লক্ষণীয়। আফ্রিকাসহ বেশ কিছু দেশে কিছু জঙ্গি সংগঠন আইএসের প্রতি তাদের আনুগত্য প্রকাশ করেছে। যেমন বোকো হারাম (নাইজেরিয়া), আল শাবাব (সোমালিয়া), আনসার বায়াত আল মাকডিস (মিসর), পশ্চিম আফ্রিকায় মুভমেন্ট ফর ইউনিটি অ্যান্ড জিহাদ, তেহরিকে তালিবানের (পাকিস্তান) কথা। বলা ভালো, বোকো হারাম এখন শুধু উত্তর নাইজেরিয়ার বিশাল অংশই নিয়ন্ত্রণ করছে না, বরং পাশের মালি, ক্যামেরুন, নাইজারের প্রত্যন্ত অঞ্চলও নিয়ন্ত্রণ করছে। সুতরাং আজ যখন আইএস বাংলাদেশে তার সংগঠনপ্রধানের নাম ঘোষণা করে এবং বাংলাদেশে একটি ঘাঁটি গড়ার কথা ঘোষণা করে, একে হালকাভাবে নেয়া ঠিক হবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, বাংলাদেশে আইএস নেই। এর পেছনে হয়তো সত্যতা আছে। কিন্তু তারা সুযোগ খুঁজছে। আমাদের মধ্যকার বিভেদ, ফাঁদ, দরিদ্রতা, অসমতা ইত্যাদি একটি ক্ষেত্র তৈরি করতে পারে এ অঞ্চলে তাদের ঘাঁটি তৈরি করার। আমাদের সতর্ক হওয়ার সময় এখনই। কিন্তু বাস্তবতা বলে বাংলাদেশে স্থানীয়ভাবে জঙ্গিরা যখন তৎপর হয়ে উঠেছে, তখন জঙ্গি দমন প্রশ্নে নূ্যনতম যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, তা হয়নি। ফলে বড় দলগুলোর মধ্যে বিভেদ ও দ্বন্দ্বের সুযোগ নিয়েছে স্থানীয় জঙ্গিরা। আর তাদের কারো কারো সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গি নেটওয়ার্কের সম্পর্ক থাকা বিচিত্র কিছু নয়।
আমাদের জন্য দুর্ভাগ্য এখানেই যে, দেশে একটি পার্লামেন্ট থাকলেও জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সম্পর্কিত এ জঙ্গিবাদের বিষয়টি নিয়ে আমরা পার্লামেন্টে আলোচনা হতে দেখিনি। তথাকথিত একটি বিরোধী দল সংসদে রয়েছে বটে, কিন্তু তাদের কোনো কর্মকা- নেই। উপরন্তু সরকারি দলের শীর্ষস্থানীয় নেতা-নেত্রীদের মধ্যে বিএনপিবিরোধী মনোভাব এখনো অব্যাহত রয়েছে। এমন কথাও বলা হয়েছে, দুই বিদেশি হত্যাকা-ের সঙ্গে বিএনপি ও জামায়াত জড়িত। অবশ্যই আমরা চাইব এসব হত্যাকা-ের ব্যাপারে তথ্য-উপাত্ত উপস্থাপন করা হোক। কেননা জঙ্গিবাদের এ সমস্যাটা শুধু সরকার বা আওয়ামী লীগের একক কোনো সমস্যা নয়। বরং এ সমস্যাটা বিএনপিরও এবং সমগ্র জাতিরও। আমরা আইএসের নির্মম হত্যাকা-ের ভিডিও সংবাদ দেখেছি। কেনিয়ায় বোকো হারামের মেয়েশিশু অপহরণের কাহিনীও পত্রপত্রিকা থেকে পড়েছি। ওইসব পরিস্থিতির সঙ্গে বাংলাদেশের পরিস্থিতি আমরা মেলাতে চাই না। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ উৎখাতে তাই প্রয়োজন একটি জাতীয় ঐকমত্য। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তটাও জরুরি, যাতে প্রকৃত 'সত্য' বেরিয়ে আসে। অর্থাৎ আমরা সত্যি সত্যিই দেখতে চাই বাংলাদেশে আইএসের অস্তিত্ব আছে কি নেই। কিংবা অতীতে সব হত্যাকা-ের সঙ্গে আইএসের তথাকথিত সম্পৃক্ততার অভিযোগটিও আমরা খতিয়ে দেখতে চাই। এ ক্ষেত্রে যদি 'বেস্নম গেম' হয়, যদি বিশেষ কোনো ব্যক্তি বা দলকে টার্গেট করা হয়, তাতে প্রকৃত 'সত্য' বেরিয়ে আসবে না। আমাদের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো অনেক ভালো কাজ করছে। সম্প্রতি মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের রিপোর্টে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নিয়ে প্রশ্ন করলেও, অনেকেই এটা মানতে চাইবেন না। তাদের দক্ষতার অভাব নেই। নেই কমিটমেন্টেরও অভাব। র‌্যাব নিয়ে অনেক প্রশ্ন থাকলেও এ বাহিনীর অনেক কৃতিত্ব রয়েছে। তাদের কৃতিত্বকে আমরা ছোট করতে পারি না। তবে সন্ত্রাসবাদ দমনে তাদের দক্ষতা, কৌশল, পরিকল্পনা বাড়ানো দরকার।
একটি শক্তিশালী 'কাউন্টার ইনটেলিজেন্স' ইউনিট প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে ইতোমধ্যে। এ মুহূর্তে এ দেশে এমন কোনো পরিস্থিতির উদ্ভব হয়নি, যাতে জঙ্গি দমনে আমাদের বৈদেশিক সাহায্যের প্রয়োজন। বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর আমি আস্থাটা রাখতে চাই। তবে সেই সঙ্গে এও আমাদের বিবেচনায় নিতে হবে যে, জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। পৃথিবীর প্রায় সব দেশ এখন কোনো না কোনোভাবে এ জঙ্গিবাদে আক্রান্ত। তাই বৈশ্বিক একটা ঐকমত্য প্রয়োজন। একই সঙ্গে আরো একটা বিষয় আমরা বিবেচনায় নিতে পারি। তা হচ্ছে আঞ্চলিক সহযোগিতা।
আফ্রিকায় 'বোবো হারাম' সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকে মোকাবেলা করার জন্য আফ্রিকান ঐক্য পরিষদ একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা নিজেরা তথ্য বিনিময় করবে এবং ঐকমত্যভাবে ওই সমস্যা মোকাবেলা করবে। জঙ্গি সমস্যাটি সার্কের ফোরামে আলোচনা হয়েছে। উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা বিবিআইএন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। অর্থাৎ কানেকটিভিটির আওতায় বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত (সাত বোন রাজ্য) ও নেপাল এখন থেকে একসঙ্গে কাজ করবে। এ সহযোগিতার আলোকে আমরা জঙ্গিবাদ অন্তর্ভুক্ত করতে পারি। এ চারটি দেশ স্থানীয় জঙ্গিদের মুভমেন্ট মনিটর করতে পারে। তথ্য বিনিময় করতে পারে। একই সঙ্গে বৈদেশিক বিশেষ করে জাতিসংঘের টেকনিক্যাল সহযোগিতারও প্রয়োজন রয়েছে। জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে অর্থায়নের প্রশ্নটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। তাই এদিকে নজরদারি বাড়ানো দরকার। জঙ্গি দমনে (মধ্যপ্রাচ্যে) গঠিত হয়েছে এষড়নধষ ঈড়ধষরঃরড়হ ঃড় পড়ঁহঃবৎ ওঝওখ. ৬২টি দেশ এতে যোগ দিয়েছে। বাংলাদেশ এখনো তাতে যোগ দেয়নি। ভারত, পাকিস্তান ও চীনও এ অ্যালায়েন্সে যোগ দেয়নি। তবে বাংলাদেশ এষড়নধষ ঋঁহফ ভড়ৎ ঈড়সসঁহরঃু ঊহমধমবসবহঃ ধহফ জবংরষরবহপব-এর বোর্ড মেম্বার। এদের মূল কাজ হচ্ছে উগ্রবাদ দমন করা। 'অংশীদারিত্ব ও সংলাপ' চুক্তির পরবর্তী সভায় বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের বিষয়টি যে উঠবে, তা স্পষ্ট করেই বলা যায়। তাই আমাদের প্রস্তুতি থাকা দরকার। জঙ্গিবাদের উত্থানকে হালকাভাবে দেখার কোনো সুযোগ নেই। কোনো না কোনোভাবে স্থানীয় জঙ্গিরা কারো মদদ পাচ্ছে। এরা কারা তা খুঁজে বের করার দায়িত্ব গোয়েন্দাদের। এদের আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততা খুঁজে বের করা দরকার। সেই সঙ্গে আরো একটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে আইএসের মুখপাত্র মাসিক পত্রিকা 'দাবিক'-এর বাংলা সংস্করণ অনলাইনে পাওয়া যায়। এখানে 'দাবিক'-এ প্রকাশিত সংবাদ, প্রবন্ধ বাংলায় অনুবাদ করে প্রকাশ করা হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, এর সঙ্গে বাংলাদেশি কেউ জড়িত কিনা, তা জানা জরুরি। অত্যাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে এ ধরনের অনলাইন প্রকাশনার প্রচার বন্ধ করা যায় কিনা, সে ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ মতামত নেয়াও জরুরি। আমরা বার বার বলে আসছি, বাংলাদেশে আইএসের সাংগঠনিক কাঠামো নেই। এর পেছনে অনেক কারণ আছে। প্রথমটি বাংলাদেশ অত্যন্ত ঘনবসতিপূর্ণ একটি দেশ। এখানে জঙ্গি কার্যক্রম ফাঁস হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এ ঝুঁকি অন্তত আইএস নেবে না। দ্বিতীয়ত, আইএসের কর্মকা- পরিচালনার জন্য পাশের দেশগুলোর সাহায্য ও সহযোগিতা প্রয়োজন। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এ সহযোগিতা তারা পাবে না। তৃতীয়ত, আইএস গেরিলা কায়দায় সন্ত্রাসী কর্মকা- পরচালনা করে না। এদের স্ট্রাটেজি ভিন্ন। এদের নিজস্ব সেনাবাহিনী পর্যন্ত আছে। বাংলাদেশে এটা সম্ভব নয়। চতুর্থত, বাংলাদেশে মূলত একটি সহনীয় ইসলাম রয়েছে। এ সহনীয় বা লিবারেল ইসলাম জঙ্গিবাদকে কোনো অবস্থাতেই সমর্থন করবে না। তাই আইএসের মতো জঙ্গি সংগঠনের বিকাশের সম্ভাবনা এখানে ক্ষীণ। তার পরও একজন শেখ ইবরাহিম আল হানিফের সাক্ষাৎকারটি গুরুত্বের সঙ্গে নেয়া উচিত। এটা একটি ভুয়া নাম। ওই সাক্ষাৎকারটি প্রপাগান্ডার একটি অংশ মাত্র।

1 comments: