রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

বাংলাদেশে আল কায়দার উপস্থিতি ও বৈশ্বিক জঙ্গি তৎপরতা


 
  
বাংলাদেশে আল কায়দা কিংবা ইসলামিক স্টেট (আইএস)’র অস্তিত্ব নিয়ে বড় ধরণের বিতর্ক রয়েছে। আর এই বিতর্কের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দিয়েছে দুটো সংবাদ। প্রথম সংবাদটিতে বলা হয়েছে বাংলাদেশে ঘাঁটি গেড়ে ভারতে হামলা চালাতে চায় আইএস। আর দ্বিতীয় সংবাদটিতে আমাদের তথ্যমন্ত্রী ভারতের একটি জাতীয় দৈনিকের সাথে সাক্ষাৎকারে স্বীকার করেছেন আল কায়দা নেতা লাদেনের প্রশিক্ষণ নিয়ে ৮ হাজার জঙ্গি আছে দেশে।
সারা বিশ্বে জঙ্গি তৎপরতা বাড়ছে। আইএস তাদের কর্মতৎপরতা সিরিয়া-ইরাকের বাইরে গিয়ে ব্রিটেন, ফ্রান্স আর বেলজিয়ামে সম্প্রসারণ করেছে। বাংলাদেশে সাম্প্রতিককালে ইতালি ও জাপানি নাগরিককে হত্যা করা হয়েছে। ঈশ্বরদীতে খ্রিস্টান ব্যাপ্টিস্ট মিশনের ধর্মপ্রচারক লুৎ সরকারকেও হত্যা করা হয়েছে। প্রতিটি ঘটনায় আইএস জড়িত এটা জঙ্গি কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা সংস্থা SITE (Search for International Terrorist Entities)-এর পক্ষ থেকে বলা হলেও, সরকারের পক্ষ থেকে বারবার অস্বীকার করা হচ্ছিল। কিন্তু আইএস এর মুখপাত্র হিসেবে বিশ্বব্যাপী পরিচিত ‘দাবিক’ ম্যাগাজিনে অতি সম্প্রতি তাদের ১৪তম সংখ্যায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশে শক্ত ঘাঁটি করতে চায় আইএস। এর মাধ্যমে ভবিষ্যতে ‘হিন্দু ভারত’ ও ‘বৌদ্ধ বার্মা’য় জিহাদ পরিচালনা করতে চায় আইএস।
বাংলাদেশ শাখার প্রধানের (শেখ আবু ইব্রাহিম আল হানিফ) সাক্ষাৎকারও ছাপা হয়েছে ওই সংখ্যায়। এই ঘটনা যখন বাংলাদেশে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে তখন তথ্যমন্ত্রী ভারতীয় সংবাদপত্র দি হিন্দুতে দেয়া একটি বক্তব্য একইসাথে নতুন করে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশে আল কায়দার ট্রেনিংপ্রাপ্ত ৮ হাজার জঙ্গি আছে, এটা বহির্বিশ্বেও আলোড়ন তুলবে। জঙ্গি ওয়ার লিস্টের তালিকায় এখন বাংলাদেশকে দেখা হতে পারে। এতে করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হতে বাধ্য। এখানে বিশেষ করে উল্লেখ করা প্রয়োজন দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিশেষ করে ইন্দোনেশিয়ায়, ফিলিপাইনে ইসলামিক জঙ্গিরা তৎপর।
এদের কর্মকাণ্ড একাধিকবার আন্তর্জাতিক খবরের জন্ম দিয়েছে। ফিলিপাইনে আবু সায়াফ গ্রুপের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড কিংবা ইন্দোনেশিয়ায় জামিয়া ইসলামিয়ার হাতে বিদেশি নাগরিকদের হত্যাকাণ্ডের ঘটনা এই দেশ দুটো সম্পর্কে বিশ্বে একটি বাজে ধারণার জন্ম দিয়েছে। এ অঞ্চলে আইএস’র নেটওয়ার্ক কতটুকু সম্প্রসারিত হয়েছে, তা জানা না গেলেও আল কায়দার প্রভাব আছে। এ অঞ্চলের বিভিন্ন ইসলামিক জঙ্গি গোষ্ঠীর সাথে আল কায়দা একটা সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। ফলে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বেড়ে যাওয়ায় এ অঞ্চলের জঙ্গিরাও যে এতে করে উৎসাহিত হবে, তা বলার আর অপেক্ষা রাখে না।
সাম্প্রতিক সময়ে জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে ইসলামি জঙ্গি গোষ্ঠীকে জড়িত করলেও অভিযুক্ত জঙ্গিদের ব্যক্তিজীবন তাদের জীবনধারা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে কিংবা যায় ইসলাম ধর্মের সঙ্গে এদের কোনো সম্পর্ক ছিল না বা নেই। প্যারিস হামলার মূল পরিকল্পনাকারী আবদেল হামিদ আবাউদ নিজে কোনো দিন কোরান পড়েননি। নামাজও পড়তেন না। তার চাচাতো বোন নারী বোমাবাজ হাসনা বুলাচেন পশ্চিমা সংস্কৃতি ও জীবনে বিশ্বাসী ছিলেন, এমনটাই জানা যায়। ফলে জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই বলেই অনেকে মনে করেন।
যে প্রশ্নটি এখন অনেকেই করার চেষ্টা করেন, তা হচ্ছে, এর শেষ কোথায়? প্যারিস ট্র্যাজেডিই কি শেষ? যেভাবে ব্রাসেলসে সন্ত্রাস-বিরোধী অভিযান পরিচালিত হয়েছে বা হচ্ছে তাতে করে কি এ ধরণের হামলা আগামীতেও রোধ করা সম্ভব হবে? এর জবাব সম্ভবত না বাচক। কেননা ইউরোপে বিশাল এক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে আইএস। একটি ‘শক্তি’ তাদের উৎসাহ যোগাচ্ছে। সম্ভবত ইসরাইলি গোয়েন্দা সংস্থার প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে এই আন্দোলনের পেছনে। সুদূরপ্রসারী একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই এ ধরণের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালানো হচ্ছে এবং আগামীতেও হবে বলে আশঙ্কা রয়েছে। কতগুলো উদ্দেশ্য পরিষ্কার।
এক. ৯/১১-এর পর যেভাবে একটি ‘মুসলমান বিদ্বেষী’ মনোভাব সারা যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে গিয়েছিল এখন প্যারিস ঘটনাবলির পর সারা ইউরোপে একটি ‘মুসলমান বিদ্বেষী’ সন্ত্রাসবাদের ঝুঁকিতে বিশ্বমনোভাব ছড়িয়ে যাবে। মুসলমানরা (যেসব শরণার্থীকে ইতোমধ্যে ইউরোপে আশ্রয় দেয়া হয়েছে) সব সময় থাকবেন এক ধরণের ‘নিরাপত্তা বলয়’-এর ভেতর। তাদের সব কর্মকাণ্ড মনিটর করা হবে। তারা ইউরোপে আশ্রয় পেয়েছেন বটে কিন্তু তাদের এক ধরণের ‘বস্তিজীবন’ যাপনে বাধ্য করা হবে। তাদের জন্য তৈরি করা হবে ‘কংক্রিটের বস্তি’ এবং সেখানেই তাদের বসবাসে বাধ্য করা হবে। ইউরোপের সাধারণ মানুষের সঙ্গে মেলামেশা নিষিদ্ধ করা হবে। জার্মানিতে হিটলার যেভাবে ইহুদিদের ‘কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পে’ রাখত কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদী যুগে যেভাবে হোমল্যান্ড সৃষ্টি করে কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠীকে শ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠী থেকে আলাদা করে রাখা হতো, অনেকটা সেভাবেই সিরীয় অভিবাসীদের এখন এক ধরণের ‘ঘেটো’ জীবনযাপনে বাধ্য করা হবে।
দুই.
উগ্রপন্থী তথা কনজারভেটিভরা প্যারিস ঘটনায় ‘উপকৃত’ হবে। ফ্রান্সে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন আগামীতে। নির্বাচনে ‘বিজয়ী’ করে তাদের জাতীয় রাজনীতিতে নিয়ে আসা হবে এবং তাদের দিয়ে এক ধরণের ‘নোংরা রাজনীতি’ করানো হবে। অর্থাৎ ‘ইউরোপ হবে মুসলমান-মুক্ত’— এ ধরণের একটি স্লোগান ইউরোপের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে—এমন আশঙ্কা অমূলক নয়। ইতোমধ্যে পোল্যান্ডসহ কয়েকটি দেশ মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের বাদ দিয়ে খ্রিস্টীয় ধর্মাবলম্বী শরণার্থীদের গ্রহণ করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। 
অন্যদিকে ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে সামনে রেখে সেখানে কট্টরপন্থীরা সক্রিয় হচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য এর বড় প্রমাণ। তার মুসলমান বিদ্বেষী মনোভাব বাহ্যত আইএসকে যুক্তরাষ্ট্রে ‘অবস্থান’ করতে সাহায্য করবে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ৬৫ দেশের সমন্বয়ে একটি আইএস বিরোধী অ্যালায়েন্স করেছে। রাশিয়া এই জোটে নেই। কিন্তু রাশিয়া আলাদাভাবে আইএস বিরোধী অভিযান পরিচালনা করছে। তবে অচিরেই আইএস বিরোধী অভিযানে ফাটল দেখা দেবে। পশ্চিমা শক্তিগুলোর মাঝে যদি ফাটল থাকে তাতে লাভ ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের। অধ্যাপক চস্পুডোভস্কি তার বহুল আলোচিত গ্রন্থ the Globalization of War : America’s Long war against Humanity-তে উল্লেখ করেছেন, বিশ্বের সর্বত্র জঙ্গি গোষ্ঠীর উত্থানের পেছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রচ্ছন্ন ‘হাত’ রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্র ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ নামে যে অভিযান পরিচালনা করে আসছে তাতে মূলত তিনটি উদ্দেশ্য কাজ করে। এক. গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করা, দুই. অর্থনৈতিক অবরোধ, তিন. সরকার পরিবর্তন। ইরাক ও লিবিয়ার ক্ষেত্রে এই স্ট্র্যাটেজি ব্যবহার করা হয়েছে। সিরিয়ার ক্ষেত্রে এই স্ট্রাটেজি ব্যবহার করা হলেও তা সফল হয়নি। এই স্ট্র্যাটেজি কোনো পরিবর্তন ডেকে আনতে পারেনি। যেসব দেশে এই স্ট্র্যাটেজি প্রয়োগ করা হয়েছে সেখানে দরিদ্রতা বেড়েছে, অর্থনীতি ধ্বংস হয়েছে এবং বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে (ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়া)। ‘মানবাধিকার রক্ষা ও পশ্চিমা গণতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠার নামে এ ধরণের অভিযান পরিচালনা কোনো সুফল বয়ে আনেনি।
ইউরোপে কিংবা পশ্চিম আফ্রিকাতে অতি সম্প্রতি ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, সেখানে সন্ত্রাসীরা একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। সন্ত্রাসীরা প্যারিস কিংবা ব্রাসেলসের সমাজ জীবনের কত গভীরে প্রবেশ করেছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায়। গোয়েন্দাদের চোখকে ফাঁকি দিয়ে একাধিক স্থানে আক্রমণ চালানো হয়েছিল। খোদ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ওঁলাদ যখন একটি স্টেডিয়ামে ফুটবল ম্যাচ উপভোগ করছিলেন তখন ওই স্টেডিয়ামের বাইরে ৩ আত্মঘাতী বোমারু নিজেদেরকে বিস্ফোরণের মাধ্যমে উড়িয়ে দিয়েছিল।

গোয়েন্দারা এটা আঁচ করতে পারেনি। চিন্তা করা যায়, সন্ত্রাসীরা কালাশনিকভ রাইফেল ব্যবহার করে ‘পাখির মতো’ নির্বিচারে একটি কনসার্ট হলে কিভাবে মানুষ হত্যা করেছে! এই রাইফেল সিরিয়া থেকে আসেনি। সংগ্রহ করা হয়েছিল ফ্রান্সের ভেতর থেকেই। ফ্রান্সে যে এ রকম একটি হামলা হতে পারে তা ইসলামিক স্টেটের প্রোপাগান্ডা ম্যাগাজিন ‘দাবিক’-এ ফেব্রুয়ারি মাসে ৭ম সংখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছিল। ফ্রান্স কেন সমস্ত ইউরোপীয় রাষ্ট্র তথা যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতা এখানেই যে ‘দাবিক’-এ অভিযুক্ত আবাউদের (ফ্রান্সে তার পরিচিতি ছিল আবু উমর আল বালঝিকি নামে) সাক্ষাৎকার ছাপা হলেও এর প্রতিরোধে তারা কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে পারেননি। যেমনটি তারা নিতে পারেনি নিউইয়র্ক ও টুইন টাওয়ার-এর ক্ষেত্রেও। টুইন টাওয়ার-এর হামলার ১৫ বছর পর ব্রাসেলসে বড় ধরণের একটি সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংঘটিত হলো। এই সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের পরপরই আইএস এর অপারেটিভরা ক্যালিফোর্নিয়াতে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছিল।
২০০১ সালে অস্তিত্ব ছিল আল কায়দার। আজ দৃশ্যপটে আবির্ভূত হয়েছে ইসলামিক স্টেট। টার্গেট একটাই—মুসলমান বিরোধী একটা জনমত গড়ে তোলা। ২০০১ সালের পর দীর্ঘদিন মুসলমান বিরোধী একটা মনোভাব যুক্তরাষ্ট্রসহ সারা বিশ্বে ছড়িয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘদিন মুসলমানরা, যারা সবাই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক, তারা সেখানে একটা আতঙ্কের মধ্যে ছিলেন। সেই পরিবেশ থেকে বের হয়ে এসে মুসলমানরা যখন মার্কিন সমাজে তাদের অবস্থান শক্তিশালী করেছে, ঠিক তখনই ক্যালিফোর্নিয়ায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে আইএসের সম্পৃক্ততা ‘আবিষ্কৃত’ হয়েছিল। 
আইএস এর কর্মকাণ্ড এখন অনেক দেশেই ছড়িয়ে পড়ছে। আইএস এখন ‘দূরবর্তী খিলাফত’ প্রতিষ্ঠার কথা বলছে। ২০১৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর আইএস মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় তথাকথিত ‘খিলাফত’ প্রতিষ্ঠার সংকল্প প্রকাশ করেছে তাতে উপমহাদেশের দেশগুলোও অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। ফ্রান্স এবং বেলজিয়ামে যে হামলা চালানো হয়েছিল, তা ‘খিলাফত’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে করা হয়েছিল বলে আইএস এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। ইউরোপে তারা যে ‘খিলাফত’ প্রতিষ্ঠা করতে চায় তাকে তারা বলছে 'আমিরাত অব আন্দালুসিয়া।
ঠিক তেমনি পাকিস্তান ও আফগানিস্তান নিয়ে প্রতিষ্ঠা করেছে খোরাসান রায়, যা ইসলামিক খিলাফতের অংশ। মধ্য এশিয়ার একটি ঐতিহাসিক অঞ্চল ছিল খোরাসান। মধ্যযুগে যেমনটা ছিল তেমনি করে ইরানের উত্তর পূর্বাঞ্চল, প্রায় সমগ্র আফগানিস্তান, দক্ষিণ তুর্কমেনিস্তান, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান, ভারত ও চীনের একটা অংশকে খোরাসানের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এখানে আরো একটি বিষয় লক্ষণীয়—আফ্রিকাসহ বেশ কিছু দেশে কিছু জঙ্গি সংগঠন আইএস এর প্রতি তাদের আনুগত্য প্রকাশ করেছে। যেমন বোকো হারাম (নাইজেরিয়া), আল সাবাব (সোমালিয়া), আনসার বায়াত আল মাকডিস (মিশর), পশ্চিম আফ্রিকায় ‘মুভমেন্ট ফর ইউনিটি এন্ড জিহাদ, তেহরিকে আলিবান (পাকিস্তান) এর কথা। বলা ভালো বোকো হারাম এখন শুধুমাত্র উত্তর নাইজেরিয়ায় বিশাল অংশই নিয়ন্ত্রণ করছে না।
বরং পার্শ্ববর্তী মালি, ক্যামেরুন, নাইজারের প্রত্যন্ত অঞ্চলও নিয়ন্ত্রণ করছে। সুতরাং আজ যখন আইএস বাংলাদেশে তার সংগঠন প্রধানের নাম ঘোষণা করে, এটাকে হালকাভাবে নেয়া ঠিক হবে না। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন বাংলাদেশে আইএস নেই। এর পেছনে হয়ত সত্যতা আছে। কিন্তু তারা সুযোগ খুঁজছে। আমাদের মধ্যকার বিভেদ, দরিদ্রতা, অসমতা ইত্যাদি একটি ক্ষেত্র তৈরি করতে পারে এই অঞ্চলে তাদের ঘাঁটি তৈরি করার। আমাদের সতর্ক হবার সময় এখনই।
Poriborton
19.04.16

0 comments:

Post a Comment