গত নভেম্বরে প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার মধ্য দিয়ে বিশ্বব্যাপী নতুন করে
যে ‘সন্ত্রাসী হামলার ঢেউ’-এর সৃষ্টি হয়েছিল, তা ব্রাসেলস হয়ে সর্বশেষ
ঘটনায় লাহোরে আছড়ে পড়ল। প্যারিস কিংবা ব্রাসেলস হামলার সঙ্গে একটা ‘মিল’
থাকলেও লাহোরে একই সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামলা চালিয়েছে, তা বলা যাবে না।
প্যারিস আর ব্রাসেলস হামলার সঙ্গে জড়িত ছিল ইসলামিক স্টেট বা আইএসের
জঙ্গিরা। অন্যদিকে লাহোরে এ সন্ত্রাসী হামলার দায়-দায়িত্ব স্বীকার করেছে
‘তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান’ (টিটিপি) ভেঙে গঠিত হওয়া কট্টরপন্থি ‘জামাত
উল আহরার’। এটা এ মুহূর্তে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না, ‘জামাত উল আহরার’-এর
সঙ্গে আইএসের আদৌ কোনো সম্পর্ক আছে কিনা। আইএস তাদের স্ট্র্যাটেজিতে
পরিবর্তন এনেছে। কিছু দিন আগ পর্যন্ত আইএস তার সন্ত্রাসী কর্মকা- সীমাবদ্ধ
রেখেছিল সিরিয়া ও ইরাকে। ইন্দোনেশিয়ার ঘটনাবলি দিয়ে এটা প্রমাণিত হয়েছে,
আইএস যে ‘দূরবর্তী খেলাফত’ প্রতিষ্ঠার কথা বলেছে, তার অংশ হিসেবেই তারা
‘কাতিনা নুসানতারা’ নামে সেখানে একটি সংগঠন গড়ে তুলে বড় ধরনের সন্ত্রাসী
কর্মকা- চালিয়েছে। বলার অপেক্ষা রাখে না, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায়, বিশেষ করে
ইন্দোনেশিয়া ও ফিলিপাইনে ইসলামিক জঙ্গিরা তৎপর। এদের কর্মকা- একাধিকবার
আন্তর্জাতিক সংবাদের জন্ম দিয়েছে। ফিলিপাইনে আবু সায়াফ গ্রুপের সন্ত্রাসী
কর্মকা- কিংবা ইন্দোনেশিয়ায় জামিয়া ইসলামিয়ার হাতে বিদেশি নাগরিকদের
হত্যাকা-ের ঘটনা এ দেশ দুটো সম্পর্কে বিশ্বে একটি বাজে ধারণার জন্ম দিয়েছে।
এ অঞ্চলে আইএসের নেটওয়ার্ক কতটুকু সম্প্রসারিত হয়েছে, তা জানা না গেলেও আল
কায়েদার প্রভাব আছে। এ অঞ্চলের বিভিন্ন ইসলামিক জঙ্গিগোষ্ঠীর সঙ্গে আল
কায়েদা একটা সম্পর্ক গড়ে তুলেছে। ফলে বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসী কর্মকা- বেড়ে
যাওয়ায় এ অঞ্চলের জঙ্গিরাও যে এতে করে উৎসাহিত হবে, তা বলার আর অপেক্ষা
রাখে না।
সাম্প্রতিক সময়গুলোয় জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে ইসলামিক জঙ্গিগোষ্ঠীকে জড়িত করলেও অভিযুক্ত জঙ্গিদের ব্যক্তিজীবন ও তাদের জীবনধারা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ইসলাম ধর্মের সঙ্গে এদের কোনো সম্পর্ক ছিল না। প্যারিস হামলার মূল পরিকল্পনাকারী আবদেল হামিদ আবাউদ নিজে কোনোদিন কোরআন পড়েননি। নামাজও পড়তেন না। তার চাচাতো বোন হাসনা পশ্চিমা সংস্কৃতি ও জীবনে বিশ্বাসী ছিলেনÑ এমনটাই জানা যায়। ফলে জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই বলেই অনেকে মনে করেন।
যে প্রশ্নটি এখন অনেকেই করার চেষ্টা করেন, তা হচ্ছে এর শেষ কোথায়? প্যারিস কিংবা ব্রাসেলস ট্র্যাজেডিই কী শেষ? যেভাবে ব্রাসেলসে এখনো সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালিত হচ্ছে তাতে করে কি এ ধরনের হামলা আগামীতে রোধ করা সম্ভব হবে? এর জবাব সম্ভবত না বাচক। কেননা ইউরোপে তো বিশাল এক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে আইএস। একটি ‘শক্তি’ তাদের উৎসাহ জোগাচ্ছে। সম্ভবত ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে এ আন্দোলনের পেছনে। সুদূরপ্রসারী একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকা- চালানো হচ্ছে। এবং আগামীতেও হবে বলে আশঙ্কা করছি। কতগুলো উদ্দেশ্য পরিষ্কার। ৯/১১-এর পর যেভাবে একটি ‘মুসলমানবিদ্বেষী’ মনোভাব সারা যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে গিয়েছিল, আজ প্যারিস ও ব্রাসেলস ঘটনাবলির পর সারা ইউরোপেও তেমনি একটি ‘মুসলমানবিদ্বেষী’ মনোভাব ছড়িয়ে গেছে। এখানে মুসলমানরা (যেসব শরণার্থীকে ইতোমধ্যে ইউরোপে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে) সব সময় থাকবেন এক ধরনের ‘নিরাপত্তাবলয়’-এর ভেতর। তাদের সব কর্মকা- মনিটর করা হবে। তারা ইউরোপে আশ্রয় পেয়েছেন বটে, কিন্তু তাদের এক ধরনের ‘বস্তি’ জীবনযাপনে বাধ্য করা হবে। তাদের জন্য তৈরি করা হবে ‘কংক্রিটের বস্তি’ এবং সেখানেই তাদের বসবাসে বাধ্য করা হবে। ইউরোপের সাধারণ মানুষের সঙ্গে মেলামেশা নিষিদ্ধ করা হবে। জার্মানিতে হিটলার যেভাবে ইহুদিদের ‘কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে’ রাখতেন কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদী যুগে যেভাবে হোমল্যান্ড সৃষ্টি করে কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠীকে শ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠী থেকে আলাদা করে রাখা হতো, অনেকটা সেভাবেই সিরীয় মুসলমান অভিবাসীদের এখন এক ধরনের ‘ফোটো’ জীবনযাপনে বাধ্য করা হবে। উগ্রপন্থিরা তথা কনজারভেটিভরা প্যারিস ঘটনায় ‘উপকৃত’ হয়েছে। ফ্রান্সে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। তারা নির্বাচনে ‘বিজয়ী’ হয়ে জাতীয় রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলেছে। এখন তাদের দিয়ে এক ধরনের ‘নোংরা রাজনীতি’ করানো হবে। অর্থাৎ ‘ইউরোপ হবে মুসলমানমুক্ত’Ñ এ ধরনের একটি সেøাগান ইউরোপের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে। ইতোমধ্যে পোল্যান্ডসহ বেশ কটি দেশ মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের বাদ দিয়ে খ্রিস্টীয় ধর্মাবলম্বী শরণার্থীদের স্থায়ীভাবে গ্রহণ করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে সেখানে কট্টরপন্থিরা সক্রিয় হচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য এর বড় প্রমাণ। তার মুসলমানবিদ্বেষী মনোভাব রুখতে আইএসকে যুক্তরাষ্ট্রে ‘অবস্থান’ করতে সাহায্য করবে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ৬৫ দেশের সমন্বয়ে একটি আইএসবিরোধী অ্যালায়েন্স রয়েছে। রাশিয়া এ জোটে নেই। কিন্তু রাশিয়া আলাদাভাবে আইএসবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছে। তবে অচিরেই আইএসবিরোধী অভিযানে ফাটল দেখা দেবে। পশ্চিমা শক্তিগুলোর মধ্যে যদি ফাটল থাকে, তাতে লাভ ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের। অধ্যাপক চস্সুডোভস্ক্রি তার বহুল আলোচিত ঞযব মষড়নধষরুধঃরড়হ ড়ভ ধিৎ : ধসবৎরপধ’ং ষড়হম ধিৎ ধমধরহংঃ যঁসধহরঃু গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, বিশ্বের সর্বত্র জঙ্গিগোষ্ঠীর উত্থানের পেছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রচ্ছন্ন ‘হাত’ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ নামে যে অভিযান পরিচালনা করে আসছে তাতে মূলত তিনটি উদ্দেশ্য কাজ করছে। গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করা, অর্থনৈতিক অবরোধ ও সরকার পরিবর্তন। ইরাক ও লিবিয়ার ক্ষেত্রে এ স্ট্র্যাটেজি ব্যবহার করা হয়েছে। সিরিয়ার ক্ষেত্রে এ স্ট্র্যাটেজি ব্যবহার করা হলেও তা সফল হয়নি। এ স্ট্র্যাটেজি কোনো পরিবর্তন ডেকে আনতে পারেনি। যেসব দেশে এ স্ট্র্যাটেজি প্রয়োগ করা হয়েছে, সেখানে দারিদ্র্য বেড়েছে, অর্থনীতি ধ্বংস হয়েছে এবং এক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে (ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়া)। মানবাধিকার রক্ষা ও পশ্চিমা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে এ ধরনের অভিযান পরিচালনা এখানে কোনো সুফল বয়ে আনেনি।
ইউরোপ কিংবা পশ্চিম আফ্রিকায় অতিসম্প্রতি ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসবাদী কর্মকা-ে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, সেখানে সন্ত্রাসীরা একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। সন্ত্রাসীরা প্যারিস কিংবা ব্রাসেলসের সমাজজীবনের কত গভীরে প্রবেশ করেছিল, তার প্রমাণ পাওয়া যায়। গোয়েন্দাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে একাধিক স্থানে আক্রমণ চালানো হয়েছিল। খোদ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ওলাঁদ যখন একটি স্টেডিয়ামে ফুটবল ম্যাচ উপভোগ করছিলেন, ওই স্টেডিয়ামের বাইরে তখন তিন আত্মঘাতী বোমারু নিজেদের বিস্ফোরণের মাধ্যমে উড়িয়ে দিয়েছিল। গোয়েন্দারা এটা আঁচ করতে পারেনি। চিন্তা করা যায়, সন্ত্রাসীরা কালাসনিকভ রাইফেল ব্যবহার করে ‘পাখির মতো’ নির্বিচারে একটি কনসার্ট হলে মানুষ হত্যা করেছিল? এ রাইফেল সিরিয়া থেকে আসেনি। সংগ্রহ করা হয়েছিল ফ্রান্সের ভেতর থেকেই। ফ্রান্সে যে এ রকম একটি হামলা হতে পারে তা ইসলামিক স্টেটের প্রপাগান্ডা ম্যাগাজিন ‘দাবিক’-এ (উধনরয়) ফেব্রুয়ারির সপ্তম সংখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছিল। ফ্রান্সে কেন, সারা ইউরোপীয় রাষ্ট্র তথা যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতা এখানেই যে ‘দাবিক’-এ অভিযুক্ত আবাউদের (ফ্রান্সে তার পরিচিতি ছিল আবু উমর আল বালঝিকি নামে) সাক্ষাৎকার ছাপা হলেও তা প্রতিরোধে তারা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি। যেমনটি তারা নিতে পারেনি নিউইয়র্কে ‘টুইন টাওয়ার’-এর ক্ষেত্রেও।
২০০১ সালে অস্তিত্ব ছিল আল কায়েদার। আজ দৃশ্যপটে আবির্ভূত হয়েছে ইসলামিক স্টেট। টার্গেট একটাইÑ মুসলমানবিরোধী একটা জনমত গড়ে তোলা। ২০০১ সালের পর দীর্ঘদিন মুসলমানবিরোধী একটা মনোভাব যুক্তরাষ্ট্রসহ সারাবিশ্বে ছড়িয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘদিন মুসলমানরা, যারা সবাই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক, তারা সেখানে একটা আতঙ্কের মধ্যে ছিলেন। সেই পরিবেশ থেকে বের হয়ে এসে মুসলমানরা যখন মার্কিন সমাজে তাদের অবস্থান শক্তিশালী করেছে, ঠিক তখনই ক্যালিফোর্নিয়ায় সন্ত্রাসী কর্মকা-ে আইএসের সম্পৃক্ততা ‘আবিষ্কৃত’ হয়েছিল। তাসফিন-রিজওয়ান দম্পতি যে বাড়িতে থাকতেন, সেখানে পুলিশ ‘হানা’ দিয়ে বেশ কিছু বিস্ফোরকও পেয়েছে। এ খবরও আমরা পেয়েছি পত্রপত্রিকা থেকে। এই ঘটনা মার্কিন সমাজে যে প্রভাব ফেলবে, মুসলমানবিদ্বেষী একটা মনোভাব যে আবারও সর্বত্র ছড়িয়ে যাবে, তা এক রকম নিশ্চিত করেই বলা যায়। মুসলমানবিদ্বেষী মনোভাব কেন শক্তিশালী হয়েছে, তার স্পষ্ট কারণও রয়েছে। তুলনামূলক বিচারে মার্কিন সমাজে মুসলমানরা অতটা ভয়ঙ্কর নয়, বরং শান্ত ও শিক্ষিত। মাত্র ১ শতাংশ মুসলমান বাস করে যুক্তরাষ্ট্রে। ২০৫০ সালে তা হবে ২ দশমিক ১ শতাংশ। মুসলমানরা যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার হারে দ্বিতীয় বৃহত্তম গোষ্ঠী। এমনকি মার্কিনিদের চেয়েও মুসলমানরা শিক্ষিত। প্রথম অবস্থানে রয়েছে ইহুদিরা। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে প্রায় ২ হাজার ৫শ মসজিদ রয়েছে, যে মসজিদগুলো প্রধানত জাতিগতভাবেই প্রতিষ্ঠিত। যেমনÑ বাংলাদেশি মুসলমানদের যেমনি নিজস্ব মসজিদ রয়েছে, তেমনি পাকিস্তানি, আমেরিকানদেরও আলাদা মসজিদ রয়েছে। ৯/১১-এর ঘটনাবলির পর এই মসজিদগুলো বারবার আক্রান্ত হয়েছে। বাংলাদেশি আমেরিকানরা যেখানে বসবাস করেন (বিশেষ করে নিউইয়র্কে), সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্যের প্রতীক হিসেবে তারা বাসাবাড়িতে মার্কিন পতাকা উত্তোলন করে রেখেছেন দীর্ঘদিন। সেই পরিস্থিতি অবশ্য এখন আর নেই। তবে সর্বশেষ ক্যালিফোর্নিয়ার ঘটনাবলির পর মুসলমানবিদ্বেষী মনোভাবটা আবার চাঙ্গা হবে এবং রিপাবলিকানরা এটাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইস্যু করবেÑ এটা দিব্যি দিয়ে বলা যায়। একই ঘটনা ঘটবে ইউরোপে, বিশেষ করে যেসব দেশে মুসলমানরা বেশি বসবাস করে। ফ্রান্স, ব্রিটেন, বেলজিয়াম, ইতালি বড় টার্গেট। এসব দেশে মুসলমানবিদ্বেষী মনোভাব শুধু শক্তিশালীই হবে না, বরং দক্ষিণপন্থিদের স্থানীয় প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে। ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি, জার্মানি ও ফ্রান্সের স্থানীয় পরিষদের নির্বাচনে দক্ষিণপন্থিরা ভালো ফল করেছে।
এই জঙ্গি তৎপরতা এখন সম্প্রসারিত হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ায়। পাকিস্তানে জঙ্গি তৎপরতা অনেক পুরনো। এই জঙ্গি তৎপরতা খোদ পাকিস্তানের অস্তিত্বকে এখন ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। পাকিস্তানের শক্তিশালী সেনাবাহিনীও আজ অসহায়। সর্বশেষ ঘটনায় লাহোরে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের নির্বাচনী এলাকা, সেখানে আত্মঘাতী বোমা হামলা প্রমাণ করে সন্ত্রাসীরা পাকিস্তান সমাজের কত গভীরে প্রবেশ করেছে। এই জঙ্গি তৎপরতা দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোতে ছড়িয়ে যেতে পারে। ভয়ের কারণ এটাই। ফলে ঐক্যবদ্ধভাবে যদি এই সমস্যার মোকাবিলা করা না যায়, তাহলে এই অঞ্চলে জঙ্গিবাদের আরও বিস্তার ঘটবে। চলতি বছরের শেষের দিকে ইসলামাবাদে সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু পাকিস্তানের সর্বশেষ জঙ্গি হামলা সেখানে একটি বড় ধরনের নিরাপত্তা সংকট সৃষ্টি করতে পারে। এই জঙ্গি তৎপরতা সব ধরনের উন্নয়নের পথে প্রধান অন্তরায়। দারিদ্র্যের পাশাপাশি এই সন্ত্রাসবাদ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সমস্যা। ব্রাসেলস হামলার পর লাহোরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৭২ জনের (যাদের মাঝে নারী ও শিশু অনেক) মৃত্যুর ঘটনা থেকে আমাদের শেখার আছে অনেক কিছু।
Daily Amader Somoy
03.04.16
সাম্প্রতিক সময়গুলোয় জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে ইসলামিক জঙ্গিগোষ্ঠীকে জড়িত করলেও অভিযুক্ত জঙ্গিদের ব্যক্তিজীবন ও তাদের জীবনধারা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ইসলাম ধর্মের সঙ্গে এদের কোনো সম্পর্ক ছিল না। প্যারিস হামলার মূল পরিকল্পনাকারী আবদেল হামিদ আবাউদ নিজে কোনোদিন কোরআন পড়েননি। নামাজও পড়তেন না। তার চাচাতো বোন হাসনা পশ্চিমা সংস্কৃতি ও জীবনে বিশ্বাসী ছিলেনÑ এমনটাই জানা যায়। ফলে জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই বলেই অনেকে মনে করেন।
যে প্রশ্নটি এখন অনেকেই করার চেষ্টা করেন, তা হচ্ছে এর শেষ কোথায়? প্যারিস কিংবা ব্রাসেলস ট্র্যাজেডিই কী শেষ? যেভাবে ব্রাসেলসে এখনো সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালিত হচ্ছে তাতে করে কি এ ধরনের হামলা আগামীতে রোধ করা সম্ভব হবে? এর জবাব সম্ভবত না বাচক। কেননা ইউরোপে তো বিশাল এক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে আইএস। একটি ‘শক্তি’ তাদের উৎসাহ জোগাচ্ছে। সম্ভবত ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থার প্রচ্ছন্ন সমর্থন রয়েছে এ আন্দোলনের পেছনে। সুদূরপ্রসারী একটি পরিকল্পনা বাস্তবায়নের অংশ হিসেবেই এ ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকা- চালানো হচ্ছে। এবং আগামীতেও হবে বলে আশঙ্কা করছি। কতগুলো উদ্দেশ্য পরিষ্কার। ৯/১১-এর পর যেভাবে একটি ‘মুসলমানবিদ্বেষী’ মনোভাব সারা যুক্তরাষ্ট্রে ছড়িয়ে গিয়েছিল, আজ প্যারিস ও ব্রাসেলস ঘটনাবলির পর সারা ইউরোপেও তেমনি একটি ‘মুসলমানবিদ্বেষী’ মনোভাব ছড়িয়ে গেছে। এখানে মুসলমানরা (যেসব শরণার্থীকে ইতোমধ্যে ইউরোপে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে) সব সময় থাকবেন এক ধরনের ‘নিরাপত্তাবলয়’-এর ভেতর। তাদের সব কর্মকা- মনিটর করা হবে। তারা ইউরোপে আশ্রয় পেয়েছেন বটে, কিন্তু তাদের এক ধরনের ‘বস্তি’ জীবনযাপনে বাধ্য করা হবে। তাদের জন্য তৈরি করা হবে ‘কংক্রিটের বস্তি’ এবং সেখানেই তাদের বসবাসে বাধ্য করা হবে। ইউরোপের সাধারণ মানুষের সঙ্গে মেলামেশা নিষিদ্ধ করা হবে। জার্মানিতে হিটলার যেভাবে ইহুদিদের ‘কনসেনট্রেশন ক্যাম্পে’ রাখতেন কিংবা দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদী যুগে যেভাবে হোমল্যান্ড সৃষ্টি করে কৃষ্ণাঙ্গ জনগোষ্ঠীকে শ্বেতাঙ্গ জনগোষ্ঠী থেকে আলাদা করে রাখা হতো, অনেকটা সেভাবেই সিরীয় মুসলমান অভিবাসীদের এখন এক ধরনের ‘ফোটো’ জীবনযাপনে বাধ্য করা হবে। উগ্রপন্থিরা তথা কনজারভেটিভরা প্যারিস ঘটনায় ‘উপকৃত’ হয়েছে। ফ্রান্সে স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। তারা নির্বাচনে ‘বিজয়ী’ হয়ে জাতীয় রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলেছে। এখন তাদের দিয়ে এক ধরনের ‘নোংরা রাজনীতি’ করানো হবে। অর্থাৎ ‘ইউরোপ হবে মুসলমানমুক্ত’Ñ এ ধরনের একটি সেøাগান ইউরোপের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়বে। ইতোমধ্যে পোল্যান্ডসহ বেশ কটি দেশ মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের বাদ দিয়ে খ্রিস্টীয় ধর্মাবলম্বী শরণার্থীদের স্থায়ীভাবে গ্রহণ করার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। অন্যদিকে ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সামনে রেখে সেখানে কট্টরপন্থিরা সক্রিয় হচ্ছে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্য এর বড় প্রমাণ। তার মুসলমানবিদ্বেষী মনোভাব রুখতে আইএসকে যুক্তরাষ্ট্রে ‘অবস্থান’ করতে সাহায্য করবে। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে ৬৫ দেশের সমন্বয়ে একটি আইএসবিরোধী অ্যালায়েন্স রয়েছে। রাশিয়া এ জোটে নেই। কিন্তু রাশিয়া আলাদাভাবে আইএসবিরোধী অভিযান পরিচালনা করছে। তবে অচিরেই আইএসবিরোধী অভিযানে ফাটল দেখা দেবে। পশ্চিমা শক্তিগুলোর মধ্যে যদি ফাটল থাকে, তাতে লাভ ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের। অধ্যাপক চস্সুডোভস্ক্রি তার বহুল আলোচিত ঞযব মষড়নধষরুধঃরড়হ ড়ভ ধিৎ : ধসবৎরপধ’ং ষড়হম ধিৎ ধমধরহংঃ যঁসধহরঃু গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, বিশ্বের সর্বত্র জঙ্গিগোষ্ঠীর উত্থানের পেছনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রচ্ছন্ন ‘হাত’ রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ নামে যে অভিযান পরিচালনা করে আসছে তাতে মূলত তিনটি উদ্দেশ্য কাজ করছে। গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করা, অর্থনৈতিক অবরোধ ও সরকার পরিবর্তন। ইরাক ও লিবিয়ার ক্ষেত্রে এ স্ট্র্যাটেজি ব্যবহার করা হয়েছে। সিরিয়ার ক্ষেত্রে এ স্ট্র্যাটেজি ব্যবহার করা হলেও তা সফল হয়নি। এ স্ট্র্যাটেজি কোনো পরিবর্তন ডেকে আনতে পারেনি। যেসব দেশে এ স্ট্র্যাটেজি প্রয়োগ করা হয়েছে, সেখানে দারিদ্র্য বেড়েছে, অর্থনীতি ধ্বংস হয়েছে এবং এক বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে (ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়া)। মানবাধিকার রক্ষা ও পশ্চিমা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নামে এ ধরনের অভিযান পরিচালনা এখানে কোনো সুফল বয়ে আনেনি।
ইউরোপ কিংবা পশ্চিম আফ্রিকায় অতিসম্প্রতি ঘটে যাওয়া সন্ত্রাসবাদী কর্মকা-ে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, সেখানে সন্ত্রাসীরা একটি শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। সন্ত্রাসীরা প্যারিস কিংবা ব্রাসেলসের সমাজজীবনের কত গভীরে প্রবেশ করেছিল, তার প্রমাণ পাওয়া যায়। গোয়েন্দাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে একাধিক স্থানে আক্রমণ চালানো হয়েছিল। খোদ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ওলাঁদ যখন একটি স্টেডিয়ামে ফুটবল ম্যাচ উপভোগ করছিলেন, ওই স্টেডিয়ামের বাইরে তখন তিন আত্মঘাতী বোমারু নিজেদের বিস্ফোরণের মাধ্যমে উড়িয়ে দিয়েছিল। গোয়েন্দারা এটা আঁচ করতে পারেনি। চিন্তা করা যায়, সন্ত্রাসীরা কালাসনিকভ রাইফেল ব্যবহার করে ‘পাখির মতো’ নির্বিচারে একটি কনসার্ট হলে মানুষ হত্যা করেছিল? এ রাইফেল সিরিয়া থেকে আসেনি। সংগ্রহ করা হয়েছিল ফ্রান্সের ভেতর থেকেই। ফ্রান্সে যে এ রকম একটি হামলা হতে পারে তা ইসলামিক স্টেটের প্রপাগান্ডা ম্যাগাজিন ‘দাবিক’-এ (উধনরয়) ফেব্রুয়ারির সপ্তম সংখ্যায় উল্লেখ করা হয়েছিল। ফ্রান্সে কেন, সারা ইউরোপীয় রাষ্ট্র তথা যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থার ব্যর্থতা এখানেই যে ‘দাবিক’-এ অভিযুক্ত আবাউদের (ফ্রান্সে তার পরিচিতি ছিল আবু উমর আল বালঝিকি নামে) সাক্ষাৎকার ছাপা হলেও তা প্রতিরোধে তারা কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারেনি। যেমনটি তারা নিতে পারেনি নিউইয়র্কে ‘টুইন টাওয়ার’-এর ক্ষেত্রেও।
২০০১ সালে অস্তিত্ব ছিল আল কায়েদার। আজ দৃশ্যপটে আবির্ভূত হয়েছে ইসলামিক স্টেট। টার্গেট একটাইÑ মুসলমানবিরোধী একটা জনমত গড়ে তোলা। ২০০১ সালের পর দীর্ঘদিন মুসলমানবিরোধী একটা মনোভাব যুক্তরাষ্ট্রসহ সারাবিশ্বে ছড়িয়ে গিয়েছিল। দীর্ঘদিন মুসলমানরা, যারা সবাই যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক, তারা সেখানে একটা আতঙ্কের মধ্যে ছিলেন। সেই পরিবেশ থেকে বের হয়ে এসে মুসলমানরা যখন মার্কিন সমাজে তাদের অবস্থান শক্তিশালী করেছে, ঠিক তখনই ক্যালিফোর্নিয়ায় সন্ত্রাসী কর্মকা-ে আইএসের সম্পৃক্ততা ‘আবিষ্কৃত’ হয়েছিল। তাসফিন-রিজওয়ান দম্পতি যে বাড়িতে থাকতেন, সেখানে পুলিশ ‘হানা’ দিয়ে বেশ কিছু বিস্ফোরকও পেয়েছে। এ খবরও আমরা পেয়েছি পত্রপত্রিকা থেকে। এই ঘটনা মার্কিন সমাজে যে প্রভাব ফেলবে, মুসলমানবিদ্বেষী একটা মনোভাব যে আবারও সর্বত্র ছড়িয়ে যাবে, তা এক রকম নিশ্চিত করেই বলা যায়। মুসলমানবিদ্বেষী মনোভাব কেন শক্তিশালী হয়েছে, তার স্পষ্ট কারণও রয়েছে। তুলনামূলক বিচারে মার্কিন সমাজে মুসলমানরা অতটা ভয়ঙ্কর নয়, বরং শান্ত ও শিক্ষিত। মাত্র ১ শতাংশ মুসলমান বাস করে যুক্তরাষ্ট্রে। ২০৫০ সালে তা হবে ২ দশমিক ১ শতাংশ। মুসলমানরা যুক্তরাষ্ট্রে শিক্ষার হারে দ্বিতীয় বৃহত্তম গোষ্ঠী। এমনকি মার্কিনিদের চেয়েও মুসলমানরা শিক্ষিত। প্রথম অবস্থানে রয়েছে ইহুদিরা। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে প্রায় ২ হাজার ৫শ মসজিদ রয়েছে, যে মসজিদগুলো প্রধানত জাতিগতভাবেই প্রতিষ্ঠিত। যেমনÑ বাংলাদেশি মুসলমানদের যেমনি নিজস্ব মসজিদ রয়েছে, তেমনি পাকিস্তানি, আমেরিকানদেরও আলাদা মসজিদ রয়েছে। ৯/১১-এর ঘটনাবলির পর এই মসজিদগুলো বারবার আক্রান্ত হয়েছে। বাংলাদেশি আমেরিকানরা যেখানে বসবাস করেন (বিশেষ করে নিউইয়র্কে), সেখানে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্যের প্রতীক হিসেবে তারা বাসাবাড়িতে মার্কিন পতাকা উত্তোলন করে রেখেছেন দীর্ঘদিন। সেই পরিস্থিতি অবশ্য এখন আর নেই। তবে সর্বশেষ ক্যালিফোর্নিয়ার ঘটনাবলির পর মুসলমানবিদ্বেষী মনোভাবটা আবার চাঙ্গা হবে এবং রিপাবলিকানরা এটাকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ইস্যু করবেÑ এটা দিব্যি দিয়ে বলা যায়। একই ঘটনা ঘটবে ইউরোপে, বিশেষ করে যেসব দেশে মুসলমানরা বেশি বসবাস করে। ফ্রান্স, ব্রিটেন, বেলজিয়াম, ইতালি বড় টার্গেট। এসব দেশে মুসলমানবিদ্বেষী মনোভাব শুধু শক্তিশালীই হবে না, বরং দক্ষিণপন্থিদের স্থানীয় প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করবে। ইতোমধ্যে আমরা দেখেছি, জার্মানি ও ফ্রান্সের স্থানীয় পরিষদের নির্বাচনে দক্ষিণপন্থিরা ভালো ফল করেছে।
এই জঙ্গি তৎপরতা এখন সম্প্রসারিত হয়েছে দক্ষিণ এশিয়ায়। পাকিস্তানে জঙ্গি তৎপরতা অনেক পুরনো। এই জঙ্গি তৎপরতা খোদ পাকিস্তানের অস্তিত্বকে এখন ঝুঁকির মুখে ঠেলে দিয়েছে। পাকিস্তানের শক্তিশালী সেনাবাহিনীও আজ অসহায়। সর্বশেষ ঘটনায় লাহোরে, যেখানে প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের নির্বাচনী এলাকা, সেখানে আত্মঘাতী বোমা হামলা প্রমাণ করে সন্ত্রাসীরা পাকিস্তান সমাজের কত গভীরে প্রবেশ করেছে। এই জঙ্গি তৎপরতা দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোতে ছড়িয়ে যেতে পারে। ভয়ের কারণ এটাই। ফলে ঐক্যবদ্ধভাবে যদি এই সমস্যার মোকাবিলা করা না যায়, তাহলে এই অঞ্চলে জঙ্গিবাদের আরও বিস্তার ঘটবে। চলতি বছরের শেষের দিকে ইসলামাবাদে সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু পাকিস্তানের সর্বশেষ জঙ্গি হামলা সেখানে একটি বড় ধরনের নিরাপত্তা সংকট সৃষ্টি করতে পারে। এই জঙ্গি তৎপরতা সব ধরনের উন্নয়নের পথে প্রধান অন্তরায়। দারিদ্র্যের পাশাপাশি এই সন্ত্রাসবাদ দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম সমস্যা। ব্রাসেলস হামলার পর লাহোরে আত্মঘাতী বোমা হামলায় ৭২ জনের (যাদের মাঝে নারী ও শিশু অনেক) মৃত্যুর ঘটনা থেকে আমাদের শেখার আছে অনেক কিছু।
Daily Amader Somoy
03.04.16
0 comments:
Post a Comment