রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

কেমন হচ্ছে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন?


তৃতীয় দফা ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন শেষ হয়েছে ২৩ এপ্রিল। কেমন হচ্ছে এ নির্বাচন? প্রথম দুই দফা নির্বাচনে ব্যাপক অনিয়ম, আগের রাতেই ব্যালটে সিল মারা, কেন্দ্র দখল করে প্রতিপক্ষ প্রার্থীদের বের করে দেয়াসহ ব্যাপক সহিংসতা ও প্রাণহানির ঘটনার যে সংস্কৃতি আমরা প্রত্যক্ষ করেছি, তারও প্রতিফলন ঘটেছে তৃতীয় দফায়। যদিও এবার ইসিকে আমরা কিছুটা ‘তৎপর’ হতে দেখেছি। গাজীপুরের এসপি এবং দুই ওসিকে বদলির নির্দেশ দিয়ে ইসি তার ইমেজ উদ্ধারে চেষ্টা করলেও, এরই মধ্যে আমরা ‘নির্বাচনী সংস্কৃতি’কে ধ্বংস করে ফেলেছি। তৃতীয় দফায়ও বিনা ভোটে ‘নির্বাচিত’ হতে যাচ্ছেন ২৫ জন চেয়ারম্যান, যারা সবাই আওয়ামী লীগের প্রার্থী। একই সঙ্গে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদে ৭৯ এবং সাধারণ সদস্য পদে ১৭৪ জন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। এর নাম কি নির্বাচন? পাঠক নিশ্চই আপনারা স্মরণ করতে পারবেন, গেল ৩০ ডিসেম্বর যে পৌরসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সেখানে ফেনী, পরশুরাম, দাগনভূঞা পৌরসভা নির্বাচনে সাধারণ ও সংরক্ষিত আসনের নির্বাচনে কী হয়েছিল। সাধারণ ও সংরক্ষিত আসনে ৪৮টি আসনের ৪৪ জন প্রার্থীই বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। শুধু একটি জেলার কথাই উল্লেখ করলাম। অন্য অনেক জেলায়ও একই ধরনের সংবাদ আমরা পেয়েছি। তবে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ইউপি চেয়ারম্যানের ‘নির্বাচন’কে অবৈধ মানতে রাজি নন সরকারি দলের নেতারা। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ এ ‘বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতার’ নির্বাচনকে ব্যাখ্যা করেছেন ভিন্নভাবে। বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হওয়াকে হানিফ ব্যাখ্যা করেছেন, ‘সরকারের উন্নয়নের প্রতি আস্থা’ বলে। তার বক্তব্য, ‘কেউ যদি স্থানীয় উন্নয়নের স্বার্থে সরকারের প্রতি আস্থা ব্যক্ত করে প্রার্থী না হন, সেক্ষেত্রে আমাদের কী অপরাধ?’ (সমকাল, ২৯ ফেব্রুয়ারি)। এ প্রশ্ন আসতেই পারেÑ কী অপরাধ? কিন্তু বাস্তবতা কী বলে? প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা দেয়া হচ্ছেÑ এমন খবর সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছে। সরকারি দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধেও নানা কথা আছে। আসলে নির্বাচন মানেই তো একধরনের প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকতে হবে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা না থাকলে ওই এলাকার জনগণের অর্থাৎ ভোটারদের আর সুযোগ থাকল না তাদের প্রার্থী পছন্দ করার। আমাদের সংবিধানের ৫৯(১) ধারায় স্পষ্ট বলা আছে, ‘আইনানুযায়ী নির্বাচিত ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গঠিত প্রতিষ্ঠাসমূহের উপর প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক প্রশাসনিক একাংশের স্থানীয় শাসনের ভার প্রদান করা হইবে।’ এখানে বলা হয়েছে, ‘নির্বাচিত ব্যক্তিদের’ কথা। এখন নির্বাচনের আগেই প্রথম দফায় ১১৪ জন কিংবা তৃতীয় দফায় ২৫ জনই যদি বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন, তাহলে কি সংবিধান লঙ্ঘন হয় না? আরও একটা কথাÑ আওয়ামী লীগ যাদের মনোনয়ন দিয়েছে, তাদের কারও কারও বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে। পৌরসভা নির্বাচনেও আমরা এমনটি দেখেছিলাম। ৩৩ মেয়র প্রার্থীর (আওয়ামী লীগ) বিরুদ্ধে মামলা ছিল। সৎ প্রার্থী না দিলে দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয় না। দল তাদের প্রার্থী না করে সৎ প্রার্থীদের মনোনয়ন দিতে পারত। এটা হলে ভালো হতো। আওয়ামী লীগ একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারত। সৎ প্রার্থী না হলে স্থানীয় পর্যায়ে সৎ রাজনীতি উপহার দেয়া যায় না। বড় দল হিসেবে আওয়ামী লীগের কাছে মানুষের প্রত্যাশা থাকে বেশি। আওয়ামী লীগ এ প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। উপরন্তু যে সাতটি পৌরসভায় আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা ‘বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায়’ নির্বাচিত হয়েছিলেন, সেখানে কী ধরনের ‘পরিস্থিতি’ বিরাজ করেছিল, তা আওয়ামী লীগের হাইকমান্ডের জানার কথা। ‘বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায়’ বিজয়ী হওয়ার কাহিনী দলের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার জন্য যথেষ্ট নয়। বিজয়ী মেয়র প্রার্থীদের মধ্যে ‘ব্যবসায়ী প্রার্থীদের’ প্রবণতা বেশি ছিল। ৯০৪ মেয়র প্রার্থীর মধ্যে ৬৫২ জন ব্যবসায়ী, অর্থাৎ শতকরা ৭২ দশমিক ১২ ভাগ ব্যবসায়ী ছিলেন। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি উভয় দলেই ব্যবসায়ীদের আধিক্য বেশি ছিল। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থীর ১৬৫ জন (শতকরা ৭৪ দশমিক ৬৬ ভাগ), আর বিএনপির ১৬২ জন (শতকরা ৭৮ দশমিক ৬৪) ছিলেন ব্যবসায়ী। (সূত্র সৃজন, ঢাকা)। তাদের মাঝে অনেকেই বিজয়ী হয়েছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, ব্যবসায়ীরা যখন মেয়র হন কিংবা ইউপি চেয়ারম্যান হন, তখন তিনি ব্যবসায়িক স্বার্থের ঊর্ধ্বে ওঠে, নিরপেক্ষভাবে কি স্থানীয় প্রশাসন পরিচালনা করতে পারবেন? পৌরসভায় কোটি কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজ হয়। একজন ব্যবসায়ীর এক্ষেত্রে স্বার্থ থাকে। আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে কি এ ধরনের মেয়র পাওয়া সম্ভব, যিনি ব্যবসায়িক স্বার্থের ঊর্ধ্বে থাকবেন? বাস্তবতা বলে, এটা সম্ভব নয়। আর সম্ভব নয় বলেই দুর্নীতি বৃদ্ধি পায়। আরও একটা কারণে ওই নির্বাচনের গুরুত্ব বেশি ছিল। দলীয়ভাবে নির্বাচন হওয়ায় জামায়াতে ইসলামী তাদের প্রতীক ‘দাঁড়িপাল্লা’ নিয়ে নির্বাচন করতে পারেনি। তবে জামায়াতের প্রার্থীরা মাঠে ছিলেন। তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। পেয়েছেন মাত্র একটি আসন। বিএনপির হাইকমান্ড এটি জানে। লিখিতভাবে অথবা প্রকাশ্যে ঘোষণার মাধ্যমে বিএনপি দুইটি আসন দিয়েছিল জোটভুক্ত এলডিপি ও জাতীয় পার্টিকে (জাফর)। এর বাইরে ধারণা করছি, প্রায় ২৬টি আসনে বিএনপি জামায়াতকে ছাড় দিয়েছিল। বলা বাহুল্য, জামায়াত প্রার্থীরা নির্বাচনে ভালো করেননি। ইসিতে জামায়াতের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে। দলটি নিষিদ্ধ ঘোষণার পর্যায়ে রয়েছে। সরকার সম্ভবত আইনি প্রক্রিয়াতেই জামায়াতকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করতে চায়। সাম্প্রতিক সময়ে জামায়াতের কর্মকা- নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। মানবতাবিরোধী অপরাধে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের কয়েকজনের ফাঁসি কার্যকর হয়েছে। এমনই এক পরিস্থিতিতে জামায়াত সমর্থকরা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। প্রার্থীরা স্থানীয়ভাবে পরিচিত। তাদের পরিচয় স্থানীয়ভাবে ভোটাররা জানেন। ওইসব আসনে বিএনপি প্রার্থী দেয়নি। ফলে ওই নির্বাচন প্রমাণ করেছে, জামায়াতের প্রতি জনসমর্থন এতটুকুও নেই। এ জনসমর্থন নিয়ে জামায়াত নতুন নামে আত্মপ্রকাশ করবে (অনেকটা তুরস্কের মডেলে), যদি জামায়াতকে আইনগতভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। ওই পৌর নির্বাচন প্রমাণ করেছিল, বিএনপি জামায়াতকে যেমনি ছাড়বে না, ঠিক তেমনি জামায়াতও বিএনপিকে ছাড়বে না। এ দুইটি রাজনৈতিক শক্তির মাঝে একটা ‘বিভক্তির’ উদ্যোগ নেয়া হলেও, তা কোনো ‘কাজ’ দেয়নি। প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের একটা যোগাযোগ আছে। পৌর নির্বাচনের মতো ইউপি নির্বাচনেও এটা প্রতিফলিত হচ্ছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ইউপি নির্বাচনে জাময়াত সমর্থিত প্রার্থীদের বিএনপি সমর্থন করবে বলে আমার ধারণা।
এখানে একটা কথা বলা প্রয়োজন। উপজেলা, সিটি করপোরেশন (তিনটি), পৌর নির্বাচনের পর এখন ইউপি নির্বাচনÑ প্রতিটি নির্বাচন শুদ্ধ না হলেও বিএনপির অংশগ্রহণ বাংলাদেশের রাজনীতিতে নির্বাচনী সংস্কৃতি ফিরে এসেছে। ৫ জানুয়ারির (২০১৪) জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। কিন্তু তাতে নির্বাচন বন্ধ থাকেনি এবং কোনো অসাংবিধানিক শক্তিও ক্ষমতায় আসেনি। ওই নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করায় সরকার বহির্বিশ্বে কিছুটা নিন্দা কুড়িয়েছে, এটা সত্য। কিন্তু কোনো সরকারই বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের ওপর থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়নি। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পরও প্রধানমন্ত্রী জাপান ও চীন সফর করেছেন। এরপর উপজেলা, সিটি করপোরেশন ও পৌর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু কোনো নির্বাচনই ভালো হয়নি। বরং নতুন এক রাজনৈতিক সংস্কৃতি জন্ম হয়েছেÑ জালভোট প্রদান, ভোট কেন্দ্র দখল, বিরোধী প্রার্থীকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধাদান। এই যে ‘সংস্কৃতি’, এটা গণতন্ত্রের জন্য কোনো ভালো খবর নয়। আর সেজন্যই প্রশ্ন উঠেছে, পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন কোন পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হবে, সে ব্যাপারে সর্বসম্মতভাবে একটি সিদ্ধান্ত নেয়ার। অতি সম্প্রতি ঢাকা সফর করে যাওয়া ইউরোপীয় পার্লামেন্টের দক্ষিণ এশিয়া সংক্রান্ত কমিটির প্রধান জিন ল্যাম্বার্ট ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিমতটি দিয়েছিলেন। তার মতে সিদ্ধান্তটি নিতে হবে বাংলাদেশকেই। আর সে ব্যাপারে দ্রুতই আলোচনা শুরু করা দরকার। ল্যাম্বার্টের ওই বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। কেননা সংবিধানে বলা আছে, কীভাবে পরবর্র্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এক্ষেত্রে আলোচনা কিংবা ‘পদ্ধতি’ নিয়ে আলোচনার কী প্রয়োজন? কিন্তু বাস্তবতা বলে একটা কথা আছে। বিএনপিকে জাতীয় নির্বাচনের রাজনীতির ধারায় আনতে হলে আলোচনাটা জরুরি। একটা ‘পথ’ যদি বের করা না যায়, তাহলে বিএনপি ওই নির্বাচনে (সম্ভাব্য তারিখ ২০১৯, জানুয়ারি) অংশ নেবে কিনা, তা নিশ্চিত করে কেউ-ই এখন বলতে পারবে না। তবে বিএনপি নেতাদেরও বুঝতে হবে, নির্বাচন ‘প্রতিহত’ করার ঘোষণা গণতন্ত্রসম্মত নয়। বিএনপির জন্য সুযোগ এসেছে মূল ধারার রাজনীতিতে ফিরে আসার। কিন্তু কীভাবে? দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে পারে। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই দলীয় সরকারের (ওই সময় সরকার থাকে নির্বাচনকালীন সরকার। তাদের কোনো প্রশাসনিক ক্ষমতা থাকে না) অধীনে নির্বাচন হয়। কিন্তু বাংলাদেশের সংস্কৃতি একটু ভিন্ন। বুদ্ধিজীবীরা একটি বড় ভূমিকা পালন করতে পারতেন। আমি দুঃখজনকভাবে অনেক তথাকথিত সুশীলকে দেখছি টকশো’তে, তারা কিছুদিন আগেও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের কথা বলতেন, পত্রিকায় কলাম লিখতেন। আজ দেখি, তারা টকশো’তে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন চাচ্ছেন! আমি অবাক হয়ে দেখি, যারা সাংবিধানিক পদে আছেন, শপথ নিয়েছেন, তারা টকশো’তে দলীয় রাজনৈতিক বক্তব্য রাখছেন। অতীতে কখনোই এমনটি হয়নি। অতীতেও রাজনৈতিক সরকার ক্ষমতায় ছিল। ভিসিরা ছিলেন। মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যানরা ছিলেন। তারা সাধারণত ‘রাজনৈতিক বক্তব্য’ এড়িয়ে চলতেন। আজ পাল্টে গেছে সব। আর এভাবেই আমরা রাজনৈতিক সংস্কৃতিকে পাল্টে দিয়েছি। পাল্টে দিয়েছি নির্বাচনের সংস্কৃতি। বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় যারা ঢাকা ও চট্টগ্রামের মেয়র হয়েছিলেন, তারা এখন দাবি করেন নিজেদের নির্বাচিত মেয়র হিসেবে। সেই একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে চলছে ইউপি নির্বাচনে।
অতীতে যখন সংবাদপত্রগুলো আমাদের বলেছিল, ‘প্রশ্নবিদ্ধ নির্বাচন’, ‘শতাধিক পৌরসভায় হামলা, সংঘাত, গুলি, ব্যালট ছিনতাই’, ‘বিএনপির এজেন্টদের কেন্দ্রে ঢুকতে বাধা’ কিংবা যখন বহিরাগতদের ভোট কেন্দ্রে ঢুকে জালভোট প্রদানের দৃশ্য প্রথম পাতায় ছাপা হয়েছিল অথবা ভাঙা ব্যালট বাক্স জঙ্গলে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়ার ছবি ছাপা হয়েছিল, তখন আস্থার জায়গাটা নষ্ট হয়ে যায়। এই যে সংস্কৃতি, এ সংস্কৃতি সুস্থ গণতন্ত্র চার্চার জন্য সহায়ক নয়। এ সংস্কৃতি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিভেদ ও দূরত্ব আরও বৃদ্ধি করে। রাষ্ট্র ধীরে ধীরে হয়ে পড়ে একদলীয়! লঙ্ঘিত হয় মানবাধিকার, ব্যক্তিস্বাধীনতা ও সুস্থ চিন্তার চর্চা। ইউপি নির্বাচনকে সামনে রেখে এ কথাগুলো আবারও বলা যায়। মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা দিয়ে ক্ষমতায় আঁকড়ে থাকা যায় বটে; কিন্তু দলীয় সরকারের ভাবমূর্তি তাতে উজ্জ্বল হয় না। এ মানসিকতায় যদি পরিবর্তন আনা না যায়, তাহলে নির্বাচন প্রক্রিয়াটি অর্থহীন হয়ে পড়বে। আজ তাই সময় এসেছে এসব নিয়ে ভাববার। এক্ষেত্রে শুধু নির্বাচন কমিশনকে দোষ দিয়ে লাভ নেই। নির্বাচনের সঙ্গে জড়িত প্রতিটি ‘স্টেকহোল্ডার’কে আজ এগিয়ে আসতে হবে।
Daily Alokito Bangladesh
24.04,16

0 comments:

Post a Comment