রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

জঙ্গি দমনে বিদেশি সহযোগিতা প্রশ্নে কিছু কথা




বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান রোধে বিশেষজ্ঞ দিয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দক্ষিণ এশিয়াবিষয়ক সহকারী মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিসা দেশাই বিসওয়াল বাংলাদেশে এসেছিলেন। এর আগেও তিনি এসেছিলেন। এবারের প্রেক্ষাপটটা একটু ভিন্ন। বাংলাদেশে জঙ্গি দমনে সহযোগিতা দেয়া! বিষয়টি বেশ স্পর্শকাতর, সন্দেহ নেই তাতে। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, বিদেশি সহযোগিতা নিয়ে এ জঙ্গিবাদের উত্থান রোধ করা কতটুকু সম্ভব? এমন খবরও সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে যে, ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাসের সঙ্গে সংযুক্ত মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের এজেন্টরা বাংলাদেশের গোয়েন্দাদের সঙ্গে একসঙ্গে মিলে জঙ্গি হামলাগুলোর তদন্ত করছে! এসব তদন্তের কী ফল বয়ে আনবে আমরা জানি না। কিন্তু এটা জানি, অতীতেও এফবিআইয়ের এজেন্টরা বাংলাদেশে এসেছিলেন। কিন্তু তারা খুব একটা সুবিধা করতে পেরেছিলেন বলে মনে হয় না। বাংলাদেশী-আমেরিকান নাগরিক হত্যাকা-ের রহস্য তারা উদ্ঘাটন করতে পারেননি। সুতরাং বিদেশি তথাকথিত বিশেষজ্ঞদের দিয়ে জঙ্গি তৎপরতা কতটুকু রোধ করা সম্ভব হবে, এ ব্যাপারে আমি নিশ্চিত নই।
আমি এর আগের লেখাগুলোতে বলতে চেষ্টা করেছি, জঙ্গিবাদ আজ একমাত্র বাংলাদেশের সমস্যা নয়। এটা একটা বৈশ্বিক সমস্যা। মুসলমানপ্রধান দেশগুলোতে এ সমস্যাটি ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এর একটা আঞ্চলিক যোগসূত্রও রয়েছে। বাংলাদেশে ‘হোম গ্রোন’ জঙ্গি রয়েছে। এদের সীমিত কর্মকা- আমরা অতীতে দেখেছি। সাম্প্রতিক এসব ‘হোম গ্রোন’ জঙ্গিদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠনগুলোর, বিশেষ করে আইএসের একটা যোগসূত্র স্থাপিত হয়েছে। বিশেষ করে হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলা, তিন বাংলাদেশীর রাকা থেকে ভিডিও টেপে হামলার হুমকি, শোলাকিয়ায় ঈদগাহ ময়দানের পাশে জঙ্গি হামলাÑ সব মিলিয়ে স্থানীয় ‘হোম গ্রোন’ জঙ্গিদের সঙ্গে আন্তর্জাতিক সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়েছে। এ মুহূর্তে তাই প্রয়োজন জনসচেতনতা। জঙ্গি দমনে করণীয় নির্ধারণের জন্য সরকারের উচিত একটি ‘জাতীয় সংলাপ’ আহ্বান করা। সব রাজনৈতিক দলের (বিধিবদ্ধ ও নিবন্ধিত) সঙ্গে সরকার একটি ‘সংলাপ’ শুরু করতে পারে। আলোচ্যসূচিতে করণীয় নির্ধারণ করতে পারে সরকার। মনে রাখতে হবে, সংলাপ চলাকালীন যদি দলগুলোর অতীত ভূমিকা আলোচিত হয়, তা কোনো ফল বয়ে আনবে না। অতীতমুখিতা আমাদের কোনো সিদ্ধান্তে আসতে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। অতীত নয়, বরং সামনের দিকে তাকাতে হবে। নিউইয়র্ক টাইমস যেভাবে বলছে কারা কারা এ জঙ্গি হামলার উৎসাহদাতা, অর্থের যোগানদাতা তা খুঁজে বের করা জরুরি। এখানে যেন কোনো রাজনীতি কাজ না করে, অপরপক্ষকে দমন করার কোনো অভিপ্রায় যেন কাজ না করে। গোয়েন্দাদের সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন। কোথায় যেন একধরনের শৈথিল্য আছে। তাদের মোটিভেশন দরকার। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নেতৃত্বে যারা রয়েছেন, তাদের বক্তব্যের ব্যাপারে সচেতন থাকা উচিত। যে কোনো সন্ত্রাসী ঘটনায় একজনের বক্তব্য দেয়াই শ্রেয়। নানাজন বক্তব্য দিলে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে।
জঙ্গি দমন প্রশ্নে কতগুলো বিষয়ের দিকে নজর দেয়া প্রয়োজন। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, ‘বাংলাদেশে আইএস সম্পৃক্ততার দাবি সরকার উড়িয়ে দিচ্ছে না।’ এর অর্থ কী? আমরা এর ব্যাখ্যা কীভাবে করব? ইনু সাহেব গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী। তিনি যখন পরোক্ষভাবে এটা অনেকটা স্বীকার(?) করে নিলেন যে, বাংলাদেশে আইএস থাকতে পারে, তখন কিন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এটা স্বীকার করেন না। ফলে এ ধরনের স্পর্শকাতর বিষয়ে মন্ত্রীরা ভিন্ন ভিন্ন বক্তব্য দিলে তাতে বিভ্রান্তি আরও বাড়বে। জঙ্গি প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য দেয়াই শ্রেয়। এখানে তথ্যমন্ত্রী উপযাচক হয়ে বক্তব্য দিলে বহির্বিশ্বে তার বক্তব্যকেই ‘কোট’ করবে। তথ্যমন্ত্রী নিশ্চয়ই জানেন, বাংলাদেশে আইএস আছে, এ স্বীকারোক্তি বাংলাদেশের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। বাংলাদেশে বিদেশি সৈন্য মোতায়েনের সম্ভাবনা(?) এতে বাড়তে পারে। একদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন তথাকথিত ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’ এর নামে এ অঞ্চলে তাদের উপস্থিতি বাড়ানোর সুযোগ খুঁজছে, ঠিক তখনই ভারতের টাইমস অব ইন্ডিয়া ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্র উল্লেখ করে বলেছে, ‘জেএমবিকে ব্যবহার করে ভারতকে টার্গেট করছে আইএস।’ বাংলাদেশে জঙ্গি উত্থান ভারতের নিরাপত্তাকে বিস্মিত করতে পারে(?), এ প্রশ্ন ভারতের ক্ষমতাসীন সরকারের নেতারা তুলতে পারেন। কলকাতার আনন্দবাজারের উদ্ধৃতি দিয়ে এরই মধ্যে বাংলাদেশে প্রকাশিত এক সংবাদে বলা হয়েছে, গুলশানের জঙ্গি হামলা তদন্ত করতে ভারত তার ন্যাশনাল সিকিউরিটি গার্ড বা এনএসজির বিশেষ একটি টিমকে বাংলাদেশে পাঠিয়েছে। তবে এটা স্পষ্ট নয়, এরই মধ্যে ওই টিম বাংলাদেশে এসেছে কিনা? পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম অবশ্যই আমাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, বাংলাদেশে কোনো বিদেশি সংস্থা আসছে না। এটাই সঠিক সিদ্ধান্ত। দুই দেশের গোয়েন্দাদের মাঝে তথ্য আদান-প্রদান জরুরি। এ মুহূর্তে সেটা বড় প্রয়োজন। আমি মনে করি, ভারতীয় গোয়েন্দাদের নিজ দেশে আরও সক্রিয় হওয়া দরকার। পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে ২০১৪ সালের অক্টোবরে বিস্ফোরণের ঘটনায় জেএমবির নাম জড়িয়ে গিয়েছিল। পরে দুইজন বাংলাদেশী নাগরিক হাফিজ শেখ ও সেলিম রেজা চলতি বছর গ্রেফতার হয়েছিলেন জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার কারণে। ফলে এটা স্পষ্ট, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া, বর্ধমানের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাংলাদেশী এবং ভারতীয় জঙ্গিদের তথাকথিত ঘাঁটি রয়েছে। সেখানে তাদের জঙ্গি প্রশিক্ষণ হয়। বাংলাদেশে হলি আর্টিজানে যেসব জঙ্গি হামলা চালিয়েছিল, তাদের প্রশিক্ষণ ওই বর্ধমানে হয়েছিল বলে আমার ধারণা। তাই জঙ্গি উৎখাতে ভারতের গোয়েন্দারা যদি তৎপর না হন, তাহলে তারা প্রশিক্ষণ নিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে নাশকতা করবে। তাই এনএসজি পাঠানোর প্রয়োজন নেই। বাংলাদেশের সেনাবাহিনী, সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা সংস্থা জঙ্গি দমন ও জঙ্গি নির্মূলের জন্য যথেষ্ট। ভারতকে এখন পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশী জঙ্গিদের প্রশিক্ষণ শিবির বন্ধ করতে হবে। শোলাকিয়ার ঘটনায় নিহত জঙ্গি আবির হোসেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। এর আগে হলি আর্টিজানে হামলায় নিহত জঙ্গিও ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। আবিরও নিখোঁজ ছিল বেশ কয়েক মাস। তাই বিষয়টি এখন জরুরি যে, প্রতিটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ‘জঙ্গি পর্যবেক্ষণ সেল’ (এটা অন্য নামেও হতে পারে) গঠন করতে হবে, যাদের কাজ হবে ছাত্রদের ডাটাবেজ তৈরি করে অনুপস্থিত ছাত্রদের ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া। ছেলেরা বিপথগামী কেন হয়, এজন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষেরও উচিত কার্যকরী পদক্ষেপ নেয়া। কলকাতার আনন্দবাজারের খবর বাংলাদেশে আরও জঙ্গি হামলা হতে পারে এবং জঙ্গিরা একটি বড়সড় রিজার্ভ বেঞ্চ তৈরি করেছে রাজধানীর ১৫ কিলোমিটার বৃত্তের মধ্যে (৮ জুলাই)। বাংলাদেশের গোয়েন্দারাই বলতে পারবেন, এর পেছনে সত্যতা কতটুকু আছে। তবে আরও জঙ্গি হামলার আশঙ্কাকে আমি উড়িয়ে দিতে পারি না।
জঙ্গি তৎপরতা একটা বাস্তব সত্য। আমাদের তরুণ সমাজের একটা ক্ষুদ্র অংশ বিপথগামী হয়েছে। মিডিয়া এ বিপথগামী থেকে তরুণ সমাজকে রক্ষা করতে পারে। এ পরিপ্রেক্ষিতে ইসলামিক স্কলারদের ভূমিকা পালন করার কথা থাকলেও  তাদের ভূমিকা লক্ষণীয় নয়। যাদের টিভির পর্দায় নিত্য দেখা যায়, তারা বেশিমাত্রায় সরকার-ঘেঁষা। তাদের বক্তব্যে ‘প্রকৃত সত্য’ ফুটে ওঠে না কখনও। ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মাঝেও তাদের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। তাই হলি আর্টিজান আর শোলাকিয়ার ঘটনায় জাতিকে কতটুকু ঐক্যবদ্ধ করবে, তা নির্ভর করছে রাজনীতিবিদদের ওপর। এ দুই ঘটনা দিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা আদায়ের কোনো সুযোগ নেই। সব বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জঙ্গি দমনে একসঙ্গে কাজ করাই হচ্ছে সর্বপ্রথম অগ্রাধিকার। কতিপয় বিভ্রান্ত তরুণের কাছে আমরা আত্মসমর্পণ করতে পারি না। এ তরুণ প্রজন্ম আমাদের ভরসা। বাংলাদেশকে এরই মধ্যে একটি ‘সফট পাওয়ার’ হিসেবে চিহ্নিত করা হচ্ছে। বিশ্ব আসরে বাংলাদেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আছে। বিশেষ করে বিশ্ব শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অবদান, পোশাক শিল্পে আমাদের নেতৃত্ব দেয়ার যোগ্যতা, ঔষধ শিল্পের মান ইত্যাদি নানা কারণে বিশ্ব আসরে বাংলাদেশ একটি গ্রহণযোগ্য আসনে গেছে। এখন কতিপয় বিভ্রান্ত যুবকের জন্য বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হতে পারে না। আমরা তা হতে দিতে পারি না। আমাদের রাজনীতিবিদদের দূরদর্শিতা দেখানোর সময় এখনই।
এটা সত্য, হলি আর্টিজানের ঘটনায় কিছু বিদেশিকে হত্যা করা হয়েছে। এটা দুঃখজনক এবং নিন্দনীয়। কিন্তু সন্ত্রাসীরা যখন হঠাৎ করেই এ ধরনের ঘটনা ঘটায়, তা রোধ করা অনেক সময় সম্ভব হয়ে ওঠে না। ওরল্যান্ডের সমকামী ক্লাবে একজন সন্ত্রাসী ওমর মতিন যখন হামলা চালিয়ে ৪৯ জনকে হত্যা করেছিল, তখন ওই হত্যাকা-কে কিন্তু মার্কিন গোয়েন্দারা বন্ধ করতে পারেনি। প্যারিসে, ব্রাসেলসে কিংবা ইস্তানবুল বিমানবন্দরে সন্ত্রাসী হামলাও বন্ধ করা যায়নি। সুতরাং সন্ত্রাসীরা এ ধরনের ঘটনা ঘটায়। এটা রোধ করার জন্য একদিকে যেমন দরকার জনসচেতনতা, অন্যদিকে তেমনি দরকার প্রশিক্ষিত, দক্ষ জনবল। জঙ্গি দমনে আমাদের বৈদেশিক সহযোগিতার প্রয়োজন নেই। বৈদেশিক বিশেষজ্ঞদের আনাও ঠিক হবে না। আমাদের জনবল আছে। সেনাবাহিনীর অনেক চৌকস অফিসার আছেন, যারা প্রশিক্ষিত ও দক্ষ। তাদের আজ প্রয়োজন কাজে লাগানোর। একটা কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স ফোর্স গঠন করা হয়েছে। এখানে কিছুুটা পরিবর্তন দরকার। এ ইউনিটকে র‌্যাবের আঙ্গিকে গড়ে তোলা যায়। অর্থাৎ শুধু পুলিশ সদস্যদের মাঝে এ ইউনিট গঠনের প্রক্রিয়া সীমাবদ্ধ না রেখে সেনা এবং নৌবাহিনীর সদস্যদের অন্তর্ভুক্তি প্রয়োজন। যতদূর জানি, নৌবাহিনীর কিছুু সদস্য মার্কিন নৌবাহিনীর সিল কমান্ডো (ঝঊঅখ) দ্বারা প্রশিক্ষিত। ওসামা বিন লাদেন হত্যাকা-ে ‘সিল’ জড়িত হওয়ার পর এর নামডাক সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। আমরা সেই আদলে একটি ‘টিম’ অথবা কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে সেই আদলে গড়ে তুলতে পারি। এদের কাজ হবে শুধু জঙ্গি মনিটরিং, জঙ্গি কার্যক্রম দেখভাল করা ও সে সঙ্গে জিম্মি উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা করা। বর্তমান প্রেক্ষাপটে কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে আমরা অন্য ‘কাজ’ করতেও দেখি। আরও একটি কথাÑ শুধু নর্থ সাউথ বা সব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে আঙুল নির্দেশ করা ঠিক হবে না। নর্থ সাউথকে ‘শাস্তি’ দেয়ার কথাও বলেছেন কেউ কেউ। একজন ছাত্রকে দিয়ে হাজার হাজার ছাত্রকে একধরনের ‘বিচারের কাঠগড়ায়’ দাঁড় করানোও ঠিক নয়। দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে নর্থ সাউথের অবদান আছেÑ এটা যেন আমরা ভুলে না যাই। আমার নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে বলি, আমার এক ছাত্র সারা বছরে একদিনের জন্যও ক্লাস না করে শেষ মুহূর্তে এসে পরীক্ষা দিয়েছে। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে (জাহাঙ্গীরনগর) জানানো হলেও, ওই ছাত্রটি আদৌ কোথায় ছিল, কী অবস্থায় ছিল, ভিসি একবারের জন্যও তো খুঁজে দেখার প্রয়োজনীয়তাবোধ করেননি। সুতরাং পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোও যে ‘ধোয়া তুলসী পাতা’, তা বলা যাবে না। জঙ্গিবাদের বিষয়টি সরকার গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে, এটা ভালো কথা। এখন গুরুত্বপূর্ণ যা, তা হচ্ছে বৈদেশিক সহযোগিতা নয়, বরং ঐক্যবদ্ধভাবে নিজস্ব বিশেষজ্ঞদের ব্যবহার করে জঙ্গি নির্মূলে কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়াই মঙ্গল।
Daily Alokito Bangladesh
 15.07.2016

0 comments:

Post a Comment