রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

বৈশ্বিক জঙ্গিবাদ ও বাংলাদেশ


গুলশানের হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার রেশ ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই শোলাকিয়া ঈদগাহের পাশে হামলা চালাল জঙ্গিরা। অতি সাম্প্রতিককালে নতুন করে বৈশ্বিক জঙ্গিবাদের যে উত্থান ঘটেছে, তার রেশ ধরেই বাংলাদেশে এই জঙ্গি হামলা হলো। বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার কাছাকাছি সময়ে ইন্দোনেশিয়ায় জঙ্গি হামলা হয়েছে। মদিনায় জঙ্গি হামলা হয়েছে। সূত্রটা একই আইএস। অর্থাৎ আইএস বিশ্বব্যাপী যে সন্ত্রাসী তত্পরতা অব্যাহত রেখেছে, তারই ধারাবাহিকতায় একের পর এক জঙ্গি হামলা হচ্ছে। নিউ ইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, গেল এক বছরে সিরিয়া-ইরাক বাদে বিশ্বের সর্বত্র যেসব জঙ্গি হামলা হয়েছে, তাতে মারা গেছে প্রায় এক হাজার ২০০ জন। যার প্রায় অর্ধেকই পশ্চিমা বিদেশি নাগরিক। গত এক বছরে প্যারিস, ব্রাসেলস, তিউনিসিয়া, মিসর, তুরস্ক, ক্যালিফোর্নিয়া কিংবা অরল্যান্ডোয় যেসব আত্মঘাতী হামলা হয়েছে, তার প্রতিটির সঙ্গে আইএসের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে আইএস তার দায় স্বীকার করেছে। রমজান মাসে আইএস যে হামলা চালাবে, তা তারা আগেই ঘোষণা করেছিল। আইএসের এক মুখপাত্রের বরাত দিয়ে তা পশ্চিমা সংবাদপত্রে ছাপাও হয়েছিল। আর এই রমজান মাসেই ঘটল একাধিক সন্ত্রাসী ঘটনা। অরল্যান্ডোর সমকামী ক্লাবে হামলা চালাল জনৈক ওমর মতিন, হামলার আগেই সে আইএসের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছিল। মদিনায় যে হামলা হলো সেখানেও আইএসের কথা বলা হয়েছে। গত জানুয়ারিতে জাকার্তার তামরিন স্ট্রিটের দূতাবাস এলাকায়ও আত্মঘাতী হামলা চালিয়েছিল আইএস। অর্থাৎ প্রতিটি ঘটনার সঙ্গে আইএসের একটা যোগসূত্র রয়েছে। ঢাকার হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলায় আইএস তার দায়ভার স্বীকার করছে, যদিও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে জেএমবির কথা। এরপর শোলাকিয়ার ঈদগাহের পাশে যে হামলা হলো তার সঙ্গে হলি আর্টিজানের হামলাকারী চক্রের যোগসূত্র আছে বলে পুলিশের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন। নিঃসন্দেহে গুলশানের পর শোলাকিয়ার ঘটনা আমাদের জন্য অন্যতম একটা চিন্তার কারণ। বেশ কিছুদিন ধরে এ ধরনের সন্ত্রাসী ঘটনা বারবার ঘটছে। এতে বিদেশে আমাদের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলার পর কেটে গেছে বেশ কয়েকটি দিন। কিন্তু এর রেশ বাংলাদেশে যেমন রয়ে গেছে, তেমনি রয়ে গেছে বিদেশেও। যুক্তরাষ্ট্রে এখনো সংবাদপত্রে, গবেষণামূলক সাময়িকীতে বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের উত্থান নিয়ে নিবন্ধ প্রকাশিত হচ্ছে। বাংলাদেশ যে মার্কিনি নীতিনির্ধারকদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ একটি দেশ হয়ে উঠছে, এটা তার বড় প্রমাণ। মার্কিনিরা আসলে জানতে চায় বাংলাদেশ কোন দিকে যাচ্ছে? ঘুরেফিরে সোশ্যাল মিডিয়ায় পাঁচ জঙ্গির ছবি, তাদের নিয়ে আলোচনা অব্যাহত রয়েছে। নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের রাজনীতির জন্য এটা বড় ধরনের ঘটনা। তবে হলি আর্টিজানে হামলা এবং ন্যূনতম পাঁচ জঙ্গির সম্পৃক্ততাকে কেন্দ্র করে কয়েকটি প্রশ্ন বেশ গুরুত্বপূর্ণ। নীতিনির্ধারকরা এই প্রশ্নগুলোর জবাব খুঁজে দেখতে পারেন। এর ফলে আগামী দিনে জঙ্গি দমন কার্যক্রম নতুন একটি গতি পাবে। এক. জঙ্গিরা বাংলাদেশি। এটা প্রমাণিত। এরা সবাই পাঁচ-ছয় মাস আগে নিরুদ্দেশ হয়ে যায়। এরা পরস্পর পরস্পরকে সম্ভবত চিনত না এবং বাংলাদেশের অভ্যন্তরে থাকা কোনো একটি ‘শক্তি’ তাদের একত্রিত করে ‘অপারেশন’-এর জন্য তৈরি করে। দুই. জঙ্গিরা কোথায় প্রশিক্ষণ নিয়েছিল, এ ব্যাপারে অস্পষ্টতা রয়েছে। এক জঙ্গির বাবা স্বীকার করেছেন তিনি তাঁর ছেলের পাসপোর্ট সরিয়ে রেখেছিলেন। এটা যদি সত্য হয়ে থাকে, তাহলে অনেক সম্ভাবনা আমাদের মাঝে উঁকি দেয়। তাহলে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হলো কোথায়? সিরিয়ায় নাকি বাংলাদেশের ভেতরে কোথাও? এটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ আমাদের কাছে। যদি সিরিয়ায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়ে থাকে, তাহলে তারা কোন পথে সিরিয়ায় গেছে? বিমানবন্দর হয়ে, নাকি সীমান্ত অতিক্রম করে ভারতের মধ্য দিয়ে তারা গেছে সিরিয়ায়? গত ছয় মাসে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যাত্রীদের ‘চেকলিস্ট’ অনুসন্ধান করলে কিছু তথ্য পাওয়া যাবে। আমার যতটুকু ধারণা, সাম্প্রতিককালে বিমানবন্দরে গোয়েন্দা তত্পরতা বাড়ানো হয়েছিল এবং বিদেশে যারা যাচ্ছে, তাদের গতিবিধির ওপর নজর রাখা হয়েছিল। জঙ্গিরা তুরস্ক হয়ে সিরিয়ার রাকাতে (তথাকথিত আইএসের রাজধানী) যাওয়ার কথা। জঙ্গিরা মালয়েশিয়ার রুট ব্যবহার করে থাকতে পারে। গোয়েন্দারা এ বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পারেন। আরো একটি সম্ভাবনাকে আমি অস্বীকার করতে পারি না। পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমানে ২০১৪ সালের অক্টোবরে যে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছিল, তাতে বাংলাদেশের জঙ্গি সংগঠন জেএমবির সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়েছিল ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে। যেটা খুব উদ্বেগের বিষয়, তা হচ্ছে ভারতীয় গোয়েন্দাদের তদন্তে বেরিয়ে এসেছে পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া, বর্ধমানের প্রত্যন্ত অঞ্চলে জেএমবির ঘাঁটি রয়েছে। বাংলাদেশের নাগরিক হাফিজ শেখ (জানুয়ারি ২০১৬) কিংবা সেলিম রেজার (জানুয়ারি ২০১৬) জঙ্গি কানেকশনে গ্রেপ্তারের কাহিনী সেখানকার পত্রপত্রিকায় ছাপা হয়েছিল। পাঠক স্মরণ করতে পারেন ভারতীয় গোয়েন্দারা ওই সব কর্মকাণ্ডে (বিশেষ করে বর্ধমানে বোমা বিস্ফোরণ) জেএমবির সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখতে ঢাকায়ও এসেছিলেন। ফলে হলি আর্টিজানে যে পাঁচ জঙ্গি মারা গেছে, তারা পশ্চিমবঙ্গে প্রশিক্ষণ নিয়ে থাকতে পারে। আমাদের গোয়েন্দাদের এখন বিষয়টি গভীরভাবে খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। তিন. তুরস্কে আইএসের হামলায় যে তিন জঙ্গি অংশ নিয়েছিল, তারা কেউই তুরস্কের নাগরিক নয়। ওই তিনজন ছিল রাশিয়া (চেচেন), উজবেকিস্তান ও কিরগিজস্তানের নাগরিক। আইএস এখন মধ্য এশিয়ার নাগরিকদের ব্যবহার করছে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে। এটা বিবেচনায় নিয়ে বাংলাদেশে নাগরিক ভ্রমণ বা ধর্মীয় কাজে আসা বিদেশি নাগরিকদের ওপর নজরদারি বাড়ানো জরুরি। সেই সঙ্গে আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও তুরস্কের নাগরিকদের গতিবিধিও লক্ষ রাখতে হবে। পুলিশের কাছে এদের তথ্য আছে কি না জানি না, কিন্তু এদিকে দৃষ্টি দেওয়া এখন প্রয়োজন। চার. জঙ্গিরা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছে। যে অ্যাপ ব্যবহার করে তারা তথ্য আদান-প্রদান করেছে কিংবা ছবি আপলোড করেছে, তাতে কী বিষয়ে কথা হয়েছে, কার সঙ্গে কথা হয়েছে, তার কোনো তথ্য থাকে না। ফলে খুব সহজেই জঙ্গিরা পার পেয়ে যায়। সুতরাং আমাদের কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স ইউনিটে জরুরি ভিত্তিতে তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের অন্তর্ভুক্ত করতে হবে, যাতে জঙ্গি তত্পরতা মনিটর করা সহজ হয়। পাঁচ. হলি আর্টিজানের ঘটনায় প্রমাণিত হয়েছে যে জঙ্গিরা আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত এবং ধনী ঘরের সন্তান। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যে জঙ্গিদের বড় আস্তানায় পরিণত হয়েছে, এটা এখন দিবালোকের মতো সত্য। সুতরাং ‘নারী নির্যাতন সেল’-এর মতো প্রতিটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সেই সঙ্গে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও) একটি ‘জঙ্গি পর্যবেক্ষণ সেল’ (এটা অন্য নামে হতে পারে) গঠন করতে হবে। এই ‘সেল’-এর কাজ হবে যেসব ছাত্র ক্লাসে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকে, তাদের বিষয়ে মনিটর করা। প্রতিটি ছাত্রের ডাটাবেইস করতে হবে। এতে এক ধরনের নজরদারি প্রতিষ্ঠিত হবে এবং যারা বিপথগামী তাদের চিহ্নিত করা সহজ হবে। ইতিমধ্যে আমরা জানতে পেরেছি, তিন বাংলাদেশি আইএস জঙ্গি রাকা থেকে (আইএসের রাজধানী সিরিয়ায়) ভিডিও বার্তায় বাংলা ভাষায় আবারও জঙ্গি হামলার হুমকি দিয়েছে। আমি বিশ্বাস রাখতে চাই, আমাদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়েছে। তাদের পরিচয় ইতিমধ্যে জানা গেছে। সবাই উচ্চশিক্ষিত। বিষয়টি আরো খতিয়ে দেখার জন্য তাদের অভিভাবকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন। কোনো অভিভাবকের সন্তান যখন বিপথগামী হয়, তিনি জেনেও তা যদি পুলিশকে না জানিয়ে থাকেন, তিনি অন্যায় করেছেন। তেমন অভিভাবক কোনোভাবেই ক্ষমা পেতে পারেন না। সন্তানের দায়ভার তাঁকে বহন করতে হবেই। বিষয়টি যদি পুলিশ আগে জানত, বোধ করি পরিস্থিতি এত দূর গড়াত না। বিবিসি বাংলা আমাদের জানাচ্ছে তেমনি একজন অভিভাবকের ছেলে নাকি (যে বাংলায় রাকা থেকে হুমকি দিয়েছিল) ছয়-সাত মাস আগে তুরস্ক চলে গিয়েছিল। তাঁর ব্যর্থতা এখানেই যে ছেলের চাল-চলন দেখেও তাকে তিনি সংশোধন করতে পারেননি এবং পুলিশ প্রশাসনকে তা জানাননি। এ ক্ষেত্রে আমরা এই স্পর্শকাতর বিষয়গুলো তদন্ত করার জন্য আমাদের দরজা বিদেশিদের হাতে খুলে দিতে পারি না। বরং আমাদের কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে আরো দক্ষ ও শিক্ষিত করা যায়। তাদের জঙ্গি দমনে প্রশিক্ষণের জন্য বাংলাদেশেই বিদেশ থেকে প্রশিক্ষক এনে প্রশিক্ষণ দেওয়া যেতে পারে। এই ইউনিটের সঙ্গে সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর প্রশিক্ষণ নেওয়া কমান্ডোদের অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। এই ইউনিটকে অন্য সব কাজ থেকে দূরে রাখতে হবে। সবচেয়ে বড় কথা জঙ্গি দমনে জাতীয় ঐকমত্য প্রয়োজন। বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব, বিভেদ, রেষারেষি ও অনৈক্য যদি থাকে, তাতে জঙ্গিরাই লাভবান হবে। এ ধরনের জঙ্গি হামলাকে আমরা একপাশে ঠেলে সরিয়ে রাখতে পারি না। এ ধরনের ঘটনা আমাদের দেশের জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে সম্পৃক্ত। একটি জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল গঠনের বিষয়টিও (প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে) নীতিনির্ধারকরা বিবেচনায় নিতে পারেন। মোদ্দা কথা ‘নাইন ইলেভেন’-এর পর সারা বিশ্ব জঙ্গিদের এক ধরনের উত্থান দেখেছিল। তখন আল-কায়েদার টার্গেট ছিল মার্কিন নাগরিক, মার্কিন স্থাপনা কিংবা যেখানে মার্কিনি স্বার্থ রয়েছে সেখানে তাদের আক্রমণ তারা পরিচালনা করেছে। কিন্তু আইএস এক ভিন্ন মাত্রা নিয়ে আবির্ভূত হয়েছে। তাদের আক্রমণের টার্গেট হচ্ছে সাধারণ মানুষ। এক আত্মঘাতী সন্ত্রাসী সংস্কৃতির জন্ম দিয়েছে আইএস। এই সন্ত্রাসীদের দমনে জাতিসংঘে যে আইনটি পাস হওয়া জরুরি ছিল তা পাস হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে মিত্র বাহিনী যদি ইরাক ও লিবিয়ায় আক্রমণ চালিয়ে ক্ষমতাসীনদের উত্খাত করতে পারে, তাহলে লিবিয়া-ইরাকের একটা অংশ দখল করে নেওয়া আইএস জঙ্গিদের উত্খাত করতে পারবে না কেন? এখানে যুক্তরাষ্ট্রের সদিচ্ছা, ইসরায়েলি কানেকশন, রাশিয়ার ভূমিকা ইত্যাদি নানা প্রশ্ন আছে; তাই আইএসের উত্খাত ও তাদের যেকোনো হুমকিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। এত দিন ভেবেছি, আমরা আক্রান্ত হব না। কিন্তু হলি আর্টিজান আর সর্বশেষ শোলাকিয়ার ঘটনায় প্রমাণিত হলো আইএসের হুমকিকে হালকাভাবে দেখার সুযোগ আর নেই। প্রয়োজন তাই ঐক্যের ও জনসচেতনতার। Daily Kalerkontho 12 July 2016 - See more at: http://www.kalerkantho.com/print-edition/muktadhara/2016/07/12/379791#sthash.argsKAcC.dpuf

1 comments:

  1. A very good article. Just a few comments in line with the wirter. We cananot ignore the situation of the country, with the terrorism attakcs in the country. Few additional point to add with the emeinant wiriter-
    when we grossly talk about the ingonance of the parents, we overlooke the pain they go through. we slao should think in a widerlense,getting out of anger. How the system can be supportive towards a parents when they seek or bring this matter to the notice of the police?

    2, The policing system in the country is more political than conducive towards their actual policing works. the system is not 'client' or 'victim friendly' Its is persived as a hassament and complex if someone goes to Police staion.

    An important point i find is missing is- all these law and armed forces organizations they invests less in their training parts- how ad what they are trained to become? Govt and all Heads of Institutions-like Police, RAB and Other security forces should invest more with resourses to train the new recruitees. Trainer who are providing trainigs they should be motivated otherwise there will always be a gap - gap of understaing and motivations.

    We should also think in two ways- operations part of policing 'counter terrorism' and secondly socila aspects of this part 'preventing violent extremisim' this will create an enable evviornment to interaction with police giving informations regaring a boy/girl, whether they are getting involved with any extemisist groups or not.

    Our Policy makers, think-tanks and other civil society memebrs are expoected to guide the government in countering this, as its a concren of all of us.

    How long we can live in fear of insecurity? Or in a city feels like we are middile of a unrest situations with all these police checkposts/checkpoints, body search (shoppingmalls)/markets) or in public palces.

    ReplyDelete