এ কোন বাংলাদেশকে আমরা দেখছি? হলি আর্টিজান রেস্তোরাঁয় জঙ্গি হামলা, হামলায় ১৭ বিদেশি নাগরিকের মৃত্যু, বিদেশ প্রতিক্রিয়াÑ সব মিলিয়ে যে প্রশ্নটি এখন সামনে চলে এসেছে তা হচ্ছে, এরপর কী? এত দিন বিচ্ছিন্নভাবে আমরা জঙ্গিদের হামলা দেখেছি। বিশেষ বিশেষ ব্যক্তিকে জঙ্গিরা টার্গেট করে তাদের হত্যা করেছে। বিদেশিদের টার্গেট করে হত্যা করেছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের পুরোহিতদের কিংবা খ্রিস্টীয় ধর্ম প্রচারকদের হত্যা করেছে জঙ্গিরা। এ নিয়ে ৬ থেকে ৭ মাস আমরা বিতর্ক করেছি। টিভিতে আমরা আলোচনা করেছি। এক পক্ষ বলার চেষ্টা করেছে, ওইসব হত্যাকা-ের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা জড়িত এবং বিএনপির ইন্ধন তাতে ছিল! এবং আইএস কোনোভাবেই এর সঙ্গে জড়িত নয়! বড় কোনো জঙ্গি হামলা হতে পারেÑ এটা আমরা কোনোদিনই চিন্তা করিনি। কিন্তু আমাদের হিসাব বদলে দিল। গোয়েন্দাদের সব ধরনের সতর্কতা ব্যর্থ করে দিল ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজানের জঙ্গি হামলার ঘটনা। এ ধরনের ঘটনা বাংলাদেশেও ঘটতে পারে এবং ঘটলও! এত দিন আমাদের কিছু বুদ্ধিজীবী, টিভির কিছু পরিচিত মুখ বারবার বলার চেষ্টা করেছেন এদেশের মাদরাসাগুলো জঙ্গি তৈরি করে! কোনো কোনো মহল থেকে কওমি মাদরাসা বন্ধেরও দাবি জানানো হয়েছিল। এখন গুলশানের ঘটনায় যেসব জঙ্গির নাম ও পরিচিতি পাওয়া গেছে, তাদের একজন বাদে কেউই মাদরাসাপড়–য়া ছাত্র নয়, বরং ইংরেজি মাধ্যমে পড়া ও বিদেশ থেকে পাস করে আসা ধনী পরিবারের সন্তানরা জঙ্গি তৎপরতায় জড়িত এবং তারাই এ জঙ্গি অপারেশনটি পরিচালনা করেছে। এরপরও মাদরাসাবিরোধী অপপ্রচার বন্ধ হবে কিনা জানি না; কিন্তু হলি আর্টিজানের ঘটনায় আমাদের চোখ খুলে দিল।
হলি আর্টিজানে জঙ্গি হামলার পর আমাদের নীতিনির্ধারকরা কতগুলো বিষয়ের দিকে এখন দৃষ্টি দিতে পারেন। এক. শুধু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে নেতিবাচক দৃষ্টি দিয়ে তাকালে আমরা ভুল করব। বরং ৩৭ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে তাকাতে হবে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবলিক) যেমনি নারী নির্যাতন সেল রয়েছে, ঠিক তেমনি প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়কে (পাবলিক ও প্রাইভেট) নিজস্ব উদ্যোগে একটি ‘জঙ্গি পর্যবেক্ষণ সেল’ গঠন করতে হবে। একজন সিনিয়র অধ্যাপক এর দায়িত্বে থাকবেন। এই সেলের কাজ হবে ক্যাম্পাসে অনিয়মিত ছাত্রদের তালিকা তৈরি করে তা মনিটর করা, তাদের অভিভাকদের সহায়তা নেয়া এবং প্রতি মাসে একটা রিপোর্ট পুলিশের কাউন্টার ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে দেয়া। কাজটা পুলিশি কাজÑ সন্দেহ নেই তাতে। কারণ এটা ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। একটি ডাটাবেজ তৈরি করাও জরুরি, যাতে ছাত্রের পূর্ণ তথ্য তাতে থাকবে। বিশেষ করে আইটি সেক্টরে পড়–য়া ছাত্রদের দিকে নজরদারি বাড়ানো জরুরি। দুই. যে তরুণ প্রজন্মকে নিয়ে আমাদের এত আশাবাদ, সেই তরুণ প্রজন্মের একটা অংশ বিভ্রান্ত হচ্ছে জঙ্গিবাদী আদর্শে। ইন্টারনেট এর একটা বড় মাধ্যম, যার মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম ‘ভ্রান্ত ইসলামে’ আকৃষ্ট হচ্ছে। এটা যে প্রকৃত ইসলাম নয়, এটা তারা বোঝে না। ইন্টারনেটে বিভিন্ন গ্রুপের সঙ্গে তারা জড়িয়ে যাচ্ছে। বিভ্রান্ত হচ্ছে। তাদের ‘ব্রেইন ওয়াশ’ করা হচ্ছে। সুতরাং এক্ষেত্রে যা করা দরকার তা হচ্ছে, ইন্টারনেটে নজরদারি বাড়ানো। প্রযুক্তিবিদদের সহযোগিতা নিয়ে এটা সম্ভব। ইন্টারনেট আমাদের জন্য অপার এক সম্ভাবনার সৃষ্টি করেছে, সন্দেহ নেই তাতে। কিন্তু ক্ষতিও করছে। বিভ্রান্তকারীরা তরুণ সমাজকে জঙ্গিবাদী আদর্শে উদ্বুদ্ধ করছে। যে তরুণ ভবিষ্যৎ নিয়ে স্বপ্ন দেখবে, নতুন নতুন উদ্ভাবনী শক্তিতে নিজেদের নিয়োজিত রাখবে, সেই তরুণের মগজে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে পরজন্মের কথা! ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়ানো হচ্ছে জিহাদি মনোভাব। জানানো হচ্ছে, কীভাবে বোমা তৈরি করতে হয়। ঢাকায় গুলশানে হামলাকারীরা আত্মঘাতী ছিল। তারা জানত, তাদের পরিণতি কী হবে। তাদের মগজে ঢুকিয়ে দেয়া হয়েছিল ‘বেহেশতের’ কথা। তাই সেনা কমান্ডো হামলার চূড়ান্ত মুহূর্তে তারা বলেছিল ‘বেহেশতে’ যাওয়ার কথা! তাদের এই যে মগজ ধোলাই, এটা করা হয়েছিল ইন্টারনেটের মাধ্যমে। তাই ইন্টারনেটের কার্যকলাপ, গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা জরুরি। কারা কারা ওইসব ‘সাইটে’ ভ্রমণ করে, তাদের গতিবিধির ওপর নজরদারি বাড়ানোও জরুরি। তিন. যেসব তরুণ এ সন্ত্রাসী কর্মকা-ে অংশ নিয়েছিল, তারা ৫ থেকে ৬ মাস আগে বাসা থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে গিয়েছিল। তাদের অভিভাবকরা সবাই পুলিশ স্টেশনে জিডি করেছিলেন। পুলিশের সহযোগিতা চেয়েছিলেন। পুলিশ সেই সহযোগিতা নিশ্চিত করতে পারেনি। তাই অভিভাবকদের দোষ দেয়া যাবে না। ২০ বছরের এক তরুণকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। পুলিশের ভূমিকাকে আমি তাই গুরুত্ব দিতে চাই। কিন্তু পুলিশ প্রশাসনে শৈথিল্য এসেছে। তারা দায়িত্ব পালনে শতকরা ১০০ ভাগ সফলÑ এটা বলতে পারছি না। তাই মোটিভেশন দরকার। প্রশিক্ষণ দরকার। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর দুর্বলতা এ ঘটনায় আরও প্রমাণিত হলো। একজন তরুণ ৬ মাস আগে নিরুদ্দেশ হয়ে গেল, তার হদিস পুলিশ পাবে নাÑ এটা দুঃখজনক। নিব্রাস ইসলাম, মীর মুবাশ্বের, রোহান ইমতিয়াজ, খায়রুল কিংবা মিনহাজরা ‘নিরুদ্দেশ’ হয়ে যাওয়ার পর ৫ থেকে ৬ মাস কোথায় ছিল, কীভাবে ছিল তা জানা দরকার। আমার ধারণা, তাদের সিরিয়ায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল প্রশিক্ষণের জন্য। যদি তাই হয়, তাহলে এর পেছনে কোন শক্তি সক্রিয় ছিল, তা অভ্যন্তরীণ কোনো ‘শক্তি’ কিনা, তা জানা দরকার। অভ্যন্তরীণ শক্তির যোগসাজশ থাকা বিচিত্র কিছু নয়। এদের সহযোগিতা ছাড়া কোনোভাবেই ‘হলি আর্টিজানে’ অপারেশন চালাতে পারত না জঙ্গিরা। তাই অভ্যন্তরীণ সহযোগীদের চিহ্নিত করা প্রয়োজন। আরও একটা কথা বলা দরকার। সিরিয়ায় আইএসের উত্থানের পর থেকে ইউরোপ এবং বাংলাদেশের কিছু তরুণ সিরিয়ায় গেছে। সাধারণত এরা তুরস্ক হয়েই সিরিয়ায় প্রবেশ করেছে। এক্ষেত্রে ধরে নেয়া যেতে পারে, তারা বিমানবন্দর ব্যবহার করেছে। যদি তাই হয়ে থাকে, বাংলাদেশ ইমিগ্রেশন বিভাগের কাছে এ সংক্রান্ত তথ্য থাকার কথা। এসব তথ্য যাচাই-বাছাই করা দরকার। কোনো ধরনের শৈথিল্য যেন এ কাজে অন্তরায় হয়ে না দাঁড়ায়। হলি আর্টিজানে হামলার পরও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আরও এক বিশ্ববিদ্যালয়পড়–য়া ছাত্রের সংবাদ ছাপা হয়েছে, যে ৩ মাস থেকে নিখোঁজ। এর অর্থ আমার কাছে পরিষ্কারÑ আরও কিছু তরুণকে ‘মগজ ধোলাই’ করে সম্ভবত সিরিয়া নিয়ে যাওয়া হয়েছে! এ ব্যাপারে গোয়েন্দা তৎপরতা আমরা আশা করছি।
চার. এ সন্ত্রাসী ঘটনায় বাংলাদেশের অনেক ‘ক্ষতি’ হয়ে গেল। এ ‘ক্ষতি’ বাংলাদেশ কীভাবে কাটিয়ে উঠবে, এটা একটা বড় প্রশ্ন এখন। একসময় বাংলাদেশ ‘সহনীয় ইসলাম’ এর দেশ হিসেবে পরিচিত ছিল। একাধিক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশের এ ‘সহনীয় ইসলাম’ চর্চার প্রশংসা করেছেন এবং একটি মডারেট ইসলামিক রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশ বহির্বিশ্বে ব্যাপক পরিচিতি পেয়েছে। কিন্তু হলি আর্টিজানের ঘটনা বদলে দিল সবকিছু। বাংলাদেশে জঙ্গিরা তাদের অবস্থান শক্তিশালী করেছেÑ এ সত্যটি এখন ব্যাপকভাবে পরিচিতি পাবে। এতে করে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। দুঃখ লাগে, এখনই যখন দেখি বাংলাদেশকে সোমালিয়া কিংবা আফগানিস্তানের কাতারে ফেলে দেয়ার একটি উদ্যোগ পশ্চিমা বিশ্বে নেয়া হয়! বাংলাদেশ কখনও সোমালিয়া কিংবা আফগানিস্তান হবে না। আফগানিস্তানে জঙ্গিদের প্রতি সাধারণ জনগণের প্রচ্ছন্ন একটা সমর্থন থাকলেও বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতাকে মানুষ সমর্থন করে না। এটি বাস্তব সত্য। তবে সেই সঙ্গে এটাও সত্য, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যদি বিরোধ বাড়ে, দ্বন্দ্ব বাড়ে, দলগুলো যদি পরস্পর পরস্পরের বিরুদ্ধে জঙ্গি তৎপরতা উসকে দেয়ার অভিযোগ আনে, তাতে করে সুযোগ পাবে জঙ্গিরাই। জঙ্গি দমনে ন্যূনতম প্রশ্নে সব দলের মধ্যে ঐকমত্য প্রয়োজন। হলি আর্টিজানের ঘটনা একটা মেসেজ দিয়ে গেল। এ মেসেজ যদি আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো অনুধাবন করতে না পারে, সেটা হবে আমাদের জন্য দুঃখজনক ঘটনা।
পাঁচ. আর্থিকভাবেও বাংলাদেশের ক্ষতির সম্ভাবনা আছে। জাপান ও ইতালি আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ দুইটি দেশ। দুইটি দেশেরই বিশাল বিনিয়োগ আছে বাংলাদেশে। অথচ এ দুই দেশের নাগরিকরাই বেশি প্রাণ হারালেন। জাপানি প্রধানমন্ত্রীর অসন্তোষের খবর আমরা পত্রিকায় দেখেছি। এ ঘটনায় ভবিষ্যতে বিদেশি বিশেষজ্ঞরা এদেশে আসতে যেমন সাহস পাবেন না, ঠিক তেমনি এসব দেশের অর্থে পরিচালিত সাহায্যদাতা সংস্থাগুলো তাদের কার্যক্রম গুছিয়ে নিতে পারে। জাইকার কথা আমরা শুনেছি। পরিস্থিতি যদি আরও অবনতি হয়, তাহলে জাইকা বাংলাদেশ থেকে চলে যেতে পারে ঠিক, তেমনি অন্যান্য ইউরোপীয় দেশের যেসব সাহায্যদাতা সংস্থা রয়েছে, তারাও চলে যেতে পারে। বাংলাদেশের পোশাক শিল্প থাকবে এখন ঝুঁকির মুখে। বড় বড় ক্রেতা এখানে আসতে সাহস পাবে না। তারা চলে যাবে ভিয়েতনাম ও কম্বোডিয়ায়। মিয়ানমার হতে যাচ্ছে আমাদের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী। টিপিপি চুক্তির ফলে ভিয়েতনাম এখন শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা পাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে। ফলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক থাকল একটি অনিশ্চয়তার মুখে। সুতরাং বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উদ্ধারে সরকারকে এখন বড় উদ্যোগ নিতে হবে। যে নিরাপত্তাহীনতার সংকট সৃষ্টি হয়েছে, তা কাটিয়ে উঠে একটা আস্থার পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে। প্রশিক্ষণ ও মোটিভেশনের অভাব রয়েছে তাদের মাঝে। প্রচুর অর্থ ব্যয় করার পরও কাক্সিক্ষত ফল আমরা পাচ্ছি না। তথাকথিত সিসিটিভির ব্যবহার এখন প্রশ্নের মুখে। বিদেশে এ ধরনের ঘটনা ঘটলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীতে ব্যাপক পরিবর্তন আসত। বাংলাদেশে এরকমটি হয় না কখনও।
প্রধানমন্ত্রী জঙ্গি দমনে জনসচেতনতার কথা বলেছেন। এটা সত্য কথা। জঙ্গিবিরোধী একটা জনমত গড়ে তোলা প্রয়োজন। প্রতিটি সরকারি স্থাপনায়, বড় বড় বিপণিবিতানে নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের সহযোগিতা নিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় আরও কড়াকড়ি আরোপ করা প্রয়োজন। গুলশান-বারিধারাকে পরিপূর্ণভাবে একটি নিয়ন্ত্রিত এলাকা ঘোষণা করে এখান থেকে সব বাণিজ্যিক স্থাপনা, বিপণিবিতান, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান প্রত্যাহার করে নিতে হবে। এ এলাকায় যান চলাচলে বিধিনিষেধ আরোপ করতে হবে। এ এলাকা কূটনিতিকপাড়া হিসেবে পরিচিত। এ এলাকার নিরাপত্তা দিতে না পারলে, অনেক রাষ্ট্র নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে দূতাবাস দিল্লি অথবা ব্যাংককে সরিয়ে নেবে! তাই হলি আর্টিজানের ঘটনা আমাদের চোখ খুলে দিল। অনেক বিদেশি প্রাণ দিলেন। এটা দুর্ভাগ্যজনক। কিন্তু আমি বিশ্বাস করি, এ ঘটনার পর সব দল ও মতের মানুষ ঐক্যবদ্ধ হবে। কতিপয় জঙ্গির কাছে বাংলাদেশ মাথানত করতে পারে না। জনসচেতনতা আর ঐক্যবদ্ধ সমাজই পারে এদেশ থেকে জঙ্গি নির্মূল করতে।
নিউইয়র্ক, যুক্তরাষ্ট্র থেকে
Daily Alokito Bangladesh
10.07.2016
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
I don't agree with you in the last paragraph. As a student of political science, would you please define what does democracy and state mean? Also, what are the fundamental rights of the people? In one of your other articles, you mentioned about the democracy of England. Do you see the same thing happening in Bangladesh?
ReplyDelete