রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

টিআইবি কেন শুধুই স্পর্শকাতর বিষয় বেছে নেয়

নিকট অতীতে প্রকাশিত ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর একটি প্রতিবেদন বাংলাদেশে বড় ধরনের বিতর্কের ঝড় তুলেছে। তারা সংসদ সদস্যদের নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করে। ওই প্রতিবেদনে টিআইবি বলেছে, সংসদ সদস্যদের মধ্যে ৯৭ শতাংশই নেতিবাচক কাজের সঙ্গে জড়িত। বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। কেননা সংসদ সদস্যরা আইন প্রণয়ন করেন। রাষ্ট্রের যেখানে ভালো, সেখানে তারা সিদ্ধান্ত নেন। সংসদ সদস্যের মধ্যে যেমন সরকারি দলের সদস্যরা রয়েছেন, ঠিক তেমন রয়েছেন বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরাও; যদিও বিরোধী দল বিএনপি তথা চারদলীয় জোটের সংসদ সদস্যরা অনেক দিন ধরেই সংসদে যাচ্ছেন না। আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় তারা অংশও নিচ্ছেন না। সংসদে তারা কেন যাচ্ছেন না, সে ব্যাপারে তারা যুক্তি উপস্থাপন করছেন বারবার। কিন্তু প্রশ্ন এখানে নয়, প্রশ্ন হচ্ছে টিআইবি যখন বলে ‘এমপিদের ৯৭ শতাংশই নেতিবাচক কাজের সঙ্গে জড়িত’, তখন সঙ্গত কারণেই অনেক প্রশ্ন এসে যায়। এক. টিআইবি কীভাবে নিশ্চিত হলো এমপিদের প্রায় সবাই ‘নেতিবাচক’ কাজের সঙ্গে জড়িত? এই নেতিবাচক কাজের অর্থ কী? তারা কী যেসব নেতিবাচক কাজ সমাজে রয়েছে তার সব ক’টির সঙ্গেই জড়িত? দুই. যে গবেষণা পদ্ধতি অনুসরণ করে টিআইবি চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হলো সেই গবেষণা পদ্ধতিটি কী সঠিক? পুরো গবেষণা প্রক্রিয়ার সঙ্গে কী সিনিয়র গবেষকরা কিংবা সিনিয়র অধ্যাপকরা জড়িত ছিলেন? তিন. অভিযোগ উঠেছে শুধু ৫টি পত্রিকার প্রতিবেদন বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। এসব পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন, ফোকাস গ্রুপের আলোচনা ও তাদের চয়নকৃত ৪শ’ থেকে ৬শ’ ব্যক্তির মতামত নিয়ে গবেষণার কাজটি সম্পন্ন করা হয়েছে? প্রশ্ন হচ্ছে এই ৪শ’ থেকে ৬শ’ লোক-এরা কারা? আর টিআইবি কোন যুক্তিতে বা কোন নীতি অনুসরণ করে ওই ৫টি পত্রিকা বেছে নিল? চার. টিআইবি ১৪৯টি আসনের নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের ওপর জরিপ চালায়। প্রশ্ন হচ্ছে এই আসনগুলো বিবেচনায় নেয়ার মানদণ্ড কী? কোন যুক্তিতে বা বিচারে এই আসনগুলো বেছে নেয়া হলো? পাঁচ. উপরে উল্লিখিত ১৪৯ জন সংসদ সদস্যের মধ্যে ১৩ জন বিরোধী দলের। এখানে কোন মানদণ্ডকে অনুসরণ করে এই ১৩ জনকে বেছে নেয়া হলো? সেখানে জামায়াতে ইসলামী কিংবা জাতীয় পার্টির (নাজিউর রহমান মঞ্জুর) কোনো সদস্য অন্তর্ভুক্ত ছিলেন কি? ছয়. গবেষণায় দেখানো হয়েছে ৫৩ দশমিক ৭ শতাংশ সংসদ সদস্য ইতিবাচক কাজের সঙ্গে জড়িত। এটা কী বৈসাদৃশ্য নয়? যেখানে ৯৭ ভাগই নেতিবাচক কাজের সঙ্গে জড়িত, সেখানে ৫৩ ভাগ আবার ইতিবাচক কাজের সঙ্গে জড়িত থাকেন কীভাবে? উপরন্তু এই ‘ইতিবাচক’-এর ব্যাখ্যাই বা কী? টিআইবির ওই রিপোর্ট নিয়ে জাতীয় সংসদ সদস্যরা তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তারা যে ভাষায় টিআইবি বন্ধ করে দেয়ার কথা বলেছেন, তা গণতন্ত্রসম্মতও নয়। তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, তিনি এর প্রতিবাদ পাঠাবেন বার্লিনে, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের সদর দফতরে। এটাও অযৌক্তিক। কাজটি হয়েছে ঢাকায়, টিআইবির উদ্যোগে। এর সঙ্গে সদর দফতরের কোনো যোগাযোগ নেই। টিআইবি স্বাধীন। এখন টিআইবি যে জরিপ করেছে, সেই জরিপের পদ্ধতি, ফলাফল ইত্যাদি নিয়ে প্রশ্ন থাকতেই পারে এবং সেটাই স্বাভাবিক। টিআইবি ইতিমধ্যে তথ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো ৩১টি প্রশ্নের পূর্ণাঙ্গ জবাব দিয়েছে। এখন জাতীয় সংসদ যা করতে পারে প্রয়োজন বোধ করলে তারা এই গবেষণাটি তিন থেকে চারজন অধ্যাপকের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে, তাদের দিয়ে পরীক্ষা করাতে পারে। সামাজিক বিজ্ঞানে যারা গবেষণার সঙ্গে জড়িত, তাদের দিয়েই এই গবেষণাটি পরীক্ষা করা যেতে পারে। তাতে করে এটা বোঝা সহজ হবে, গবেষণাটিতে যে পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়েছে, তা সঠিক কি-না? টিআইবির প্রতি আস্থা রেখেই আমি বলতে চাই, এ ধরনের একটি সিরিয়াস গবেষণাটি একজন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের এবং পরিসংখ্যান বিভাগের এক থেকে দু’জন অধ্যাপকের সমন্বয়ে একটি টিম গঠন করে তাদের দিয়ে করানো উচিত ছিল। আমার ধারণা যাদের দিয়ে এই গবেষণাটি পরিচালনা করা হয়েছে তারা এ বিষয়ে খুব অভিজ্ঞ নন। প্রথমত, ১৪৯ জন সংসদ সদস্য বেছে নেয়া ঠিক হয়নি। যুক্তি হিসেবে এটা ধরে নিলেও প্রশ্ন আসবে এবং সে প্রশ্নটিই উঠেছে। ভালো হতো যদি ৩০০ আসনের নির্বাচিত এমপিদের নিয়ে গবেষণাটি পরিচালিত হতো। সময় হয়তো লাগত। তাতে ক্ষতি কী? আমরা পরিষ্কার একটি ধারণা পেতাম। দ্বিতীয়ত, যাদের মতামত নেয়া হয়েছে তারা হচ্ছেন ‘সচেতন নাগরিক গোষ্ঠী’ বা ‘সনাক’-এর সদস্য। সনাক সরাসরি টিআইবির সঙ্গে জড়িত। টিআইবি এই সনাক সংগঠিত করে প্রতিটি জেলায়। এরা টিআইবির আদর্শ ও উদ্দেশ্য ‘প্রমোট’ করে ও টিআইবির পক্ষে জনমত গড়ে তোলে। যেখানে সনাক নেই, সেখানে যেহেতু গবেষণা জরিপ পরিচালিত হয়নি, সে জন্য সঙ্গত কারণেই টিআইবির উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠবেই। এ ব্যাপারে টিআইবি যে যুক্তিই দিক না কেন, তা গ্রহণযোগ্য হবে না। একটি ‘পূর্ব নির্ধারিত ধারণা নিয়ে’ গবেষণা কমিটি পরিচালিত হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে, তা একেবারে উড়িয়ে দেয়ার মতো বিষয় নয়। তৃতীয়ত, ৫টি পত্রিকা নেয়াও ঠিক হয়নি। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে ১০ থেকে ১৫টি দৈনিক পত্রিকা রয়েছে,  যেগুলো পাঠকপ্রিয়তা পেয়েছে। এই ১৫টি পত্রিকা স্ক্যান করলে ক্ষতি কী হতো? এখানে আরো একটি প্রশ্ন, যে ১৪৯টি সংসদীয় এলাকায় গবেষণাটি পরিচালিত হয়েছে, সেখানে স্থানীয়ভাবে প্রকাশিত সংবাদপত্র কী বিবেচনায় নেয়া হয়েছে? স্থানীয়ভাবে পত্রিকায় এমন অনেক খবর ছাপা হয়, যা জাতীয় পর্যায়ের সংবাদপত্রে ছাপা হয় না। ওইসব সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতা নিয়েও প্রশ্ন আছে। পাশাপাশি স্থানীয় সংসদ সদস্যের বিরোধী পক্ষ রয়েছে। এমনকি তার নিজের দলের ভেতরেও ‘শত্র“’ আছে, যারা বিশেষ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে স্থানীয় এমপিদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশ করতে স্থানীয় সাংবাদিককে প্ররোচিত করতে পারেন। আমি জানি না টিআইবি প্রকাশিত সংবাদগুলোর সত্যতা কীভাবে নিশ্চিত করেছে? যদি সনাক সদস্যদের দিয়ে সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত করা হয়ে থাকে সেটিও ঠিক হয়নি। টিআইবির কাজের যে ধরন তাতে বিতর্ক হবেই। এতগুলো সেক্টর থাকতে এই মুহূর্তে টিআইবি এটা কেন বেছে নিল, সেটাও একটা প্রশ্ন। টিআইবি বিদেশ থেকে প্রচুর অর্থ পেয়ে থাকে। যারা এখানে কাজ করেন, তারাও প্রচুর অর্থ পেয়ে থাকেন। এমনকি একটি গবেষণাকর্ম শেষ হওয়ার পর ওই টিমকেও অতিরিক্ত কিছু অর্থ দেয়া হয়। এখানে যে প্রশ্নটি আমার কাছে মুখ্য তা হচ্ছে, দাতাদের দেয়া অর্থের পেছনে একটি সুনির্দিষ্ট ‘রাজনীতি’ আছে। কোনো কোনো রাষ্ট্রদূত কিংবা কোনো কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রধানের বক্তব্যই সেই রাজনীতিটা স্পষ্ট করে দেয়। তারা সুশাসনের কথা বলতে গিয়ে পরোক্ষভাবে ‘পরিবর্তনের’ কথাই বলেন। এরা প্রত্যক্ষভাবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করেন, যা কোনো সভ্য দেশের মানুষ গ্রহণ করে নিতে পারে না। টিআইবির গবেষণা কর্মকাণ্ডে সেই দাতাগোষ্ঠীর রাজনীতিই প্রতিফলিত হয়। আরো একটা কথা- টিআইবির পরিচালনা পর্ষদে যারা আছেন, তাদেরও কারো কারো স্পষ্ট একটি ‘রাজনীতি’ আছে। জনশ্রুতি আছে, এরা তৃতীয় ধারার প্রবক্তা। পরিচালনা পর্ষদের কেউ কেউ অতীতে বা এখনো তৃতীয় ধারার প্রবক্তাদের হাতে হাত মিলিয়েছেন। তাদের অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিয়েছেন, এখনো দিচ্ছেন।
ওই গবেষণার মধ্য দিয়ে এমন একটি উদ্যোগ নেয়া হলো যে, আমাদের আইন প্রণেতারা অসৎ, দুর্নীতিগ্রস্ত এবং প্রায় সবাই নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। ওই প্রতিবেদন এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়ে রেফার করা হবে। দাতারাও সাহায্যের শর্ত হিসেবে এটা বিবেচনায় নিতে পারেন। নিজের পক্ষে তারা বলতে পারেন ‘সৎ লোক’ রাজনীতিতে না থাকলে, তারা ঋণ দেবেন না। বিশ্বব্যাংকের সুশাসনের যে ধারণা, সেই ধারণা আরো শক্তিশালী হলো। তারা সরাসরি এমপিদের নেতিবাচক কর্মকাণ্ডের কথা বলবেন না। তারা বলবেন সুশাসনের কথা। ফলে এই রিপোর্টের মধ্য দিয়ে লাভবান হলো কারা? সরকার, বিরোধী দল, না দাতাগোষ্ঠী। এর মধ্য দিয়ে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি আরো নষ্ট হলো। এতদিন আমলাদের বলা হতো তারা অসৎ। এখন বলা হবে রাজনীতিবিদরা অসৎ। এমনিতেই সরকার একটা সংকটে আছে। নানা ইস্যুতে বহির্বিশ্বে সরকারের ভাবমূর্তি যথেষ্ট নষ্ট হয়েছে। ইউনূস ইস্যু, পদ্মা সেতু, ড. মসিউর রহমান প্রমুখ ইস্যুতে সরকার যখন বিব্রত, ঠিক তখনই যোগ হলো আরো একটি ইস্যু আইন প্রণেতারাও অসৎ ও দুর্নীতিবাজ। এতে করে সরকারের অবস্থান দুর্বল হলেও সন্দেহ নেই তাতে। কিন্তু দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হলো আরো বেশি। টিআইবি এটা করে দেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারল না। আমাদের আইন প্রণেতারা সবাই ভালো, এটা আমি বলব না। কিন্তু এটাও তো সত্য, আমরা বারবার এই রাজনীতিবিদদের কাছেই ফিরে যাই। ভালো হোক, মন্দ হোক এরাই জাতিকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। এদেশে ‘এক-এগারো’ যে কত বড় ক্ষতি করেছিল তা তো আমরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। বিরাজনীতিকীকরণ করার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে রাজনীতিমুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন ‘এক-এগারো’র উদ্যোক্তারা। তাদের উদ্যোগ যদি সফল হতো, তাহলে এদেশ পরিচালিত হতো বিদেশি সংস্থা বা মুরব্বিদের দ্বারা। তাতে করে আমরা কতটুক ‘স্বাধীন’ থাকতে পারতাম, এ প্রশ্ন করাই যায় এখন। আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে হিংসা, অবিশ্বাস, আস্থাহীনতা অনেক বেশি। পরস্পরকে বিশ্বাস না করার সংস্কৃতি শক্তিশালী হচ্ছে। ক্ষমতা স্থায়ী করার ‘অভিযোগ’ও আছে। সবার ভালোর জন্য আমরা তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা চালু করেছিলাম। ব্যাপক গ্রহণযোগ্যতা পেলেও এই ব্যবস্থা এখন পরিত্যক্ত। দশম সংসদ নির্বাচন কীভাবে হবে আমরা জানি না। দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলেও তার কোনো গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না। গাজীপুর ও টাঙ্গাইল উপনির্বাচন সরকারি দলের জন্য একটি মেসেজ। গাজীপুর ছিল ভোটারবিহীন। আর টাঙ্গাইলে বিদ্রোহী প্রার্থী জয় পেলেন। সরকার এ থেকে কী ‘শিক্ষা’ নেবে জানি না। তবে প্রতিনিধিত্ব ও গ্রহণযোগ্য একটি নির্বাচনের উদ্যোগ সরকারকেই নিতে হবে। এই যখন পরিস্থিতি, তখনই এলো টিআইবির এই রিপোর্ট। এই রিপোর্ট নিয়ে একটি মিশ্র প্রতিক্রিয়া ইতিমধ্যেই সৃষ্টি হয়েছে। বিচারপতি সংশ্লিষ্ট একটি গবেষণা প্রতিবেদন নিয়েও যথেষ্ট বিতর্ক হয়েছিল। প্রশ্ন হচ্ছে টিআইবি স্পর্শকাতর জায়গাগুলো নিয়ে নেতিবাচক ফলাফল উপস্থাপন করছে কেন? আরো তো বেশকিছু জায়গা রয়েছে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কূটনীতি, সমাজসেবা-এসব বিষয় নিয়ে সিরিজ গবেষণা কেন করে না টিআইবি? শুধু স্পর্শকাতর জায়গাগুলো বেছে নেয় কেন? জনসমাজের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে টিআইবি গবেষণা করুক। গবেষণার ফলাফল নিয়ে সেমিনার করুক। দেশজুড়ে ছড়িয়ে যাক সেই বক্তব্য। তাতে মানুষ সচেতন হবে। শিক্ষায় আমাদের দুর্নীতি অনেক বেশি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে হচ্ছে নিয়োগ-বাণিজ্য আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে হচ্ছে সার্টিফিকেট-বাণিজ্য। এগুলো নিয়ে টিআইবি কাজ করে না কেন? একটা কাজ করেছিল বটে। তারপর ‘অদৃশ্য কারণে’ থেমে গেছে টিআইবি। শিক্ষক নিয়োগে ঘুষ, দক্ষ প্রার্থীদের শিক্ষক থেকে বঞ্চিত করা, শিক্ষক নিয়োগে রাজনীতিকীকরণ, আত্মীয়করণ-এসব এখন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতন চিত্র। আর বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পরিণত হয়েছে ‘সার্টিফিকেট বিতরণের’ কারখানা হিসেবে। টিআইবি যদি এ ব্যাপারে গবেষণার কোনো উদ্যোগ নেয়, এদেশের শিক্ষিত সমাজ তাকে সমর্থন করবে। আদালত, সংসদ, সেনাবাহিনী (এখনো হয়নি) নিয়ে যে কোনো ‘গবেষণা’ প্রশ্নবিদ্ধ হবেই। বিতর্ক এড়াতে শিক্ষার্থীদের একেকটি প্যানেলকে যদি অন্তর্ভুক্ত করা যায়, তাদের দিয়ে যদি ‘রিভিউ’ করা যায়, তাহলে বিতর্ক কম হবে। স্পর্শকাতর বিষয়গুলো নিয়ে যদি গবেষণা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন না হয়, তাহলে যে বিতর্ক উঠবে, তাতে টিআইবির অগ্রযাত্রাই ব্যাহত হবে।
Daily MANOBKONTHHO
03.12.12

0 comments:

Post a Comment