গত ৯ ডিসেম্বর ঢাকা অবরোধ, ১১ ও ১৩ ডিসেম্বর সকাল সন্ধ্যা ও অর্ধবেলা হরতালের পর যে প্রশ্নটি আমার কাছে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে তা হচ্ছে কোন পথে এখন বাংলাদেশ? হরতালের সময় ছাত্রলীগের ক্যাডারদের সহিংস তৎপরতার ছবি, বিশেষ করে ঢাকার জজকোর্ট এলাকায় বিশ্বজিৎ দাসের হত্যাকাণ্ডের পর স্পষ্টতই আমি বাংলাদেশের আগামী দিনের রাজনীতি নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছি। অবরোধ আর হরতালের সময় যে চিত্র আমি দেখেছি, তা আমাকে পুনরায় স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের সেই ‘লগি-বৈঠার’ ভয়াবহ দৃশ্যের কথা। ঢাকায় বিশ্বজিৎ আর সিরাজগঞ্জে ওয়ারেস আলীর হত্যাকাণ্ড একই সূত্রে গাঁথা। বিশ্বজিৎ নিজেকে একজন ‘হিন্দু’ ও অরাজনৈতিক কর্মী হিসেবে পরিচয় দিলেও ছাত্রলীগের ক্যাডাররা তাঁকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে। পত্রিকায় সেই হত্যাকাণ্ডের ছবি ছাপা হয়েছে। বলা হয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগ নেতা মাহফুজুর রহমান নাহিদ ও নূরে আলম লিমনের নেতৃত্বে এই হত্যাকাণ্ড পরিচালিত হয়। দৈনিক যায় যায় দিন-এর ১০ ডিসেম্বরের প্রথম পাতার পাঁচ কলামের ছবি আমাদের মনে করিয়ে দিচ্ছে অতীত দিনের কথা। ছাত্রলীগ নামধারী কত বড় সন্ত্রাসী হলে কুপিয়ে একজন সাধারণ মানুষকে হত্যা করতে পারে। বিশ্বজিৎ রাজনীতি করতেন না। কোনো দলের সমর্থক তেমনটিও নয়। একজন দর্জি, সাধারণ মানুষ, তাঁকে প্রাণ দিতে হলো সন্ত্রাসীদের হাতে। আর সিরাজগঞ্জের জামায়াত কর্মী ওয়ারেস আলীকে প্রাণ দিতে হলো ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের গুলিতে।
১০ ডিসেম্বর প্রতিটি সংবাদপত্রে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের যে ছবি ছাপা হয়েছে, তা আমাদের এক ভয়ঙ্কর বাংলাদেশের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। ছাত্রলীগের ক্যাডারদের হাতে ঢাকার জজকোর্ট এলাকায় একজন মহিলা আইনজীবী লাঞ্ছিত হয়েছিলেন। আর একই দিন (৯ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী ‘রোকেয়া দিবস’-এ নারীর অধিকার সংরক্ষণের কথা বললেন। কী বৈসাদৃশ্য। ওসমানী মিলনায়তন থেকে জজকোর্ট খুব বেশি দূরে নয়। ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে বেগম রোকেয়ার স্মরণ সভায় প্রধানমন্ত্রী যখন নারী জাতির অধিকারের কথা বলছেন, ঠিক একই সময় তার ‘সোনার ছেলেরা’ একজন মহিলা আইনজীবীকে মাটিতে ফেলে পেটাচ্ছে! দৈনিক আমার দেশে ছাপা হওয়া সেই ছবি কী প্রধানমন্ত্রী দেখেছেন! এ কেমন নারী অধিকার! ওই একই দিন প্রতিটি পত্রিকায় ছাপা হয়েছে সাবেক এমপি নাজিউদ্দিন আলমের রক্তাক্ত ছবি। কপাল ভালো গুলিতে তিনি আহত হয়েছেন। মারা যাননি। সিরাজগঞ্জের ওয়ারেস আলীর মতো তিনি মারা যেতে পারতেন! জনাব আলম শীর্ষনেতা বিএনপির। তাকে পুলিশ চিনবে না, কিংবা ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীরা তাকে চিনবে নাÑ এটা আমি বিশ্বাস করি না। তাঁকে চিনেই তার ওপর হামলা চালানো হয়েছিল। উদ্দেশ্য একটাইÑ নৈরাজ্য সৃষ্টি করা, একটা ভয়ের পরিবেশ সৃষ্টি করা, যাতে করে মানুষ প্রতিবাদী না হয়, রাস্তায় নেমে এসে প্রতিবাদ না করে।
যারা বিশ্বজিৎকে হত্যা করেছে, তাদের নাম-ধাম ও ছবি পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। যারা গুলিতে নাজিম উদ্দিন আলমকে আহত করেছে কিংবা ওয়ারেস আলীকে হত্যা করেছে, তারাও পরিচিত। কিন্তু পুলিশ তাদের মাঝে দুইজনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার করেছে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে। সিটি কর্পোরেশনের আবর্জনা পরিবহনের গাড়ি নাকি তিনি ভাঙচুর করেছেন। মির্জা ফখরুলের মতো সিনিয়র নেতা গাড়ি ভাঙবেন! এই ‘সংস্কৃতি’ আমরা আগেও দেখেছি। গাড়ি পোড়ানো, গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় মির্জা ফখরুলের বিরুদ্ধে আগেও মামলা হয়েছিল। তিনি তখন জেলও খেটেছিলেন। আবারো জেলে গেলেন। এর মধ্যে দিয়ে সরকার একটি ‘ভয়ের সংস্কৃতি’ তৈরি করেছে। কিন্তু এসব করে কী সরকার পার পাবে! সরকার ইতোমধ্যে তার সমর্থকদের মাঠে নামিয়েছে। বিরোধী দলের প্রতি একটা পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছে। এই প্রবণতা ভালো নয়। এই প্রবণতা সহিংসতা বাড়াবে মাত্র। ঢাকা সফররত মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ব্লেকও এই ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
সাম্প্রতিক সময়ে একের পর এক যেসব ঘটনা ঘটে চলেছে, তা রাষ্ট্রের ভাবমূর্তির জন্য ভালো কোনো সংবাদ নয়। পদ্মা সেতু নিয়ে অনেক পানি গড়াল। শেষ পর্যন্ত পদ্মা সেতু ঝুলে গেল। বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ টিম অনেকটা হতাশ হয়েই ফিরে গেলেন। গেল সপ্তাহে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনালের একটি প্রতিবেদনও ছাপা হয়েছিল। এটা বার্লিন ভিত্তিক একটা সংস্থা। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী দেখা যায় বাংলাদেশে দুর্নীতি বেড়েছে। বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১৩ নম্বর। এ ধরনের একটি রিপোর্ট বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বহিঃর্বিশ্বে নষ্ট করে। কিন্তু সরকার এই রিপোর্টটিকে সিরিয়াসলি নেয়নি। উচিত ছিল এর কারণ অনুসন্ধানের জন্য একটি কমিটি গঠন করা। কিন্তু সরকার তা করেনি। তা না করে বিরোধী দল, বিশেষ করে জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রের সকল যন্ত্র ব্যবহার করছে।
বাংলাদেশে দুর্নীতির বিষয়টি একরকম ‘ওপেন সিক্রেট’। বর্তমান সরকারের আমলে দুর্নীতির সকল রেকর্ড ভঙ্গ হয়েছে। পদ্মা সেতু, হলমার্ক কেলেঙ্কারি, ডেসটিনি গ্রুপের দুর্নীতি নিয়ে বলতে গেলে প্রতিদিনই আলোচনা হচ্ছে। পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির বিষয়টি আন্তর্জাতিক পরিসরে স্থান পেয়েছে। বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে দুদকের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল। দুর্ভাগ্যজনকভাবে হলেও সত্য, যেদিন টিআইবি প্রতিবেদনটি ঢাকায় প্রকাশিত হয়, সেদিনও সংবাদপত্রে খবর বেরিয়েছে বিশ্বব্যাংকের ওই টিমটি লুই গাব্রিয়েল মোরেনোর নেতৃত্বে বাংলাদেশে এসেছিল, তারা অসন্তোষ নিয়ে ঢাকা ত্যাগ করেছে। দুদক পদ্মা সেতুতে দুর্নীতির অভিযোগে (তাদের ভাষায় দুর্নীতির ষড়যন্ত্র) যাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে যাচ্ছে, সেখানে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনের নাম নেই। অসন্তোষের এটাই মূল কারণ। বিশ্বব্যাংকের পর্যবেক্ষণ টিমের মতে কানাডার এসএনসি-লাভালিনের কর্মকর্তারা একাধিকবার সাবেক মন্ত্রীর সাথে দেখা করেছেন এবং ১০ পার্সেন্ট ঘুষ দাবির সাথে তার নামটি আছে, সেহেতু তাকে আসামির তালিকা থেকে বাদ দেয়া যায় না। শুধুমাত্র পদ্মা সেতুতে ‘দুর্নীতির ষড়যন্ত্রে’র কথা কেন বলি, হলমার্ক কেলেঙ্কারির সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত রয়েছেন সরকারের শীর্ষ স্থানীয় ব্যক্তিরা। হলমার্কের এমডিকে গ্রেফতার করা হলেও, অনেক ‘রাঘব বোয়াল’ই রয়ে গেছেন পর্দার অন্তরালে। হলমার্ক ঋণ কেলেঙ্কারিতে সোনালী ব্যাংকের একটি শাখা জড়িত থাকলেও সরকারি ব্যাংকগুলোতে এ ধরনের বড় দুর্নীতির ‘আরো খবর’ রয়েছে বলে অনেকেই আশঙ্কা করছেন। ডেসটিনির অর্থ কেলেঙ্কারির দায়ভারও সরকার এড়াতে পারে না। যদিও ওই কোম্পানির এমডি ও চেয়ারম্যান এখন জেলে। আর পর্দার অন্তরালে চলে গেছেন ক্ষমতাসীন ব্যক্তিরা। অনেক দিন থেকেই রেন্টাল (ভাড়াভিত্তিক) ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দুর্নীতি নিয়ে পত্র-পত্রিকায় ব্যাপক লেখালেখি হচ্ছে। দেশে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়েছে। আর এ চাহিদা মেটাতে সরকার আশ্রয় নিয়েছে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের। মোট ৩২টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে এ খাতে। অধিকাংশই ডিজেল ও ফার্নেস অয়েল দিয়ে চালানো হয়। এ খাতে প্রচুর ভর্তুকি দিতে হয় সরকারকে। এখানেই রয়েছে শুভঙ্করের ফাঁকি। অর্থনীতিবিদদের মতে, এ খাতে রাষ্ট্রের প্রায় ৩২ হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। এ থেকে মুনাফা লুটেছেন এক শ্রেণীর ব্যবসায়ী, যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে সরকারের সাথে জড়িত।
সুতরাং আজকে যখন টিআই’র প্রতিবেদনে বাংলাশেকে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়, তখন আমি অবাক হই না। কেননা বড় বড় দুর্নীতির জন্য ‘রাঘব-বোয়াল’রা জড়িত। এরা এতই ক্ষমতাবান যে আইনেরফাঁক ফোঁকড় দিয়ে এরা পার পেয়ে যান। এদেরকে কেউ ছুঁতে পারে না। শেয়ারবাজার থেকে অবৈধভাবে দশ হাজার কোটি টাকা ‘লুট’ হয়েছিল। এ ব্যাপারে সরকারের উদ্যোগে সাবেক বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর ইব্রাহিম খালেদের নেতৃত্বে যে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছিল, এই কমিটি দোষী ব্যক্তিদের চিহ্নিত করেছিল। কিন্তু এর একজনের বিরুদ্ধেও কোনো ব্যবস্থা নেয়া সম্ভব হয়নি। পাচার করা টাকাও ফেরত আসেনি।
পৃথিবীর সব দেশেই দুর্নীতি হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও হয়, এমনকি চীনেও শীর্ষ পর্যায়ে দুর্নীতির খবর আমরা পত্র-পত্রিকা থেকে জেনেছি। আমাদের সাথে ওই দেশগুলোর পার্থক্য এখানেই যে, ওইসব দেশে দুর্নীতি যদি প্রমাণিত হয়, তার শাস্তি ভয়াবহ। চীনের একটি শহরের মেয়র দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের একজন আইন প্রণেতা দুর্নীতির অভিযোগে শাস্তিপ্রাপ্ত হয়ে জেলে কাটিয়েছেন সারা জীবন। জার্মানির একজন সাবেক চ্যান্সেলর কোল দুর্নীতির অভিযোগে প্রমাণিত হয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছিলেন। এমনকি ভারতের মতো দেশেও প্রচুর দুর্নীতি হয়। কিন্তু সেখানকার তদন্ত সংস্থা ও বিচার বিভাগ অত্যন্ত শক্তিশালী। প্রভাব খাটানোর কোনো সুযোগ নেই। মন্ত্রী হয়েও দুর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হয়ে জেলে গেছেন, এ ধরনের সাবেক ও ক্ষমতাসীন মন্ত্রীর সংখ্যা অনেক। অস্বীকার করা যাবে না যে ভারত কিছুটা হলেও দুর্নীতিকে দমন করতে পেরেছে, যা আমরা পারিনি। আমাদের আইনে দুর্নীতি সংক্রান্ত একাধিক ধারা রয়েছে। যেমন দুর্নীতির ষড়যন্ত্রমূলক অপরাধের জন্য রয়েছে বাংলাদেশ দণ্ডবিধির ১২০(খ), দুর্নীতির উদ্যোগ গ্রহণের জন্য দণ্ডবিধির ৫১১ ধারা, ক্ষমতার অপব্যবহারের জন্য ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা ও পরস্পর যোগসাজশে অপরাধটি সংগঠনের জন্য দণ্ডবিধির ১০৯ নম্বর ধারা। এসব ধারায় দর্ুীতির অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিচার ও শাস্তি নিশ্চিত করা সম্ভব। কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে বড় বড় দুর্নীতির ক্ষেত্রে সরকার তদন্ত কাজে প্রভাব খাটায়। তদন্ত কর্মকর্তারা সরকারি কর্মকর্তা হওয়ায়, তারা নিরপেক্ষভাবে কাজ করতে পারেন না। তাদের চাকরির ভয় থাকে। ট্রান্সফারের ভয় থাকে। অনেক সময় ‘রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের উদ্দেশ্যে’ তদন্তকাজ প্রভাবিত হয়। যে কারণে দেখা যায় অভিযুক্ত ব্যক্তিরা শাস্তি পান না। অথবা এমনভাবে তদন্ত রিপোর্ট উপস্থাপন করা হয়, যা দিয়ে উচ্চ আদালতে দুর্নীতির প্রমাণ করান যায় না। বাংলাদেশ বোধকরি পৃথিবীর কয়েকটি দেশের মাঝে একটি, যেখানে বড় দুর্নীতি করেও অভিযুক্তরা পার পেয়ে যায়।
টিআই’র রিপোর্টে আমরা আবারো দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে প্রমাণিত হলাম। সর্বশেষ বিশ্বব্যাংকের প্যানেল টিম হতাশ হয়েই বাংলাদেশ ছাড়লেন। এর অর্থ পরিষ্কার- বিশ্বব্যাংক পদ্মা সেতুতে সম্ভবত অর্থায়ন করছে না। একজন ব্যক্তি এখানে প্রধান্য পেলেন। প্রাধান্য পেলো না অর্থায়নের বিষয়টি। সরকারের নীতি নির্ধারকরা এখন কী করবেন আমি জানি না। কিন্তু টিআই’র রিপোর্ট আর বিশ্বব্যাংকের প্যানেলের হতাশ হয়ে ফিরে যাবার ঘটনা আমাদের জন্য অনেক ‘খারাপ’ খবর অপেক্ষা করছে। দাতাগোষ্ঠী এখন আর বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে আসবে না। বিনিয়োগ হ্রাস পাবে। বাংলাদেশে সুশাসনের বিষয়টি এখন আন্তর্জাতিক পরিসরে প্রাধান্য পাবে। বাংলাদেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাকের ক্ষেত্রে যে জিএসপি সুবিধা চেয়েছিল তা আর পাবে না। ‘মিলেনিয়াম চ্যালেঞ্জ একাউন্ট’ থেকে সাহায্য পাবার সম্ভাবনাও ক্ষীণ।
এই যখন পরিস্থিতি তখন সরকারের উচিত ছিল বিরোধী দলের সাথে একটি সমঝোতায় যাওয়া। কিন্তু বিরোধী দলকে দমনের নামে যে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে সরকার উৎসাহিত করছে, তা আমাদের জন্য ভালো কোনো সংবাদ বয়ে আনবে না। সরকার যদি কোনো ‘সংলাপ’ এ না যায়, তাহলে বিরোধী দলকে বাধ্য করবে আরো কঠিন কর্মসূচি দিতে। এখনও সময় আছে। একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠনের ব্যাপারে সরকারের ইতিবাচক সিদ্ধান্ত আমাদেরকে বড় ধরনের সঙ্কট থেকে উদ্ধার করতে পারে।
21.12.12
0 comments:
Post a Comment