রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

গ্রীষ্মের অর্থনৈতিক সংকট


গ্রীষ্মের অর্থনৈতিক সংকট শুধুমাত্র গ্রিসের ভবিষ্যৎকেই একটি অনিশ্চয়তার মাঝে ঠেলে দিয়েছে, তা নয়। বরং বিশ্বের  অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ওপর এটা একটা বড় আঘাত। গত ৩০ জুন ছিল গ্রিসে আইএমএফের কাছ থেকে নেওয়া ১০০ কোটি ৭০ লাখ ডলার ঋণ পরিশোধ করার সর্বশেষ তারিখ। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় গ্রিস কার্যত এখন একটি ঋণ খেলাপি রাষ্ট্রে পরিণত হলো। আজ ৫ জুলাই গ্রিস সরকার সে দেশে একটি গণভোটের আয়োজন করেছে। অর্থনীতি রক্ষায় (বেল আউট) এই গণভোট। গ্রিসের সিপ্রাস সরকার গণভোটে ঋণদাতাদের অতিরিক্ত বাজেট প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছেন। এবং গণভোটে ‘না’-সূচক ভোট দেওয়ার জন্য জণগণের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা চাচ্ছেন জনগণ সেখানে ‘হ্যাঁ’-সূচক ভোট দিক। ‘না’-সূচক ভোট জয়যুক্ত হলে গ্রিস ইউরো জোন (১৯ দেশ) থেকে বেরিয়ে যাবে এবং তাদের নিজস্ব মুদ্রা ড্রাকমা পুনঃপ্রবর্তন করবে। এর মধ্য দিয়ে আগামীতে গ্রিস ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করতে পারে। একসময় এই ইউরোপীয় ইউনিয়ন নিয়ে ঋণ ছিল ইউরোপবাসীর। এক ইউরোপের ধারণা কল্পনাই থেকে যেতে পারে এখন।
২০১১ সালের মাঝামাঝি সময়ে অর্থনৈতিক সংকট ঘনীভূত হওয়ার আগ পর্যন্ত অভিন্ন ইউরোপের ধারণাটি কোনো অমূলক ধারণা ছিল না। বরং ১৯৫৭ সালে ইউরোপিয়ান কমিউনিটি সৃষ্টির পর ১৯৯২ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্বাক্ষরিত ম্যাসট্রিট চুক্তি ছিল অভিন্ন ইউরোপ গঠনের লক্ষ্যে একটি বড় ধরনের পদক্ষেপ। ম্যাসট্রিট চুক্তিতে একটি একক মুদ্রা ও একটি ইউরোপীয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এরপর ১৯৯৭ সালের মার্চ মাসে সেভেন চুক্তি ও ১৯৯৯ সালের ১ জানুয়ারি ইউরোপের একক মুদ্রা ইউরো চালুর সিদ্ধান্তের মধ্য দিয়ে অভিন্ন এক ইউরোপের দিকে যাত্রা শুরু করেছিল ইউরোপ। বলা ভালো, ১৯৯৩ সালের ১ নভেম্বর ইউরোপীয় কমিউনিটি ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) নাম ধারণ করে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের এরই মধ্যে সম্প্রসারণ ঘটেছে। পূর্বে ইউরোপে সমাজতন্ত্রের পতনের পর ২০০৪ ও ২০০৭ সালে পূর্ব ইউরোপের বেশ কটি দেশ ইইউতে যোগ দিয়েছে। ইইউর সদস্যসংখ্যা এখন ২৮। ১৯৯৯ সালে তৎকালীন ইইউর ১৫টি দেশের মাঝে ১১টি দেশ ইউরো চালু করেছিল। এখন চালু রয়েছে ১৭টি দেশে। ইউরো চালু হওয়ার সময়ই ইউরো নিয়ে প্রশ্ন ছিল।
এখন বলা হয়েছিল, ইউরোপের উত্তরের ধনী দেশগুলোতে ইউরো চালু হলে এ থেকে সুবিধা নিতে পারে। আজ এত বছর পর এই আশঙ্কাই সত্যে পরিণত হলো। উল্লেখ্য, ১৯৯৯ সালে ইউরো চালু হওয়ার হওয়ার সিদ্ধান্ত হলেও তিন বছর পর্যন্ত নিজ নিজ দেশের মুদ্রা চালু থাকে এবং ২০০২ সালের জুলাই মাসে ইউরোর কাগজি ও ধাতব মুদ্রা চালু হওয়ার পর পুরোনো মুদ্রা বাতিল হয়ে যায়। গত নয় বছর ইউরো নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন দেখা না দিলেও ২০১৩ ও ২০১৪ সালে ইইউর কয়েকটি দেশে বড় ধরনের অর্থনৈতিক সংকটে পড়ে। দেশগুলো ঋণ রোধ করতে না পেরে অনেকটা দেউলিয়া হয়ে পড়ে। এরই মধ্যে গ্রিস ও ইতালির অর্থনৈতিক পরিস্থিতি চরমে ওঠে। কিন্তু গ্রিসের পরিস্থিতি ছিল সবচেয়ে খারাপ। সেখানে পাপাদ সরকারের পতন, বিচারপতি পাপাদেমাসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, কিংবা ২০১৫ নির্বাচনে বামপন্থী এলেক্সিস সিপ্রাসের নেতৃত্বে একটি সরকার গঠিত হলেও গ্রিস অর্থনৈতিকভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারেনি।
আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন একটি শক্তি। অনেক আন্তর্জাতিক ইস্যুতে ইইউ যুক্তরাষ্ট্রের বাইরে গিয়ে এককভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু ইউরো জোন এর অর্থনৈতিক সংকট ইইউর ভূমিকাকে সংকুচিত করে দিয়েছে। এখানে বলা ভালো, ১৯৫৭ সালে মাত্র ছয়টি দেশ নিয়ে (বেলজিয়াম, ফ্রান্স, পশ্চিম জার্মানি, ইতালি, হল্যান্ড, লুক্সের্মবাগ) ইউরোপীয় ঐক্যের যে যাত্রা শুরু করেছিল, তা আজ পরিণত হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নে (ইইউ)। ২৮টি দেশ এখন ইইউর  সদস্য। এর মাঝে আবার ২৪টি দেশ ন্যাটোর সদস্য। তবে জর্জিয়া ও ইউক্রেন এখনো ন্যাটোর সদস্য হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র এই দুটো দেশকে ন্যাটোর সদস্যপদ দিতে চাচ্ছে, যাতে রাশিয়ার রয়েছে আপত্তি।
ইউরোপে এরই মাঝে বেশ কয়েকটি সংস্থার জন্ম হয়েছে যে সংস্থাগুলো ইউরোপীয় ঐক্যকে ধরে রেখেছে। যেমন বলা যেতে পারে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট, ইউরোপীয় কাউন্সিল, কাউন্সিল, ইউরোপীয় কমিশন, ইউরোপীয় আদালত, নিরীক্ষক দফতর, অর্থনৈতিক ও সামাজিক কমিটি, আঞ্চলিক কমিটি, ইউরোপীয় ব্যাংক ও ইউরোপীয় মুদ্রা ইনস্টিটিউট ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কথা। এই সংস্থাগুলো অভিন্ন ইউরোপের ধারণাকে শক্তিশালী করেছে। কিন্তু ইউরোপের অর্থনৈতিক মন্দা পুরো দৃশ্যপটকে এখন বদলে দিল। এখন শুধু ইউরোপই নয়, বরং খোদ ইউরোপীয় ইউনিয়নের অস্তিত্ব প্রশ্নের মুখে। যে যুক্তি তুলে একসময় ব্রিটেন ও ডেনমার্ক ইউরো জোনে (এক মুদ্রা নিজ দেশে চালু) যোগ দিতে চায়নি, সেই যুক্তিটি এখন সত্য বলে প্রমাণিত হলো। অর্থনৈতিক সংকট থেকে উদ্ধারের কাজটি অত সহজ নয়। একটি দেশের সমস্যায় অন্য দেশ আক্রান্ত হচ্ছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে ইউরোর ভবিষ্যৎ নিয়ে। এ ক্ষেত্রে যে প্রশ্নটি সবচেয়ে বড়, তা হচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বর্তমান কাঠামো আদৌ টিকিয়ে রাখা সম্ভব হবে কি না?
২০০৭ সালে ইউরোপীয় ইউনিয়ন যখন তার ৫০তম পূর্তি উৎসব পালন করে, তখনই বর্ণিল ঘোষণার মধ্য দিয়ে এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল যে, ইইউর মধ্যে বিভক্ত আছে। লুক্সেমবার্গ ইউরোপের অন্যতম প্রধান অর্জন হিসেবে ইউরোর মুদ্রার কথা উল্লেখ করেছিল। অথচ মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যে প্রমাণিত হয়েছিল ইউরোর সব দেশগুলোর স্বার্থ রক্ষা করতে পারছে না। ব্রিটেন ও ডেনমার্ক প্রথম থেকেই ইউরোকে প্রত্যাখ্যান করে আসছিল। পোল্যান্ড ও ইতালি চেয়েছিল ইউরোপের ক্রিশ্চিয়ান মূল্যবোধকে প্রাধান্য দিতে। কিন্তু ফ্রান্স এর বিরোধিতা করেছিল। দেশটি ধর্মকে আলাদা করতে চেয়েছিল। চেক রিপাবলিক ও প্রোল্যান্ড নিরাপত্তার বিষয়টির ওপর গুরুত্ব দিলেও ফ্রান্স ও জার্মানি এটা নিয়ে চিন্তিত ছিল। এ কারণে যে নিরাপত্তার বিষয়টি যে কোনো সিদ্ধান্ত বলে রাশিয়াকে ক্ষেপিয়ে তুলতে পারে। জার্মানি ও স্পেন ইইউর জন্য নতুন একটি সাংবিধানিক চুক্তি করতে চাইলেও ব্রিটেন ও নেদারল্যান্ড এর বিরোধী। পূর্বে ইউরোর সাবেক সমাজতান্ত্রিক দেশগুলো তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বিগ্নে ছিল। ১৯৮৯ সালের পর থেকে সমাজতন্ত্রের  দেশগুলো সোভিয়েত নির্ভরতা থেকে বের হয়ে আসতে সাহায্য করে। সেখানে সমাজতন্ত্রের পতন হয় এবং দেশগুলো গণতন্ত্রের দিকে ধাবিত হয়। ২০০৪ সালের আগে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগ দিতে পারেনি। এই দেশগুলোর ওপর কোপেনহেগেন ফর্মুলা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল। কোপেনহেগেন ফর্মুলার কতগুলো শর্ত দেওয়া হয়েছিল, যা পরে করলে ইইউর সদস্য পদ পাওয়া যাবে। শর্তগুলোর মধ্যে ছিল-গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি চালু, মুক্তবাজারে অর্থনৈতিক প্রবর্তন, মানবাধিকার রক্ষা, সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাদান ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রক্ষা করা। এসব শর্ত পূরণ হওয়ার পরই কয়েকটি পূর্ব ইউরোপীয় দেশ ২০০৪ ও ২০০৭ সালে ইইউতে যোগ দেয়। বসনিয়া, হারজেগোভিনা কিংবা ক্রোয়েশিয়া এখনো ইইউতে যোগ দিতে পারেনি।
এখন অর্থনৈতিক সংকট সব সংকটকে ছাড়িয়ে গেছে। ঋণ সংকট জর্জরিত ইউরোপে আবারও সংস্কার আশঙ্কা বাড়ছে। ২০১৩-২০১৪ সময়সীমায় ইউরো ব্যবহারকারী ইউরো জোনের শূন্য প্রবৃত্তি হয়েছিল। ইইউর প্রবৃত্তিও ছিল শূন্যের কোঠায়। তাই ইউরোপ নিয়ে শঙ্কা থেকেই গেল। এখন ইইউর ঐক্য নিয়ে যে সন্দেহ, তা আরো বাড়বে। এরই মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোকে দুই স্তরে বিভক্ত করার প্রস্তাব উঠেছে। জার্মানি ও ফ্রান্স একটি দুই স্তরবিশিষ্ট ইউরোপীয় ইউনিয়ন চাচ্ছে। ফ্রান্সের সাবেক প্রেসিডেন্ট সার্কোজি খোলামেলাভাবেই এই বিভক্তির কথা বলেছিলেন। জার্মানির চ্যাঞ্চেলর মের্কেলও চাচ্ছেন একটা পরিবর্তন। তিনি বলেছেন এক নয়া ইউরোপ গড়ার কথা। যদিও এই বিভক্তির বিরোধিতা করেছিলেন ইউরোপীয় কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান জোসে ম্যানুয়েল বাকোছ। এখন সত্যি সত্যি ইউরোপ ভাগ হয়ে যাবে কি না, কিংবা নতুন ইউরোপের স্বরূপ কী হবে তা এই মুহূর্তে বলা কঠিন। তবে একটি পরিবর্তনকে আসন্ন তা গ্রিসের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির দিকে তাকালেই বোঝা যায়। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ছোট অর্থনৈতিক দেশগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। এটাই ইউরোপীয় ইউনিয়নের বড় ব্যর্থতা। তাই ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন যখন ইইউতে থাকা বা না থাকা নিয়ে গণভোট করতে চান, তখন ইউরোপের ঐক্য যে ফাটলের জন্য হয়েছে তারই ইঙ্গিত দিলেন তিনি। ক্যামেরন স্পষ্ট করেই বলেছেন আবারও যদি তখনই এসব সমস্যা নিয়ে উদ্যোগ নিতে না পারে, তাহলে ইউরোপ ব্যর্থ এবং ব্রিটিশরাও পতনের দিকে যেতে থাকবে। অতীতে ইইউর সম্পর্কে এত ভংয়কর কথা কেউ বলেননি। তখন ক্যামেরন সাহস করেই বললেন, জাপানের দিনগুলো অত্যন্ত কঠিন সময় ইইউর জন্য। অর্থনীতি ও রাজনীতি সংকট যদি ইইউ কাটিয়ে উঠতে না পারে তাহলে এটা দিব্যি বলা যায় আগামী এক দশকের মধ্যে আমরা এক ভিন্ন ইউরোপের চেহারা দেখতে পাব।
ব্রিটেনের মতো একটি বড় দেশ যদি ইইউ ত্যাগ করে, তাহলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অস্তিত্ব থাকবে না। যেখানে ইউরোপীয় কমিশনের সভাপতি জ্যাক্লদ জ্যাংকার অভিবাসীদের ব্যাপারে বিশেষ করে তাদের ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশে বসবাসের একটি পরিকল্পনা করছেন সেখানে ক্যামেরন এর বিরোধিতা করেছেন। জ্যাংকারের পরিকল্পনায় বিভিন্ন দেশের জন্য একটি অভিবাসী কোঠা রাখার কথা বলা হয়েছে। নয়া ব্রিটিশ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী টেরেশামে বলেছেন, এই কোঠা ব্যবস্থা ব্রিটেন মানবে না। এতে করে ইউরোপের দিকে অভিবাসীদের আশাকে উৎসাহিত করবে। এমনকি হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অর্বান কোঠা ব্যবস্থাকে বিকৃত মস্তিষ্কও অপ্রাপ্ত বলে অভিহিত করেছেন। এখানে বলা ভালো, সাম্প্রতিক সময়গুলোতে ভূমধ্যসাগর অতিক্রমকালে শত শত অভিবাসী উদ্ধার হয়েছেন। অথবা নৌকা ডুবিতে মারা গেছেন। এসব অভিবাসীর টার্গেট হচ্ছে ইতালি, গ্রিস, সাইপ্রাস ও মাল্ট। অতিরিক্ত অভিবাসীর চাপ সামলাতে না পেরে এই দেশগুলো ইইউর কাছে প্রতিকার চেয়েছিল। গত বছর ইইউর সদস্য রাষ্ট্রগুলো এক লাখ ৮৫ হাজার অভিবাসীকে আশ্রয় দিয়েছে। ফলে এটা স্পষ্ট যে আগামীতে এই অভিবাসী ইস্যু ইউরোপীয় রাজনীতিতে একটি বড় বিতর্ক তুলবে।
তবে সব ছাড়িয়ে গেছে গ্রিসের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি। সংবাদপত্রের প্রতিবেদন থেকে জানাযায়, গ্রিসের সংসদের অধিকাংশ সদস্য ৫ জুলাইয়ের গণভোটের ‘না’ ভোটের পক্ষে মতামত দিয়েছে। এর অর্থ হচ্ছে, ঋণদাতা দেশগুলোকে সংস্কারের কথা বলেছিল। অর্থাৎ বাজেট কাটের কথা বলা ছিল তাতে শায় দেবে না। ধারণা করছি, গণভোটে ‘না’ ভোট জয়যুক্ত হবে। এর অর্থ হচ্ছে গ্রিস ইউরো জোন থেকে বেরিয়ে যাবে। শেষ অব্দি গ্রিস ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকবে কি না, সেটাও একটা প্রশ্ন হয়ে দেখা দেবে কিংবা এমন হতে পারে গ্রিস ব্রিটেন ও ডেনমার্কের মতো অবস্থান গ্রহণ করতে পারে। অর্থাৎ ইউরোপীয় ইউনিয়নের থেকেও নিজস্ব মুদ্রা তারা ব্যবহার করবে। যেসব ব্রিটেনে ইউরো চালু না হওয়ায় তখনো পাউন্ড সেখানে চালু রয়েছে। শোনা যাচ্ছে, গ্রিস তার পুরোনো মুদ্রা ‘ড্রাকমা’ পুনরায় চালু করার প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। তবে সব কিছু নির্ভর করছে ৫ জুলাইয়ের গণভোটের ফলাফলের ওপর। এখানে এ কথা বলা প্রয়োজন গ্রিস যদি ইউরো জোন থেকে বেরিয়ে যায় এর একটা মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সারা বিশ্বের অর্থনীতিতেই পড়বে। এরই মধ্যে বিশ্বের প্রতিটি স্টক এক্সচেঞ্জ  মার্কেটের পতন ঘটেছে। শুধু অস্ট্রেলিয়ার স্টক এক্সচেঞ্জ থেকে ৩৫ মিলিয়ন ডলার হাওয়া হয়ে গেছে। মুদ্রা হিসেবে ডলারের মানও কমে গেছে। বলা হচ্ছে, প্রতিক্রিয়া হিসেবে ২০১৬ সালে এশিয়ার প্রবৃদ্ধি ০.৩ কমে ভাগ কমে যাবে। সুতরাং সারা বিশ্ব তাকিয়ে থাকবে আজ ৫ জুলাইয়ের গণভোটের দিকে।
Ntv Online
 ০৫ জুলাই ২০১৫, ১৮:৪৬ | আপডেট: ০৬ জুলাই ২০১৫, ০১:১২

0 comments:

Post a Comment