হিলারি কিনটন কি হতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট? জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য একটি মার্কিন সংবাদপত্র ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল গেল সপ্তাহে যে সমীক্ষা রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল, এতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হিলারি কিনটনের সম্ভাব্য জয়ের চিত্রটিই ফুটে উঠেছে। আর এটা যদি হয়, তাহলে হিলারি কিনটন ইতিহাসের পাতায় ঢুকে যাবেন। বারাক ওবামাকে মনোনয়ন দিয়ে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি চমক সৃষ্টি করেছিল। তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট। আর ২২৭ বছর পর হিলারি কিনটন হতে পারেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। ১৭৮৯ সালে জর্জ ওয়াশিংটন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছিলেন। এরপর ৪৪ প্রেসিডেন্ট কখনো এক টার্ম, কখনো দু’টার্ম দায়িত্ব পালন করেছেন। বারাক ওবামার দু’টার্মের (৮ বছর) মেয়াদ শেষ হবে ২০১৬ সালের নভেম্বরে। ৮ নভেম্বর (২০১৬) সেখানে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। ইতোমধ্যেই হিলারি কিনটন তার প্রার্থী পদ ঘোষণা করেছেন। ১৯৪৭ সালে জন্ম নেওয়া ও ৬৭ বছর বয়সি হিলারি কিনটনের হোয়াইট হাউস, প্রশাসন ও আইন প্রণেতা হিসেবে অভিজ্ঞতা অনেক দিনের। হোয়াইট হাউসে তিনি ছিলেন আট বছর, ১৯৯৩ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত একজন ফার্স্ট লেডি হিসেবে। এরপর নিউইয়র্ক থেকে একজন সিনেটর হিসেবে তিনি কংগ্রেসে আইন প্রণয়নে সহায়তা করেন ২০০১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত। এরপর ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত সেক্রেটারি অব স্টেট হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক নীতি প্রণয়ন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। এর আগে ২০০৮ সালে তিনি বারাক ওবামার সঙ্গে ডেমোক্র্যাট দলীয় প্রার্থী হতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। কিন্তু চূড়ান্ত বিাচরে তিনি ওবামার কাছে হেরে গিয়েছিলেন। এরপর বারাক ওবামা তাকে মন্ত্রিপরিষদে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দিলেও হিলারি কিনটন বারবারই আলোচনায় ছিলেন। মিডিয়া তাকে বারবার ফোকাস করেছে। শেষ পর্যন্ত সব জল্পনার অবসান ঘটালেন তিনি। কিন্তু হোয়াইট হাউসে যাওয়ার পথটি কি মসৃণ? তিনি কি পারবেন ইতিহাস গড়তে? যুক্তরাষ্ট্রের সমাজ ২০০৮ সালে ওবামাকে নির্বাচিত করে ট্রাডিশনাল প্রথা ভেঙেছিলÑ একজন কৃষ্ণাঙ্গ প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। এই ধারাবাহিকতায় এখন যুক্তরাষ্ট্র একজন নারী প্রেসিডেন্টকে পায় কি না, সেটিই দেখার বিষয়। তবে অনেক প্রশ্ন তো আছেই। যুক্তরাষ্ট্রের সমাজ এখনো কনজারভেটিভ। তারা একজন নারীকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখতে নাও পারেন। অবশ্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নারীরা সরকার ও রাষ্ট্র পরিচালনায় বেশ সাফল্যের পরিচয় দিয়েছেন। জার্মানি, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিলসহ চার ডজন দেশে নারীরা এখনো রাষ্ট্র তথা সরকার পরিচালনা করে আসছেন। ইউরোপের অনেক দেশে রাষ্ট্রপ্রধান এখন নারী। ফলে একদিকে হিলারি কিনটনের সম্ভাবনা যেমিন আছে, তেমনি এটিও সত্যÑ তিনি কনজারভেটিভদের বাধার সম্মুখীন হতে পারেন। বলা ভালো, জনগণের ভোটে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন না। নির্বাচিত হন নির্বাচকম-লীর ভোটে। যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যের সংখ্যা ৫০। আর নির্বাচকম-লীর সংখ্যা ৫৩৮। সাধারণত সিনেট ও হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভের (প্রতিনিধি পরিষদ) সদস্য সংখ্যার ভিত্তিতে এই নির্বাচকম-লী গঠিত হয়। হিলারি কিনটনের জন্য সমস্যা হচ্ছে, কনজারভেটিভ রিপাবলিকানরা এখন কংগ্রেসের উভয়কক্ষ (সিনেট ও হাউস অব রিপ্রেজেনটেটিভ) নিয়ন্ত্রণ করে। অর্থাৎ নির্বাচকম-লীর মধ্যে রিপাবলিকানরা ভারী। ২০১৬ সালে এক-তৃতীয়াংশ সিনেট ও প্রতিনিধি পরিষদের নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হবে। এতে যদি পরিবর্তন আসে, তাহলে তা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রভাব ফেরতে পারে। নতুবা কনজারভেটিভদের বলয় ভাঙা তার জন্য কঠিন হবে। উল্লেখ্য, হিলারিকে বলা হয় দুর্বলচিত্তের মানুষ। তার স্বামী বিল কিনটন যখন প্রেসিডেন্ট থাকা অবস্থায় মনিকা লিউনস্কির সঙ্গে অবৈধ যৌন সম্পর্কে জড়িয়ে যান, তখন স্ত্রী হিসেবে তিনি যথাযথ ভূমিকা পালন করতে পারেননি। অবশ্য ওই ঘটনার পরও তিনি স্বামীকে ‘ক্ষমা’ করে দিয়েছিলেন এবং বৈবাহিক জীবন টিকিয়ে রাখতে পেরেছিলেন। তবে এটা বলার অপেক্ষা রাখে না, নির্বাচনী প্রচারণায় হিলারি কিনটনকে এ ধরনের প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হবে। এ জন্য হিলারি কিনটন কতটুকু মানসিক শক্তির অধিকারী হন, সেটিই বড় প্রশ্ন এখন। উপরন্তু কিনটন দম্পত্তির বিরুদ্ধে বেশকিছু আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। যখন এই দম্পতি হোয়াইট হাউস ছাড়নে, তখন তাদের আর্থিক ভিত্তি অত শক্তিশালী ছিল না। পরে নিউইয়র্কে ২৭ লাখ ডলারের একটি বাড়ি ও ওয়াশিংটনে ২৮ লাখ ৫০ হাজার ডলারের তাদের অপর একটি বাড়ি ক্রয় নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। কিনটন ফাউন্ডেশন নিয়েও প্রশ্ন আছে। অভিযোগ আছে, অনেক বিদেশি রাষ্ট্র এই ফাউন্ডেশকে আর্থিক সুবিধা দিয়ে তাদের ‘সুবিধা’ আদায় করে নিয়েছে। অবশ্যও দু’জনই বক্তৃতা আর সেমিনার করে বেশ অর্থ আয় করেন। একই সঙ্গে হিলারির বিরুদ্ধে বড় একটি অভিযোগ হচ্ছে, তিনি পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকা অবস্থায় লিবিয়ার বেনগাজিতে যুক্তরাষ্ট্রের কনস্যুলেটে জঙ্গিবাদীদের হামলা, ওই হামলায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের নিহত হওয়ার ঘটনা ঠেকাতে এবং রাষ্ট্রদূতসহ অন্যদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেননি। ওয়াশিংটনের পিউ রিচার্স ইনস্টিটিউটের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বৈদেশিক নীতি ইস্যুতে মানুষ রিপাবলিকানদের বেশি বিশ্বাস করে। এটি হিলারি কিনটনের জন্য একটি মাইনাস পয়েন্ট। অতীতে ইরাক, বসনিয়া ও কসোভোয় ‘যুদ্ধ’ সমর্থন করেছিলেন হিলারি। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরোধী একটা জনমত তাকে প্রত্যাখ্যান করতে পারে। তবে হিলারি কিনটনের বেশকিছু প্লাস পয়েন্টও রয়েছে। এক. তিনি পররাষ্ট্র ও নিরাপত্তা বিষয়ে যথেষ্ট অভিজ্ঞ। এক্ষেত্রে রিপাবলিকান প্রার্থী জর্জ বুশের (সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশের ভাই ও সিনিয়র বুশের ছোট ছেলে) চেয়ে তিনি অনেক এগিয়ে আছেন। দুই. গেল বছরের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রে যে মধ্যবর্তী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, এতে রিপাবলিকানরা বিজয়ী হলেও ইতোমধ্যে রিপাবলিকান স্রোতে উল্টা বাতাস বইছে। বিশেষ করে তরুণ ও গরিব আমেরিকান ভোটারদের মধ্যে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জনপ্রিয়তা বাড়ছে। তিন. যুক্তরাষ্ট্রে একটি শক্তিশালী তরুণ প্রজন্ম রয়েছÑ যাদের নেতৃত্বে নিউইয়র্কসহ অন্যান্য শহরে ‘অক্যুপাই মুভমেন্ট’ পরিচালিত হয়েছিল। এই ‘শক্তি’ ডেমোক্র্যাটদের আবার ২০১৬ সালে কংগ্রেসে ফিরিয়ে আনতে পারে। তা হিলারিকে বিজয়ী হতে সাহায্য করবে। চার. ওবামা তার শেষ টার্মে এসে বেশকিছু কর্মসূচি হাতে নিয়েছিলেন (স্বাস্থ্যসেবা, অভিবাসন, তরুণদের উচ্চশিক্ষায় সাহায্য ইত্যাদি)Ñ যা তিনি কংগ্রেসের বিরোধিতার কারণে বাস্তবায়ন করতে পারছেন না। এই তরুণ প্রজন্মের সমর্থন পেতে পারেন হিলারি। পাঁচ. যুক্তরাষ্ট্রে যুদ্ধবিরোধী একটি জনমত রয়েছে। তা বেশ শক্তিশালী। প্রেসিডেন্ট ওবামার আমলেই মধ্যপ্রাচ্যে আইএসবিরোধী যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র অংশ নিয়ে নতুন একটি ‘ফ্রন্ট’ ওপেন করেছে। কোটি কোটি ডলার খরচ হয় যুদ্ধে। হিলারি যদি এই ‘যুদ্ধবিরোধী’ জনমতের সঙ্গে অবস্থান করেন, তাহলে তার সমর্থন ও গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে। ছয়. রিপাবলিকান শিবিরে তেমন শক্ত প্রার্থী নেই। এটা হিলারির জন্য একটা প্লাস পয়েন্ট।
ডেমোক্র্যাট শিবিরে হিলারি কিনটনের অবস্থান অনেক শক্তিশালী। প্রেসিডেন্ট ওবামা তাকে একজন সম্ভাব্য ‘ভালো প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তুলনামূলক বিচারে জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও সিনেটর এলিজাবেথ ওয়ারেন অনেক পিছিয়ে আছেন। কৌশলী হিলারি অনেক আগে তার প্রার্থী পদ ঘোষণা করে প্রতিযোগিতায় নিজেকে এগিয়ে রাখলেন। তবে যেতে হবে অনেক দূর। পার্টি ফোরাম ও কনভেনশনে তাকে প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হতে হবে নিজ দলের সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে। সেই সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে হলে তাকে প্রচুর অর্থ সংগ্রহ করতে হবে। বড় বড় ব্যবসায়ী হাউস অর্থ জোগায়। হিলারিকে তাদের আস্থা অর্জন করতে হবে। এটি সত্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পরই প্রেসিডেন্ট পদে দলের পরিবর্তন হয়েছে। অর্থাৎ একটি দল (যেমনÑ ডেমোক্র্যাটিক পার্টি) ক্ষমতায় দু’টার্ম থাকলেও পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন রিপাবলিকানদের মধ্যে থেকে থ্যারি ট্রুমান (১৯৪৫-৫৩) প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টির পক্ষ থেকে। পরে অর্থাৎ ৩৪তম প্রেসিডেন্ট হলেন রিপাবলিকান দল থেকে (আইসেন হাওয়ার, ১৯৫৩-৬১)। ৩৫তম প্রেসিডেন্টে নির্বাচনে আবার পরিবর্তন। কেনেডির মৃত্যুর পর জনসন (১৯৬১-৬৯) ডেমোক্র্যাটদের ধারাবাহিকতা রক্ষা করেন। ১৯৬৯ সালে আবার পরিবর্তন। প্রেসিডেন্ট হলেন রিপাবলিকানরা (নিক্সন ও ফোর্ড, ১৯৬৯-৭৭)। এই ধারাবাহিকতায় প্রেসিডেন্ট হন জিমি কার্টার (ডেমোক্র্যাট, ১৯৭৭-৮১), রিগ্যান (রিপাবলিকান, ১৯৮১-৮৯) ও জর্জ বুশ (রিপাবলিকান, ১৯৮৯-৯৩), বিল কিনটন (ডেমোক্র্যাট, ১৯৯৩-২০০১), বুশ-২ (রিপাবলিকান, ২০০১-০৮), ওবামা (২০০৮-১৬)। এই ধারা হিলারি কিনটন ভাঙতে পারবেন কি না, সেটিই বড় প্রশ্ন এখন।
হিলারি কিনটনের ব্যাপারে যে কথাটা বলা যায়, তা হচ্ছে তিনি মার্কিন বৈদেশিক নীতিতে একটি নতুন দিকদর্শনা আনেন। বিশ্ব রাজনীতির অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু এখন এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল। ২০১০ সালে তিনি তার বিখ্যাত ঋড়ৎধিৎফ ফবঢ়ষড়ুবফ উরঢ়ষড়সধপু-এর মাধ্যমে এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের উপস্থিতি নিশ্চিত করেন। তিনি বিখ্যাত ঋড়ৎরমহ চড়ষরপু ম্যাগাজিনে লিখেছিলেন, ঞযব অংরধ চধপরভরপ যধং নবপধসব, ধ শবু ফৎরাবৎ ড়ভ মষড়নধষ ঢ়ধষরঃরপং ধহফ টঝ ঈড়সসরঃ ঃযবৎব রং বংংবহঃরধষ. তার এই নীতির উদ্দেশ্য ছিল ৩টিÑ এক. এ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের জড়িত থাকা, দুই. যুক্তরাষ্ট্র ও চিনের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাসের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা এবং তিন. এ অঞ্চলের দেশগুলোর সঙ্গে অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বৃদ্ধি। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ছাত্ররা জানেন, একুশ শতক হবে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের। এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যকার সম্পর্ক (চিন, জাপান, ভারত) কেন্দ্র করে বিশ্ব রাজনীতি বিকশিত হবে। জন কেরি হিলারির স্থলাভিষিক্ত (পররাষ্ট্র সচিব) হয়েও হিলারির এই নীতি অব্যাহত রেখেছেন। এটা একটা বাস্তববাদী নীতি।
বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে হিলারি কিনটনের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী হতেই পারি। অনেকের স্মরণ থাকতে পারে, বাংলাদেশ সফরের সময় তিনি বাংলাদেশকে একটি সফট পাওয়ার হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। নিঃসন্দেহে আমাদের জন্য এটা বড় পাওয়া। তিনি যোগ্য ব্যক্তি। একটি সম্মোহনী শক্তি তার রয়েছে। একজন ‘চ্যাম্পিয়ন’-এর কথা তিনি বলেছেন। দেখতে হবে, ২০১৬ সালে কোন ‘চ্যাম্পিয়ন’ হোয়াইট হাউসে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হন। তবে এটি মনে রাখতে হবে, মার্কিন সমাজ বড় কনজারভেটিভ। একজন নারীকে তারা প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেখবেনÑ এই মানসিকতা এখনো মার্কিন সমাজে তৈরি হয়নি। উপরন্তু একজন ধনী ব্যবসায়ী কোনাল্ড ট্রাম্প জেব বুশকে চ্যালেঞ্জ করে রিপাবলিকান প্রার্থী হতে মাঠে নেমেছেন। আমেরিকার ব্যবসায়ী শ্রেণি ও করপোরেট জগৎ তার পেছনে থাকতে পারে এবং চূড়ান্ত বিচারে তিনি যদি জেব বুশকে পরাজিত করতে পারেন, তাহলে নির্বাচনে একটি নতুন উন্মাদনা আনতে পারেন। বিশ্বব্যাপী যুক্তরাষ্ট্রের গ্রহণযোগ্যতা আজ প্রশ্নের মুখে। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে চিন এখন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম চ্যালেঞ্জার। অনেকেই জানেন, যুক্তরাষ্ট্র চিন থেকে ঋণ গ্রহণ করে নিজের আর্থিক খাতের চাহিদা মেটায়। এ জন্য একজন যোগ্য প্রেসিডেন্টের দাবি উঠছে আমেরিকার সর্বত্র। ইউরোপে রাশিয়া নতুন করে মার্কিন নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছে। এসব কিছু নির্বাচনী প্রচারে প্রভাব ফেলবে। সুতরাং হিলারি কিনটনের সামনের দিনগুলো যে সুখের হবে, এটি মনে করার কারণ নেই। এখনো বাকি আছে অনেক দিন। অনেক প্রার্থীই মাঠে আছেন। কে হবেন চূড়ান্ত প্রার্থীÑ এটি এ মুহূর্তে নিশ্চিত করে বলা যাবে না। তবে হিলারি কিনটন আর জেব বুশের পাল্লা যে ভারী, তা বলাই যায়।
Daily Amader Somoy
05.07.15
0 comments:
Post a Comment