রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফর

ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফর শেষ হয়েছে। কিন্তু এর রেশ রয়ে গেছে। বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে এ সফরকে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এটা ছিল একটা ঐতিহাসিক সফর, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। তবে সেই সঙ্গে এটাও সত্য, এই সফরে আমাদের প্রত্যাশা পূরণ হয়নি। গত ১২ বছরের ব্যবধানে একজন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী যখন বাংলাদেশে আসেন, তখন আমাদের প্রত্যাশা থাকে অনেক বেশি। কেননা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ক্ষেত্রে বেশ কিছু অন্তরায় রয়েছে। এ নিয়ে দুদেশের মাঝে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তিক্ততার সৃষ্টি হলেও, শুধু ভারতীয় কর্তৃপক্ষের একগুঁয়েমি ও উদাসীনতার কারণে সমস্যাগুলোর কোনো সমাধান হচ্ছিল না। এ কারণেই বিশাল এক প্রত্যাশার বলয় সৃষ্টি হয়েছিল। কিন্তু মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফর, কতগুলো সমঝোতা, চুক্তি ও প্রটোকল স্বাক্ষরের মধ্যে দিয়ে সব প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে, এটা মনে হয় না। উপরন্তু চুক্তি বাস্তবায়ন নিয়েও ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। এ কারণেই মনমোহনের বাংলাদেশ সফর সফল হয়েছে, এটা বলা যাবে না। ভারতীয় দৃষ্টিকোণ থেকে তাদের হারাবার কিছু ছিল না। কিন্তু বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে এটা অসফল। ব্যর্থ। প্রথমত, তিস্তার পানিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি। এটি হয়নি মূলত মমতা ব্যানার্জির কারণে। বলা হচ্ছে, চূড়ান্ত মুহূর্তে মমতা ব্যার্নাজিকে না জানিয়ে নয়াদিলি্ল চুক্তি করতে যাওয়ায়, মমতা মনে করেছেন এতে করে পশ্চিমবঙ্গকে অবহেলা করা হয়েছে। ফলশ্রুতিতে ঢাকায় আসার জন্য তার নাম তালিকাভুক্ত থাকলেও শেষ মুহূর্তে তিনি নাম প্রত্যাহার করে নেন। তবে এ বক্তব্য কতটুকু গ্রহণযোগ্য, সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। কেননা মনমোহন সিংয়ের ভাষ্য অনুযায়ী, এক মাস আগেই চুক্তি সম্পর্কে মমতা ব্যানার্জিকে অবহিত করা হেেছ। কোনটি সত্য আমরা জানি না। তবে এখানে আরো একটি 'থিওরি' কাজ করে_ আর তা হচ্ছে, তিস্তার পানি বণ্টনের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য একটি চুক্তির ব্যাপারে সবার দৃষ্টি এদিকে সীমাবদ্ধ রেখে ভারত অতি কৌশলে তার স্বার্থ আদায় করে নিয়েছে। আমরা যদি স্বাক্ষরিত উন্নয়ন ও সহযোগিতাসংক্রান্ত চুক্তিটি পর্যালোচনা করি, তাহলে এ সত্যটি প্রমাণিত হবে। দ্বিতীয়ত, ভারত ৪৬টি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দিয়েছে। এখানেও রয়েছে শুভংকরের ফাঁকি। ৪৬টি আইটেমের মাঝে ৪৫টি আইটেমই গার্মেন্ট আইটেম। এ থেকে বাংলাদেশের আয় অতি সামান্য। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি, এই বাণিজ্য ঘাটতি ৪৬টি পণ্য শুল্কমুক্ত রফতানি করে কমানো যাবে না। ২০০৯ সালে বাংলাদেশ এই ৪৬টি আইটেম ভারতে রফতানি করে আয় করেছে মাত্র ৩৭ লাখ ডলার (কালের কণ্ঠ, ৮ সেপ্টেম্বর, ২০১১)। বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের যে বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি, তা এই ৪৫টি গার্মেন্ট পণ্য রফতানি করে কমানো যাবে না। তৃতীয়ত, আমরা চেয়েছিলাম স্পর্শকাতর তালিকায় থাকা ৪৮০টি পণ্যের শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার। কিন্তু আমরা এ সুবিধা পাইনি। সার্কের মধ্যে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ। স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে বাংলাদেশের বিশেষ সুযোগ-সুবিধা পাওয়ার কথা। কিন্তু ভারত সেটা আমাদের দেয়নি। চতুর্থত, যে ৪৫টি গার্মেন্ট আইটেম শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পেয়েছে, তা ভারতের উদ্যোক্তারা নিজেরাই তৈরি করে। ফলে বাংলাদেশি পণ্যকে সেখানে কঠিন প্রতিযোগিতার মুখে পড়তে হবে। পঞ্চমত, আমদানির ক্ষেত্রে আমদানি সার্টিফিকেট ও লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) প্রয়োজন হয়। এই দুটি পর্যায়ই বাংলাদেশের জন্য কিছুটা অসুবিধা তৈরি করবে। বিএসটিআইয়ের সার্টিফিকেট তারা গ্রহণ করে না। এ ছাড়া ভারতীয় স্থলবন্দরের সবগুলোতে কাস্টম হাউজ নেই। ষষ্ঠত, ছিটমহল বিনিময় নিয়ে যে চুক্তি হয়েছে, সেখানে কিছুটা অস্পষ্টতা রয়ে গেছে। চুক্তি স্বাক্ষরের পরের দিনই পঞ্চগড়ে ও কুড়িগ্রামে অনশন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ভবিষ্যৎই এখন বলে দেবে চুক্তির পূর্ণ বাস্তবায়ন নিয়ে আদৌ কোনো জটিলতা তৈরি হবে কি না।
সপ্তমত, বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে স্কুলে আধুনিক ল্যাবরেটরি স্থাপনের পাশাপাশি লোক প্রশাসন কেন্দ্র ও মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি এবং পুলিশ অ্যাকাডেমিতে আইটি সেন্টার স্থাপনের বিষয়টিও যৌথ ইশতেহারে রয়েছে। স্কুলে ল্যাব স্থাপন করার সিদ্ধান্ত ভালো। মিলিটারি ইনস্টিটিউট, পুলিশ অ্যাকাডেমি কিংবা লোক প্রশাসন কেন্দ্রে ভারতীয় সহযোগিতা আমরা নিতে পারি। কিন্তু ভারতীয় প্রশিক্ষকের আমাদের প্রয়োজন নেই। আমাদের দেশে এখন যোগ্য প্রশিক্ষক রয়েছেন। অষ্টমত, সার্ককে শক্তিশালী করার কথা বলা হয়েছে। অথচ সার্কের মূল সমস্যা তো ভারতকে নিয়েই। একমাত্র ভুটান ও আফগানিস্তান বাদে সার্কভুক্ত প্রতিটি দেশের সঙ্গেই ভারতের সমস্যা রয়েছে। সমস্যাটি মূলত ভারতের আধিপত্যবাদী নীতিকে কেন্দ্র করে। ভারত যদি তার নীতিতে পরিবর্তন না আনে, তাহলে সার্ক শক্তিশালী হবে না। নয়, ইশতেহারে জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলের সম্প্রসারণে ভারতের দাবির প্রতি (অর্থাৎ স্থায়ী সদস্যপদ) বাংলাদেশ সমর্থন জানিয়েছে। এই সমর্থন নানা প্রশ্নের জন্ম দিতে পারে। কেননা স্থায়ী সদস্যপদে যে যোগ্যতা দরকার, অর্থাৎ পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর সঙ্গে সুসম্পর্ক, আধিপত্যবাদী নীতি পরিত্যাগ করা, বিশ্ব রাজনীতিতে নেতৃত্ব দান ইত্যাদি, ভারত এখনো অর্জন করতে পারেনি। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদের দাবিদার এখন জাপান, ইন্দোনেশিয়া, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকাও। বাংলাদেশ শুধু ভারতের দাবিকে সমর্থন করতে পারে না। দশ, ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষ অর্থনৈতিক জোন করার কথাও ইশতেহারে রয়েছে। এটা খারাপ নয়। কিন্তু ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা আদৌ বিনিয়োগে উৎসাহী নন, তারা চান তাদের পণ্য বিক্রি। বাংলাদেশ বাহ্যত ভারতীয় পণ্যের বাজারে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশ হচ্ছে বিশাল এটি বাজার। ভারত এই সুবিধাই নিয়েছে। অথচ বাণিজ্য ঘাটতি কমানোর কোনো উদ্যোগ নেই। এমনকি এ-সংক্রান্ত কোনো সুস্পষ্ট ঘোষণাও আমি যৌথ ইশতেহারে খুঁজে পাইনি। এগারো, বিটিভির সঙ্গে ভারতীয় দূরদর্শনের একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। ইশতেহারেও আছে কথাটা। কিন্তু বাংলাদেশি চ্যানেলগুলো যাতে ভারতে, বিশেষ করে পশ্চিমবঙ্গে সম্প্রচার হয়, সে ব্যাপারে ভারতীয় উদ্যোগের কথা ইশতেহারে নেই। যদিও বিষয়টি বেসরকারি পর্যায়ের, তবুও এখানে ভারত সরকারের কোনো ভূমিকা নেই, তা বলা যাবে না।
ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের সময় যেসব চুক্তি সই হয়েছে এবং যৌথ ইশতেহারে যেসব কথা বলা হয়েছে, তাতে মূলত ভারতীয় স্বার্থই প্রতিধ্বনিত হয়েছে। বাংলাদেশের প্রাপ্তি এখানে তুলনামূলক বিচারে কম। বাংলাদেশের প্রত্যাশা ছিল অনেক বেশি, যা পূরণ হয়নি। রাষ্ট্রীয় সফরের পর সাধারণত যৌথ ইশতেহার প্রকাশিত হয়। এটা এক ধরনের রেওয়াজ ও বাধ্যবাধকতাও বটে। এই ইশতেহারেও বাংলাদেশের জন্য কোনো আশার বাণী নেই। মনমোহনের ঢাকা সফর নিয়ে আমি মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করেছি। খোদ মহাজোট সরকারের শরিকরাও নাখোশ, বিশেষ করে তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি না হওয়ায়। খোদ মন্ত্রীরাও এ নিয়ে কথা বলেছেন। খোদ কৃষিমন্ত্রী তো বলেই দিয়েছেন তিস্তায় পানি না দিলে ট্রানজিট দেয়া হবে না। আর সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত অভিযোগ করলেন আমলাতান্ত্রিক জটিলতার। খোদ ভারতেও মনমোহনের সফর নিয়ে বিতর্ক আছে। বিরোধী দল মনমোহনের ভূমিকাকে সমালোচনাও করেছে (যুগান্তর, ১১ সেপ্টেম্বর)।
বলতে দ্বিধা নেই ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফরের সময় যে চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে, তা অত্যন্ত সাদামাটা ধরনের। এজন্য ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর মতো একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির বাংলাদেশ সফরের প্রয়োজন ছিল না। যেমন বলা যেতে পারে বাঘ রক্ষার প্রটোকল, সুন্দরবন সুরক্ষা, টেলিভিশন সম্প্রচার, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, ফ্যাশন টেকনোলজি, মৎস্য খাতে সহযোগিতা, দুই বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি ও জেএনইউ) মধ্যে সহযোগিতাবিষয়ক সমঝোতা স্মারক। এসব সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীই যথেষ্ট। মনমোহন সিংয়ের মতো একজন প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সফরে বাংলাদেশ আসার প্রয়োজন ছিল না। উন্নয়ন সহযোগিতা চুক্তি কিংবা নেপালকে ট্রানজিট দিতে যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে, সে ব্যাপারেও আরো কথা রয়েছে। নেপালকে ট্রানজিট দেয়া সম্পর্কিত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছিল ১৯৭৮ সালে। কিন্তু তা কার্যকর হয়নি। এখন আবার একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হলো।
উন্নয়ন সহযোগিতা চুক্তিটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশ ট্রানজিট সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করেনি এবং এতে করে আমাদের কেউ কেউ উৎসাহিত হতে পারেন বটে, কিন্তু উন্নয়ন সহযোগিতা চুক্তিটি যদি বিশ্লেষণ করা যায়, তাহলে দেখা যাবে পরোক্ষভাবে এতে ট্রানজিটের কথাই বলা হয়েছে। চুক্তিতে যে ভাষা ব্যবহার করা হয়েছে, তা প্রকারান্তরে ট্রানজিটেরই নামান্তর। উন্নয়ন সহযোগিতা চুক্তিতে বলা হয়েছে উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার কথা। বলা হয়েছে বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহার করার কথা, বিশেষ করে সমুদ্রবন্দর। এই চুক্তির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হচ্ছে নিরাপত্তা প্রসঙ্গ। এতে বলা হয়েছে, নিরাপত্তাসংক্রান্ত উদ্বেগ দূর করার ব্যাপারে পরস্পর পরস্পরকে সহযোগিতা করবে। প্রয়োজনে ভূখ- ব্যবহার করার সম্ভাবনাও এতে করে তৈরি হলো। এই চুক্তিকে ভারত অদূর ভবিষ্যতে তার স্বার্থে ব্যবহার করতে পারে। চুক্তিতে যে ভাষা ও বক্তব্য রয়েছে, তার ব্যাখ্যা প্রয়োজন। আমার ধারণা ভারতের আমলারা অত্যন্ত সুকৌশলে এ ধরনের 'শব্দ' ও বক্তব্য ব্যবহার করে পরোক্ষভাবে ট্রানজিট আদায় করে নিল। কেননা তারা ভালো করে জানেন সরাসরি ট্রানজিটসংক্রান্ত কোনো চুক্তি এ দেশের জনগণ মানবে না। বিরোধী দলের প্রচ- আপত্তি রয়েছে ট্রানজিটের ব্যাপারে। উপরন্তু আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের সঙ্গে সরাসরি ট্রানজিটসংক্রান্ত একটি চুক্তি করে আওয়ামী লীগকে একটি ঝুঁকির মাঝে ফেলে দিতে চায় না নয়াদিলি্ল। তাই পরোক্ষভাবে তারা এটা আদায় করে নিল। এ জন্য উন্নয়ন সহযোগিতা চুক্তিটি পূর্ণাঙ্গভাবে উপস্থাপন করা প্রয়োজন। এখানে বলা প্রয়োজন যে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের কোনো নিরাপত্তা চুক্তি নেই। ১৯৭২ সালের মার্চে স্বাক্ষরিত মৈত্রী চুক্তির (যার ধরন ছিল অনেকটা সামরিক ও চুক্তির ৮, ৯, ১০ নম্বর ধারা ছিল স্পর্শকাতর) মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ার পর (১৯৯৭), কোনো পক্ষই আর চুক্তির মেয়াদ বাড়ায়নি।
এই চুক্তিতে উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার কথা বলা হয়েছে। এটাই হচ্ছে মোদ্দাকথা এবং ভারত এটিই চায়। ট্রানজিট বা করিডরের যে কথা বলা হয়েছে, সেটা বাহ্যত উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্যই চাওয়া হচ্ছে। ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেবগৌড়া বাংলাদেশ সফরের সময় (জানুয়ারি ১৯৯৭) এটা নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত হয় যে ভারত ও বাংলাদেশ ৪টি দেশ নিয়ে (বাংলাদেশ, ভারত, ভুটান ও নেপাল) একটি উপ-আঞ্চলিক জোট গঠনে রাজি হয়েছে। এই উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতাকে তখন বলা হয়েছিল উন্নয়নের চতুর্ভুজ বা ঝড়ঁঃয অংরধহ এৎড়ঃিয ছঁধফৎধহমষব (ঝঅএছ)। ১৯৯৭ সালের জানুয়ারিতে কাঠমা-ুতে অনুষ্ঠিত চারদেশীয় পররাষ্ট্র সচিবদের বৈঠকে ঝঅএছ গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। ঝঅএছ-এ সমগ্র ভারতবর্ষকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সাতটি রাজ্যকে। দীর্ঘদিন উন্নয়নের চতুর্ভুজ নিয়ে তেমন কিছু শোনা না গেলেও মনমোহনের ঢাকা সফরের মধ্য দিয়ে এ ধারণাটি আবার সামনে চলে এলো।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বাংলাদেশ সফর শেষ হয়েছে। ভালো হোক, মন্দ হোক এ সফরের গুরুত্ব রয়েছে। ভারত যদি আমাদের সমস্যাগুলোর ব্যাপারে আন্তরিক হয়, আমার বিশ্বাস সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে তা একটি বড় ভূমিকা রাখবে।
প্রফেসর, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ,
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
tsrahmanbd@yahoo.com 

0 comments:

Post a Comment