প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখন মেয়েদের রূপচর্চার জন্য বিউটি পারলার তৈরি করা হবে-
এমনটাই জানিয়েছেন একজন প্রভাবশালী সরকারি কর্মকর্তা। সম্প্রতি স্কুল
শিক্ষকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেছেন। তিনি উপস্থিত শিক্ষকদের এ
কথাও জানাতে ভোলেননি যে, এ ব্যাপারে তার নাকি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথাও
হয়েছে। দেশের শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে যখন নানা
বিভ্রান্তি দেশে ও বিদেশে, মেধার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আমরা যখন খোদ নিজেদের
বিতর্কিত করছি, ঠিক সেই মুহূর্তে তিনি কিনা বললেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে
মেয়েদের জন্য তৈরি হবে বিউটি পারলার! তিনি এ সিদ্ধান্ত নিতেই পারেন এবং
আমাদের আমলানির্ভর শিক্ষামন্ত্রী এতে সায় দেবেন, এটাও আমার মনে হয়। কিন্তু
প্রধানমন্ত্রী এতে সায় দেবেন কি-না, তাতে আমাদের যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
দেশের সামগ্রিক অবস্থা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী যথেষ্ট সচেতন। তিনি জানেন সব। কী
করতে হবে, কোন সিদ্ধান্তটি নিতে হবে- এটা তিনি ভালোই বোঝেন। কিন্তু একজন
আমলা কী করে এ ধরনের উদ্ভট কথা বলতে পারেন, তা আমার মাথায় আসে না। তিনি এ
সংক্রান্ত সংবাদের কোনো প্রতিবাদও করেননি। তাহলে ধরে নিতে হবে তিনি কথাটা
বলেছেন। অর্থাৎ প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মেয়েদের জন্য একটি করে বিউটি
পারলার তৈরি করা হবে।ওই আমলার এ
উদ্ভট বক্তব্যে আমি বিভ্রান্ত ও হতাশাগ্রস্ত। যেখানে আমরা আমাদের মেয়েদের
দক্ষ জনশক্তিতে পরিণত করতে চাই, সেখানে কিনা তাদের সৌন্দর্যচর্চার জন্য
বিউটি পারলার! এখনকার ছেলেমেয়েরা অনেক সচেতন। স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের
শিক্ষার্থীরা তাদের ক্যারিয়ারের ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন। আমি অনেক মেয়েকে
দেখেছি, বিশ্ববিদ্যালয়ে পা দিয়েই ওরা চিন্তা করে নিজেদের ক্যারিয়ার নিয়ে।
সৌন্দর্যচর্চা ওদের কাছে প্রাধান্য পেয়েছে বলে আমার কাছে কখনও মনে হয়নি।
সুতরাং ওই সরকারি কর্মকর্তার উচিত ছিল ওদের এ চিন্তাভাবনাটা মাথায় রেখে
পরিকল্পনার কথা বলা। স্কুলের পাঠ্য কার্যক্রমের বাইরেও ওদের আইটিসহ
অন্যান্য শাখায় জ্ঞান দেয়া যায়। মেয়েরা যেসব হোস্টেলে থাকে, সেখানে বৈকালিক
আইটি কোর্স করানো যায়। আইটি সেক্টরে রয়েছে বিশাল এক সম্ভাবনা।
শিক্ষার্থীদের যদি ছোটকাল থেকেই আইটির বিভিন্ন শাখায় দক্ষ করে তোলা যায়,
তাহলে পরবর্তী সময়ে ওরা নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে আরও উন্নতি করতে পারবে। ওদের এ
সেক্টরে দক্ষ করে গড়ে না তুলে ওই সরকারি কর্মকর্তা চাচ্ছেন তাদের সৌন্দর্য
বৃদ্ধির জন্য বিউটি পারলার করতে!এই
যদি হয় আমাদের আমলাদের সচেতনতা, তাহলে আমরা মধ্যম আয়ের দেশে কীভাবে পরিণত
হব, আমি বিষয়টা ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। আমাদের শিক্ষা সেক্টরে রয়েছে নানা
সমস্যা। মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা আজ রীতিমতো প্রশ্নের মুখে।
জিপিএ-৫-এর ছড়াছড়ি আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার আদৌ কোনো উন্নতির কথা বলে না।
লন্ডনের টাইমের হায়ার এডুকেশন শীর্ষক একটি প্রতিবেদনে ২০১৫ সালে শিক্ষার
মানদণ্ডে এশিয়ার শীর্ষ ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বাংলাদেশের একটি
বিশ্ববিদ্যালয়ও নেই। অথচ এক্ষেত্রে ওই সরকারি কর্মকর্তার কোনো উৎকণ্ঠা নেই।
কোনো ভাবনা নেই। আমরা আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে ২০২১ সালে কোন পর্যায়ে
দেখতে চাই, সে ব্যাপারে তার কোনো ভাবনা নেই। লাখ লাখ ছাত্রছাত্রী বেসরকারি ও
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএর একখানা সার্টিফিকেট নিয়ে জব মার্কেটে
ঢোকার চেষ্টা করছে। কেউবা আবার ভদ্র কেরানি হচ্ছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়
নিয়েও আমাদের চিন্তাভাবনা করা প্রয়োজন। সেটিও আমরা করছি না। জাতীয়
বিশ্ববিদ্যালয়ের মাধ্যমে ঘরে ঘরে মাস্টার্স ডিগ্রিধারী তৈরি করে আর যাই হোক
আমরা শিক্ষার মান বাড়াতে পারিনি। কোটা ব্যবস্থা নিয়েও চিন্তা করার সময়
এসেছে। যেখানে জিপিএ-৫ নিয়ে ছাত্রছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে পারছে
না, সেখানে কোটার কারণে ভর্তি হচ্ছে শত শত শিক্ষার্থী। অযোগ্য এসব
শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রি নিয়ে জাতীয় জীবনে কোনো অবদান
রাখতে পারছে না। বরং এরা জাতির জন্য বোঝাস্বরূপ। কোনো কোনো বিশ্ববিদ্যালয়
আবার পারিবারিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে। এদিকেও দৃষ্টি দেয়া দরকার।
সরকারি কর্মকর্তার সময় কই এসব দেখার!জিপিএ-৫
পাওয়া ছাত্রছাত্রীদের মাঝে শতকরা ৮০ জন যখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি
পরীক্ষায় ন্যূনতম পাস নম্বর তুলতে ব্যর্থ হয়, তখন সত্যিকার অর্থে বিষয়টা
আমাদের ভাবায়। পাসের হার বাড়িয়ে দেখানোর মাঝে কোনো কৃতিত্ব নেই।
উত্তরপত্রগুলো সাধারণভাবে মূল্যায়ন করা ও নম্বর বাড়িয়ে দেয়ার সিদ্ধান্তটি
ভুল ছিল। এখন অভিভাবকরা বুঝতে পারবেন, জিপিএ-৫ পাওয়া সন্তানটি তাদের জন্য
বোঝা হয়ে গেল। এক ধরনের হতাশা ওই সব শিক্ষার্থীর মাঝে এসে যাবে, যখন
জিপিএ-৫ নিয়েও তারা কোথাও ভর্তি হতে পারবে না। এসব বিষয় নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী
ও সচিবের চিন্তাভাবনা করা উচিত। আমার ধারণা শিক্ষামন্ত্রীকে যারা পরামর্শ
দেন, তারা সঠিক পরামর্শটি দেন না। সীমিত লাভ বা সুবিধা নিয়ে আর যাই হোক,
সমাজে বড় পরিবর্তন আনা যায় না। মন্ত্রী নিশ্চয়ই এটি উপলব্ধি করবেন।মন্ত্রীকে
উপদেশ দেয়ার ক্ষমতা আমি রাখি না। সব ব্যাপারেই যদি তিনি রাজনীতি খোঁজেন,
তাহলে তা হবে বড় ভুল। শিক্ষার সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক থাকা উচিত নয়।
তাকে এখন ভাবতে হবে শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে। আমলারা আপনাকে সঠিক উপদেশটি দেন
বলে আমার মনে হয় না। সুবিধাভোগী আমলারা আপনার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই মূল
বিষয় থেকে আপনাকে দূরে সরিয়ে রাখছে। আপনি অতীতের দৃষ্টান্ত তুলে যুক্তি
খাড়া করতে পারেন। কিন্তু তাও সমর্থনযোগ্য নয়। একজন মেধাবী শিক্ষার্থী
জিপিএ-৫ পাবে এটাই স্বাভাবিক। আমি ছোট ছোট বাচ্চাদের মেধাকে খাটো করে দেখতে
চাই না। কিন্তু জিপিএ-৫-এর সংখ্যা বাড়িয়ে আমরা কি ওদের প্রত্যাশা আরও
বাড়িয়ে দিলাম না? একটা শিশু কষ্ট করে শিখবে, জানবে, বুঝবে। বিষয়কে আয়ত্ত
করবে। একটা প্রতিযোগিতা থাকবে ওদের ভেতরে। আর ভালো করার একটা জিদ তৈরি হবে
ছোটবেলা থেকেই। এর বদলে তার জিপিএ-৫ প্রাপ্তি তাকে ভালো করে পড়াশোনা করার
প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলতে বাধ্য করবে। ভবিষ্যতে সে যখন এই জিপিএ-৫ নিয়ে
কোনো ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারবে না, তখন সে হতাশায় পড়ে যাবে।
একসময় অসৎ পথে পা বাড়াবে।আমাদের
দেশের ছেলেমেয়েরা অনেক মেধাবী। তারাই আমাদের ভবিষ্যৎ। ওদের নিজেদের মতো বড়
হতে দেয়াই উচিত। তথাকথিত জিপিএ-৫ ওদের বড় করবে না। ওদের জীবনটা ওদেরই গড়তে
দেয়া উচিত। ওরা শুধু সীমিত প্রশ্ন পড়ে, মুখস্থ করে পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ-৫
নিয়ে জীবনকে বড় করে গড়ে তুলতে পারবে না। ওদের অনেক কিছু পড়াশোনা করা উচিত।
বিজ্ঞান, সাহিত্য, শিক্ষা- সবকিছু। জ্ঞানের রয়েছে এক বিশাল ভাণ্ডার। এর
মাঝেই ওরা খুঁজে পাবে ওদের পৃথিবীকে। আমি জানি এই বয়সে ছেলেমেয়েরা অনেক
মেধাবী হয়। অনেক কিছু জানতে চায়, শিখতে চায়। কিন্তু তাদের শেখাটাকে আমরা
সীমিত করে দিচ্ছি। অযাচিতভাবে জিপিএ-৫ দিয়ে ওদের প্রত্যাশা আমরা বাড়িয়ে
দিয়েছি। এটা ভালো নয়। এটা করে আমাদের নীতিনির্ধারকরা অভিভাবকদের কাছে বাহবা
নিতে চেয়েছেন। হয়তো কোনো কোনো অভিভাবক এতে খুশি হবেন। কিন্তু ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ফাহমিদুল হকের মতো এমন অনেক অভিভাবক আছেন, যারা
খুশি হবেন না। একজন শিক্ষক যে কাজটি করেন, ফাহমিদুল হক সে কাজটিই করেছিলেন।
নিজের মেয়ের জিপিএ-৫ প্রাপ্তিতে তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করে ফেসবুকে একটি
স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন। এটা সঠিক কী বেঠিক এ বিতর্ক হতেই পারে। কিন্তু যেটা
বাস্তব তা হচ্ছে এ ঢালাওভাবে দেয়া জিপিএ-৫ তিনি সমর্থন করেননি। এটাই আমরা
বলতে চাই। বেশি বেশি জিপিএ-৫ দিয়ে শিক্ষার মান বাড়ানো যায় না। ওই সরকারি
কর্মকর্তা যদি ওদের দক্ষ জনশক্তি হিসেবে গড়ে ওঠার কোনো অনুপ্রেরণা দিতেন,
কোনো পরিকল্পনার কথা জানাতেন, আমি খুশি হতাম।উচ্চশিক্ষা
নিয়েও আমার মাঝে এক ধরনের হতাশা কাজ করে। আমি যা চেয়েছিলাম, তা পাইনি।
আমার ছাত্ররা যারা শিক্ষক হয়েছে, ওদের কাছে আমার যা প্রত্যাশা, তা আমি
পাইনি। শিক্ষকতা, গবেষণার চেয়ে তাদের কাছে রাজনীতি, আর্থিক আনুকূল্য এসব
বিষয়ই বড়। অনেক শিক্ষককে দেখেছি দু-দুটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। অনেকটা
প্রকাশ্যেই করেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ যে জানে না, তা নয়। জানে। হয়তো
তাদের প্রাথমিক অনুমতিও আছে। এটা কী করে সম্ভব আমি জানি না। কোনো কোনো
ক্ষেত্রে পার্টটাইমের কথা বলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাড়পত্র বা অনুমতি
নেন বটে (অনেকে তাও নেন না), কিন্তু কাজ করেন ফুল টাইম। দেখবে কে? মঞ্জুরি
কমিশনের এ ব্যাপারে সরাসরি কোনো নির্দেশনা নেই। তবে আমি একাধিকবার বর্তমান
মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নানের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা
বলেছি। তখন অবশ্য তিনি চেয়ারম্যান ছিলেন না। একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে
পড়াতেন। তিনি এ বিষয়ে পুরোপুরি জ্ঞাত। আমি খুশি হব যদি তিনি এ ব্যাপারে
একটি নির্দেশনা দেন। কারণ উচ্চশিক্ষা নিয়ে দেশে একটা হতাশাজনক পরিস্থিতি
বিরাজ করছে। শিক্ষকদের দায়বদ্ধতা সৃষ্টি করা প্রয়োজন। ওই সরকারি
কর্মকর্তাকেও বিষয়টি ভেবে দেখার আহ্বান জানাই।তিনি
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে বিউটি পারলার স্থাপন না করে শিক্ষা-সংক্রান্ত অন্য
বিষয়গুলোর দিকে নজর দিলে ভালো করবেন। শক্ত হাতে শিক্ষা-সংক্রান্ত বিষয়গুলো
দেখা দরকার। স্কুল থেকে শুরু করে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত প্রতিটি সেক্টরে
শৃংখলা প্রতিষ্ঠা করা জরুরি। স্কুলে শিক্ষকরা কতটুকু আন্তরিক, কিংবা
প্রাইভেট টিউশনি কতটুকু বন্ধ হয়েছে, সে ব্যাপারে খোঁজখবর নেয়া জরুরি।
প্রয়োজন হলে স্কুল শিক্ষকদের বেতন বাড়িয়ে প্রাইভেট টিউশনি নিষিদ্ধ করে আইন
প্রণয়ন করা উচিত। আমার মনে আছে, একজন অভিভাবক ভিকারুননিসা স্কুলের পরীক্ষার
ফলাফল পত্রিকায় প্রকাশের পর তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছিলেন, তার মেয়ে যে
জিপিএ-৫ পেয়েছে, তাতে স্কুলের কোনো কৃতিত্ব নেই। তিনি একাধিক গৃহশিক্ষকের
কাছে তার মেয়েকে পড়িয়েছেন। কৃতিত্ব তাদের। এ থেকেই বোঝা যায় ক্লাসে
শিক্ষকদের আগ্রহ কম, আগ্রহ বেশি প্রাইভেট টিউশনিতে। তাতে পয়সা বেশি। এখন
রাষ্ট্রের দায়িত্ব শিক্ষকদের ক্লাসে ফিরিয়ে নিয়ে আসা। না হলে আগামীতে স্কুল
শিক্ষা শুধু গৃহ শিক্ষকতার ওপর পরিপূর্ণভাবে নির্ভরশীল হয়ে পড়বে।কলেজ
শিক্ষকতার হাল আরও খারাপ। মফস্বলে, এমনকি ঢাকার বাইরের কলেজগুলোতে ক্লাস
হয় না। বাংলা ও ইংরেজি অনার্সের মতো বিষয়ে ছাত্রছাত্রীদের কলেজ শিক্ষকদের
কাছে ব্যাচ করে প্রাইভেট পড়তে হয়। আমি অবাক হয়ে যাই যখন শুনি একজন কলেজ
শিক্ষার্থীকেও প্রাইভেট পড়তে হয়! খোঁজ নিয়ে জেনেছি শিক্ষকরা আদৌ ক্লাসে
যান না। তারা বাধ্য করেন ছাত্রদের প্রাইভেট পড়তে। এই হচ্ছে আমাদের কলেজ
শিক্ষাব্যবস্থা। সরকার এদিকে দৃষ্টি দিলে ভালো করবে।আরও
একটা কথা বলা প্রয়োজন। কলেজ শিক্ষকদের (সরকারি) নিয়ন্ত্রণ করে শিক্ষা
মন্ত্রণালয়। অথচ কলেজ শিক্ষকরা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় কাজ করেন।
এক্ষেত্রে একটি পরিবর্তন দরকার। কলেজ শিক্ষকদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের
আওতায় ন্যস্ত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে ভেঙে ৬টি বিভাগে
৬টি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় করতে হবে এবং প্রতিটি বিভাগে অন্তর্ভুক্ত
কলেজগুলোকে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় আনতে হবে। আর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো
তথাকথিত স্বায়ত্তশাসনের নামে এক ধরনের নিজস্ব প্রশাসন চালু করেছে।
শিক্ষকদের দায়বদ্ধতা খুবই কম। উপাচার্য খেদাও অভিযান যেন একটি স্বাভাবিক
ঘটনায় পরিণত হয়েছে। শিক্ষক রাজনীতি প্রায় ক্ষেত্রে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয়
অস্থিরতা সৃষ্টি করছে এবং যা ভয়াবহ তা হচ্ছে, কোনো কোনো পাবলিক
বিশ্ববিদ্যালয় এক একটি পারিবারিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিণত হয়েছে। এক্ষেত্রে
একটি আইন করা জরুরি হয়ে পড়েছে।শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে
বিউটি পারলার স্থাপন না করে এসব দিকে দৃষ্টি দেয়া দরকার। বিশ্বে আমাদের
উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর র্যাংকিং কত, তা নিশ্চয়ই ওই সরকারি কর্মকর্তা
জানেন। সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে নিশ্চয়ই তিনি তা জেনেছেন। একুশ
শতকের উপযোগী একটি শিক্ষার পরিবেশ গড়ে তোলার ব্যাপারে তিনি সরকারকে
সহযোগিতা করবেন- এ প্রত্যাশা রইল।
Daily Jugantor
26.06.15
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment