রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

বিএনপি কতটুকু ঘুরে দাঁড়াতে পারবে



সাম্প্রতিক সময়ে এটা একটা বহুল আলোচিত বিষয় যে, বিএনপি কি আদৌ ঘুরে দাঁড়াতে পারবে? টিভি টক শোতে, সংবাদপত্রের প্রতিবেদনে, একাধিক মন্ত্রীর বক্তব্যে ঘুরেফিরে একটা কথাই আসছে যে, বিএনপি কি তার ‘অবস্থান’ ধরে রাখতে পারবে? এমন কথাও বলা হচ্ছে, বিএনপি এখন ভেঙে যাওয়ার মুখে দাঁড়িয়ে আছে! বিএনপি ভেঙে যাবে কি যাবে না, এটা নিয়ে বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতারা যত বেশি না ‘কনসার্ন’, তার চেয়ে বেশি ‘কনসার্ন’ দেখি আমি কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীকে। সম্ভবত সবচেয়ে বেশি সোচ্চার আমাদের তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু। ঈদের পর পরই খালেদা জিয়ার বিচারের জন্য একটি ট্রাইব্যুনাল হবে এবং তাকে কাশিমপুর কারাগারে পাঠানো হবে (যুগান্তর, ১২ জুলাই)Ñ তথ্যমন্ত্রীর এ ধরনের মন্তব্য সঙ্গত কারণেই নানা প্রশ্নের জন্ম দিতে বাধ্য। এমনকি গত ২৮ জুলাই ক্যাবল টিভি দর্শক ফোরাম আয়োজিত গোল্ডেন ওয়ার্ল্ড সেরা সাংবাদিক পুরস্কার অনুষ্ঠানে তিনি যে মন্তব্যটি করেন, তাও আমার কাছে যথেষ্ট গুরুত্ব বহন করে। তিনি ওই অনুষ্ঠানে বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমান দল থেকে সরে দাঁড়ালেই বিএনপি শক্তিশালী হবে (আরটিএনএন, ২৮ জুলাই)। জনাব ইনু ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা রাজনীতিবিদ। দীর্ঘদিনের সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা তার রয়েছে। তার নিজের দল ভেঙেছে কয়েকবার, কয়েক টুকরায়। তিনি নিশ্চয়ই আমার সঙ্গে একমত হবেন যে, দল কাকে রাখবে, কাকে রাখবে না- এটা স্বাভাবিকভাবেই দলের নেতাকর্মীদের সিদ্ধান্ত। এখন আগ বাড়িয়ে কাউকে বাদ দেওয়া বা কাউকে জেলে পাঠানোর (?) কথা বললে, এটা নিয়ে নানা বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে। সরকারের নীতিনির্ধারকদের এ ধরনের মন্তব্য না করাই মঙ্গল।
তবে বিএনপি নানা সমস্যায় আক্রান্ত এটা তো অস্বীকার করা যাবে না। বাস্তবতা হচ্ছে, বিএনপি ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে। একটি মধ্যবর্তী নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। বিএনপি দল গোছানোর কথা বলছে। তবে বিএনপির কয়েকজন নেতার ফোনালাপ ফাঁস হয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রমাণ করে শীর্ষস্থানীয় বিএনপি নেতাদের মধ্যে এক ধরনের হতাশা আছে। বিএনপি ভাঙার ‘গুজব’ এ কারণেই। ‘বেগম জিয়াকে দিয়ে হবে না’ কিংবা ‘জিয়ার আদর্শে ফিরে যেতে হবে’Ñ এ ধরনের বক্তব্য যখন বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মুখ থেকে বের হয়, তখন গুজবের নানা ডালপালা গজায়। মির্জা ফখরুল জামিন পেলেও অনেকেই জেলে আছেন এখনো। অনেকের বিরুদ্ধে মামলা আছে। আর যারা হাইকোর্ট থেকে জামিন পেয়েছেন, ওই জামিনের বিরুদ্ধে আপিল করেছে সরকার। এর অর্থ পরিষ্কারÑ মামলা-মোকদ্দমা দিয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতাদের ‘ব্যস্ত’ রাখতে চায় সরকার। যাতে করে তারা ‘আন্দোলনে’ নিজেদের জড়িত করতে না পারেন। বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে অতীতে এমনটি কখনোই দেখা যায়নিÑ এত বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা! ফলে এসব নেতাকর্মী আর রাজপথে সক্রিয় হতে পারবেন না। বেগম জিয়াকে সন্ত্রাসবিরোধী আইন ২০০৯-এর ২৭ ধারা অনুযায়ী (বিশেষ ট্রাইব্যুনাল গঠন-সংক্রান্ত ধারা) বিচার কিংবা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় শাস্তি দিয়ে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করা, একই সঙ্গে ড্যান্ডি ডায়িং মামলায় তারেক রহমানকে শাস্তি দিয়ে তাকেও অযোগ্য ঘোষণার মধ্য দিয়ে সরকার মাইনাস ওয়ান ফর্মুলার দিকেই ধীরে ধীরে এগিয়ে যাচ্ছে বলে অনেকের ধারণা। এ ক্ষেত্রে বেগম জিয়াকে নির্বাচনে ‘অযোগ্য ঘোষণা’ (?) বিএনপি খুব সহজভাবে নেবে বলে মনে হয় না। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রমাণ হবে তখন অবান্তর। বেগম জিয়াই বিএনপির মূল শক্তি। বেগম জিয়া যদি নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন, বিএনপির ‘বিকল্প নেতৃত্ব’ নির্বাচনে অংশ নেবে, এটা মনে করার কোনো কারণ নেই। বেগম জিয়া কিংবা তারেক রহমানকে বাদ দিয়ে বিএনপি সংগঠিত হবে এটাও আমার মনে হয় না। সরকারের নীতিনির্ধারকরা যদি ‘মাইনাস ওয়ান’ ফর্মুলা কার্যকর করতে চান, আমার ধারণা তা কোনো কার্যকর ‘ফল’ দেবে না। ‘আসল বিএনপি’ কিংবা নাজমুল হুদার ‘ফালতু কথাবার্তা’য় মানুষ খুব আস্থাশীল এটা আমার মনে হয় না। জাতীয় পার্টিকে বিরোধী দলের আসনে বসিয়েও সরকার খুব লাভবান হয়নি। জাতীয় পার্টি এখন অস্তিত্বহীনতার মুখে। ফলে সরকারের কাছে এখন বিকল্প পথ দুটি। বিএনপিকে যে কোনোভাবে আস্থায় নিয়ে ২০১৬ সালের শেষের দিকে একটি মধ্যবর্তী নির্বাচন দেওয়া। অথবা সংবিধান অনুযায়ী ২০১৮ সালের শেষের দিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করা। যে কোনো সময়ের চেয়ে সরকারের অবস্থান এখন অনেক শক্তিশালী। সরকার উপরোল্লিখিত যে কোনো একটি সিদ্ধান্ত কার্যকর করতে পারে। তবে প্রতিটি সিদ্ধান্তের পেছনে এর প্রতিক্রিয়া নিয়ে ভাবতে হবে। প্রথম ক্ষেত্রে সরকারের দূরদর্শিতার পরিচয় দিতে হবে। বিএনপি অতীতে যতই ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার’ কিংবা জাতিসংঘের অধীনে নির্বাচনের কথা বলুক না কেন, চূড়ান্ত বিচারে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেবে। এ ক্ষেত্রে সরকারকে কিছুটা নমনীয় হতে হবে। বিএনপির নেতাকর্মীদের আইনি প্রক্রিয়ায় মুক্তি দেওয়ার ব্যবস্থা না করলে আস্থার সম্পর্ক তৈরি হবে না। আর আস্থার সম্পর্ক তৈরি না হলে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করা যাবে না। এখন বিএনপিকে আস্থায় নিতে হলে সংলাপ ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের আয়োজন করাটা তাই জরুরি। এটাকে ভিত্তি করে সংলাপ শুরু করা যেতে পারে এবং আমার ধারণা এতে করে একটা পথ বের হওয়া সম্ভব। বিএনপির একটা ফর্মুলা বা প্রস্তাব উপস্থাপন করাও জরুরি। যাতে বর্তমান সংবিধানকে মেনেই সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে ‘সকল দলের অংশগ্রহণ’ সম্ভব। এখানে বলা ভালো, ‘সকল পক্ষ’ যদি রাজি না হয়, সে ক্ষেত্রে জাতিসংঘ কোনো দেশে নির্বাচন সম্পন্ন করার ব্যাপারে উদ্যোগী হয় না। নেপাল,
নামিবিয়া কিংবা কম্বোডিয়ায় জাতিসংঘ নির্বাচনের আয়োজন করেছিল। সেটা সম্ভব হয়েছিল সব বিবদমান গ্রুপের সম্মতির ভিত্তিতে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে এ বিষয়ে বিভক্তি স্পষ্ট। এ ক্ষেত্রে কীভাবে বিএনপিকে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আনা যায়, এটা সরকারকে ভেবে দেখতে হবে। বেগম জিয়াকে ‘মাইনাস’ করে কোনো সমাধান খুঁজলে, তা কোনো সমাধান দেবে না। বরং এতে করে আরও জটিলতা বাড়বে। একাধিক কারণে বিএনপির সঙ্গে একটা আস্থার সম্পর্ক গড়ে তোলা সরকারের জন্য জরুরি। বাংলাদেশ নিম্নমধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ৬ ভাগের ওপরে, যেখানে ইউরোপে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে শ্লথগতি এসেছে। এখন নিম্নমধ্যম আয়ের দেশের চূড়ান্ত স্বীকৃতি পেতে হলে এ প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হবে। আর এর পূর্বশর্ত হচ্ছে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। বিএনপিকে আস্থায় নিয়েই এ স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে হবে। সংসদীয় রাজনীতিতে শক্তিশালী একটি বিরোধী দল থাকা দরকার। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নেওয়ায় জাতীয় পার্টি সংসদে বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করছে। কিন্তু গত দেড় বছরের সংসদীয় রাজনীতির কার্যক্রম পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, জাতীয় পার্টি সেই দায়িত্বটি পালন করতে পারছে না। ফলে সংসদকে আরও গ্রহণযোগ্য, আরও অর্থবহ এবং সর্বোপরি একটি সঠিক জাতীয় নীতি প্রণয়নে সংসদে একটি শক্তিশালী বিরোধী দল থাকা বাঞ্ছনীয়। আর বিএনপিই সেই দায়িত্বটি পালন করতে পারে। বলা চলে, বিএনপি সংসদে না থাকলেও বিএনপি যে বাংলাদেশের রাজনীতির একটি অপরিহার্য অংশ, দাতাগোষ্ঠী এটা স্বীকার করে এবং তারা সবাই বিএনপিকে মূল ধারার রাজনীতিতেই দেখতে চায়। ভারতীয় নীতিনির্ধারকদের অবস্থানও অনেকটা সে রকম। সরকারের ভূমিকা তাই এ ক্ষেত্রে অগ্রগণ্য। এটা স্বীকার করতেই হবে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি অন্যতম দুটি শক্তি। এ দুটি দল দুটি রাজনৈতিক ধারার প্রতিনিধিত্ব করছে। অতীত ইতিহাস প্রমাণ করে, এ দুটি দলের একটাকে বাদ দিয়ে যে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি, তা স্থায়ী হয়নি। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যুর দীর্ঘ ২১ বছর পর ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় ফিরে এসেছিল জনগণের ভোটে। এর আগে ১৯৮৬ সালে এরশাদীয় জমানায় যে সংসদ নির্বাচন হয়েছিল, তাতে আওয়ামী লীগ অংশগ্রহণ করলেও বিএনপি নির্বাচন বয়কট করায় ওই সংসদ টিকেনি। ১৯৮৮ সালের সংসদও টেকেনি আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অংশ না নেওয়ার কারণে। এ দুদলের অংশগ্রহণ থাকার কারণেই ৫ম সংসদ (১৯৯১), ৭ম সংসদ (১৯৯৬), ৮ম সংসদ (২০০১) ও ৯ম সংসদ (২০০৮) গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছিল। কিন্তু বিএনপির অংশগ্রহণ না থাকায় ৫ জানুয়ারি (২০১৪) দশম জাতীয় সংসদের নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা পায়নি।
পরিবর্তিত পরস্থিতিতে বিএনপি অনেক নমনীয় হয়েছে এবং তাদের আগের অবস্থান থেকে কিছুটা সরে এসেছে। বিএনপির পক্ষ থেকে দেওয়া অনেক বক্তব্য বিশ্লেষণ করে আমার মনে হয়েছে, বিএনপি সরকারের সঙ্গে একটি ‘শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে’ যেতে চায় এবং যা গুরুত্বপূর্ণ, তা হচ্ছে বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। বিএনপি নেত্রী ও বিএনপির মুখপাত্রের ৪টি বক্তব্য দুটি বড় দলের মাঝে একটি ‘বরফ গলা’র সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে বলে আমার ধারণা। এক. বেগম জিয়া বলেছেন তত্ত্বাবধায়ক নয়, বরং একটি নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে। এর অর্থ বিএনপি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ধারণাকে এখন আর গুরুত্ব দিচ্ছে না। দুই. সৈয়দ আশরাফ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের পূর্ণমন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়ে বলেছিলেন, তিনি দলনিরপক্ষভাবেই এ মন্ত্রণালয় পরিচালনা করবেন। বিএনপির মুখপাত্র এ বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিন. ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্পে বাংলাদেশ সরকারের উদ্যোগকে বিএনপি সমর্থন করেছে এবং বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এ ইস্যুতে তারা সরকারকে সহযোগিতা করতে প্রস্তুত। চার. বিএনপির পক্ষ থেকে ‘স্বাভাবিক রাজনীতি’ করার দাবি জানানো হয়েছে। সাম্প্রতিক সময়গুলোতে সরকারের পক্ষ থেকে তেমন একটা ধরপাকড়ের খবর পাওয়া যাচ্ছে না। বিএনপি মুখপাত্র নিয়মিত প্রেস ব্রিফিং করছেন। এখন দেখার পালা বিএনপিকে বড় সমাবেশ করতে সরকার দেয় কি না।
তবে এটা স্বীকার করতেই হবে, আগামী দিনের রাজনীতি আবর্তিত হবে বিএনপির আচরণের ওপর। বেগম জিয়া দল পুনর্গঠন করে জানুয়ারির দিকে নতুন করে আন্দোলনের কথা বলছেন। সরকার যদি বিএনপিকে আস্থায় নিতে না পারে, তাহলে বিএনপি তো আন্দোলনে যাবেই। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সেই আন্দোলনের ধরনটা কী হবে। বিএনপি যতই বলার চেষ্টা করুক তারা ‘শান্তিপূর্ণ আন্দোলন’ করবে, কিন্তু সাধারণ মানুষের মনে ভয় তো একটা আছেইÑ আন্দোলন না আবার সহিংস রূপ ধারণ করে? তাই বিএনপিকে আস্থায় নেওয়াটা জরুরি এবং একটি মধ্যবর্তী নির্বাচনের ঘোষণা থাকাও ভালো। ইতোমধ্যে বিএনপির থিঙ্কট্যাঙ্ক হিসেবে পরিচিত অধ্যাপক এমাজউদ্দীন আহমদ জানিয়েছেন, বিএনপি চার শর্তে নির্বাচনে যেতে পারে। এ চারটি শর্ত হচ্ছে, নির্বাচন কমিশন ঢেলে সাজানো, নিরপেক্ষ প্রশাসন, মেয়াদ শেষে সংসদ ভেঙে দেওয়া, রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে রেখেই একটি সরকার। যদিও আমরা নিশ্চিত নই এটা অধ্যাপক এমাজের ব্যক্তিগত অভিমত নাকি বিএনপি এ অভিমতগুলো ধারণ করে। এ চারটি শর্ত নিয়েও কথা আছে। সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রীকে রেখেই নির্বাচন হতে হবে। এ ক্ষেত্রে নির্বাচনকালীন একটি সরকার হবে বটে, কিন্তু তাতে বিএনপির অন্তর্ভুক্তি কীভাবে সম্ভব, এটা একটা প্রশ্ন। নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠনের প্রস্তাবটি ভালো এবং তা হওয়া দরকার। নির্বাচন কমিশন তার গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছে। নিরপেক্ষ প্রশাসনের বিষয়টি আপেক্ষিক। আর সংসদ নির্বাচনের আগে ভেঙে দেওয়া সম্ভব।
এখন নির্বাচন তো অনেক দূরের কথা। বিএনপির শীর্ষ নেতারা কীভাবে মামলা-মোকদ্দমা থেকে বেরিয়ে আসতে পারবেন কিংবা বেগম জিয়া কীভাবে দল গোছাবেন, সে ব্যাপারেই আগ্রহ থাকবে অনেকের। নিঃসন্দেহে বিএনপি গঠিত হওয়ার পর এই প্রথমবারের মতো এক কঠিন সময় পার করছে। এরশাদের শাসনামলে বিএনপি ভাঙার উদ্যোগ খুব একটা সফল হয়নি। বেগম জিয়াকে ঘিরেই বিএনপির রাজনীতি। বেগম জিয়ার সুস্থতা, তার বিরুদ্ধে আনীত দুর্নীতির মামলার রায়, দল পুনর্গঠনে ‘নানা জটিলতা’ কাটিয়ে ওঠাÑ এসব কিছুর ওপরই নির্ভর করছে বিএনপির ঘুরে দাঁড়ানোর বিষয়টি। আর এটি দেখার জন্য আমাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।
Amader Somoy
02.08.15

0 comments:

Post a Comment