রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

শ্রীলঙ্কায় পরিবর্তনের ধারা এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার ভাবনা

গত ১৭ আগস্ট শ্রীলঙ্কার সাধারণ নির্বাচনে ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমসিংহের নেতৃত্বাধীন ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির বিজয়ের মধ্য দিয়ে সেখানে যে ‘পরিবর্তনের’র ধারা সূচিত হয়েছিল তা অব্যাহত রইল। চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভারতপন্থি বলে পরিচিত মিথ্রিলা সিরিসেনার বিজয়ের মধ্য দিয়ে সেখানে পরিবর্তনের ধারা সূচিত হয়েছিল। এরই অব্যাহত ধারা লক্ষ্য করা গেল সদ্যসমাপ্ত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে। সিরিসেনা শ্রীলঙ্কার প্রো-চীনা নীতি পরিত্যাগ করে একটি প্রো-ইন্ডিয়ানীতি গ্রহণ করেছেন। অর্থাৎ শ্রীলঙ্কার রাজনীতিতে এখন ভারতের প্রভাব বাড়ছে। নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর প্রথম বিদেশ সফর হিসেবে সিরিসেনা নয়াদিল্লি সফর করেছেন। এর পরপরই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কলম্বো সফর করেছেন। এর মধ্যে দিয়ে ভারতের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন দক্ষিণাঞ্চলের তামিলনাড়– রাজ্য এবং শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের সমন্বয়ে একটি উপ-আঞ্চলিক জোট গঠনের সম্ভাবনা আরো উজ্জ্বল হলো। পাঠক স্মরণ করতে পারেন নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরের সময় ভুটান, বাংলাদেশ, ভারতের সাতবোন রাজ্য ও নেপালকে নিয়ে একটি উপ-আঞ্চলিক জোট গঠিত হয়েছে, যা বিবিআইএন নামে পরিচিত। একই সঙ্গে রামগর সাব রুম সেতু নির্মাণ করছে ভারত। ফলে আগরতলার পণ্য এখন এই সেতু ব্যবহার করে মাত্র ৭০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করতে পারবে। একই সঙ্গে ভারত আগামীতে মংলা পোর্টও ব্যবহার করতে পারবে। যে কারণে খুলনা-মংলা সড়ক সম্প্রসারণ করা হচ্ছে। ইতোমধ্যে প্রথমবারের মতো চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে ভারত ট্রানশিপমেন্টের মাধ্যমে তাদের ৯২টি কনটেইনার পণ্য তাদের তিনটি বন্দর, চেন্নাই, কোচিন ও নভোসেবা বন্দরে নিয়ে গেছে। সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ এ জন্য কোনো শুল্ক আদায় করেনি। এগুলো সবই হচ্ছে উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার আলোকে। এমনকি গত ১৫ জুন (২০১৫) বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল আর ভুটানের মধ্যে যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন চলাচলে একটি চুক্তি হয়েছে। এই চুক্তির অধীনে আগামী বছরের শুরুতে এই চারটি দেশের মাঝে যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাক-লরি ও ব্যক্তিগত ব্যবহারের গাড়ি চলাচল করতে পারবে। তবে ট্রানজিট ও চলাচলের অনুমতি সংক্রান্ত ফি নির্ধারণ হবে আলোচনার মাধ্যমে। ট্রানজিট, ট্রানশিপমেন্ট বা কানেকটিভিটি আমরা যে নামেই বাংলাদেশ-ভারত আন্তঃরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে চিহ্নিত করি না কেন, মূল বিষয় হচ্ছে একটি এই মুহূর্তে ভারতের এক অঞ্চলের সঙ্গে অন্য অঞ্চলের যোগাযোগ স্থাপন। আর এ ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে বাংলাদেশের ভূখণ্ড। পৃথিবীর অন্য অঞ্চলের কানেকটিভিটি ঠিক এ রকমটি নয়। সেখানে এক দেশ অন্য দেশে সড়ক, নৌ অথবা রেলপথে যাওয়া যায়, আমরা প্রায়ই ইউরোপের কথা বলি। এটা সত্য সড়কপথে ইউরোপের এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়া যায়। আমি বহুবার জার্মানি থেকে ইংল্যান্ড গেছি বেলজিয়ামের ওপর দিয়ে। এখানে শুল্ক দিতে হয়। আমাদের নীতি-নির্ধারকদের অনেকেই বলছেন আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বিবেচনা করেই শুল্ক নির্ধারণ হবে। অর্থাৎ শুল্ক এখন অবধি নির্ধারিত হয়নি! ইতোমধ্যে দুই রুটে বাস সার্ভিস চালু হয়েছে। তবে পুরো উদ্যমে এই সার্ভিসটি চালু হতে আরো ২-৩ মাস লাগবে। এখানে অনেক প্রশ্ন আছে। এক. বাংলাদেশের অবকাঠামো খাতে যে উন্নতি করতে হবে, তার ব্যয়ভার কে বহন করবে? দুই. এই দুই রুটে কি বাংলাদেশের পরিবহন ব্যবসায়ীরা তাদের নিজস্ব বাস চালাতে পারবে? প্রশ্নগুলোর জবাব ইতোমধ্যে আমরা অনেকেই পেয়ে গেছি। এ ক্ষেত্রে পাঠকদের কিছু তথ্য দিতে চাই। ২০১২ সালে ট্যারিফ কমিশনের দেয়া রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে যে, বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় অবকাঠামো তৈরি করতে (যা কানেকটিভিটির জন্য প্রয়োজন হবে) প্রয়োজন হবে ৩৬ হাজার কোটি টাকা। এর মাঝে রেলপথে ব্যয় হবে ১৭ হাজার ৩১৮ কোটি টাকা, সড়কপথে ৯ হাজার ৪৮৭ কোটি টাকা, নৌপথে ৪ হাজার ৫৭৮ কোটি টাকা, মংলা বন্দরের অবকাঠামো উন্নয়নে প্রায় ২ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা এবং বিভিন্ন স্থলবন্দর অবকাঠামো উন্নয়নে ব্যয় হবে বাকি ৪৮৯ কোটি টাকা। এই ব্যয়ের হার আরো বাড়বে। এতে বাংলাদেশের লাভ কতটুকু? পরিসংখ্যান ও বিভিন্ন সূত্র বলছে ভারতের এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে পণ্য পরিবহনে সর্বোচ্চ ৭৬ থেকে সর্বনি¤œ ১২ শতাংশ খরচ সাশ্রয় হবে। লাভটা ভারতের বেশি, আমাদের কম। কিন্তু ব্যয়ভার আমাদের। বিআইডিসির গবেষক কেএএস মুরশিদ তার এক গবেষণায় দেখিয়েছেন যে, ট্রানজিট থেকে বাংলাদেশের প্রত্যক্ষ লাভ সীমিত। তবে বিনিয়োগটা করতে হবে বাংলাদেশকেই। মোদির ঢাকা সফরের সময় ভারত যে আমাদের ২০০ কোটি ডলারের ঋণ প্রস্তাব দিয়েছে, তার একটা অংশ ব্যয় হবে এ খাতে। বাংলাদেশকে সুদসহ মূল টাকা ফেরত দিতে হবে। এই ঋণের ধরন নিয়ে ইতোমধ্যে নানা প্রশ্ন উঠলেও প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং জানিয়ে দিয়েছেন, ওই ঋণের সঙ্গে কোনো শর্ত যুক্ত নেই। আমরা আশ্বস্ত হতে পারিনি। কেননা ভারতের এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক যদুভেন্দ্র মাথুরের বক্তব্য যখন টাইমস অব ইন্ডিয়ায় পাঠ করি (যা বাংলাদেশের পত্রপত্রিকায়ও ছাপা হয়েছে), তখন কিছুটা খটকা লাগে বৈকি! মাথুর উল্লেখ করেছেন ভারত যে ঋণ দেয়, এই ঋণ চুক্তির শর্তানুযায়ী ঋণের অর্থে নেয়া প্রকল্পগুলোর অন্তত ৭৫ শতাংশ যন্ত্রপাতি ও সেবা ভারত থেকে নিতে হবে। এসব পণ্য ও সেবার উৎপাদন প্রক্রিয়া হবে ভারতেই। শুধু বাংলাদেশই নয়, এই শর্তে নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপও মোট ৬০০ কোটি ডলার ঋণ নিয়েছে। আর টাইমস অব ইন্ডিয়া আমাদের জানাচ্ছে, নতুন ঋণের টাকায় বাংলাদেশে নেয়া প্রকল্পগুলোকে কেন্দ্র করে ভারতের নতুন করে ৫০ হাজার লোকের কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। আমরা কানেকটিভিটির বিরুদ্ধে নই। কানেকটিভিটি এ যুগের চাহিদা। এখানে আমরা আমাদের স্বার্থ দেখতে চাই। আমরাও চাই সড়কপথে আমাদের পণ্য নেপাল ও ভুটানে যাক। চুক্তি একটা হয়েছে বটে, তাতে আমরা কতটুকু উপকৃত হলাম এর হিসাব-নিকাশ করা যাবে আরো কিছুদিন পর, যখন পুরোপুরো কানেকটিভিটি ব্যবহƒত হবে। এই কানেকটিভিটি যদি মাত্র দু’পক্ষের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে তাহলেই প্রশ্ন উঠবে। কানেকটিভিটির আওতায় আমরা চীনের কুনমিংও যেতে চাই। কিন্তু তা কি সম্ভব হবে আদৌ? শ্রীলঙ্কায় পরিবর্তনের ধারা এবং আঞ্চলিক সহযোগিতার ভাবনাএই দ্বিপক্ষীয় কানেকটিভিটি ও থিম্পুতে চারদলীয় ‘মোটর ভেহিকল এগ্রিমেন্ট’ (এফভিএ) স্বাক্ষরিত হওয়ায় এটা এখন স্পষ্ট হয়ে গেল যে, ভারত এ অঞ্চলে চারদলীয় উপ-আঞ্চলিক জোট বিবিআইএনকে নিয়ে এগিয়ে যেতে চায়। এই উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতা এখন সার্কের বিকাশকে বাধাগ্রস্ত করবে কিনা, এটা এখন বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ছাত্র ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের কাছে এটাও একটা প্রশ্ন যে, ভারত বিবিআইএনকে বেশি গুরুত্ব দেয়ায় ও তা কার্যকরী করায় বিসিআইএম জোটের ভবিষ্যৎ কী? ভারত কি এখন চাইবে বিসিআইএম নিয়ে এগিয়ে যেতে? বিসিআইএম হচ্ছে আবার একটি আঞ্চলিক সহযোগিতা। এই জোটে আছে বাংলাদেশ, চীন (ইউনান প্রদেশ), ভারত (সাতবোন রাজ্য) এবং মিয়ানমার। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৪ সালে তার চীন সফরের সময় এই বিসিআইএম করিডরের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। এটাকে অনেকে ‘কুনমিং উদ্যোগ’ও বলেন। এখানে চীনের স্বার্থ বেশি সন্দেহ নেই তাতে। কিন্তু বাংলাদেশেরও স্বার্থ রয়েছে। চীন ২০০৩ সালে প্রথম ‘কুনমিং উদ্যোগ’ এর কথা বলেছিল, যা পরিবর্তিত হয়ে বিসিআইএম নামে আত্মপ্রকাশ করেছে। তাই বিবিআইএন জোট নতুন আঙ্গিকে উপস্থাপিত হলে এ অঞ্চলে ভারতীয় কর্তৃত্ব বাড়বে। চীনের প্রভাব এর মাঝ দিয়ে সঙ্কুচিত হবে। তাই খুব স্পষ্ট করেই বলা যায়, বিসিআইএম জোটের বিকশিত হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। এখানে চীনের কর্তৃত্ব ও প্রভাব বাড়বে, এটাই মনে করেন ভারতীয় নীতি-নির্ধারকরা। ভারতীয় স্বার্থ ক্ষুণœ হয় এমন কোনো সিদ্ধান্তে যাবে না ভারত। ফলে পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে বিসিআইএস জোট তার গুরুত্ব হারিয়ে ফেলবে। দক্ষিণ এশিয়ার তিনটি দেশে ভারতের প্রভাব বাড়ছে। আগামীতে এ অঞ্চলের তিনটি দেশ (ভুটান, নেপাল ও বাংলাদেশ) ভারতের ওপর আরো বেশি নির্ভরশীল হবে। বিশেষ করে জ্বালানি ও বাণিজ্যনির্ভরতা এই দেশগুলোকে ভারতমুখী করে তুলবে। আর এ ক্ষেত্রে ভারতের স্ট্রাটেজি হবে বিবিআইএন জোটকে গুরুত্ব দেয়া এবং বিসিআইএমকে নিষ্ক্রিয় করা। এতে বাংলাদেশের স্বার্থ কতটুকু রক্ষিত হবে, এ প্রশ্ন এখন উঠেছে। বিবিআইএনের গুরুত্ব যেমনি রয়েছে, ঠিক তেমনি রয়েছে বিসিআইএমেরও গুরুত্ব। এমনকি আমেড-৮ কেও অস্বীকার করা যায় না। বাংলাদেশের বিপুল জ্বালানি ও পানি সমস্যার সমাধান করতে হলে বিবিআইএন জোটকে গুরুত্ব দিতে হবে। কেননা এ অঞ্চলে বিশাল এক জলবিদ্যুতের সম্ভাবনা রয়েছে। শুধু ভারতের সাতবোন রাজ্যে ৭০ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। ভুটান ও নেপালেও রয়েছে বিপুল বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা। এই সম্ভাবনা ভারত এখন দ্বিপাক্ষিকভাবে ব্যবহার করছে, যেখানে বাংলাদেশের দাবি উপেক্ষিত ছিল। একই কথা প্রযোজ্য পানি জলাধারের মাধ্যমে সংরক্ষণের একটি সম্ভাবনার ক্ষেত্রেও। শুকনো মৌসুমে ভারতের যেমনি পানির প্রয়োজন, ঠিক তেমনি প্রয়োজন আমাদেরও। এ ক্ষেত্রে বর্ষার সময় পানি ধরে রেখে এ সমস্যার সমাধান করা যায়। এমনকি বাংলাদেশ যে গঙ্গা ব্যারাজ করতে যাচ্ছে, এ ক্ষেত্রেও ভারতের সহযোগিতার প্রয়োজন রয়েছে। রাজবাড়ীর পাংশা থেকে ভারতের সীমান্তের পাংখ্যা পর্যন্ত ১৬৫ কিলোমিটার এলাকায় জলাধার নির্মাণ করা যায়। যাতে বছরে ২৫ লাখ টন অতিরিক্ত খাদ্য উৎপাদন সম্ভব। কিন্তু উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার সমস্যা হচ্ছে ভারত এ বিষয়টি দেখছে দ্বিপাক্ষিকতার আলোকে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদির অ্যাপ্রোচটা ভিন্ন বলেই মনে হয়। তিনি বাংলাদেশে এসেও বলে গেলেন সবাইকে নিয়েই তিনি চলতে চান। এই ‘চলাটা’ শুধু দ্বিপাক্ষিক হয় কিনা, সেটাই দেখার বিষয়। এখন শ্রীলঙ্কায় সিরিসেনা ও বিক্রমসিংহের বিজয়ের ফলে ভারত শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপকে নিয়ে তার পুরনো চিন্তাধারা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেবে। এখানে আরো একটি উপ-আঞ্চলিক সহযোগিতার জš§ হতে পারে। মনে রাখতে হবে শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের ব্যাপারে ভারতের যথেষ্ট স্বার্থ রয়েছে। এই স্বার্থটি মূলত কীভাবে চীনের প্রভাবকে সঙ্কুচিত করা যায়, তাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত। অভিযোগ আছে চীনের ডুবোজাহাজ কলম্বো গভীর সমুদ্রে নোঙ্গর করেছিল সাবেক প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসের শাসনামলে। এমনকি মালদ্বীপেও চীনা ডুবোজাহাজ দেখা গেছে। ভারত এটাকে তার নিরাপত্তার প্রতি হুমকিস্বরূপ বলে মনে করেছিল। ফলে প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসেকে চলে যেতে হয়েছিল। যদিও রাজাপাকসের দল ফ্রিডম পার্টি নির্বাচনে দ্বিতীয় অবস্থানে থেকে এখন সরকারের অংশ। ফলে শ্রীলঙ্কায় ভারতীয় প্রভাব কতটুকু থাকবে কিংবা কীভাবে থাকবে, সেটা একটা বড় প্রশ্ন। রাজাপাকসেকে ‘প্রো-চীন’ রাজনীতিবিদ হিসেবে গণ্য করা হয়। তিনি দীর্ঘদিন শ্রীলঙ্কায় চীনের স্বার্থ দেখেছেন। এখন সরকারের অংশ হিসেবে এই স্বার্থ তিনি কীভাবে দেখবেন, বিষয়টি নিষ্পত্তি না হলেও তিনি যে একটি ফ্যাক্টর হিসেবে রয়ে গেলেন, এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়। নরেন্দ্র মোদির শাসনামলে দ্রুত দক্ষিণ এশিয়া বদলে যাচ্ছে। পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কোন্নয়নের সর্বশেষ প্রচেষ্টাও ব্যর্থ হয়েছে। পাকিস্তানে যে অস্থিতিশীলতা রাষ্ট্রটিকে ভেঙে যাওয়ার মুখে ঠেলে দিয়েছে, সেখানে দক্ষিণ এশিয়ায় এক ধরনের স্থিতিশীলতা বিদ্যমান। আর এই স্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে ভারত এ অঞ্চলে অন্যতম এক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। Daily Manobkontho 30.08.15

0 comments:

Post a Comment