রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

পরিবহন শ্রমিকদের সীমাহীন দৌরাত্ম্য


গত কয়েকদিন সিএনজি অটোরিকশা চালকরা মহাসড়ক অবরোধের নামে যে নৈরাজ্য সৃষ্টি করেছিল তার ব্যাখ্যা আমরা কিভাবে দেব? মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচল বন্ধের সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে দেশের বিভিন্ন স্থানে অটোরিকশা চালকরা অবরোধ, বিক্ষোভ, যানবাহন ভাঙচুর করে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি করে, তাকে কোনোভাবেই স্বাভাবিক বলে ধরে নেয়া যায় না অথচ মহাসড়কে সব ধরনের অটোরিকশা তথা নসিমন-করিমন ইত্যাদি নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্তটি ছিল সঠিক। আমরা যারা নিয়মিত মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করি, আমাদের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে মহাসড়কে ব্যাপকহারে দুর্ঘটনার জন্য মূল দায়ী এই অটোরিকশা ও নসিমন-করিমন ইত্যাদি। গত ঈদের পর অনেক সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে। অনেক মানুষ মারা গেছেন। ফলে সব কিছু বিবেচনা করে সরকার যখন ১ আগস্ট থেকে মহাসড়কে সব ধরনের অটোরিকশা নিষিদ্ধ করে, সেটা ছিল যৌক্তিক। কিন্তু সরকারি সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে পরিবহন শ্রমিকরা তথা অটোরিকশা চালকরা যখন নিজের হাতে আইন তুলে নেয়, তখন আমাদের কাছে এটা স্পষ্ট নয় তাদের এই ‘ক্ষমতার’ উৎস কোথায়? তারা কিভাবে এই সাহস পায়? কে বা কারা তাদের পর্দার অন্তরালে থেকে পরিচালনা করে? তাদের পেছনে কোনো ‘শক্ত শক্তি’ যদি না থাকত তাহলে তারা এই অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারত না। প্রচলিত আইনকে চ্যালেঞ্জ করা, সরকারি সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে আইন নিজের হাতে তুলে নেয়া, একটা বড় অপরাধ। এটা শাস্তিযোগ্য। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে পরিবহন শ্রমিকরা অতীতে একাধিকবার সরকারকে চ্যালেঞ্জ করলেও, অনেক ক্ষেত্রেই তাদের বিচার হয়নি। অনেকেই স্মরণ করতে পারেন প্রবীণ সাংবাদিক জগ্লুল আহমেদ চৌধুরীর ‘হত্যাকাণ্ডের’ মর্মন্তুদ ঘটনাটি। পরিবহন শ্রমিকরা তাকে বাসচাপা দিয়ে হত্যা করেছিল। কিন্তু হত্যাকারীর বিচার হয়নি। সংবাদপত্রগুলো ওই হত্যাকাণ্ড নিয়ে সোচ্চার হলেও সেই হত্যাকারীকে রাষ্ট্র চিহ্নিত করতে পারেনি। মহাসড়কগুলো আজ পরিবহন শ্রমিকদের কাছে জিম্মি হয়ে গেছে। মিশুক মুনীরের মৃত্যুর ঘটনাটি নিশ্চয়ই আমরা ভুলে যাইনি! ঘাতকদের বিচার হয় না। তাদের দৌরাত্ম্য দিন দিন বাড়ে। আইন ঘাতকদের বিচার করতে পারে না। কেননা ঘাতকরা সরকারি নেতাদের ছত্রছায়ায় থাকে। আইন, বিচার বিভাগ ঘাতকদের ছুঁতে পারে না। যেখানে মন্ত্রী নিজে বলেন, ড্রাইভাররা গরু-ছাগল চিনলেই যথেষ্ট এবং তাদের সড়কে চলাচলের জন্য পথ নির্দেশিকা পড়ার দরকার নেই, তখন ভাবতে কষ্ট লাগে ওই মন্ত্রী দিব্যি এখনো ক্ষমতায় আছেন! মনে আছে অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন পত্রিকায় ওই মন্ত্রীর কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রশ্ন রেখেছিলেন। তারপরের খবর অনেকেই স্মরণ করতে পারেন মামুন ভাই’র বিরুদ্ধে জুতা মিছিল হয়েছিল। জগ্লুল ভাই’র মৃত্যু নিয়ে অনেকেই লিখেছিলেন। কিন্তু তাতে কার কী এসে যায়? মিডিয়া জগতে জনপ্রিয় একটি মুখ জগ্লুল আহমেদ চৌধুরীর মৃত্যু যদি এভাবে হয় এবং ঘাতককে যদি বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো না যায়, তাহলে এর চাইতে আর দুঃখজনক কিছু থাকতে পারে না। এটা মৃত্যু নয়, এটা হত্যাকাণ্ড। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু আদৌ কোনোদিন বিচার হবে এই আস্থাটা রাখতে পারছি না। অতীতে কোনো একটি সড়ক হত্যাকাণ্ডেরও বিচার হয়নি। একটিরও না। নায়ক ইলিয়াস কাঞ্চন বিচার পাননি তার স্ত্রীর হত্যাকাণ্ডের। পায়নি মিশুক মুনীরের পরিবার। পাননি হাজার হাজার মা, যাদের এ সমাজ চেনে না আর বিচার না পাওয়ায় একের পর এক হত্যাকাণ্ড ঘটেই চলেছে। গত ঈদে মহাসড়কে যেসব ‘হত্যাকাণ্ড’ হয়েছে, তার একটিরও বিচার হওয়ার সম্ভাবনা নেই।
অদক্ষ যানবাহন চালকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যায় না। এদের যারা চালান তারা অত্যন্ত ক্ষমতাবান। ক্ষমতার সিঁড়িতে এদের অবস্থান। যখনই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার প্রশ্ন ওঠে ঠিক তখনই এরা পরিবহন ধর্মঘট ডাকে। জিম্মি করে ফেলে তারা সাধারণ মানুষদের। এক সময় মানুষ বাধ্য হয়ে মেনে নেয় এটা নিয়তির বিধান বলে। এক সময় ভুলেও যায়। মিডিয়া বড় ভূমিকা পালন করতে পারে। কিন্তু যতটুকু পালন করার কথা মিডিয়া ততটুকু পালন করছে কি? একটা ‘ঘটনা’ ঘটলে মিডিয়া তৎপর হয়! কিন্তু এক সময় মিডিয়ার তৎপরতাও আর থাকে না। ঈদের সময় এত মানুষ মারা গেল। কিন্তু মিডিয়ার যতটুকু ‘ভূমিকা’ পালন করার কথা ছিল তা আমরা দেখিনি। অটোরিকশা চালকদের দৌরাত্ম্য এবং আইন নিজের হাতে তুলে নেয়ার অশুভ উদ্যোগের বিরুদ্ধে সবার উচিত ছিল প্রতিবাদ করার। কিন্তু আমরা তা পারিনি। এই খোদ ঢাকা শহরেই অটোরিকশা চালকদের আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারিনি, ‘ব্যক্তিগত অটোরিকশা’র অনুমতি দেয়া হয়েছে। কিন্তু তা দিব্যি জনপরিবহনের কাজে ব্যবহƒত হচ্ছে। পুলিশ বিষয়টি দেখছে না অথচ দায়িত্বটি তো তাদের। একই সঙ্গে ঢাকার বাইরে বন্ধ হয়নি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। পুলিশের গাফিলতি এখানে চোখে লাগার মতো। এতকিছুর পরও মহাসড়কে ‘হত্যা’ বন্ধ হয়নি। অটো নৈরাজ্যের চতুর্থ দিনেও মানুষ মারা গেছে। তারপরের দিনও খোদ ঢাকা শহরে সড়ক দুর্ঘটনার খবর সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছে। মৃত্যুর এই বিষয়টি যেন স্বাভাবিক একটি বিষয়ে পরিণত হয়েছে। কারো যেন দেখার কিছু নেই! সংবাদপত্র আমাদের জানাচ্ছে, ২০০৯ সাল থেকে এখন অব্দি ১০২টি বড় সড়ক দুর্ঘটনা হয়েছে আর ২০১০ সালের জুন থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত পুলিশ ভাষ্যমতে, সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর সংখ্যা ৮ হাজার ২৭০ জন। কিন্তু এর চাইতে অনেক বেশি মৃত্যুর সংখ্যা দিয়েছে বুয়েটের একটি গবেষণা সংস্থা তাদের মতে, সড়ক দুর্ঘটনায় ২০১১ সালে মারা গেছে ১৮ হাজার মানুষ। সড়ক দুর্ঘটনায় যারা মারা যান, অনেক ক্ষেত্রেই মানুষ আর থানা-পুলিশ করে না। ফলে অনেক দুর্ঘটনার খবর পুলিশ জানে না ও তারা লিপিবদ্ধ করে না।
অটোরিকশা চালকদের দৌরাত্ম্য আবারো প্রমাণ করল পরিবহন শ্রমিকদের দ্রুত নিয়ন্ত্রণে আনাটা জরুরি। মাত্র কয়েক কিলোমিটারের রাস্তায় তিন চাকার যান চলাচল না করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে দুর্ঘটনা রোধ করার স্বার্থেই। মহাসড়কগুলোতে যে মৃত্যুফাঁদ তৈরি হয়েছে এ থেকে বেরিয়ে আসার পথ ওই একটাই মহাসড়কে তিন চাকার সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করা। আরো একটা কথা। সড়ক ও মহাসড়কগুলোতে চলাচল করছে বিভিন্ন ধরনের ১০ লাখ গাড়ি, যাদের কোনো অনুমোদন নেই। সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী সারাদেশে ১৮ লাখ ৭৭ হাজার ভুয়া লাইসেন্সধারী ড্রাইভার এখন সড়ক ও মহাসড়কগুলো দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। চলছে ফিটনেসবিহীন হাজার হাজার গাড়ি। গত ৩ আগস্ট হাইকোর্ট ভুয়া লাইসেন্স জব্দ করার একটি নির্দেশ দিয়েছেন। এই নির্দেশ কতটুকু পালিত হবে আমরা জানি না। কিন্তু এই নির্দেশ প্রমাণ করে সড়ক ও মহাসড়ক নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব যাদের ওপর তারা চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছেন। শুধু সড়কে ‘হত্যাকাণ্ড’ই নয়, বরং গত কয়েক বছর ঢাকা শহরের যানজট নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। এটা আর নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। অসহায় মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা পার করছেন শুধু সড়কেই। এ নিয়ে ট্রাফিক বিভাগ হাজারটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলেও ফল শূন্য। এই যানজটের একটা বড় কারণ হচ্ছে বেপরোয়া বাস চালকদের যত্রতত্র গাড়ি থামিয়ে যাত্রী ওঠানো। এমনকি রাজধানীর বড় বড় সড়কে মানুষ হাত তুলে গাড়ি থামাচ্ছেন। তারপর নির্দিষ্ট বাসস্ট্যান্ড না থাকা সত্ত্বেও যাত্রীরা বাস থামিয়ে নেমে যাচ্ছেন। এ জন্য বাসের হেলপারটা যতটুকু দায়ী, তার চাইতে বেশি দায়ী যাত্রীরা। তারা নিয়ম-শৃঙ্খলার তোয়াক্কা করছেন না। হাজারটা প্রতিবেদনে যানজটের কারণ হিসেবে এই বিষয়টি উল্লেখ করলেও বাসস্ট্যান্ড ছাড়া বাস বা মিনিবাসের যেখানে সেখানে থামানো বন্ধ করা যাচ্ছে না। ট্রাফিক কর্তৃপক্ষ মনে হয় হাল ছেড়ে দিয়েছে। যতদিন না যাত্রীদের নির্দিষ্ট স্থান থেকে বাসে উঠতে বাধ্য করা যাবে, ততদিন পর্যন্ত সড়কে এই যানজট থাকবেই। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কিছুদিন আগে সাধারণ পথচারীদের অবৈধ রাস্তাপার, ফুটপাত ব্যবহার না করে রাস্তা দিয়ে চলাচল কিংবা ওভারব্রিজ ব্যবহার না করায় দ্রুত ফাইনের ব্যবস্থা করেছিল। এটা ছিল নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। তবে এই প্রক্রিয়া সারা বছর চালু রাখতে হবে। এতে পথচারীদের মাঝে এক ধরনের ভয় ও আইন মেনে চলার প্রবণতা কাজ করবে। এক সময় পুলিশের ভয়েই হোক অথবা ফাইনের ভয়েই হোক নিয়মানুযায়ী চলাচল করবে। এখন পুলিশ যদি বাস ও মিনিবাস চালকদের ব্যাপারে এ ধরনের একটি উদ্যোগ নেয়, আমার বিশ্বাস এতে বেপরোয়া চালকরাও এক ধরনের ভয়ের মাঝে থাকবে এবং সেই সঙ্গে সড়ক দুর্ঘটনাও হ্রাস পাবে। সড়ক-মহাসড়ক কেন হয়ে থাকবে মৃত্যু ফাঁদ? এমনটি তো কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। এ জন্য সরকারের যা যা করণীয় সবই করতে হবে নির্মোহ অবস্থান নিয়ে। ঢাকায় প্রচুর মানুষ বেড়েছে। সুশাসনের একটা বড় ব্যর্থতা যে সরকার ঢাকার রাজপথ নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না। গাড়ি চালকদের একাধিকবার ফাইন ও সতর্কবাণী জারি করা সমন্বয়ে তাদের কোনো অবস্থাতেই নিয়মের মধ্যে আনা যাচ্ছে না। সড়ক ও মহাসড়কের অবস্থা আরো খারাপ। এখানে বাসচালকদের মাঝে সড়কে দ্রুত চলার প্রতিযোগিতা হাজারটা দুর্ঘটনার জš§ দিচ্ছে। আমরা বারবার বলে আসছি সড়ক ও মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের টহল বাড়ানোর কথা। কিন্তু তা হয়নি। কাগজ-কলমে হাইওয়ে পুলিশের অস্তিত্ব রয়েছে বটে। কিন্তু তাদের কোনো ভূমিকা নেই। তারা কোথায় ডিউটি করে, এটা একটা প্রশ্ন বটে। মহাসড়কে কোথাও কোথাও সিসি ক্যামেরা বসানো, স্পিড ব্রেকারের সংখ্যা বাড়ানো, কত মাইল স্পিডে গাড়ি চালানো যাবে তা নিদিষ্ট করে দেয়া এমন বিষয়ে হাইওয়ে পুলিশকে পরামর্শ দেয়া হলেও কোনো সুনির্দিষ্টভাবে পুলিশ একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তা বলা যাবে না। এসব পরামর্শ কাগজ-কলমেই থেকে গেছে। বিদেশের উদাহরণ আমরা দেব না। মেক্সিকোর মতো দেশেও আমি দেখে এসেছি সেখানে নির্দিষ্ট স্পিডেই গাড়ি চালাতে হয়। স্পিড কেউ বাড়ায় না টহলরত পুলিশের ভয়ে। আমাদের এখানে মহাসড়কে টহল পুলিশ আমি দেখি না। ঢাকা-সাভার-মানিকগঞ্জ মহাসড়কে প্রায়ই বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটে। কিন্তু তারপরও হাইওয়ে পুলিশের টহল বাড়েনি। মহাসড়কে হাইওয়ে পুলিশের জনবল সংকটের প্রশ্ন তোলা হয়। এই প্রশ্নও অবান্তর। যে জনবল আছে, তার সুষ্ঠু ব্যবহারের মাধ্যমেই মহাসড়কগুলোতে দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
আমরা বারবার সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে লিখি। টক-শোতে আলোচনা করি। কিন্তু ওই পর্যন্তই। তবে এবারের প্রেক্ষাপটটা একটু ভিন্ন বলেই মনে হয়। মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন বন্ধ করা হয়েছে। আমাদের দাবি সরকার এই সিদ্ধান্ত থেকে যেন সরে না আসে। সেই সঙ্গে হাইকোর্টের ‘নির্দেশনা’ পালনের ব্যাপারেও সরকার আন্তরিক হবে এও প্রত্যাশা। ভুয়া ড্রাইভিং লাইসেন্স জব্দ না করলে মহাসড়কে দুর্ঘটনারোধ করা যাবে না। তবে মহাসড়কের পাশ ঘেঁষে তিন চাকার যানবাহন চলাচলের জন্য একটি করে বাই লেন করার ব্যাপারেও সরকার চিন্তাভাবনা করতে পারে। তবে কোনো অবস্থাতেই অটোরিকশা ও নসিমনগুলোকে মহাসড়কে উঠতে দেয়া যাবে না। আরো একটা কথা। ঢাকার বাইরে ব্যাটারিচালিত রিকশা দিব্যি চলাচল করছে। এর চালকরা অবৈধভাবে বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। ঢাকা শহরে এটা বন্ধ হয়েছে বটে কিন্তু ঢাকা শহরের বাইরে আমিনবাজারের দিকে গেলেই এই ব্যাটারিচালিত রিকশা আমি দেখেছি। এমনকি খোদ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরেও এসব রিকশা চলাচল করছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে অনুমতি দিল কিভাবে? যোগাযোগমন্ত্রী বলেছেন, তিনি মহাসড়কে অটোরিকশা চলাচলের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসবেন না। প্রয়োজনে পদত্যাগ করবেন। মন্ত্রীর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। অন্তত এই একটি ক্ষেত্রে সরকার তার সিদ্ধান্তে অটল থাকুক। কোনো ধরনের ‘চাপ’ এর কাছে আত্মসমর্পণ করলে সুশাসনের জন্য তা হবে একটি দুঃখজনক ঘটনা। সরকার তার সিদ্ধান্তে অটল থাকুক। মহাসড়কে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে বন্ধ থাকুক সব ধরনের তিন চাকার যান। নিষিদ্ধ হোক লাইসেন্স ও ফিটনেসবিহীন সব গাড়ি। এ ক্ষেত্রে সরকারের ইচ্ছা ও কঠোর অবস্থানের কোনোই বিকল্প নেই। সরকার যদি অনড় থাকে যে, কোনো রকম অন্যায়-অনৈতিক কর্মকাণ্ড কেউ চালাতে পারবে না তাহলে কারোরই সাধ্য নেই এমনটি করার। আমরা এমনটিই প্রত্যক্ষ করতে চাই।
Daily Manobkontho
09.08.15

0 comments:

Post a Comment