শোকের মাসে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকা- ও তাতে জাসদের জড়িত থাকার অভিযোগ নিয়ে বিতর্কের মাত্রা বাড়ছেই। এই বিতর্কে জড়িয়ে পড়ছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের শীর্ষস্থানীয় নেতারা। আর এ বিতর্কে বিএনপি নিজেকেও জড়িত করেছে। এবং ২৪ আগস্ট সাবেক জাসদপন্থী ছাত্রলীগ নেতা ও বর্তমানে বিএনপির স্থায়ী পরিষদের সদস্য গয়েশ্বরচন্দ্র রায় একটি ‘রাজনৈতিক বোমা’ও ফাটিয়েছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, এই শোকের মাসে কেন এই বিতর্ক, এই বিতর্কের আদৌ কী কোনো প্রয়োজন ছিল? এই বিতর্ক থেকে লাভবান হবে কারা? টিভি চ্যানেলগুলো এ বিষয়টিকে লুফে নিয়েছে। গত বেশ কয়েকদিন টিভি চ্যানেলগুলোতে এই বিতর্কও আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। এই বিতর্কে স্বাধীনতা-পরবর্তী জাসদের ভূমিকাটি আবারও সামনে চলে এলো।
নতুন করে বঙ্গবন্ধুর হত্যাকা-ে জাসদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম। গত ২৩ আগস্ট রাজধানীতে এক আলোচনা সভায় তিনি বলেন, ‘জাসদই বঙ্গবন্ধু হত্যার পথ পরিষ্কার করে দিয়েছিল।’ তিনি বলেন, ‘জাসদের কর্মীরা মুজিব বাহিনী,
মুক্তিবাহিনী ও গণবাহিনীতে ছিল। স্বাধীনতাবিরোধীরা কখনো বঙ্গবন্ধুর ওপর আঘাত হানতে পারত না, যদি এই গণবাহিনী ও জাসদ বঙ্গবন্ধুর বিরোধিতা করে
বিভিন্ন জায়গায় ডাকাতি, মানুষ হত্যা ও এমপি মেরে পরিবেশ সৃষ্টি না করত।’ এখানেই থেমে থাকেননি শেখ সেলিম। তিনি আরও বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু যেদিন মারা যান, সেদিন কর্নেল তাহেরও রেডিও স্টেশনে যান। শেখ সেলিম আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতা। উপরন্তু তিনি বঙ্গবন্ধুর পরিবারের সঙ্গে আত্মীয়তার বন্ধনে আবদ্ধ। তিনি যখন বঙ্গবন্ধুর হত্যাকা-ের সঙ্গে জাসদকে জড়িয়ে প্রশ্ন তোলেন, তখন তা মিডিয়ায় এবং গণমানুষে যথেষ্ট উৎসাহের সৃষ্টি করবে, এটাই স্বাভাবিক। তবে এ ধরনের কথাবার্তা যে এই প্রথম উঠল তা নয়। বরং এর আগেও উঠেছে। যারা সিরিয়াস পাঠক ও গবেষক তারা স্মরণ করার চেষ্টা করবেন ২০১৪ সালের ৩ জুলাই জাতীয় সংসদে কী ঘটেছিল। ওইদিন জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য কাজী ফিরোজ রশীদ স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশে জাসদের ভূমিকার কঠোর সমালোচনা করেছিলেন। বিশেষ করে গণবাহিনী গঠন এবং হত্যা, লুটপাটের ঘটনার সঙ্গে জাসদের জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছিলেন। সেদিন এর প্রত্যুত্তরে জাসদের কার্যকরী সভাপতি ও সংসদ সদস্য মাঈনউদ্দীন খান বাদল কী বলেছিলেন তাও সংসদের কার্যবিবরণী ঘাঁটলে পাওয়া যাবে। জাসদের ভূমিকার কথা উল্লেখ করে জনাব বাদল তখন সংসদে বলেছিলেন, ‘আমরা বলিনি যা করেছি তা সঠিক ছিল। ইতিহাসই বিচার করবে কে ভুল ছিল, কে সঠিক ছিল।’ সেদিন এক টক শোতেও দেখলাম জনাব বাদল একই সুরে কথা বলেছেন।
ইতোমধ্যে জনাব সেলিমের সুরে কথা বলেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ ও আওয়ামী লীগের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক ক্যাপ্টেন (অব.) তাজুল ইসলাম। ২৫ আগস্ট গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জনাব হানিফ বলেছেন, জাসদ-ন্যাপসহ যারা বাম রাজনীতি করতেন, তারা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার প্রেক্ষাপট তৈরি করেছিলেন। তিনি আরও বলেন, তারা হাটবাজার লুটপাট, ডাকাতি, ব্যাংক ডাকাতি, সাধারণ মানুষকে হত্যা, আওয়ামী লীগ নেতাদের হত্যা, এমনকি ঈদের নামাজের জামাত শেষে আওয়ামী লীগের এমপিদের হত্যা পর্যন্ত করেন। এর লক্ষ্য ছিল একটাইÑ বঙ্গবন্ধুর সরকারকে অস্থিতিশীল করা। জাসদ সমালোচনায় সর্বশেষ যোগ দিয়েছেন ক্যাপ্টেন (অব.) তাজুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, জাসদের কারণেই ১৫ আগস্ট কিছু সেনা কর্মকর্তা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে সাহস পেয়েছিল। ধারণা করছি, আগামীতে আরও শীর্ষ পর্যায়ের আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ জাসদ সমালোচনায় শরিক হবেন। জাসদ নেতৃবৃন্দ এর জবাবও দিয়েছেন। জনাব হাসানুল হক ইনু, যিনি জাসদ সভাপতি এবং তথ্যমন্ত্রীও। ২৬ আগস্ট তিনিও এ প্রসঙ্গে কথা বলেছেন। এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এটা স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, আওয়ামী লীগের অনেক নেতা মোশতাকের মন্ত্রিসভায় যোগ দিয়েছিলেন। কিন্তু জাসদের কোনো নেতাকর্মী মোশতাকের সঙ্গে যাননি। তিনি মনে করেন একটি ‘শক্তি’ ১৪-দলীয় জোট বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও জাসদের মধ্যে ফাটল ধরাতে চায়। এর ফলে বিএনপি-জামায়াত জোট লাভবান হবে বলে তিনি মনে করেন। অন্যদিকে জাসদের পক্ষ থেকে পাঠানো বিবৃতিতে অভিযোগ করা হয়, শেখ সেলিম ও বিএনপির মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপনের বক্তব্যে ‘অভিন্ন ভাষার যোগসূত্র’ রয়েছে। বিবৃতিতে আরও অভিযোগ করা হয়Ñ শেখ সেলিমের বক্তব্য সত্যের অপলাপই নয়, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতও। তার এই বক্তব্যে শত্রুপক্ষের হাতকে শক্তিশালী করবে। আওয়ামী লীগ ও জাসদ নেতৃবৃন্দ যখন পরস্পরকে আক্রমণ করে বক্তব্য রাখছেন, তখন একটি ‘রাজনৈতিক বোমা’ ফাটিয়েছেন গয়েশ্বরচন্দ্র রায়, যিনি দাবি করেছেন তিনি ১৯৭২-৭৫ সময়ে জাসদ সমর্থিত ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বর্তমানে তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য। একটি অনুষ্ঠানে তিনি দাবি করেছেন, ১৯৭৪ সালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসা ঘেরাওয়ের অভিযানে জনাব ইনু ও আনোয়ার হোসেনকে (জাহাঙ্গীরনগরের সাবেক ভিসি) নিজে গুলি চালাতে দেখেছেন। তিনি অভিযোগ করেন, বাংলাদেশে গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে প্রথম সশস্ত্র রাজনীতি শুরু করেছিলেন জনাব হাসানুল হক ইনু। ‘নিখিল বোমার’ জন্ম দিয়ে জাসদই এ দেশে বোমাবাজির রাজনীতি শুরু করেছিল (শীর্ষ নিউজ, ২৫ আগস্ট)।
জাসদকে নিয়ে এই রাজনীতির কারণে জাসদ এখন সঙ্গত কারণেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকা-ের সঙ্গে আদৌ জাসদ জড়িত ছিল কি না কিংবা জড়িত থাকলে কতটুকু জড়িত ছিল, এটা নিঃসন্দেহে সাধারণ একটি বক্তব্য নয়, বরং এটা প্রমাণ করতে হলে একটা বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিশন গঠন করা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। আর এ কারণেই বোধকরি সিপিবির সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান খান বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের বিচার আংশিকভাবে হয়েছে। তার হত্যাকা-ে নিজ দলসহ বিভিন্ন দল ও অন্যান্য দেশি-বিদেশি শক্তি জড়িত ছিল (একটি জাতীয় দৈনিক, ২৬ আগস্ট)। বাস্তবতা হচ্ছে, বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলার দীর্ঘ তদন্ত শেষে আদালতে দাখিলকৃত অভিযোগপত্র, সাক্ষীদের জেরা, আদালতের রায় ও পর্যবেক্ষণে কোথাও বঙ্গবন্ধুর হত্যার সঙ্গে জাসদের সংশ্লিষ্টতার সামান্যতম প্রমাণ পাওয়া যায়নি। অন্তত সংবাদপত্রে এ-সংক্রান্ত কোনো প্রতিবেদন আমার চোখে পড়েনি। কিন্তু অভিযোগ তো আছেই।
রাজনীতিবিজ্ঞান নিয়ে যারা চর্চা করেন, গবেষণা করেন, তাদের কাছে জাসদের উত্থান, এর রাজনীতি, জাসদের জন্মের পেছনে যিনি সেই সিরাজুল আলম খানের (দাদা) ‘রহস্যজনক’ ভূমিকা বরাবরই একটি আলোচনার বিষয়। জাসদের রাজনীতি নিয়ে আরও গবেষণা, গবেষণামূলক প্রবন্ধ ও গ্রন্থ প্রকাশিত হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা হয়নি। ফলে অনেক প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব আমাদের কাছে নেই। রাজনীতিবিদরা অনেক কথাই বলেন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই তাতে সত্যতার রেশ থাকে না। এক পক্ষ অপর পক্ষকে ঘায়েল করার জন্য বিতর্কিত অনেক রাজনৈতিক বক্তব্য দেন। স্বাধীনতা-পরবর্তী জাসদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন আছে অনেক। স্বাধীনতার পরপরই ১৯৭২ সালে জাসদের জন্ম হয়। স্বাধীনতার পরপরই অর্থনীতি যেখানে ছিল বিধ্বস্ত, যুদ্ধ-পরবর্তী দেশে যেখানে স্থিতিশীলতা ও জাতীয় ঐক্যের বড় প্রয়োজন ছিল, সেখানে জাসদ জন্মের পরপরই ‘সশস্ত্র বিপ্লবের’ ডাক দেয়। তারা বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র কায়েম করতে চেয়েছিল সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে। কিন্তু বাংলাদেশ কী ওই সময় প্রস্তুত ছিল সশস্ত্র বিপ্লবের জন্য? একজন সাধারণ রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ছাত্রও জানেন এটা ছিল হটকারী সিদ্ধান্ত। চিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে বিরোধিতা করেছিল। অথচ জাসদ নেতৃবৃন্দ ওই সময় ‘চিনা মডেলে’ বাংলাদেশে সমাজতন্ত্র কায়েম করতে চেয়েছিলেন। আর জাসদ বেছে নিয়েছিল এমন একটা সময়, যখন স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশের নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশকে একটি গণতান্ত্রিক ধর্মনিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে গড়তে চেয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু ফিরে এসেছিলেন পাকিস্তানের কারগার থেকে ১৯৭২ সালে। তিনি কি সময় পেয়েছিলেন দেশকে গড়ার? জাসদ যদি ওই সময় নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন করত, যদি একটি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে সংসদ ও সংসদের বাইরে তাদের কর্মসূচি অব্যাহত রাখত আমার বিশ্বাস জাসদই বিএনপির বিকল্প হিসেবে বাংলাদেশের রাজনীতিতে তার অবস্থান রাখতে পারত। বাংলাদেশে বিএনপির জন্ম ও উত্থান মূলত আওয়ামী লীগবিরোধী রাজনীতিকে কেন্দ্র করে। যে কারণেই মানুষ মনে করে এখনো আওয়ামী লীগের বিকল্প হচ্ছে বিএনপি। এই জায়গাটাতে জাসদ থাকতে পারত। তা পারেনি তাদের ভুল রাজনীতি, ভুল স্ট্র্যাটেজি, দলের ভেতরকার অন্তর্দ্বন্দ্ব, সুস্পষ্টনীতি না থাকা ইত্যাদির কারণে। স্বাধীনতার পর একটা তরুণ প্রজন্ম, মুক্তিযোদ্ধাদের একটা অংশ, সেনাবাহিনীর কিছু অবসরপ্রাপ্ত অফিসার জাসদের রাজনীতিতে আকৃষ্ট হয়েছিলেন। কিন্তু ভুল ও হঠকারী রাজনীতি এসব তরুণ প্রজন্মকে হতাশাগ্রস্ত করে ফেলে। রাজনীতির ওপর এরা আস্থা হারিয়ে ফেলেন। ফলে দেখা যায় জাসদ কয়েক ডজন ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। স্বাধীনতার পর মাত্র দুই বছরের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়ি ঘেরাও করার সিদ্ধান্তটি ছিল ভুল। বাড়ি ঘেরাওয়ের সময় কারা গুলি ছুড়েছিল এর সাক্ষী ও প্রমাণ এত বছর পর না পাওয়ারই কথা। কিন্তু ইতিহাস কী ওই ঘটনাকে অস্বীকার করতে পারবে? কিংবা অস্বীকার করতে পারবে কি ওই সময় তৎকালীন ভারতীয় হাইকমিশনার সমর সেনকে অপহরণ করার ব্যর্থ উদ্যোগকে? কোন দল, কোন কোন ব্যক্তি ওই ঘটনায় জড়িত ছিল, সেসব ‘কাহিনি’ অনেকেই জানেন। কেউ কেউ এখনো তৎপর রাজনীতিতে। জাসদের ওই সব ঘটনার জন্য কি না জানি না, জাসদের একসময়ের তাত্ত্বিক হিসেবে পরিচিত সিরাজুল আলম খান (দাদা) এবং সাবেক জাসদ সভাপতি ও জাসদ ত্যাগকারী আসম আবদুর রব আমাকে বলেছেন, জাসদের প্রয়োজন ফুরিয়ে গেছে। সুতরাং জাসদ নিয়ে প্রশ্ন থাকবেই। তবে বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের সঙ্গে জাসদের জড়িত থাকার অভিযোগ (?) কিংবা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ যেভাবে বলছেন জাসদের কর্মকা- বঙ্গবন্ধুর হত্যাকা-ের পথ প্রশস্ত করেছিল (?), এসব বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন থাকবেই। এসব বিতর্ক যত কম হবে, ততই সরকারের জন্য মঙ্গল। আওয়ামী লীগ ও জাসদ উভয়ই ১৪ দলের শরিক। বাংলাদেশের সংসদীয় রাজনীতিতে জাসদের অবস্থান খুবই নাজুক। দীর্ঘ ৪৩ বছর যে দলটির বয়স, সেই দলটি সাধারণ মানুষের কাছে তাদের গ্রহণযোগ্যতা কখনোই বাড়াতে পারেনি। নির্বাচনে দলের ঊর্ধ্বতন নেতৃবৃন্দ বারবার জামানত হারিয়েছেন। দলের সভাপতি, কার্যকরী সভাপতি এদের সবারই নির্বাচনী বৈতরণী হচ্ছে ‘নৌকা’। নৌকা মার্কা না হলে তাদের সংসদে আসা কৈলাস পর্বতে ওঠার সমান। সুতরাং জাসদ নেতৃবৃন্দ যত কম ‘ষড়যন্ত্র’-এর কথা বলবেন ততই মঙ্গল। ইতিহাসকে ইতিহাসের জায়গাতেই থাকতে দেওয়া মঙ্গল। ইতিহাসকে নতুন করে লেখা যায় না। বদলানোও যায় না। ইতিহাস তার জায়গাতেই থাকুক। জনৈক মহিউদ্দীন আহমদ জাসদের উত্থান নিয়ে একটি বই লিখেছেন। একসময় তিনি জাসদের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি অনেক গোপন কথা তথ্য-উপাত্তসহ গ্রন্থে সংযোজন করেছেন। গ্রন্থটি ইতোমধ্যে সুধী সমাজে বেশ আলোড়ন তুলেছে। সেখানে জাসদের ’৭২-৭৫ রাজনীতির অনেক তথ্য আছে, যা জাসদ অস্বীকার করেনি। ফলে জাসদ যদি তার অতীত রাজনীতির জন্য ‘ভুল’ স্বীকার করে, তাহলে জাসদ নেতৃবৃন্দের মাহাত্ম্যই প্রকাশ পাবে। মাঈনউদ্দীন খান বাদল টিভি টক শোতে ‘ব্যর্থ’ হয়েছেন বলে স্বীকার করেছেন। কিন্তু ‘ভুল’ স্বীকার করেননি। জাসদের এখন প্রায় প্রতিদিনই পাল্টা বক্তব্য দেওয়া শোভন নয়। এতে করে বিতর্ক আরও বাড়বে। ১৪ দলের জাসদ নিয়ে অস্বস্তি আরও বাড়বে। এই মুহূর্তে এটি কাম্য নয়।
Daily Amader Somoy
30.08.15
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment