রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

পুনরায় ক্ষমতায় বসার জন্য প্রশাসন সাজাচ্ছে সরকার

সাম্প্রতিক সময়ে সংবাদপত্রে প্রকাশিত জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের একাধিক কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর ঘটনার মধ্যে দিয়ে এটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, সরকার দশম জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রশাসন সাজাচ্ছে। গত ৪ জুন সমকালে প্রকাশিত সংবাদে বলা হয় সরকার জনপ্রশাসনের অর্ধশত কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাচ্ছে। এদের বিরুদ্ধে কোনো সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকলেও শুধু রাজনৈতিক বিবেচনায় এদের অবসরে পাঠানো হচ্ছে। ইতোমধ্যে সরকার প্রশাসনে বড় ধরনের পরিবর্তন এনেছেন। উদ্দেশ্য পরিষ্কার নির্বাচনকে প্রভাবিত করা। কিছু কিছু কর্মকর্তা আবার নিজেদের সুবিধা ও প্রমোশন বাগিয়ে নেয়ার জন্য ক্ষমতাসীন দলের ঘাড়ে সওয়ার হয়েছেন। এর ফলে যারা সৎ ও কিন ইমেজের কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত, তারা বঞ্চিত হচ্ছেন পদে পদে। কোথাও কোথাও তাদের প্রমোশন বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে বছরের পর বছর। এ রকম এক কর্মকর্তা, যিনি প্রমোশন বঞ্চিত হয়েছিলেন, তিনি আত্মহত্যা করে প্রতিবাদ জানিয়ে গিয়েছিলেন গেল বছরের জুলাই মাসে। এর ফলে জনপ্রশাসনে এক ধরনের হতাশা রয়েছে। অযোগ্য ব্যক্তি পদোন্নতি পাচ্ছেন এবং যোগ্যদেরকে বিবেচনায় নেয়া হচ্ছে না। সরকারের উচ্চ পর্যায়ের মেধাবী ও যোগ্য কর্মকর্তাদের অভাবের ফলে জনপ্রশাসনে কাজের গতি আসছে না এবং ‘চেইন অব কমান্ড’ ভেঙে পড়ছে। ঢালাও পদোন্নতির ফলে জনপ্রশাসনে সৃষ্টি হয়েছে বিশৃঙ্খলা। গত ৮ ফেব্রুয়ারি (২০১২) জনপ্রশাসন কেন্দ্রীয় স্তরে বর্তমান সরকারের আমলে সবচেয়ে বড় পদোন্নতি প্রদান করা হয়েছে। অতিরিক্ত সচিব পদে ১২৭, যুগ্ম-সচিব পদে ২৬৪ এবং উপ-সচিব পদে ২৫৮ জন কর্মকর্তাকে পদোন্নতি প্রদান করা হয়েছে। মোট পদোন্নতি পেয়েছেন ৬৮১ জন। এত বিপুল সংখ্যক কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দিতে গিয়ে বিদ্যমান বিধিবিধানের অপব্যবহার করে এক অশুভ নীলনকশা বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দুঃখজনক হচ্ছে এটা করতে গিয়ে ৭০০-এর অধিক জ্যেষ্ঠ ও পদোন্নতির সব শর্ত পূরণকারী কর্মকর্তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। তাই ৮ ফেব্রুয়ারিকে অনেকে ‘কালো দিবস’ হিসেবে অভিহিত করেছেন। যে অভিযোগটি গুরুতর, তা হচ্ছে পিএসসি কর্তৃক নির্ধারিত জাতীয় মেধা তালিকায় স্থান পাওয়া বেশ ক’জন কর্মকর্তাকে বঞ্চিত করা হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে যারা পদোন্নতি পেয়েছেন, তারা একটি বিশেষ রাজনৈতিক আদর্শের অনুসারী। পদোন্নতির জন্য আবশ্যক সিনিয়র স্টাফ কোর্স এবং উচ্চতর প্রশাসনিক ও উন্নয়ন বিষয়ক কোর্স সম্পন্ন না করেই পদোন্নতি পেয়েছেন কয়েকজন। মজার ব্যাপার শীর্ষ পর্যায়ে পদোন্নতির জন্য ইংরেজি ভাষার উপর দক্ষতা থাকা প্রয়োজন। কিন্তু অতিরিক্ত সচিব ও যুগ্ম-সচিব হিসেবে পদোন্নতি পেয়েছেন এমন অনেকে এই দক্ষতা দেখাতে পারেননি। কেউ কেউ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একটি ডিগ্রি ‘ক্রয়’ করে তাদের পদোন্নতি নিশ্চিত করেছেন। অথচ ওইসব বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি নিয়ে নানা প্রশ্ন আছে। শুধুমাত্র টাকার বিনিময়ে একখানা সার্টিফিকেট তারা সংগ্রহ করেছেন। নিয়মিত কাস বা কোর্স ওয়ার্ক তারা করেননি। কেউ কেউ অনলাইনে একখানা পিএইচডি যোগাড় করে, তা ব্যবহারও করছেন। উচ্চতর ডিগ্রি পদোন্নতির জন্য প্রয়োজন রয়েছে, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু একটি ভুয়া ডিগ্রি যখন জনপ্রশাসনের কেউ ব্যবহার করেন, তখন আস্থার জায়গাটা নষ্ট হয়ে যায়। যারা জনপ্রশাসনের শীর্ষে রয়েছেন, তারা আশা করছি, বিষয়টি বিবেচনায় নেবেন।


সবচেয়ে দুঃখজনক যা, তা হচ্ছে প্রশাসনে রাজনীতিকরণ। বিশেষ বিশেষ কর্মকর্তা যারা ছাত্র জীবনে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন, তাদের দ্রুত প্রমোশন দেয়া হচ্ছে। বিশেষ করে পুলিশ বিভাগে সাবেক ছাত্রলীগ কর্মীদের দ্রুত প্রমোশন দেয়া হচ্ছে। তাদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অভিযোগ থাকলেও শাস্তির বদলে তাদের পুরস্কৃত করা হয়েছে। এভাবে অত্যন্ত দ্রুততার সাথে প্রশাসনে বিভক্তি আনা হয়েছে। এখানে যোগ্যতা, মেধা বিবেচনায় আনা হয়নি। বিবেচনায় নেয়া হয়েছে বিশেষ রাজনৈতিক দলের সাথে তাদের অতীত সম্পর্ক। গেল বছর আমার দেশ পিআরএলএ যাওয়া কর্মকর্তা কর্মচারীদের বিস্তারিত বিবরণ ছেপেছিল। যারা জাতির জন্য রাষ্ট্রের জন্য শ্রম দিয়েছিলেন, তাদের বাধ্য করা হয়েছিল পিআরএ যেতে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে ওএসডি থাকা অবস্থাতেই। সুষ্ঠু প্রশাসনের জন্য এ ধরনের প্রবণতা কোনো মঙ্গল ডেকে আনবে না। ইতোমধ্যে সচিবদের মধ্যে ৮টি সিনিয়র সচিব পদ সৃষ্টি করে এক তোঘলকি কাণ্ড ঘটানো হয়েছে জনপ্রশাসনে। এমনকি পুলিশের মহা-পরিদর্শককে সিনিয়র সচিব পদ দিয়ে পুলিশ বিভাগে একাধিক সচিব পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এই ‘সিনিয়র সচিব’ পদ সৃষ্টি কিংবা পুলিশ বিভাগের জন্য একাধিক সচিব পদ সৃষ্টি জনপ্রশাসনে শৃঙ্খলা ও কর্মদক্ষতা বাড়ানোর জন্য আদৌ করা হয়নি। বরং বিশেষ ব্যক্তিকে খুশি করা, একই সাথে একটি বিশেষ গোষ্ঠীকে দিয়ে সুবিধা আদায় করার নিমিত্তেই করা হয়েছে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, জনপ্রশাসনে এই যে পদোন্নতি, তার কোনো সুনির্দিষ্ট আইন নেই। শুধুমাত্র বিধিমালা দিয়েই চলছে গত ৪২ বছর। শুধুমাত্র দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ ও পদোন্নতির স্বার্থেই কোনো আইন করা হয়নি। এখানে অভিযোগ উঠেছে যে, আইন প্রণয়ন না হওয়ায়, শুধু ১৩৩ অনুচ্ছেদ নয়, সংবিধানের ২০ ও ২১ অনুচ্ছেদের নির্দেশনাও যথাযথভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে না। সরকারের পক্ষ থেকে ২০১০ সালে সিভিল সার্ভিস এ্যাক্ট ২০১০ নামে একটি আইন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। পরে সরকারের উদ্যোগে গভর্নমেন্ট এমপ্লয়ইস এ্যাক্ট ২০১২ প্রস্তাব করা হয়। কিন্তু এ ব্যাপারে আদৌ কোনো অগ্রগতির খবর আমরা জানি না। অর্থমন্ত্রী এক চিঠিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছেন যে, এখন তিনি ‘আউট সোর্সিং’-এর মাধ্যমে নিয়োগের প্রস্তাব করেছেন। এটা যদি কার্যকরী করা হয়, তাহলে সচিবালয়ের শীর্ষ পর্যায় থেকে নি¤œ পর্যায় পর্যন্ত রাজনৈতিক ব্যক্তিদের নিয়োগ দেয়া হবে। এটা সুস্থ প্রশাসনের জন্য আদৌ কোনো ভালো লক্ষণ নয়। পাক-ভারত উপমহাদেশের তো বটেই দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার কোনো দেশে সচিবালয়ে ‘আউট সোর্সিং’-এর মাধ্যমে কর্মকর্তা নিয়োগ দেয়া হয় না।


সরকারের এ ধরনের সিদ্ধান্ত প্রশাসনে ও সুশীল সমাজের মাঝে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করলেও সরকার তাতে আদৌ নজর দেয়নি। আকবর আলী খান, কিংবা ড. শাহাদাৎ হোসেনের মতো সিনিয়র অবসরে যাওয়া আমলারা সরকারের এই কর্মকাণ্ডের সমালোচনা করেছেন। কিংবা সাবেক আমলা মোফাজ্জল করীম প্রশাসনের রাজনীতিকরণের ব্যাপারে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করলেও সরকারের টনক তাতে নড়েনি। সাময়িক স্বার্থের কারণে তারা দক্ষ কর্মকর্তাদের বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাচ্ছেন। তাদের কাছে রাজনৈতিক স্বার্থটাই বড়। যেসব সরকারি কর্মকর্তা দলবাজ নন, কিন্তু দক্ষ ও নিরপেক্ষ, তারাই স্বীকার হচ্ছেন বাধ্যতামূলক অবসরের। গেল সপ্তাহে তিনজন দক্ষ কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেয়া হয়েছে। অথচ এরা তিনজনই দক্ষ। দলবাজ ছিলেন না।


সূক্ষ্মভাবে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে স্বয়ং সরকার প্রধান নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন। প্রায় প্রতি সপ্তাহেই তিনি গণভবনে বিভিন্ন জেলার নেতা-কর্মীদের নিয়ে সভা করছেন এবং সেখানে প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন। ২৫ অক্টোবর হচ্ছে বর্তমান সরকারের শেষ দিন। এরপর নভেম্বর থেকে জানুয়ারির মধ্যে যে কোনো একদিন নির্বাচন হবে। যেখানে মূল বিষয়ে এখনও কোনো সমাধান হয়নি, সেখানে প্রধানমন্ত্রী নিজে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন। একটি নিরপেক্ষ সরকার গঠনে আপত্তি রয়েছে। মহাজোট সরকার শেখ হাসিনাকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান রেখেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। দেশের জনগোষ্ঠীর একটা বড় অংশ সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে নিরপেক্ষ সরকারের পক্ষে তাদের মতামত দিলেও সরকার তাতে রাজি নয়। এমনকি দাতাগোষ্ঠীও চাচ্ছেন নিরপেক্ষ সরকারের আওতায় ও সকল দলের অংশগ্রহণে একটি নির্বাচন। কিন্তু শেখ হাসিনার তাতে সায় নেই। তিনি ভালো করে জানেন সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তার বিজয়ী হবার সম্ভাবনা ক্ষীণ। তাই যেনতেন ভাবে তারা একটি নির্বাচন করতে চাচ্ছেন। তাই অত্যন্ত সুকৌশলে প্রশাসন সাজাচ্ছেন তিনি। চারটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচনের আগে দেখা গেল প্রশাসন কোথাও কোথাও তার নিরপেক্ষতা হারিয়েছিল। নির্বাচনবিধি লঙ্ঘনের ঘটনা ছিল ব্যাপক। ইসি এটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। বিরোধী দলের সাথে সম্পৃক্ত প্রার্থীর নিরাপত্তা ছিল ঝুঁকির মুখে। গুলি হয়েছে। কিন্তু তারপরও সেনাবাহিনী নামানো হয়নি। সবচেয়ে অবাক হওয়ার ঘটনাটি ঘটেছিল সিলেটে। সেখানে রাতের মধ্যেই ১২৭টি নির্বাচনী কেন্দ্রের ফলাফল পেলেও প্রধান রিটার্নিং অফিসার আরিফুল হক চৌধুরীকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করতে ইতঃস্তত করছিলেন। তিনি পরদিন (রোববার) ফলাফল ঘোষণা করবেন বলে জানিয়েছিলেন। তিনি ‘চাপ’ এর কারণে অবিশ্যি ফলাফল ঘোষণা করতে বাধ্য হন। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ ধরনের রিটার্নিং অফিসার পাওয়া যাবে, যারা ফলাফল ঘোষণা করতে ইতঃস্তত করবেন। কিংবা রাতের আঁধারে ফলাফল পাল্টে দেবেন। আর তাই সরকার প্রশাসন সাজালেও নির্বাচনের আগে ব্যাপক প্রশাসনিক পরিবর্তন আনতে হবে। আর এ জন্যই প্রয়োজন একটি নিরপেক্ষ সরকার, যারা সুবিধাভোগী ও দলবাজ কর্মকর্তাদের পরিবর্তন করে স্থানীয় পর্যায়ে ত্যাগী ও নিরপেক্ষ কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেবেন।


আমরা সত্যিকার অর্থেই দক্ষ জনপ্রশাসন চাই। বিশ্ব দ্রুত বদলে যাচ্ছে। বদলে যাচ্ছে আইন, নিয়ম ও নেগোসিয়েশনসের টেকনিক। এ ক্ষেত্রে আমাদের জনপ্রশাসনের কর্মকর্তাদের যোগ্যতা দেখাতে হবে। তারা যদি দক্ষ না হন, উচ্চ শিক্ষিত না হন, তাহলে তারা নেগোসিয়েশনস এ তাদের যোগ্যতা দেখাতে পারবেন না। রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ কিংবা পদোন্নতি বহিঃর্বিশ্বে আমাদের অবস্থানকে আরও দুর্বল করবে। পদোন্নতির জন্য প্রতিটি পদে লিখিত পরীক্ষা থাকতে হবে, যারা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবেন, তারাই কেবল পদোন্নতির যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। রাজনৈতিক বিবেচনা বা বয়স কোনো অবস্থাতেই পদোন্নতির মাপকাঠি হতে পারে না। একটি দেশ যদি দক্ষ জনপ্রশাসন কর্মী গড়ে তুলতে না পারে, সে দেশ কখনই উন্নতির শিখরে উঠতে পারবে না। আমাদের সামনে দৃষ্টান্ত রয়েছে সিঙ্গাপুর আর মালয়েশিয়ার। এমনকি ভারতের দৃষ্টান্তও আমরা দিতে পারি। যাদের কেউ কেউ আজ আন্তর্জাতিক আসরেও তাদের দক্ষতা প্রমাণ করেছেন। আমরা ব্যর্থ হতে চাই না। আমাদের মাঝে অনেক তরুণ জনপ্রশাসন কর্মকর্তা রয়েছেন। সরকার তাদেরকে বিদেশে ট্রেনিং ও উচ্চ শিক্ষার ব্যবস্থা করেছে। কিন্তু এদের অনেকেরই কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই। কিন্তু এরা যদি পাদোন্নতির ক্ষেত্রে কিংবা পদায়নের ক্ষেত্রে বঞ্চিত হন, তাহলে এদের মাঝে হতাশা কাজ করবে। এরা তখন তাদের দক্ষতা দেখাতে পারবেন না। খাদের কিনারে দাঁড়িয়ে থাকা প্রশাসনে এখন রাজনীতি ভর করছে। সরকার প্রলোভন আর সুযোগ সুবিধা দিয়ে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের হাত করেছে। ফলে আগামী নির্বাচন নিয়ে একটা শঙ্কা থেকেই গেল। সরকার যেভাবে প্রশাসনকে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছেন, তাতে করে নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হওয়ার আদৌ কোনো সম্ভাবনা নেই। চারটি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনের ফলাফল প্রমাণ করে সরকারের ওপর জনগণের আস্থা নেই। সরকার এখন এই রায়ের প্রতি সম্মান জানিয়ে পদত্যাগ করে দ্রুত সংসদ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে পারে। আর নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার স্বার্থেই প্রয়োজন একটি দলনিরপেক্ষ সরকার, যারা একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করবেন। সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন এখন সরকারকে বিদায় ঘণ্টা জানিয়ে দিল।


0 comments:

Post a Comment