রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

দুই দলকেই তরুণ নেতৃত্বের দিকে তাকাতে হবে



বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার শেষ নেই। গত ১ জুন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, তারেকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যদিও কী নির্দেশ তিনি দিয়েছেন, তা বলেননি। বলেছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় তিনি তিন বছর কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ না করার প্রতিশ্র“তি দিয়েছিলেন। তার এ বক্তব্য খণ্ডন করেছেন বিএনপির মহাসচিব। শুধু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীই নন, একাধিক মন্ত্রী তারেক রহমান সম্পর্কে বিষোদগার করেছেন এবং তার বিরুদ্ধে যেসব অশালীন বক্তব্য ব্যবহার করা হয়েছে, তার পরিপ্রেক্ষিতে উকিল নোটিশও পাঠানো হয়েছে। প্রশ্ন হচ্ছে, মন্ত্রীরা হঠাৎ করে তারেক রহমানের বিরুদ্ধে ক্ষেপে উঠলেন কেন? তারেক রহমান এখনও অসুস্থ। পুরোপুরি সুস্থ নন তিনি। সপ্তাহে তিনবার তাকে ফিজিওথেরাপি নিতে হয়। একটি অনুষ্ঠানে (লন্ডনে) তিনি অংশ নিয়েছিলেন ২০ মে। সেখানে তিনি সরকারের বিরুদ্ধে গণআন্দোলনের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তার এ বক্তব্য যখন ছাপা হয় সংবাদপত্রে, তখন দুদক অতি দ্রুত তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করে এবং আদালত তা মঞ্জুরও করেন। তারপর শুরু হয় নানা তৎপরতা। মন্ত্রীরা বলতে শুরু করলেন, তাকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করা হবে। অ্যাটর্নি জেনারেল থেকে শুরু করে একাধিক মন্ত্রীর বক্তব্য প্রায় প্রতিদিনই ছাপা হতে থাকল পত্রিকাগুলোতে। অথচ তারেক রহমান কী এমন বক্তব্য দিয়েছেন যে তাকে ইন্টারপোলের মাধ্যমে দেশে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে? এ ধরনের বক্তব্য কি দেশের ভেতরে থেকে অন্য রাজনীতিকরা দিচ্ছেন না? টিভির টকশোতে যারা কথা বলছেন, তারা কি এর চেয়ে সিরিয়াস কথা বলছেন না? কই, তাদের বিরুদ্ধে তো এ ধরনের কোনো অভিযোগের কথা শুনিনি? তাহলে তারেক রহমানকে নিয়ে এ প্রশ্ন উঠল কেন?
তারেক রহমান একটি দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান। তিনি সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সন্তান। রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেবে তিনি রাজনীতিতে এসেছেন। তার দল তাকে সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান হিসেবে কাউন্সিলে নির্বাচিত করেছে। বর্তমানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় লন্ডনে আছেন। কিন্তু তিনি তো রাজনীতি থেকে অবসর নেননি? তিনি দলীয় সভায় বক্তব্য রাখবেন, এটাই স্বাভাবিক। তিনি দলের তরুণ প্রজšে§র প্রতিনিধি। আগামী দিনের বিএনপির নেতা। দল তাকে চাইবে এবং তিনি নিজেও দলীয় কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন, এটাই স্বাভাবিক। এ ক্ষেত্রে একাধিক মন্ত্রী যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন, তা শোভন নয়, কাম্যও নয়।
তারেক রহমান প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বড় সন্তান। মা বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও বিএনপির চেয়ারপারসন। পারিবারিক রাজনীতির ধারাই তাকে রাজনীতিতে টেনে এনেছে। যেমন এনেছিল শেখ হাসিনাকে। আমরা ভারতে নেহেরু-গান্ধী পরিবারের দৃষ্টান্ত দিই। পাকিস্তানের ভুট্টো পরিবারের কথা বলি। পারিবারিক রাজনীতির ধারায় তারা রাজনীতিতে এসেছেন। কিন্তু আমরা কি জানি, ভারতে এই পারিবারিক রাজনীতির ধারা শুধু নেহেরু-গান্ধী পরিবারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। ভারতে এ ধরনের বেশ কিছু পরিবারের জš§ হয়েছে, যারা পারিবারিক রাজনীতির ধারা অনুসরণ করে রাজনীতি করে যাচ্ছেন। প্রাচীন ভারতীয় একটি শ্লোক হচ্ছেÑ ঠধংঁফবাধ কঁঃঁসনধশধস। এর ইংরেজি করা হয়েছে এভাবেÑ ‘ধষষ ঃযব টহরাবৎংব রং ধ ভধসরষু’ অর্থাৎ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডই হচ্ছে একটা পরিবার। রাজনীতির পারিবারিকীকরণের পেছনে ভারতে এই সংস্কৃতির শ্লোকটি আদর্শ হিসেবে কাজ করে। তাই ভারতে রাজনীতির পারিবারিকীকরণের বিষয়টি স্বাভাবিক একটি বিষয়। কেউ এটা নিয়ে কথাও বলে না। প্রায় ক্ষেত্রেই দেখা যায়, এসব রাজনৈতিক পরিবারের সন্তানরা উচ্চশিক্ষিত, বিদেশ থেকে ডিগ্রিধারী।
এ তরুণ প্রজšে§র কারণেই ভারত অর্থনীতিতে জাপানকেও অতিক্রম করল। কয়েকটি দৃষ্টান্ত দিই। একসময় ভারতে সীমিত সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী ছিলেন চরণ সিং। তার ছেলে অজিত সিং এখন বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করছেন। দেবগৌড়াও ভারতে প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তার ছেলে এখন কর্নাটক রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। শারদ পাওয়ার ভারতের কৃষিমন্ত্রী। তার মেয়ে সুপ্রিয়া সুলে এখন সংসদ সদস্য। মন্ত্রী ফারুক আবদুল্লাহর ছেলে ওমর আবদুল্লাহ এখন কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী। তার জামাই শচীন পাইলট রাহুল গান্ধীর ঘনিষ্ঠ বন্ধু। শচীনের বাবা রাজেশ পাইলটকে রাজীব গান্ধী রাজনীতিতে নিয়ে এসেছিলেন। বর্ষীয়ান রাজনীতিক মুলায়ম সিং যাদবের ছেলে অখিলেশ যাদব এখন এমপি এবং উত্তর প্রদেশের ভবিষ্যৎ মুখ্যমন্ত্রী। তামিলনাড়-তে করুনানিধি পরিবার রাজনীতিতে একচ্ছত্র কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেছে। ৮২ বছর বয়সেও তিনি মুখ্যমন্ত্রী। ছেলে স্ট্যালিন উপ-মুখ্যমন্ত্রী। আরেক ছেলে আজহাগিরি কেন্দ্রে কোয়ালিশনের কোটায় মন্ত্রী। ভাইয়ের ছেলে দয়ানিধি মারানও কেন্দ্রের মন্ত্রী। স্ত্রী ও মেয়ে কানিমোঝি রাজনীতিতে সক্রিয় ও এমপি। পাঞ্জাবে বাদল পরিবার, বিহারে যাদব পরিবার, মধ্যপ্রদেশে পাওয়ার পরিবার, অন্ধ্রপ্রদেশে রেড্ডি পরিবার যুগের পর যুগ রাজ্য-রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করছে। এক সময়ের দক্ষিণের ছবির নায়ক রামা রাও কিংবা রামচন্দ্রনের পরিবার সেখানকার রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করেন। স্ত্রী, উপপতœী আর সন্তানরা একধরনের প্রভাব বলয় তৈরি করছেন সেখানে। অনেকটা কর্পোরেট হাউসের মতো তারা রাজ্য চালান।
আরও দৃষ্টান্ত দেয়া যায়। মনিপুরের পিএ সাংমার মেয়ে অগাথা সাংমা ৩০ বছর হওয়ার আগেই কেন্দ্রে মন্ত্রী। রাজস্থানে সিন্ধিয়া রাজপরিবার আবার বিভক্ত। রাজমাতা সিন্ধিয়া করেন বিজেপি। ছেলে মাধব রাও কংগ্রেস সদস্য। বোন বসুন্ধরা রাজে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী (বিজেপি)। সাবেক মন্ত্রী (দলিত) জগজীবন রামের মেয়ে মিরা কুমারী এখন লোকসভার স্পিকার। উড়িষ্যাতে পাটনায়েক পরিবার ছাড়া অন্য কিছু চিন্তা করাও যায় না। তার নিজের নামেই এখন একটি দল আছে। রাজনীতির পারিবারিকীকরণ ভারতীয় গণতন্ত্রের একটি অন্যতম দিক।
শুধুই কি পাক-ভারত-বাংলাদেশেই এ রাজনীতি? ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট কোরাজান অ্যাকিনোর ছেলে সে দেশের প্রেসিডেন্ট এখন। ২৩ জন সিনেটরের মধ্যে ১৫ জন এসেছেন পারিবারিক ধারায়। আফ্রিকার দেশ এঙ্গোলার প্রেসিডেন্ট জোসে এদোয়ার্দো দস সানতসের (১৯৭৯ সাল থেকে) কাজিন ফার্নানদো দা পিদাদে দায়াস দস সানতস সে দেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট। মেয়ে ইসাবেল সানতস এঙ্গোলার সবচেয়ে ধনী ব্যক্তি ও মন্ত্রী। আর্জেন্টিনার প্রয়াত প্রেসিডেন্ট নেসতার র্কিচনারের (২০০৩-২০০৭) স্ত্রী ক্রিস্টিনা র্কিচনার এখন সে দেশের প্রেসিডেন্ট। সেনা কর্মকর্তা জুয়ান পেরোন (১৯৪৬-৫৫, ১৯৭৩-৭৪) প্রেসিডেন্ট হয়ে জনপ্রিয়তা পেয়েছিলেন। সেই ধারাবাহিকতায় তার স্ত্রী মারিয়া পেরোনও প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন (১৯৭৪-৭৬)। আজারবাইজান (হায়দার আলিয়েভের ছেলে ইলহাম আলিয়েভ), বতসোয়ানা (সেরেতসে খামা, স্ত্রী রুথ খামা ও ছেলে ইয়ান খামা), মিয়ানমার (অং সানের মেয়ে অং সান সু চি), কঙ্গো (ল’রা কাবিলা ও তার ছেলে জোসেফ কাবিলা), জায়ারের (সেসে সেকো মবুতুর ছেলে নজাঙ্গা মবুতু) দৃষ্টান্তও আমরা দিতে পারি।
এ তালিকা আরও বাড়ানো যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশেও (বুশ পরিবার) এ প্রবণতা রয়ে গেছে। সুতরাং তারেক রহমান বাংলাদেশের রাজনীতিতে আসবেন, এটাই তো স্বাভাবিক। এই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রীর পুত্র ও বঙ্গবন্ধুর নাতি সজীব ওয়াজেদ জয়ও রাজনীতিতে আসবেন। সেটা আজ অথবা কাল। রাজনীতিতে তাকে আসতে হবেই। তবে যত দ্রুত তিনি রাজনীতিতে আসবেন, ততই আমাদের জন্য মঙ্গল। জয় এরই মধ্যে রংপুরের আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত হয়েছেন। প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ করেছেন। তবে সক্রিয় নন। ধারণা করছি, আগামী তিন-চার বছরের মধ্যে আমরা তাকে সক্রিয় হতে দেখব। অন্যদিকে তারেক রহমান অনেক আগেই সক্রিয় হয়েছেন। জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন তিনি গ্রাম থেকে গ্রামে গেছেন, যেটা একসময় তার বাবা শহীদ জিয়া করতেন। রাজনীতিতে থাকলে অভিযোগ উঠবেই। তার বিরুদ্ধেও উঠেছে। তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ২০টি, যার মধ্যে রয়েছে সিঙ্গাপুরে ২০ কোটি টাকার বেশি অবৈধ লেনদেনের অভিযোগ, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার অভিযোগ, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা ইত্যাদি। তার বিরুদ্ধে আয়কর ফাঁকির অভিযোগও রয়েছে। এর মাঝে কতগুলোর সত্যতা রয়েছে, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। সরকার মামলাগুলো সক্রিয় করেছে। শিগগিরই শুনানির তালিকায় মামলাগুলো দেখা যাবে। আর বিএনপির ভাষ্য হচ্ছে, ‘সরকারের এ ধরনের উদ্যোগ তারেক রহমানকে নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্যই। সরকার এভাবে দেশকে সংঘাতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’ লন্ডনে তারেক রহমানের একটি বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে একাধিক মন্ত্রী যেভাবে প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন, তাতে করে বিএনপির ভাষ্যকেই সত্য বলে ধরে নিতে পারেন অনেকে। চারদলীয় জোট সরকারের আমলে তারেক রহমান মন্ত্রী বা এমপি ছিলেন না। তিনি ‘ক্ষমতাবান’ ছিলেন, এটা সত্য। যদি তিনি অন্যায় করে থাকেন, অবশ্যই আইন তা দেখবে। কিন্তু যেভাবে এবং যে ভাষায় তাকে আক্রমণ করে বক্তব্য রাখা হয়েছে, তা অশোভন ও রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত। রাজনীতিকদের মধ্যে ন্যূনতম শ্রদ্ধাবোধ থাকা উচিত। আমরা যদি অপর পক্ষকে সম্মান জানাতে না পারি, তাহলে নিজেও সম্মান পাব না। রাজনীতিকদের মধ্যে আস্থা, বিশ্বাস ও সৌহার্দ্য না থাকলে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি বিকশিত হবে না। গণতন্ত্রকে আমরা উচ্চতর পর্যায়েও নিয়ে যেতে পারব না।
একুশ শতকে বাংলাদেশ এখন এক নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। দুই বড় দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপিকে এখন নতুন প্রজšে§র নেতাদের দিকে তাকাতে হবে। ভারত এরই মধ্যে নতুন প্রজšে§র নেতাদের সামনে নিয়ে এসেছে। রাহুল গান্ধী ইতিমধ্যেই কংগ্রেসের নেতৃত্বের সারিতে চলে এসেছেন। পার্টির ভেতরে নয়া তরুণ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য গঠিত হয়েছে ‘রাহুল গান্ধী ব্রিগেড’। তারা সাধারণ মানুষের সমস্যাগুলোকে ‘অ্যাড্রেস’ করছেন এবং নিরক্ষরতা দূরীকরণ, স্বাস্থ্যসেবা, প্রাইমারি শিক্ষা নিয়ে কাজ করছেন এবং জনপ্রিয়তাও পাচ্ছেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক মাঠ একসময় যারা গরম করতেন, তাদের প্রায় সবাই সত্তর বছর বয়স অতিক্রম করেছেন, অথবা ছুঁই ছুঁই করছেন। দশম সংসদে তাদের অনেককেই দেখা যাবে না। আওয়ামী লীগকে নয়া নেতৃত্বের দিকে তাকাতে হবে। বিএনপির ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। বিএনপির স্থায়ী কমিটিতে যারা আছেন, তারা অনেকেই বয়োজ্যেষ্ঠ। নানা ধরনের রোগে আক্রান্ত। আন্দোলনে মাঠে থাকেন না। আজ বিএনপির নেতৃত্বকে বিষয়টি বুঝতে হবে। নেতৃত্ব সারিতে ‘নতুন মুখ’ না আনলে বিএনপি আন্দোলনে গতি আনতে পারবে না। দলে তারেক রহমানের গ্রহণযোগ্যতা তাই বাড়বেই।
রাজনীতিতে পারিবারিক নেতৃত্ব শুধু আমাদের দেশেই নয়, বরং পৃথিবীর অনেক দেশেই আছে। তাই তারেক রহমান কিংবা সজীব ওয়াজেদ জয়কে নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টির কোনো সুযোগ নেই। এমন একটা রাজনৈতিক সংস্কৃতি আমাদের তৈরি করা দরকার, যেখানে রাজনীতিকরা পরস্পরকে শ্রদ্ধা করতে শিখবেন। রাজনীতি দিয়েই প্রতিপক্ষকে মোকাবেলা করবেন, ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করে নয়। তারেক রহমানের বয়স এখনও কম। সবে চল্লিশ অতিক্রম করেছেন। তাকে যেতে হবে অনেক দূর। তবে এ বয়সেও রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়েছেন, এমন দৃষ্টান্ত দেয়া যায় ভূরি ভূরি। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন বয়সে তরুণ। যুক্তরাষ্ট্রের প্রয়াত প্রেসিডেন্ট কেনেডি মধ্য ত্রিশের ঘরে যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশের প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। আর চল্লিশের ঘরেই প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন বারাক ওবামা। তরুণ প্রজš§ অনেক সাহসী। অনেক কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, যা বেশি বয়সীরা সাধারণত পারেন না। তরুণরাই আরব বসন্তকে প্রাথমিকভাবে সম্পন্ন করেছিল। এই তরুণরাই যুক্তরাষ্ট্রের মতো সমাজে ‘অক্যুপাই মুভমেন্টে’র জš§ দিয়েছে, যা ছড়িয়ে পড়েছিল দেশ থেকে দেশে।
আমি এই তরুণ প্রজšে§র প্রতি আস্থাশীল। তারেক রহমান নিশ্চয়ই ‘অতীত’ থেকে অনেক কিছু শিখেছেন, যা তাকে আগামী দিনে পথ চলতে সাহায্য করবে। বিএনপির লাখ লাখ কর্মী তার দিকে তাকিয়ে আছে। তার একটি ‘ভুল সিদ্ধান্ত’ তার ‘রাজনৈতিক মৃত্যু’ ঘটাতে পারে। তিনি অবশ্যই দেশে আসবেন। তবে বোধ করি সে সময় এখনও আসেনি।
Daily JUGANTOR
07.06.13

0 comments:

Post a Comment