রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

‘হেফাজতের সব দাবি মানা সম্ভব নয়, আলোচনা হতে পারে’



স্টাফ রিপোর্টার: রাজনৈতিক বিশ্লেষক অধ্যাপক তারেক শামসুর রেহমান বলেছেন, হেফাজতে ইসলামের বিরুদ্ধে বিএনপি, জামায়াতের মদতের অভিযোগ তুলে কোন মন্তব্য করলে তাদেরকে রাজনৈতিক দিকে ঠেলে দেয়া হবে। সরকারের এমন কোন মন্তব্য করা ঠিক হবে না। এখন তাদের সঙ্গে লিবারেল এপ্রোচে আলোচনা করা উচিত সরকারের। সিনিয়র কোন মন্ত্রী বা উপদেষ্টা পর্যায়ের কোন নেতাকে তাদের সঙ্গে সমঝতার জন্য মনোনিত করা উচিৎ। সরকার এখানে একটা ভুল করেছে। শুরুতেই জুনিয়র পর্যায়ের মন্ত্রীকে সমঝোতার জন্য পাঠিয়ে আসলে আলেমদেরকে আন্ডারমাইন্ড করেছে। তোফায়েল আহমদ বা ওই পর্যায়ের কাউকে পাঠাতে পারতো। মানবজমিন অনলাইনকে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফার মধ্যে বেশ কয়েকটা দফা আছে যেগুলোর ব্যাপারে সরকার সিদ্ধান্ত নিতে পারে। যেমন প্রথম দফাটিতে তারা দাবি করেছে সংবিধানে ‘মহান আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপন করতে। এটা সরকার করতে পারে। ৯০শতাংশ মুসলিমদের দেশে এটা করলে কোন অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। অনেক দেশে এমনটা আছেও বটে। দ্বিতীয় দফায় তারা দাবি করেছে, মহাসবী (স.) এর অবমাননাকারীদের বিচারের ব্যাবস্থা করতে। এটাতে সরকার শুরুই করেছে। কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আরও অভিযুক্ত কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করতেই পারে। তারপর আরেকটা দাবি আছে ইসলামী প্রতীকগুলোকে অবমাননাকর টিভি অনুষ্ঠান ও নাটক-সিনেমা বন্ধ করা। এটাও করা উচিত। তবে নারী-পুরুষের সহাবস্থান ও নারী ক্ষমতায়নের সঙ্গে সাংঘর্ষিক কয়েকটি বিষয় নিয়ে ভাবতে হবে। কারণ ২১শতকে এসে আমরা এখন নারী পুরুষের মধ্যে বিভেদ করবো এটা হতে পারে না। মধ্যপ্রাচ্য তথা আরবের অনেক দেশও এই নীতিতে পরিবর্তন এনেছে। যেমন তিউনিসিয়ায়, মিশরে আরব বসন্তের আগে থেকেই নারীরা পুরুষের পাশাপাশি স্বাধীনতা পেয়েছে। তিউনিসিয়ায়তো পুরুষদের দ্বিতীয় বিবাহের বিধান নেই। ফলে নারীরা সেখানে অনেক অধিকার ভোগ করে। তুরষ্কের নারীদের জীবনাচরণে আধুনিকতা এসেছে। এ সব দেশে আরব বসন্তের পর ইসলামী দলগুলো ক্ষমতায় এলেও তারা এ বিষয়ে আফগানিস্তানের মতো কড়াকড়ি করে নি। তাছাড়া ভাষ্কর্যকে মূর্তি আখ্যায়িত করে সেগুলো ভেঙে ফেলার যে দাবি তারা করেছে তা নিয়ে তাদের সঙ্গে আলোচনা করা প্রয়োজন। মিশরেও ভাষ্কর্য রয়েছে। এগুলো মেনে নেয়া অনেক কঠিন। আসলে মধ্যপ্রাচ্যে ইসলামী দলগুলো অনেক লিবারেল হয়েছে। তারা কট্টর পন্থা থেকে অনেক বিষয় ছাড় দিয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে হেফাজতে ইসলামের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত।
তারেক শামসুর রেহমান বলেন, আমি মনে করি তাদের অধিকাংশ দাবি মেনে নেয়া যায়। দু-তিনটি ছাড়া বাকী দাবিগুলো যথেষ্ট লিবারেল। তারা তেমন কোন কঠোর কর্মসূচিও দেয়নি। লাগাতার কোন কর্মসূচি দেয় নি। তারা রাজনৈতিক কোন এজেন্ডাও আনেনি।
Daily MANOBZAMIN interview
07.04.13

0 comments:

Post a Comment