শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জন্য পণ্যের শুল্কমুক্ত সুবিধা, যা জিএসপি নামে পরিচিত, তা স্থগিত করেছে। মার্কিনি বার্তা সংস্থা এপির এক প্রতিবেদনে এ কথা জানা গেছে। এর আগে ৯ জন সিনেটর ওবামাকে লিখিত এক চিঠিতে বাংলাদেশের জন্য জিএসপি সুবিধা স্থগিত রাখার আবেদন করেছিলেন। শুধু তাই নয়, ৭ জুন পররাষ্ট্রবিষয়ক সিনেট কমিটিতেও এ ধরনের একটি সুপারিশ করা হয়েছিল। মূলত শ্রমিক স্বার্থ রক্ষায় ব্যর্থতা ও কারখানার পরিবেশ ভালো না থাকার যুক্তি তুলে মার্কিন আইন-প্রণেতারা প্রেসিডেন্ট ওবামাকে এ ধরনের একটি সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করলেন। আপাতদৃষ্টিতে এতে করে বাংলাদেশের রফতানি খাত খুব একটা ক্ষতিগ্রস্ত না হলেও, এটা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের জন্য একটা খারাপ ‘ইমেজ’ সৃষ্টি করল। বলা ভালো, প্রায় ৫ হাজার বাংলাদেশী পণ্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত সুবিধা পেলেও তৈরি পোশাক কোনো শুল্কমুক্ত সুবিধা পায়নি। বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে এ শুল্কমুক্ত সুবিধা দাবি করে আসছিল। বাংলাদেশী রফতানিকারকরা শতকরা ১৫ ভাগ শুল্ক পরিশোধ করে তৈরি পোশাকের একটি বড় বাজার সৃষ্টি করেছে যুক্তরাষ্ট্রে। বাংলাদেশী যেসব পণ্যের জন্য জিএসপি সুবিধা দেয়া হয়েছে, তার অনেক আইটেম বাংলাদেশ আদৌ রফতানি করে না। প্রায় ৫০০ কোটি ডলারের যে বাণিজ্য, তাতে মাত্র ১ ভাগ এ শুল্কমুক্ত সুবিধা পায়। তার পরও জিএসপি সুবিধা প্রত্যাহার বা স্থগিতের সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের জন্য বহির্বিশ্বে একটি নেতিবাচক ধারণার জন্ম দেবে। আমাদের পররাষ্ট্রনীতির একটা ব্যর্থতা এখানেই যে, আমরা মার্কিনি আইন-প্রণেতাদের আশ্বস্ত করতে পারিনি। রানা প্লাজার ঘটনার পর সরকার যেসব কর্মসূচি নিয়েছে, তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইন-প্রণেতাদের কাছে পৌঁছানো হয়নি। অথচ আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সারা বিশ্ব চষে বেড়ান। দু’সপ্তাহ আগেও তিনি যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন মাত্র কয়েক ঘণ্টার জন্য। উদ্দেশ্য ছিল, জাতিসংঘের সংস্কৃতিবিষয়ক এক সম্মেলনে যোগ দিতে। এর আগে একই সফরে তিনি গিয়েছিলেন আজারবাইজানে। তারপর নিউইয়র্ক থেকে গিয়েছিলেন সুইজারল্যান্ডে। ঢাকায় মাত্র এক সপ্তাহ থেকে আবার গেলেন প্যারিসে। অথচ যেখানে বাংলাদেশের স্বার্থ জড়িত, সেখানে তিনি যাননি। এমনকি জাতীয় স্বার্থ উদ্ধারে তার ব্যর্থতা চোখে লাগার মতো। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে উষ্ণতা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। বেশ কিছু ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। দুর্নীতির ব্যাপকতা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের মিলেনিয়াম চ্যালেঞ্জ করপোরেশন থেকে কোনো সাহায্য পাচ্ছে না। পদ্মা সেতুতে বিশ্বব্যাংক অর্থায়ন করেনি। জন কেরির বাংলাদেশে আসার কথা ছিল। কিন্তু ভারত সফর করে দেশে ফিরে গেছেন তিনি। এখন এলো জিএসপি সুবিধা স্থগিতের সিদ্ধান্ত।
আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক্ষেত্রে প্রায় নিষ্ক্রিয়। তিনি কোনো উদ্যোগ নেননি। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ গার্মেন্টের সব আইটেমে জিএসপি সুবিধা পায় না। কিছু কিছু পণ্যে জিএসপি সুবিধা পায়। এসব পণ্যের সব আবার বাংলাদেশ রফতানিও করে না। বাংলাদেশ অনেক দিন থেকেই গার্মেন্ট সেক্টরে এ জিএসপি সুবিধা চেয়ে আসছে। চলতি জুন মাসেই এ ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা ছিল। এখন পুরো জিএসপি সুবিধা স্থগিত হয়ে গেল। দ্বিতীয় আরও একটি সংবাদ ছাপা হয়েছে, ন্যাটোর স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ কর্মসূচিতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের সম্ভাবনার বিষয়টি। এ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট ছাপা হয়েছে ৩১ মে। ন্যাটোর ওয়েবসাইটেও বিষয়টি আছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের কূটনীতিকরা ১৫ মে ব্রাসেলসে ন্যাটোর সদর দফতর পরিদর্শন করেছেন এবং ন্যাটোর এ কর্মসূচিতে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন বাংলাদেশের কোনো পত্র-পত্রিকায় ছাপা হয়নি এবং বাংলাদেশ এ থেকে কতটুকু উপকৃত হতে পারে, তার বিস্তারিত ব্যাখ্যাও উপস্থাপন করা হয়নি। তবে ন্যাটোর ঝঃৎধঃবমরপ পড়হপবঢ়ঃ সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের গবেষকরা মোটামুটি ধারণা রাখেন। ন্যাটোর লিসবন শীর্ষ সম্মেলনে ২০১০ সালে এ ধারণাপত্র গ্রহণ করা হয়েছিল। এ ধারণাপত্রের মূল বিষয়টি হচ্ছে, ন্যাটোর সম্প্রসারিত ভূমিকা। ন্যাটোর কর্মকা- এখন আর শুধু ইউরোপেই সীমাবদ্ধ নেই; বরং তা দক্ষিণ এশিয়াতেও সম্প্রসারিত হয়েছে। এখন বাংলাদেশ যদি সম্প্রসারিত এ কর্মসূচিতে নিজেকে জড়িত করে, তা যে অভ্যন্তরীণভাবে বিতর্কের মাত্রা বাড়াবে, এ কথা বলা যায়।
অনেকেরই স্মরণ থাকার কথা, যুক্তরাষ্ট্র তার নৌবাহিনীর এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কর্মকা- ভারত মহাসাগর এলাকায় সম্প্রসারিত করেছে। আগামীতে মার্কিন ষষ্ঠ নৌবহরের বেশ ক’টি জাহাজ দক্ষিণ এশিয়ার সমুদ্রসীমায় মোতায়েন করা হবে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, আগামী দিনগুলোতে দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা বাড়বে। সঙ্গত কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক একটি প্রশ্নের মধ্যে থেকে যাবে। তবে এখানে একটা কথা বলা বাঞ্ছনীয়। শেখ হাসিনার প্রথম টার্মের (১৯৯৬-২০০১) পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে বর্তমান টার্মের পররাষ্ট্রনীতির সুস্পষ্ট পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপারে প্রথম টার্মে তিনি যতটা না ‘স্পষ্ট’ ছিলেন, এবার তিনি অনেক বেশি ‘স্পষ্ট’। তবে তার প্রথম টার্মেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক যথেষ্ট উন্নত হয়েছিল। তার প্রথম টার্মে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন বাংলাদেশে এসেছিলেন। তার শাসনামলে বাংলাদেশ সিটিবিটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। একই সঙ্গে ‘হানা’ চুক্তিও (হিউম্যানিটোরিয়ান অ্যাসিসটেন্স নিডস অ্যাসেসমেন্ট) স্বাক্ষরিত হয়েছিল। ১৯৯৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্ব ক্ষুদ্রঋণ শীর্ষ সম্মেলনেও তিনি যোগ দিয়েছিলেন। তার প্রথম টার্মে বাংলাদেশ রাশিয়া থেকে ৮টি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান ক্রয় করেছিল (১২৪ মিলিয়ন ডলার), যা পরে নানা বিতর্কের জন্ম দেয়। তার দ্বিতীয় টার্মেও সেই ধারাবাহিকতা তিনি রক্ষা করলেন। আসলে জাতীয় স্বার্থকে সামনে রেখেই পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনা করা উচিত। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের নিজস্ব স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়া উচিত বেশি। মহাজোট সরকারের আমলে এ স্বার্থ কতটুকু রক্ষিত হয়েছে, তা শুধু আগামী দিনগুলোই বলতে পারবে। শুধু শুধু বিদেশ ভ্রমণের মধ্য দিয়ে এ স্বার্থ অর্জিত হবে না। জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সম্পৃক্ত সেক্টরগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে এবং সে অনুযায়ী পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনা করতে হবে। মাত্র ৫ ঘণ্টার নিউইয়র্ক সফর করে মন্ত্রী তার নামের ওপর সুবিচার করতে পারেননি। একুশ শতকে বাংলাদেশের লক্ষ্য কী, অর্জন কী, ‘সফট পাওয়ার’ হিসেবে বাংলাদেশ কীভাবে তার পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনা করবে, এর কোনো দিকনির্দেশনা নেই আমাদের পররাষ্ট্রনীতিতে। বিদেশ সফর করে জাতীয় স্বার্থ রক্ষিত হয়নি।
ভারতের সঙ্গে আমাদের বেশ কিছু বিষয় ঝুলে আছে। এ ব্যাপারে সরকারের ভূমিকা স্পষ্ট নয়। তিস্তা চুক্তি নিয়ে যে ধূম্রজাল, তার অবসান হয়নি। আমাদের স্বার্থে তিস্তা চুক্তি অত্যন্ত প্রয়োজন। কিন্তু মমতা ব্যানার্জির আপত্তির কারণে এ চুক্তিটি এখন পর্যন্ত হচ্ছে না। এ চুক্তিটি না হওয়ার কারণে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরও ঝুলে গেল। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রীর নয়াদিল্লি যাওয়ার কথা। বাস্তবতা হচ্ছে, তিস্তার পানিবণ্টনের বিষয়টি একটি রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। আগামীতে পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন। এরপর ২০১৪ সালে জাতীয় নির্বাচন। মমতা ব্যানার্জি তিস্তার পানিবণ্টনের বিষয়টিকে তার স্বার্থে ব্যবহার করবেন। তাকে উপেক্ষা করে কেন্দ্র কোনো চুক্তি করতে পারবে না। দ্বিতীয়ত, মমতা এখন আর কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোটে নেই। ফলে কেন্দ্র তার ওপর কোনো প্রভাব খাটাতে পারবে না। তৃতীয়ত, তিস্তার পানিবণ্টনের ব্যাপারে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বাইরে আরও একটি পক্ষ আছে। আর তা হচ্ছে সিকিম। সিকিম হয়ে ভারতের দার্জিলিং ও জলপাইগুঁড়ি হয়ে পশ্চিমবঙ্গের ডুয়ার্সের সমভূমি দিয়ে চিলহাটি থেকে চার-পাঁচ কিলোমিটার পূর্বে বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার উত্তর খড়িবাড়ীর কাছে ডিমলা উপজেলার ছাতনাই দিয়ে প্রবেশ করেছে তিস্তা নদী। সিকিম মূল প্রবাহে ছোট ছোট বাঁধ দিয়ে তিস্তার পানি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। সিকিম তিস্তার উজানে বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। দীর্ঘ দুই যুগেও তিস্তা নদীর পানির হিস্যা না পাওয়ায় প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পটি এখন অকার্যকর হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তিস্তা চুক্তিটির গুরুত্ব অনেক বেশি। এটা এখন ঝুলে গেল।
টিপাইমুখ বাঁধ নিয়েও অস্পষ্টতা আছে। ভারত বারবার বলছে, তারা টিপাইমুখে এমন কিছু করবে না, যাতে বাংলাদেশের ক্ষতি হয়। কিন্তু সংবাদপত্রে (ভারতীয়) প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, ভারত এ প্রকল্প নিয়ে অনেকদূর এগিয়ে গেছে। খোদ মণিপুরেই প্রস্তাবিত এ বাঁধের ব্যাপারে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। টিপাইমুখ হাইড্রোইলেকট্রিক প্রজেক্টে যে হাইড্যাম নির্মিত হবে, তাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা হবে ১ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। এটি নির্মিত হওয়ার কথা বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষে আসামের করিমগঞ্জে বরাক নদীর ওপর। প্রস্তাবিত টিপাইমুখ হাইড্যামের অবস্থান বাংলাদেশের সীমানার খুবই কাছে। ফলে এর থেকে সৃষ্ট সব ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া বা প্রভাব, যেমন নদীগর্ভে অতিরিক্ত বালুর সঞ্চালন ও সঞ্চয়ন, হঠাৎ বন্যা, অতিবন্যা ইত্যাদির প্রভাব সম্পূর্ণটাই পড়বে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, বিশেষ করে সম্পূর্ণ হাওর জনপদের ওপর। আনুমানিক ১০-১৫ বছরের মধ্যে এ অঞ্চলের হাওর, বিলঝিল, বাঁওড়, নদীনালা বালুতে প্রায় ভরে যাবে। জেআরসির সভা না হওয়ায় বাংলাদেশ টিপাইমুখ নিয়ে আলোচনার সুযোগ হারাল।
বাংলাদেশ তার বন্ধুকে সম্মান জানাতে জানে। মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখার জন্য ভারতীয় রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জিকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় সম্মানে সম্মানিত করেছে। কিন্তু ভারত বাংলাদেশের ব্যাপারে আরও একটু উদার হতে পারত। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ব্যাপারে যেমন জটিলতা রয়েছে, সেইসব জটিলতা কাটিয়ে ওঠার ব্যাপারে ভারতের কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায় না। ভারতের রাষ্ট্রপতির ঢাকা সফরের সময় সীমান্ত হত্যা বন্ধ হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন।
কিন্তু সেই আশ্বাস রক্ষিত হয়নি। ছিটমহল নিয়ে যে সমস্যা, সে সমস্যা আজও রয়ে গেছে। বর্তমানে বাংলাদেশের ভূখ-ে আছে ১৭ হাজার ১৪৯ একর ভারতীয় ভূমি। আর ভারতের ভূখ-ে আছে ৭ হাজার ১১১ একর বাংলাদেশী ভূমি। এসব অঞ্চলের মানুষ এক মানবেতর জীবনযাপন করছে। ভারত বড় দেশ। আগামী ৩০ বছরের মধ্যে ভারতের অর্থনীতি হবে বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনীতি। সঙ্গত কারণেই ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়ন থেকে আমরাও উপকৃত হতে পারি। এজন্য যা প্রয়োজন, তা হচ্ছে ভারতের উদার মনোভাব। ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য ভারতের অনুকূলে। বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি দিনে দিনে বাড়ছেই। অশুল্ক বাধা দূর করার প্রতিশ্রুতি দিলেও সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষিত হয়নি। ভারত বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পালাটানা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ভারি যন্ত্রপাতি সরবরাহের পর খাদ্যদ্রব্য সরবরাহেরও সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ কোনো ট্রানজিট সুবিধা পায়নি। ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির একটা কথা বলা হয়েছিল। সেখানেও সৃষ্টি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
সব মিলিয়ে পররাষ্ট্রনীতিতে অর্জনটা খুব বড় নয়। তার চেয়েও দুঃখজনক হচ্ছে, যতটুকু অর্জন, তা ম্লান হয়ে গেছে বেশ ক’টি ঘটনায়। র্যাব তথা মানবাধিকারের ঘটনা বারবার আলোচিত হচ্ছে। সমালোচনা করা হচ্ছে সরকারের। মানবাধিকার সংস্থাগুলো তাদের প্রতিবেদনে প্রশ্ন তুলেছে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে। ড. ইউনূস ইস্যু নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসে বাংলাদেশবিরোধী একটি জনমত তৈরি হয়েছে। মার্কিন সিনেটর তথা কংগ্রেস সদস্যদের অনেকেই অধ্যাপক ইউনূসের বন্ধু। গ্রামীণ ব্যাংককে সরকারিকরণ তথা ভেঙে ফেলার উদ্যোগকে মার্কিন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা খুব ভালো চোখে দেখেনি। সব মিলিয়ে যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে, বর্তমান সরকারের শেষ সময়ে এসে বাংলাদেশ বহির্বিশ্বে একটা ভাবমূর্তি সঙ্কটের মধ্যে পড়েছে। আগামীতে নির্বাচন হবে। সরকারপ্রধান এরই মধ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন। নির্বাচনের আগে সরকার যদি তার ভাবমূর্তি উদ্ধারে সচেষ্ট না হয়, তাহলে তা সরকারের জন্য কোনো ভালো খবর নয়। এটা সরকারের পররাষ্ট্রনীতিতে একটা ব্যর্থতা হিসেবেই চিহ্নিত হতে বাধ্য।
Daily ALOKITO BANGLADESH
30.6.13
আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এক্ষেত্রে প্রায় নিষ্ক্রিয়। তিনি কোনো উদ্যোগ নেননি। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ গার্মেন্টের সব আইটেমে জিএসপি সুবিধা পায় না। কিছু কিছু পণ্যে জিএসপি সুবিধা পায়। এসব পণ্যের সব আবার বাংলাদেশ রফতানিও করে না। বাংলাদেশ অনেক দিন থেকেই গার্মেন্ট সেক্টরে এ জিএসপি সুবিধা চেয়ে আসছে। চলতি জুন মাসেই এ ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত নেয়ার কথা ছিল। এখন পুরো জিএসপি সুবিধা স্থগিত হয়ে গেল। দ্বিতীয় আরও একটি সংবাদ ছাপা হয়েছে, ন্যাটোর স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপ কর্মসূচিতে বাংলাদেশের অংশগ্রহণের সম্ভাবনার বিষয়টি। এ সংক্রান্ত একটি রিপোর্ট ছাপা হয়েছে ৩১ মে। ন্যাটোর ওয়েবসাইটেও বিষয়টি আছে। তাতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের কূটনীতিকরা ১৫ মে ব্রাসেলসে ন্যাটোর সদর দফতর পরিদর্শন করেছেন এবং ন্যাটোর এ কর্মসূচিতে বাংলাদেশের আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন বাংলাদেশের কোনো পত্র-পত্রিকায় ছাপা হয়নি এবং বাংলাদেশ এ থেকে কতটুকু উপকৃত হতে পারে, তার বিস্তারিত ব্যাখ্যাও উপস্থাপন করা হয়নি। তবে ন্যাটোর ঝঃৎধঃবমরপ পড়হপবঢ়ঃ সম্পর্কে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের গবেষকরা মোটামুটি ধারণা রাখেন। ন্যাটোর লিসবন শীর্ষ সম্মেলনে ২০১০ সালে এ ধারণাপত্র গ্রহণ করা হয়েছিল। এ ধারণাপত্রের মূল বিষয়টি হচ্ছে, ন্যাটোর সম্প্রসারিত ভূমিকা। ন্যাটোর কর্মকা- এখন আর শুধু ইউরোপেই সীমাবদ্ধ নেই; বরং তা দক্ষিণ এশিয়াতেও সম্প্রসারিত হয়েছে। এখন বাংলাদেশ যদি সম্প্রসারিত এ কর্মসূচিতে নিজেকে জড়িত করে, তা যে অভ্যন্তরীণভাবে বিতর্কের মাত্রা বাড়াবে, এ কথা বলা যায়।
অনেকেরই স্মরণ থাকার কথা, যুক্তরাষ্ট্র তার নৌবাহিনীর এশীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের কর্মকা- ভারত মহাসাগর এলাকায় সম্প্রসারিত করেছে। আগামীতে মার্কিন ষষ্ঠ নৌবহরের বেশ ক’টি জাহাজ দক্ষিণ এশিয়ার সমুদ্রসীমায় মোতায়েন করা হবে। সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে, আগামী দিনগুলোতে দক্ষিণ এশিয়ায় উত্তেজনা বাড়বে। সঙ্গত কারণেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক একটি প্রশ্নের মধ্যে থেকে যাবে। তবে এখানে একটা কথা বলা বাঞ্ছনীয়। শেখ হাসিনার প্রথম টার্মের (১৯৯৬-২০০১) পররাষ্ট্রনীতির সঙ্গে বর্তমান টার্মের পররাষ্ট্রনীতির সুস্পষ্ট পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপারে প্রথম টার্মে তিনি যতটা না ‘স্পষ্ট’ ছিলেন, এবার তিনি অনেক বেশি ‘স্পষ্ট’। তবে তার প্রথম টার্মেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক যথেষ্ট উন্নত হয়েছিল। তার প্রথম টার্মে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন বাংলাদেশে এসেছিলেন। তার শাসনামলে বাংলাদেশ সিটিবিটি চুক্তি স্বাক্ষর করে। একই সঙ্গে ‘হানা’ চুক্তিও (হিউম্যানিটোরিয়ান অ্যাসিসটেন্স নিডস অ্যাসেসমেন্ট) স্বাক্ষরিত হয়েছিল। ১৯৯৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওয়াশিংটনে অনুষ্ঠিত প্রথম বিশ্ব ক্ষুদ্রঋণ শীর্ষ সম্মেলনেও তিনি যোগ দিয়েছিলেন। তার প্রথম টার্মে বাংলাদেশ রাশিয়া থেকে ৮টি মিগ-২৯ যুদ্ধবিমান ক্রয় করেছিল (১২৪ মিলিয়ন ডলার), যা পরে নানা বিতর্কের জন্ম দেয়। তার দ্বিতীয় টার্মেও সেই ধারাবাহিকতা তিনি রক্ষা করলেন। আসলে জাতীয় স্বার্থকে সামনে রেখেই পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনা করা উচিত। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের নিজস্ব স্বার্থকে গুরুত্ব দেয়া উচিত বেশি। মহাজোট সরকারের আমলে এ স্বার্থ কতটুকু রক্ষিত হয়েছে, তা শুধু আগামী দিনগুলোই বলতে পারবে। শুধু শুধু বিদেশ ভ্রমণের মধ্য দিয়ে এ স্বার্থ অর্জিত হবে না। জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সম্পৃক্ত সেক্টরগুলোকে চিহ্নিত করতে হবে এবং সে অনুযায়ী পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনা করতে হবে। মাত্র ৫ ঘণ্টার নিউইয়র্ক সফর করে মন্ত্রী তার নামের ওপর সুবিচার করতে পারেননি। একুশ শতকে বাংলাদেশের লক্ষ্য কী, অর্জন কী, ‘সফট পাওয়ার’ হিসেবে বাংলাদেশ কীভাবে তার পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনা করবে, এর কোনো দিকনির্দেশনা নেই আমাদের পররাষ্ট্রনীতিতে। বিদেশ সফর করে জাতীয় স্বার্থ রক্ষিত হয়নি।
ভারতের সঙ্গে আমাদের বেশ কিছু বিষয় ঝুলে আছে। এ ব্যাপারে সরকারের ভূমিকা স্পষ্ট নয়। তিস্তা চুক্তি নিয়ে যে ধূম্রজাল, তার অবসান হয়নি। আমাদের স্বার্থে তিস্তা চুক্তি অত্যন্ত প্রয়োজন। কিন্তু মমতা ব্যানার্জির আপত্তির কারণে এ চুক্তিটি এখন পর্যন্ত হচ্ছে না। এ চুক্তিটি না হওয়ার কারণে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরও ঝুলে গেল। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে প্রধানমন্ত্রীর নয়াদিল্লি যাওয়ার কথা। বাস্তবতা হচ্ছে, তিস্তার পানিবণ্টনের বিষয়টি একটি রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছে। আগামীতে পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচন। এরপর ২০১৪ সালে জাতীয় নির্বাচন। মমতা ব্যানার্জি তিস্তার পানিবণ্টনের বিষয়টিকে তার স্বার্থে ব্যবহার করবেন। তাকে উপেক্ষা করে কেন্দ্র কোনো চুক্তি করতে পারবে না। দ্বিতীয়ত, মমতা এখন আর কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউপিএ জোটে নেই। ফলে কেন্দ্র তার ওপর কোনো প্রভাব খাটাতে পারবে না। তৃতীয়ত, তিস্তার পানিবণ্টনের ব্যাপারে বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের বাইরে আরও একটি পক্ষ আছে। আর তা হচ্ছে সিকিম। সিকিম হয়ে ভারতের দার্জিলিং ও জলপাইগুঁড়ি হয়ে পশ্চিমবঙ্গের ডুয়ার্সের সমভূমি দিয়ে চিলহাটি থেকে চার-পাঁচ কিলোমিটার পূর্বে বাংলাদেশের নীলফামারী জেলার উত্তর খড়িবাড়ীর কাছে ডিমলা উপজেলার ছাতনাই দিয়ে প্রবেশ করেছে তিস্তা নদী। সিকিম মূল প্রবাহে ছোট ছোট বাঁধ দিয়ে তিস্তার পানি প্রত্যাহার করে নিয়েছে। সিকিম তিস্তার উজানে বাঁধ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। দীর্ঘ দুই যুগেও তিস্তা নদীর পানির হিস্যা না পাওয়ায় প্রতি বছর শুষ্ক মৌসুমে দেশের সর্ববৃহৎ তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পটি এখন অকার্যকর হয়ে পড়েছে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তিস্তা চুক্তিটির গুরুত্ব অনেক বেশি। এটা এখন ঝুলে গেল।
টিপাইমুখ বাঁধ নিয়েও অস্পষ্টতা আছে। ভারত বারবার বলছে, তারা টিপাইমুখে এমন কিছু করবে না, যাতে বাংলাদেশের ক্ষতি হয়। কিন্তু সংবাদপত্রে (ভারতীয়) প্রকাশিত খবর থেকে জানা যায়, ভারত এ প্রকল্প নিয়ে অনেকদূর এগিয়ে গেছে। খোদ মণিপুরেই প্রস্তাবিত এ বাঁধের ব্যাপারে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে। টিপাইমুখ হাইড্রোইলেকট্রিক প্রজেক্টে যে হাইড্যাম নির্মিত হবে, তাতে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা হবে ১ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট। এটি নির্মিত হওয়ার কথা বাংলাদেশের সীমান্ত ঘেঁষে আসামের করিমগঞ্জে বরাক নদীর ওপর। প্রস্তাবিত টিপাইমুখ হাইড্যামের অবস্থান বাংলাদেশের সীমানার খুবই কাছে। ফলে এর থেকে সৃষ্ট সব ধরনের বিরূপ প্রতিক্রিয়া বা প্রভাব, যেমন নদীগর্ভে অতিরিক্ত বালুর সঞ্চালন ও সঞ্চয়ন, হঠাৎ বন্যা, অতিবন্যা ইত্যাদির প্রভাব সম্পূর্ণটাই পড়বে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, বিশেষ করে সম্পূর্ণ হাওর জনপদের ওপর। আনুমানিক ১০-১৫ বছরের মধ্যে এ অঞ্চলের হাওর, বিলঝিল, বাঁওড়, নদীনালা বালুতে প্রায় ভরে যাবে। জেআরসির সভা না হওয়ায় বাংলাদেশ টিপাইমুখ নিয়ে আলোচনার সুযোগ হারাল।
বাংলাদেশ তার বন্ধুকে সম্মান জানাতে জানে। মুক্তিযুদ্ধে অবদান রাখার জন্য ভারতীয় রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জিকে বাংলাদেশ রাষ্ট্রীয় সম্মানে সম্মানিত করেছে। কিন্তু ভারত বাংলাদেশের ব্যাপারে আরও একটু উদার হতে পারত। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের ব্যাপারে যেমন জটিলতা রয়েছে, সেইসব জটিলতা কাটিয়ে ওঠার ব্যাপারে ভারতের কোনো ইতিবাচক পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায় না। ভারতের রাষ্ট্রপতির ঢাকা সফরের সময় সীমান্ত হত্যা বন্ধ হবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন।
কিন্তু সেই আশ্বাস রক্ষিত হয়নি। ছিটমহল নিয়ে যে সমস্যা, সে সমস্যা আজও রয়ে গেছে। বর্তমানে বাংলাদেশের ভূখ-ে আছে ১৭ হাজার ১৪৯ একর ভারতীয় ভূমি। আর ভারতের ভূখ-ে আছে ৭ হাজার ১১১ একর বাংলাদেশী ভূমি। এসব অঞ্চলের মানুষ এক মানবেতর জীবনযাপন করছে। ভারত বড় দেশ। আগামী ৩০ বছরের মধ্যে ভারতের অর্থনীতি হবে বিশ্বের দ্বিতীয় অর্থনীতি। সঙ্গত কারণেই ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়ন থেকে আমরাও উপকৃত হতে পারি। এজন্য যা প্রয়োজন, তা হচ্ছে ভারতের উদার মনোভাব। ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্য ভারতের অনুকূলে। বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি দিনে দিনে বাড়ছেই। অশুল্ক বাধা দূর করার প্রতিশ্রুতি দিলেও সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষিত হয়নি। ভারত বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে পালাটানা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য ভারি যন্ত্রপাতি সরবরাহের পর খাদ্যদ্রব্য সরবরাহেরও সুযোগ পেয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ কোনো ট্রানজিট সুবিধা পায়নি। ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির একটা কথা বলা হয়েছিল। সেখানেও সৃষ্টি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
সব মিলিয়ে পররাষ্ট্রনীতিতে অর্জনটা খুব বড় নয়। তার চেয়েও দুঃখজনক হচ্ছে, যতটুকু অর্জন, তা ম্লান হয়ে গেছে বেশ ক’টি ঘটনায়। র্যাব তথা মানবাধিকারের ঘটনা বারবার আলোচিত হচ্ছে। সমালোচনা করা হচ্ছে সরকারের। মানবাধিকার সংস্থাগুলো তাদের প্রতিবেদনে প্রশ্ন তুলেছে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে। ড. ইউনূস ইস্যু নিয়ে মার্কিন কংগ্রেসে বাংলাদেশবিরোধী একটি জনমত তৈরি হয়েছে। মার্কিন সিনেটর তথা কংগ্রেস সদস্যদের অনেকেই অধ্যাপক ইউনূসের বন্ধু। গ্রামীণ ব্যাংককে সরকারিকরণ তথা ভেঙে ফেলার উদ্যোগকে মার্কিন প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরা খুব ভালো চোখে দেখেনি। সব মিলিয়ে যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে, বর্তমান সরকারের শেষ সময়ে এসে বাংলাদেশ বহির্বিশ্বে একটা ভাবমূর্তি সঙ্কটের মধ্যে পড়েছে। আগামীতে নির্বাচন হবে। সরকারপ্রধান এরই মধ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরু করে দিয়েছেন। নির্বাচনের আগে সরকার যদি তার ভাবমূর্তি উদ্ধারে সচেষ্ট না হয়, তাহলে তা সরকারের জন্য কোনো ভালো খবর নয়। এটা সরকারের পররাষ্ট্রনীতিতে একটা ব্যর্থতা হিসেবেই চিহ্নিত হতে বাধ্য।
Daily ALOKITO BANGLADESH
30.6.13