রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

কোন পথে যুক্তরাজ্য

গেল সপ্তাহে যুক্তরাজ্যের সংসদের নিম্নকক্ষ হাউজ অব কমন্সের নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হওয়ার পর একটা প্রশ্ন ইতোমধ্যে উঠেছে যে কোন পথে এখন যুক্তরাজ্য? দুটো কারণে এই বিষয়টিকে সামনে নিয়ে এসেছে_ একটি হচ্ছে যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন থাকবে কিনা এটা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরনের একটি গণভোট করার সিদ্ধান্ত, আর দ্বিতীয়টি হচ্ছে_ কট্টরপন্থী স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির বিপুল বিজয়। এই দুটো বিষয় সরাসরিভাবে যুক্তরাজের ভবিষ্যৎ রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। নির্বাচনের আগে ক্যামেরন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে ২০১৭ সালে তিনি গণভোটের আয়োজন করবেন। কিন্তু নির্বাচনের বিজয়ের পর তিনি এখন বলছেন ওই গণভোটটি তিনি ২০১৬ সালেই করতে চান। আর নির্বাচনে অভাবনীয় সাফল্য লাভ করার পর স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির প্রধান নিকোলা স্টারজিওন বিবিসিকে বলেছেন, যদি ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করে, তাহলে স্কটল্যান্ডও যুক্তরাজ্য ইউনিয়ন ত্যাগ করবে। ফলে নির্বাচন পরবর্তী যুক্তরাজ্য এক বড় ধরনের রাজনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হতে যাচ্ছে। আগামী ৫ বছর ক্যামেরন ক্ষমতায় থাকবেন। সুতরাং তার আগেই সিদ্ধান্ত শুধু ইউরোপীয় রাজনীতি নয়, বরং সমগ্র বিশ্ব ব্রিটেনকে বিতর্কিত করতে পারে। গেল ১১ মে পার্লামেন্টের ভাষণে নির্বাচনের পর তিনি যেসব ইস্যুর অবতারণা করেছেন। তা ব্রিটেনের ভবিষ্যৎ রাজনীতির কিছুটা ইঙ্গিত দিচ্ছে। ২৮ জাতিভিত্তিক ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে যে তিনি বড় ধরনের দর কষাকষিতে যাচ্ছেন নির্বাচন পরবর্তী পার্লামেন্টে দেয়া প্রথম ভাষণে তিনি তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। যদিও তিনি এটা স্পষ্ট করেননি কোন কোন ইস্যু নিয়ে তিনি ইইউ নেতাদের সঙ্গে কথা বলবেন। তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন অভিবাসীদের সামাজিক সেবা পাওয়ার সুবিধা (স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাসস্থান, বেকারভাতা) কাটছাঁট করার তিনি উদ্যোগ নেবেন, যা ইইউর নীতিমালার পরিপন্থী। এ ক্ষেত্রে ব্রিটেন আলাদাভাবে যদি কোনো নীতিমালা প্রণয়ন করে, তাহলে বিষয়টি ইইউর যে সংবিধান রয়েছে, তার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। কেননা একজন ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত দেশের নাগরিক ইইউভুক্ত যে কোনো দেশে বসবাস করতে পারে এবং সে সে দেশের সামাজিক সুবিধা পাওয়ার যোগ্য। এখানে বলা ভালো, যুক্তরাজ্যের হাউজ অব কমন্সের নির্বাচনে কনজারভেটিভ পার্টি বিজয়ী হয়েছে। জনমত জরিপে বলা হয়েছিল একটা হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে কিন্তু তা হয়নি। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়েই কনজারভেটিভ পার্টি আবারো ক্ষমতায় থেকে গেল আগামী পাঁচ বছরের জন্য। ২০১০ সালের নির্বাচনে কনজারভেটিভরা যে ফলাফল করেছিল, এবার তাদের ফলাফল গেলবারের ফলাফলকে ছাড়িয়ে গেছে। ২০১০ সালে কনভারভেটিভরা পেয়েছিল ৩০৬ আসন। এবার এ সংখ্যা ৩৩১। অন্যদিকে লেবার পার্টির ভরাডুবি হয়েছে। গেলবার তারা পেয়েছিল ২৫৮ আসন, আর এবার পেল ২৩২ আসন। ভরাডুবি ঘটেছে লিবারেল ডেমোক্রেটদের। গেলবার তাদের আসন সংখ্যা ছিল ৫৭, এবার তা কমে এসে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৮টিতে। তবে অবাক করা ঘটনা ঘটেছে স্কটল্যান্ড ন্যাশনালিস্ট পার্টির ক্ষেত্রে। সর্বশেষ নির্বাচনে তারা পেয়েছিল মাত্র ৫টি আসন। এবার তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬টিতে। যুক্তরাজ্যের এই নির্বাচন এখন অনেক প্রশ্ন ও জিজ্ঞাসার জন্ম দিয়েছে। যুক্তরাজ্যের গত ৯৩ বছরের যে গণতন্ত্র (১৯২২ থেকে), সেখানে মূলত দুটি প্রধান দলই ক্ষমতা পরিচালনা করে, এই ধারা থেকে যুক্তরাজ্য এবারো বেরিয়ে আসতে পারল না। প্রতিদ্বন্দ্বিতা বরাবরই কনজারভেটিভ ও লেবার পার্টির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। এবং এরাই সরকার গঠন করে। ২০১০ সালে কিছুটা ব্যতিক্রম ছিল বটে। সেবার সরকার গঠনের জন্য কনজারভেটিভ দলের প্রয়োজন ছিল তৃতীয় একটি দলের সমর্থনের। লিবডেম বা লিবারেল ডেমোক্রেটরা কনজারভেটিভ পার্টির নেতা ডেবিড ক্যামেরনের প্রতি সমর্থন দিয়ে যৌথভাবে একটি সরকার গঠন করেছিলেন এবং লিবডেম নেতা নিক ক্লেগ উপ-প্রধানমন্ত্রীর পদ পেয়েছিলেন। কিন্তু এবার লিবডেমের বড় ধরনের পরাজয় হয়েছে। এই মুহূর্তে লিবডেমকে বাদ দিয়ে ডেভিড ক্যামেরন এককভাবেই সরকার গঠন করেছেন। তিনি এবার আর একটি কোয়ালিশন সরকার গঠন করেননি। চারটি জাতি নিয়ে যুক্তরাজ্য গঠিত এবং হাউজ অব কমন্সের আসনও সেভাবে নির্ধারিত। যেমন ইংল্যান্ডের রয়েছে ৫৩৩ আসন, ওয়েলসের ৪০, নর্থ আয়ারল্যান্ডের ১৮ ও স্কটল্যান্ডের ৫৯। সব মিলিয়ে ৬৫০ আসনে সরকার গঠনের জন্য দরকার হয় ৩২৬টি আসন। এই নির্বাচন প্রমাণ করল যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে তৃতীয় শক্তির উত্থানের যে সম্ভাবনা ছিল, সে সম্ভাবনা আর নেই। সাধারণ মানুষের আস্থা দুটো বড় দলের প্রতিই। তবে যুক্তরাজ্যের গণতন্ত্রের এটা একটা সৌন্দর্য যে, দল যদি হেরে যায় তাহলে দল নেতা পরিবর্তন করে। এড মিলিব্যান্ড এখন আর লেবার পার্টির নেতা নন। তিনি পদত্যাগ করেছেন। একই সঙ্গে লিবডেমের নেতৃত্বেও পরিবর্তন এসেছে। নিক ক্লেগের পরিবর্তে আমরা এখন অন্য কাউকে দেখব লিবডেমের নেতৃত্বে। যুক্তিটা হচ্ছে দলের নেতৃত্ব যে নীতি ও আদর্শ নিয়ে নির্বাচনে গেল, ভোটাররা তা গ্রহণ করেনি। ফলে দলকে এখন নয়ানীতি ও আদর্শ খুঁজে বের করতে হবে। স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (এসএনপি) এখন হাউজ অব কমন্সে তৃতীয় শক্তিশালী দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। এই দলটি স্কটল্যান্ডের ৫৯টি আসনের মধ্যে ৫৬টি আসন পেয়েছে। অথচ এই দলটি স্কটল্যান্ডকে যুক্তরাজ্য ইউনিয়ন থেকে বের করে নিয়ে একটি স্বাধীন দেশ গড়তে চায়। এটা ছিল তাদের সস্নোগান। যদিও গেল সেপ্টেম্বরে (২০১৪) স্কটল্যান্ডে স্বাধীনতার প্রশ্নে যে গণভোট হয়েছিল, তাতে যুক্তরাজ্যে থাকার পক্ষেই ভোট হয়েছিল বেশি। এখন এসএনপির নেতা নিকোলা স্টারজিওন কী ভূমিকা নেন, সেদিকে অনেকের লক্ষ্য থাকবে। যদিও ইতোমধ্যেই তিনি ইঙ্গিত দিয়েছেন যে স্কটল্যান্ডের স্বাধীনতার প্রশ্নে তিনি আবারো একটি গণভোটের উদ্যোগ নেবেন। ফলে তার ভবিষ্যৎ রাজনীতি নিয়ে একটা প্রশ্ন থাকলই। এখন প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন নির্বাচনের আগেই বলেছিলেন ভবিষ্যতে যুক্তরাজ্য ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকবে কিনা, এটা নিয়ে যে বির্তক চলছে, তা যাচাই করে দেখার জন্য আগামী ২০১৭ সালের (এখন ২০১৬) তিনি যুক্তরাজ্যে একটি গণভোটের আয়োজন করবেন। মানুষ এতে সায় দিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকা না থাকা নিয়ে ব্রিটেনে একটা বিতর্ক আছে। ব্রিটেন ইউরোপীয় ইউনিয়নে আছে বটে, কিন্তু ইউরোপীয় মুদ্রা, ইউরোতে কখনই যোগ দেয়নি। ১৯৫৭ সালে মাত্র ৬টি রাষ্ট্র নিয়ে ইউরোপীয়ান ইকোনমিক কমিটি (ইইসি) যাত্রা শুরু করে আজ তা ইউরোপীয় ইউনিয়নে পরিণত হয়েছে। ১৯৭৩ সালে যুক্তরাজ্য তৎকালিন ইইসিতে যোগ দেয়। আর ২০০২ সালের ১ জানুয়ারি ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশের সঙ্গে ১২টি দেশ অভিন্ন মুদ্রা ইউরো চালু করে। পরে আরো কয়েকটি দেশ ইউরো গ্রহণ করে। কিন্তু যুক্তরাজ্য তাদের মুদ্রা পাউন্ডকে ধরে রেখেছে। তুলনামূলক বিচারে ব্রিটেনের মানুষ কিছুটা কনজারভেটিভ। তারা মনে করে ইইউ বা ইউরোতে যোগ দেয়ার অর্থ হচ্ছে তাদের স্বকীয়তা ঐতিহ্য সংস্কৃতি হারিয়ে যাওয়া। তাই তারা বার বার ইউরো গ্রহণ করার বিপক্ষে মত দিয়ে আসছে। এসব কনজারভেটিভদের বিজয় এই প্রশ্নটাকেই সামনে নিয়ে এলো যে এর মধ্যদিয়ে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রনীতিতে কতটুকু পরিবর্তন আসবে কিংবা আদৌ পরিবর্তন আসবে কিনা? বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য সম্পর্কে কোনো পরিবর্তন আসবে কিনা সে ব্যাপারেও প্রশ্ন আছে। তবে যুক্তরাজ্যের অভ্যন্তরীণ রাজনীতি কিংবা তার পররাষ্ট্রনীতিতে বড় পরিবর্তন আসার সম্ভাবনা ক্ষীণ। এই নির্বাচন যুক্তরাজ্যের দীর্ঘ ৭৫০ বছরের গণতন্ত্রের ইতিহাসের ধারাবাহিকতাই মাত্র। অনেক অনেক পর্যবেক্ষক ধারণা করেছিলেন একটা পরিবর্তন আসবে। কিন্তু সেই পরিবর্তনটি এলো না। এখন টিউলিপ আর রুশনারারা ব্রিটেনের চলমান রাজনীতিতে কতটুকু অবদান রাখতে পারবেন, আমাদের কাছে তা যতটুকু না বিবেচ্য, তার চেয়ে বেশি বিবেচ্য বাংলাদেশ-যুক্তরাজ্য সম্পর্কে উন্নয়নে এরা কতটুকু অবদান রাখবেন। তবে বেশকিছু বিষয় রয়েছে। সেদিকে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। যে তিনটি এলাকা থেকে এরা নির্বাচিত হয়েছেন, সেখানে বাঙালিরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। কিন্তু সেখানে ব্যাপকসংখ্যক বাংলাদেশিরা বেকার। নারীরা সেখানে নিগৃহীত। উচ্চশিক্ষায় তাদের আগ্রহ কম। এই বিষয়গুলোর দিকে তাদের নজর দিতে হবে। টিউলিপ সিদ্দিক নিজে দীর্ঘদিন এই বাঙালি কমিউনিটিতে কাজ করেছেন। তিনি ভালো করে জানেন সমস্যাটি। এখন তিনি তার এলাকার উন্নয়নে যদি কাজ করেন, আমার ধারণা তিনি এই আসনটি স্থায়ীভাবে ধরে রাখতে পারবেন। তিনিও পারবেন একটি মডেল হতে। আমার জানা মতে আরো বেশ কিছু বাঙালি রয়েছেন, যারা শিক্ষিত এবং ব্রিটেনের সমাজ উন্নয়নে তারা অবদান রাখছেন। তারাও ধীরে ধীরে যদি রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় নিজেদের শরিক করেন, আমার ধারণা আগামীতে আমরা আরো বাঙালি এমপি পাব ব্রিটিশ পার্লামেন্টে। ১০-১২ লাখ বাঙালি ব্রিটেনে বসবাস করেন। এদের জন্য তিনজন এমপি যথেষ্ট নয়। এ সংখ্যা আরো বাড়বে। এই বাঙালিদের বিরুদ্ধে একটা বড় অভিযোগ এরা সামাজিক ভাতা গ্রহণ করেন আবার অবৈধ চাকরিও করেন এটি একটি স্পর্শকাতর বিষয়। এটি গুরুতর আইন লঙ্ঘনের শামিল। বিষয়টি খতিয়ে দেখা প্রয়োজন। তবে সব বাঙালি এটি করেন না। এটি কমিউনিটির বদনাম। একটি অভিযোগ উঠেছে, একটি 'চক্র' লন্ডনে টিউলিপ সিদ্দিকের নির্বাচনী এলাকায় তার বিরুদ্ধে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর প্রচারপত্র বিলি করে। এর সঙ্গে বাংলাদেশের দুটো দলের স্থানীয় নেতাকর্মীর যোগ-সাজশ রয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এটা নিন্দনীয় এবং শাস্তিযোগ্য একটি অপরাধ। বাংলাদেশে আমরা হামেশাই এ ধরনের কর্মকা- দেখতে পাই। তাই বলে ব্রিটেনের মতো সমাজেও এ ধরনের কর্মকা- হবে? এতে করে প্রবাসে বাঙালি হিসেবে আমাদের মর্যাদা বাড়ে না, বরং কমে যায়। যেটা দুঃখজনক, তা হচ্ছে বাঙালিরা ব্রিটেনের নাগরিকত্ব গ্রহণ করার পরও এদের অনেকে স্থানীয় রাজনৈতিক সংগঠনের সঙ্গে জড়িত না হয়ে এদের অনেকে বাংলাদেশি রাজনৈতিক দলগুলোর কর্মকা-ে এবং সংগঠনে নিজেদের জড়িত করেন। তারা থাকেন লন্ডন। অথচ রাজনীতি করেন বাংলাদেশের। ফলে স্থানীয় কমিউনিটি লিডারশিপ তৈরি হচ্ছে না। বাংলাদেশি রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ীদের একটা বড় অভিযোগ, ওরা দক্ষ শেফ ও রেস্টুরেন্টকর্মী পাচ্ছেন না। স্থানীয় শেতাঙ্গ কমিউনিটি এ পেশায় আসতে আগ্রহী নয়। ফলে বাংলাদেশের ওপর তাদের নির্ভর করতে হয়। কিন্তু ভিসা সমস্যার কারণে তারা বাংলাদেশ থেকে কর্মী আনতে পারছেন না। কর্মী সমস্যার কারণে ঝুঁকির মুখে আছে এই রেস্টুরেন্ট ব্যবসা। নির্বাচনের আগেই ডেভিড ক্যামেরন তার নির্বাচনী প্রচারণায় অভিবাসীদের সংখ্যা বছরে ৬০ হাজারে নামিয়ে আনার কথা বলেছিলেন। তার ওপর চাপ বাড়ছে। তিনি যদি এটি কার্যকর করেন, তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে বাংলাদেশি অভিবাসীরা। এই তিন বাঙালি নারীকে এখন পার্লামেন্টে এ ব্যাপারে সোচ্চার হতে হবে। বাংলাদেশি পণ্যের আরো বাজার সম্প্রসারণের একটা সম্ভাবনা রয়েছে যুক্তরাজ্যে। এই বাজার সম্প্রসারণে এরা কাজ করতে পারেন। দুই দেশের ব্যবসায়ী সম্প্রদায় তথা নেত্রীদের মধ্যে যোগাযোগ রয়েছে। এই যোগাযোগকে আরো শক্তিশালী করতে পারেন এরা। মোটা দাগে যা বলা যায় তা হচ্ছে যুক্তরাজ্য-বাংলাদেশ সম্পর্ক আরো উন্নত হবে। বাংলাদেশের ব্যাপারে যুক্তরাজ্যের আগ্রহ আরো বাড়বে। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে আরো শক্তিশালী করা মানবাধিকার পরিস্থিতির আরো উন্নত করা, বিনিয়োগ বাড়ানো, নারী উন্নয়নে বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ ইত্যাদির মধ্যদিয়ে এ দুই দেশের সম্পর্ক আরো উন্নত হবে। অন্যদিকে ট্রেডিশনাল যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্য সম্পর্কে তেমন পরিবর্তন আসবে না! ক্যামেরন ইইউ ত্যাগ করার ব্যাপারে চাইলেও, আপাতত তা পারবেন না। তবে অভিবাসীদের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আসবে আরো। দক্ষিণ এশীয় এবং পূর্ব-ইউরোপের শেতাঙ্গ জনগোষ্ঠীর অভিবাসন প্রক্রিয়ায় আরো কড়াকড়ি ব্যবস্থা আসবে। এতে যে কোনো ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত নাগরিক হুট করে ব্রিটেনে বসবাস বা সামাজিক সুবিধা পাবেন না। ইউরো গ্রহণ না করেও ব্রিটেন যেমনি ইইউতে করে গেছে, ঠিক তেমনি ইউরোপীয় অভিবাসীদের ক্ষেত্রে একই পন্থা অবলম্বন করবে ক্যামেরন সরকার। নিঃসন্দেহে আগামী দিনে কনজারভেটিভদের নেতৃত্বে এক নয়া ব্রিটেনকে আমরা দেখতে পাব। Daily Jai Jai Din 20.05.15

0 comments:

Post a Comment