রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

মোদি আসছেন

শেষ পর্যন্ত তারিখটি নির্ধারিত হয়েছে। নরেন্দ্র মোদি আসছেন। ৬ জুন থেকে তার সফর শুরু হবে। এই সফরকে ঘিরে অনেকগুলো ‘কিন্তু’ ও ‘এবং’ আছে। অনেকদিন থেকেই তার এই ঢাকা সফর প্রত্যাশিত ছিল। তিনি সময় করে উঠতে পারছিলেন না। উপরন্তু তার প্রয়োজন ছিল স্থলসীমানা চিহ্নিত করার বিষয়টির সাংবিধানিক সমাধান। এখন ভারতীয় সংসদের উভয় কক্ষে বিলটি অনুমোদিত হওয়ায় একটা বড় বাধা মোদি অতিক্রম করলেন। এখন আর ভারতীয় সংবিধান সংশোধনে কোনো বাধা নেই। কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভায় পাসকৃত বিলটি অনুস্বাক্ষরিত হবে এবং অতঃপর ভারতীয় রাষ্ট্রপতি তাতে স্বাক্ষর করবেন এবং তা সংবিধানের অংশ হবে। নরেন্দ্র মোদি এই দিনটির জন্যই অপেক্ষায় ছিলেন। এখন তিনি বাংলাদেশের জনগণকে বলতে পারবেন ‘তিনি করেছেন’। অতীতের কোনো ভারতীয় সরকার এটি করেনি। বাংলাদেশ সেই ১৯৭৪ সালে বেরুবাড়ী ভারতকে দিয়েছিল এবং সংবিধানের তৃতীয় সংশোধনী এনে তা আইনসিদ্ধ করেছিল। এখন মোদির জমানায় এবং তার দূরদর্শিতার কারণেই ভারতীয় সংসদে এটি অনুমোদিত হলো। এ জন্য নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের জনগণ তার কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে। নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শেষ পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়সহ আরও চার মুখ্যমন্ত্রী ঢাকায় আসছেন। এর মধ্য দিয়ে তিস্তার পানি বণ্টনের একটা সম্ভাবনা তৈরি হবে। নরেন্দ্র মোদি মমতাকে সফরসঙ্গী করে এই মেসেজটা দিতে চেয়েছেন যে, তিনি তিস্তার পানি বণ্টনের ব্যাপারে সিরিয়াস মোদি তার পররাষ্ট্রনীতিতে দক্ষিণ এশিয়াকে গুরুত্ব দিয়েছেন। এটা আমাদের জন্য একটা ভালো খবর এ জন্য যে, আমাদের উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় ভারত বড় অবদান রাখতে পারে। ভারত বড় অর্থনীতির দেশ। ভারতীয় সহযোগিতায় আমরা আমাদের উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে আরও ত্বরান্বিত করতে পারব। তবে এ ক্ষেত্রে ভারতকে বাংলাদেশকে সমমর্যাদার দৃষ্টিতে দেখতে হবে। ভারতকে দেখতে হবে উন্নয়নের সহযোগী হিসেবে। ভারত যদি বাংলাদেশে শুধু তার পণ্যের বাজার সম্প্রসারিত করতে চায়, তাতে করে সমমর্যাদা নিশ্চিত হবে না। বরং ভারতীয় বন্ধুত্বকে একটি প্রশ্নের মুখে ঠেলে দেবে। ভারতকে বাংলাদেশেরও অনেক কিছু দেওয়ার আছে। কিন্তু সেখানে তৈরি হয়ে আছে নানা জটিলতা। তাই সংগতকারণেই আমাদের প্রত্যাশা থাকবে নরেন্দ্র মোদি তার ব্যক্তিগত ক্যারিশমা দিয়ে সমস্যাগুলো সমাধানের উদ্যোগ নেবেন। ভারতীয় গণমাধ্যম ও ভারতীয় নীতিনির্ধারকরা ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে দ্বিপক্ষীয় সমস্যা রয়েছে, সে সম্পর্কে আদৌ অবগত নন, তা আমি বিশ্বাস করি না। তবে দুঃখজনক হলেও সত্য, জিটুজি পর্যায়ে বাংলাদেশ ‘শক্ত’ অবস্থানে যেতে না পারলেও ‘ট্রাকটু ডিপ্লোম্যাসির’ আওতায় যেসব সেমিনার হয়, অর্থাৎ বেসরকারি পর্যায়ে দুদেশে যেসব সভা-সেমিনার হয়, তাতে বাংলাদেশের অবস্থান কতটুকু তুলে ধরা হয়, সে ব্যাপারে আমার সন্দেহ রয়েছে। মোদির সফরের প্রাক্কালে বাংলাদেশের একটি বেসরকারি সংস্থা ফ্রেন্ডস অব বাংলাদেশ এবং ইন্ডিয়ান ফাউন্ডেশন নয়াদিল্লিতে একটি যৌথ সভার আয়োজন করে। ওই সভায় বাংলাদেশের কিছু ব্যক্তি যোগ দেন। তারা ওই সভায় বাংলাদেশের অবস্থান কতটুকু তুলে ধরতে পেরেছেন আমি জানি না। তবে আমি এটা নিশ্চিত করেই বলতে পারি বাংলাদেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো সেখানে আদৌ উত্থাপিত হয়নি। মোদির সফরের প্রাক্কালে এ ধরনের একটি সেমিনারের গুরুত্ব অনেক। কেননা ভারতের নীতিনির্ধারকদের অনেকেই ওই সভায় বক্তব্য রেখেছেন। তাদের বক্তব্য থেকে ভারতের বর্তমান সরকারের মনোভাব বোঝা গেছে। মূলত চারটি বিষয়ের আলোকে মোদির ঢাকা সফরকে বিশ্লেষণ করা যেতে পারে। এই চারটি বিষয় হচ্ছেÑ অর্থনীতি, নিরাপত্তা, সন্ত্রাস দমন ও কানেকটিভিটি। এর মাঝে অর্থনীতি ও কানেকটিভিটির বিষয়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ। অর্থনীতির খাতে দেখা যাচ্ছে ভারত বাংলাদেশের বেশ কিছু প্রকল্পে অর্থায়ন করবে। সংবাদপত্রে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশ ভারতের কাছে ২৯৪ কোটি ডলারের সাহায্য চাইবে। ইতোমধ্যে ১৫টি প্রকল্পও ভারতের কাছে পাঠানো হয়েছে। এখানে সমস্যাটা হচ্ছে ভারতের ঋণের ধরন নিয়ে। ভারত এই ঋণ দিচ্ছে ‘সাপ্লাইয়ার্স ক্রেডিট’-এর আওতায়। ভারত নিজে কখনো সাপ্লাইয়ার্স ক্রেডিটে ঋণ গ্রহণ করে না (সর্বশেষ মোদির দক্ষিণ কোরিয়া সফরের সময় ১ হাজার কোটি ডলার ঋণ গ্রহণ করার কথা উল্লেখ করা যায়)। সাপ্লাইয়ার্স ক্রেডিট এখন বিশ্বে অচল। কোনো রাষ্ট্রই সাধারণত এর আওতায় কোনো ঋণ গ্রহণ করে না। কেননা তাতে নানা শর্ত থাকে। যেমন বলা যায় সাপ্লাইয়ার্স ক্রেডিটে ঋণ নিলে এই ঋণের আওতায় শতকরা ৭৫ ভাগ পণ্য আমাদের ওই দেশ (এ ক্ষেত্রে ভারত) থেকে কিনতে হবে। ঠিকাদার নিয়োগ হবে ওই দেশ থেকে। সুদ দিতে হবে শতকরা ১ ভাগ হারে। নির্দিষ্ট সময়ে প্রকল্প শেষ না হলে বাংলাদেশকে জরিমানা গুনতে হবে শতকরা ৫ ভাগ হারে। এটা কোনো ভালো ঋণ নয়। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সুযোগ আছে ভারতের সঙ্গে এ ব্যাপারে আরও আলোচনা করার। এর আগে ভারতের কাছ থেকে সাপ্লাইয়ার্স ক্রেডিটের আওতায় ১০০ কোটি ডলার ঋণ পেয়েছিলাম। এ ব্যাপারে আমাদের তিক্ত অভিজ্ঞতা রয়েছে। সূক্ষ্মভাবে দেখলে দেখা যাবে যেসব প্রকল্পে এই ঋণ ব্যয় হবে, তাতে আমাদের চাইতে ভারতই উপকৃত হবে বেশি। ভারতের স্বার্থ এখানে বেশি। দুটি প্রকল্পের কথা আমি উল্লেখ করলামÑ একটি হচ্ছে আশুগঞ্জ-আখাউড়া সড়ক চার লেনে উন্নীত করা, যা কি না সাতবোন রাজ্যগুলোতে ভারতীয় পণ্য সরবরাহে সুবিধা হবে। এই ঋণের আওতায় ৫০০টি ভারতীয় ডবল ডেকার ও আর্টিকুলেটেড বাস আমরা কিনব। প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশের সড়কগুলো, বিশেষ করে ঢাকা কিংবা চট্টগ্রামের মতো বড় শহরগুলোতে এই বাসগুলো চলাচল করতে পারবে কি না? এমনিতেই প্রচুর যানবাহনের কারণে এবং রাস্তা না থাকায় যানজট এখন নগরবাসীর এক নম্বর সমস্যা। সুতরাং প্রশ্ন উঠতেই পারে, এই ৫০০ ভারতীয় টাটা বাসকে আমরা জায়গা করে দিতে পারব কি না? ভারত নতুন করে ১৫টি ট্রানজিট রুট চাইছে, যা কি না বাংলাদেশের এক অংশ থেকে ভারতের অন্য অংশকে সংযুক্ত করবে। অবকাঠামো উন্নয়নে এই ঋণ ব্যয় হবে। ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীও এবার মোদির সঙ্গে আসছেন। তিনি বাংলাদেশের কাছে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর ব্যবহার করতে চাইবেন। এর আগে মনমোহন সিংয়ের ঢাকা সফরের সময় যে ৫০ দফা প্রটোকল স্বাক্ষরিত হয়েছিল, তাতে ভারত কর্তৃক চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করার কথা বলা হয়েছিল। এখন বাংলাদেশ নীতিগতভাবে ত্রিপুরাকে যদি চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করার অনুমতি দেয়, তা ভবিষ্যতে বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে কোনো ‘জটিলতা’ সৃষ্টি করবে কি না, তা ভেবে দেখার বিষয়। কেননা বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানি বেড়েছে। এখানে প্রায়ই কনটেইনার জট লেগে থাকে। সোনাদিয়ায় গভীর সমুদ্রবন্দরটি নির্মিত হলে আমরা ভারতের সাতবোন রাজ্যগুলোতে এই সুযোগ দিতে পারতাম। কিন্তু সোনাদিয়া গভীর সমুদ্রবন্দরটি নির্মিত হচ্ছে না ভারতের আপত্তির কারণে। এ ব্যাপারে আরও গবেষণা প্রয়োজন। বাংলাদেশের আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে শতকরা ৯০ ভাগই পরিচালিত হয় চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে। মংলা বন্দরটি ব্যবহৃত হয় না নানা কারণে। তবে মোদির এই সফর নানা সম্ভাবনা সৃষ্টি করতে পারে আমাদের জন্য। মনে রাখতে হবে ভারত বড় অর্থনীতির দেশ। দক্ষিণ এশিয়ার মোট আয়তনের মধ্যে ৭২ ভাগ একা ভারতের, মোট জনসংখ্যার ৭৭ ভাগ ভারতের, ভারতের অর্থনীতির অবস্থান বিশ্বে তৃতীয় ও চতুর্থ। জাতিসংঘের এক রিপোর্টে বলা হয়েছে, ২০১৬ সালে ভারতের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৭ ভাগে গিয়ে দাঁড়াবে, যখন চিনের অর্থনীতিতে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ২ ভাগ। সুতরাং ভারতের এই অর্থনৈতিক উন্নয়ন থেকে আমরা উপকৃত হতে চাই। অনেকগুলো সম্ভাবনা রয়েছে। এক. বাংলাদেশ-ভারত নৌ প্রটোকলের আওতায় নদী খনন করা যেতে পারে, যাতে করে ভারতীয় পণ্য আমদানিতে আমরা নৌপথ ব্যবহার করতে পারি। এ ক্ষেত্রে বিশ্বব্যাংকের সাহায্য চাওয়া যেতে পারে। ২. নদীপথে সব ধরনের পণ্য সরবরাহ করা যায় না। এটা পরিবর্তন প্রয়োজন। রাতের বেলা নৌযান চলাচলের অনুমতি এবং দক্ষ নাবিক নিয়োগ করাও জরুরি। ৩. সমুদ্র পথে কানেকটিভি বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। এ ব্যাপারে চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্রবন্দরের সঙ্গে ভারতের তিনটি সমুদ্রবন্দর সংযুক্ত সংক্রান্ত একটি চুক্তি হতে যাচ্ছে। এটা ভালো। ৪. আইটি সেক্টরে এবং আইটি পার্ক গড়ার ক্ষেত্রে আমরা ভারতীয় দক্ষতা ও সহযোগিতাকে কাজে লাগাতে পারি। ৫. সমুদ্র অর্থনীতি, জলবায়ু পরিবর্তন ও দুর্যোগ মোকাবিলায় দেশ দুটো একসঙ্গে কাজ করতে পারে। এখানে সমুদ্র অর্থনীতির কথা উল্লেখ করা যায়। একটি বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে এখানে, যা ‘ব্লু অর্থনীতি’ হিসেবে পরিচিত। আমাদের দক্ষ জনশক্তি নেই। এই দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে আমরা ভারতের সহযোগিতা নিতে পারি। ৬. বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্য ভারতের অনুকূলে। শুধু ২০১৩-১৪ অর্থবছরে বাংলাদেশের পক্ষে বাণিজ্য ঘাটতির পরিমাণ ৫৫৮ কোটি ডলার। দিনে দিনে এই ঘাটতি বাড়ছেই। বাংলাদেশ এই ঘাটতি কমাতে পারছে না। কারণ নানা ধরনের শুল্ক ও অশুল্ক বাধার কারণে বাংলাদেশি পণ্য ভারতে প্রবেশ করতে পারছে না। এই বাধা অপসারণের কথা বলা হলেও ভারতীয় আমলাতন্ত্রের কারণে তা দূর হচ্ছে না। ৭. তিস্তা চুক্তি নিয়ে একটা জটিলতা আছে জানি। ভবিষ্যতে যে কোনো এক সময় এই চুক্তিটি হওয়া বাঞ্ছনীয়, যাতে করে মোদি বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা পেতে পারেন। তবে একই সঙ্গে ৫৪ নদীর ব্যাপারে একটি যৌথ ব্যবস্থাপনা চালু করা প্রয়োজন। শুধু গঙ্গার পানি ভাগাভাগির ব্যাপারে একটি চুক্তি হয়েছে। অথচ ভারত ফেনী নদী থেকেও পানি প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। একটি যৌথ ব্যবস্থাপনা চালু হলে উভয় দেশই ৫৪ নদীর পানির সুবিধা পাবে। এ ক্ষেত্রে ভারত যে আন্তঃনদী সংযোগ প্রকল্প চালু করতে যাচ্ছে, সে ব্যাপারেও একটি সিদ্ধান্তে আসতে হবে। টিপাইমুখ বাঁধ নিয়েও একই কথা প্রযোজ্য। ৮. দক্ষিণ এশিয়া ভবিষ্যতে দুটো বড় ধরনের সমস্যায় পড়বে। জ্বালানি ও পানি সংকটের মুখে পড়বে পুরো দক্ষিণ এশিয়া। উভয় ক্ষেত্রেই একটি আঞ্চলিক সহযোগিতার এপ্রোচ গড়ে তুলতে হবে। ভুটান, নেপাল, ভারত ও বাংলাদেশের সমন্বয়ে আঞ্চলিক সহযোগিতার আলোকে জ্বালানি সংকট ও পানি সংকটের সমাধান সম্ভব। ভারত এটা করে না। ভারত দ্বিপাক্ষিকভাবে এসব সমস্যার সমাধান করতে চায়। দ্বিপাক্ষিকতা কখনই কোনো ভালো এপ্রোচ হতে পারে না। ৯. বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে মোদি সরকার একটি ব্যবসা ও বিনিয়োগবান্ধব নীতি গ্রহণ করেছে। এটা আমরা আমাদের স্বার্থে ব্যবহার করতে পারি। বাংলাদেশে ভারতীয় বিনিয়োগ তুলনামূলকভাবে কম। ভারতীয় ব্যবসায়ীদের জন্য একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করে ভারতের ব্যবসায়ীদের আমরা উৎসাহিত করতে পারি সেখানে বিনিয়োগ করতে। আমরা ‘দোকানদারদের জাতি’তে পরিণত হতে চাই না! আমরা শুধু ভারতীয় পণ্যই বিক্রি করব না, ভারতীয়রাও এখানে পণ্য উৎপাদন করুক। ১০. দুদেশের মাঝে ভিসা ব্যবস্থা আরও সহজীকরণ ও রেলব্যবস্থার আরও উন্নয়ন দরকার, যাতে করে দুদেশের সাধারণ মানুষ সহজে দুদেশ ভ্রমণ করতে পারেন। নরেন্দ্র মোদি আসছেন। তার কাছে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। বিশাল এক জনপ্রিয়তা নিয়ে তিনি এসেছেন। ভারতের জনগণের মতো বাংলাদেশের মানুষের কাছেও সমান জনপ্রিয় হবেন যদি তিনি সমস্যাগুলো সমাধানের ব্যাপারে আন্তরিক হন। তিনি শুধু আশ্বাস দিয়ে যাবেন, এটা আমরা চাই না। মনমোহন সিং আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও বারবার সীমান্ত হত্যা হচ্ছে। এমনকি গত সপ্তাহেও বিএসএফ একজন বাংলাদেশিকে পিটিয়ে মেরেছে। এর স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন। যদি সমস্যাগুলোর সমাধান না হয় এবং ভারত যদি নিজ স্বার্থের আলোকে সব বিষয় দেখে, তাহলে বাংলাদেশের মানুষ ভারতের প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা রাখার আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে। আর এর সুযোগ নেবে অসাংবিধানিক ও উগ্র সংগঠনগুলো। আমরা তা চাই না। এ কারণেই নরেন্দ্র মোদির এই সফরের গুরুত্ব অনেক বেশি। Daily Amader Somoy 30.05.15

0 comments:

Post a Comment