যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে কি কোনো বড় ধরনের পরিবর্তন আসতে
যাচ্ছে? ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর
বিশ্লেষকরা এ বিষয়টির দিকে এখন দৃষ্টি দিয়েছেন বেশি করে। অনেক ইস্যু এখন
সামনে এসেছে। রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক, সিরিয়ার ব্যাপারে নয়ানীতি, চীন তথা
এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি কী হবে এ নিয়ে এখন আলোচনার শেষ
নেই। ওবামা প্রশাসনের আমলে চীনকে ঘিরে ফেলার একটি মহাপরিকল্পনা নিয়ে
যুক্তরাষ্ট্র এগিয়ে গিয়েছিল। ওবামা তার পররাষ্ট্রনীতিতে এশিয়া-প্যাসিফিক
অঞ্চলকে গুরুত্ব দিয়ে ‘Pivot to Asia’ পলিসি গ্রহণ করেছিলেন। এখন ট্রাম্প
কি এ নীতি অব্যাহত রাখবেন এটা ব্যাপক আলোচিত একটি বিষয়। নির্বাচনে বিজয়ী
হওয়ার পর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন ট্রাম্পকে ফোন করেছিলেন। তাদের মাঝে
সংলাপ হয়েছে এবং এ ফোনালাপকে ‘গভীর বন্ধুত্বের সুর’ হিসেবে আখ্যায়িত করা
হয়েছে। চীনের প্রেসিডেন্টের সঙ্গেও কথা হয়েছে ট্রাম্পের। অন্যদিকে সিরিয়ার
প্রেসিডেন্ট আসাদ এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, তিনি সন্ত্রাস দমনে নবনির্বাচিত
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের সহযোগিতা চান। যুক্তরাষ্ট্র এত দিন আসাদবিরোধী নুসরা
ফ্রন্টকে সমর্থন দিয়ে আসছিল। এখন ট্রাম্প বলেছেন, তিনি নুসরা ফ্রন্টকে
অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সহযোগিতা করবেন না। কিন্তু আইএস উৎখাতে তার অবস্থান কী,
তা স্পষ্ট নয়। তবে নিঃসন্দেহে এটা বলা যায়, একটি রুশ-মার্কিন সমঝোতা
আসাদের হাতকেই শক্তিশালী করবে মাত্র! তবে পর্যবেক্ষকরা বলছেন, দক্ষিণ চীন
সাগর হবে ট্রাম্পের জন্য একটি ‘টেস্ট কেস’। এ অঞ্চলে বিশাল জ্বালানি
প্রাপ্তির সম্ভাবনা শুধু চীনকেই এই অঞ্চলের ব্যাপারে আগ্রহী করে তুলছে না,
বরং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরও যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। এখানে বলা ভালো, এ অঞ্চল
তথা এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল আগামী দিনে প্রত্যক্ষ করবে এক ধরনের
প্রতিযোগিতা। এ প্রতিযোগিতায় অনিবার্যভাবে ভারত একটি শক্তি। এরই মধ্যে
দক্ষিণ চীন সাগরে ভারত চারটি যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছিল। ফলে এটা বোঝাই যায়,
আগামী দিনগুলোতে এ অঞ্চলের রাজনীতির উত্থান-পতনে ভারত একটি ‘শক্তি’ হতে
চায়। এক্ষেত্রে ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ মূলত এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ
চীনের কর্তৃত্ব কমানো। নীতিগত প্রশ্নে এ ব্যাপারে ওবামা প্রশাসন ও আগামী
প্রশাসনের মধ্যে কোনো পার্থক্য থাকার কথা নয়। ভারত এরই মধ্যে ভারত মহাসাগরে
চীনের কর্তৃত্ব চ্যালেঞ্জ করতে শুরু করেছে। উল্লেখ করা প্রয়োজন, মার্চের
শেষের দিকে ভারত বঙ্গোপসাগরে সাবমেরিন থেকে পরমাণু বোমা বহনে সক্ষম
ব্যালিস্টিক মিসাইল পরীক্ষা চালিয়েছিল। এতে চীনের কোনো প্রতিক্রিয়ার খবর
সংবাদপত্রে প্রকাশিত না হলেও, মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের একটি প্রতিক্রিয়া
তখন সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছিল। মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের মুখপাত্র মার্ক
টোনার বলেছিলেন, এই মিসাইল পরীক্ষা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতাকে ক্ষুণœ করবে।
তিনি এ অঞ্চলের দেশগুলোকে পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার ও উন্নয়ন কমিয়ে আনারও
আহ্বান জানিয়েছিলেন। নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা লক্ষ করেছেন, ভারত মহাসাগরে
তিনটি পরাশক্তির (যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারত) তৎপরতা সাম্প্রতিক সময়গুলোতে
বেড়েছে। এতে এ অঞ্চলে ‘প্রভাব বলয় বিস্তারের’ রাজনীতিকে কেন্দ্র করে একদিকে
চীন ও ভারত, অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাড়ছে। এ
‘দ্বন্দ্ব’কে কেন্দ্র করে ভারত মহাসাগরের অঞ্চলভুক্ত দেশগুলোও ‘আক্রান্ত’
হচ্ছে। চীন যখন তার ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ কর্মসূচির আওতায় এ অঞ্চলের
দেশগুলোকে অন্তর্ভুক্ত করছে, ঠিক তখনই ভারত এগিয়ে এসেছে তার প্রাচীন ‘কটন
রুট’ নিয়ে। ভারত এরই মধ্যে ভারত মহাসাগরভুক্ত অঞ্চলে তার তৎপরতা বাড়িয়েছে।
ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন ও ব্রুনাইয়ের সঙ্গে চুক্তি করে সেখানে তার সামরিক
তৎপরতা নিশ্চিত করেছে। এর আগে ভারত শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপে যুদ্ধজাহাজ
বিক্রমাদিত্যকে পাঠিয়েছিল। চীন-ভারত দ্বন্দ্বের প্রতিক্রিয়া হিসেবে চীন অতি
সম্প্রতি আন্দামান ও নিকোবর অঞ্চল তার বলে দাবি করেছে। পাঠকরা নিশ্চয়ই
স্মরণ করতে পারেন, কলম্বোতে গেল বছর চীনা ডুবোজাহাজের উপস্থিতিকে কেন্দ্র
করে শ্রীলঙ্কায় সরকার পর্যন্ত পরিবর্তন হয়েছিল। এ ডুবোজাহাজের উপস্থিতিকে
ভারত দেখেছিল তার নিরাপত্তার প্রতি হুমকি হিসেবে। সাবেক শ্রীলঙ্কান
রাষ্ট্রপতি রাজাপাকসে ছিলেন অতিমাত্রায় চীনানির্ভর। চীন শ্রীলঙ্কার
হামবানতোতা ও কলম্বোতে দুইটি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ করে দিয়েছিল। কিন্তু
বিষয়টি খুব সহজভাবে দেখেনি ভারত। শেষ পর্যন্ত ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থা
সেখানে এক ধরনের ‘হস্তক্ষেপ’ করে এবং সিরিসেনাকে রাজাপাকসের
‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ হিসেবে দাঁড় করায়। নির্বাচনে সিরিসেনা বিজয়ী হয়েছিলেন
এটা সত্য। ভারতে মোদি ক্ষমতায় আসার পর ভারতীয় মহাসাগর তথা মহাসাগরভুক্ত
অঞ্চলকে ঘিরে নয়া ভারতীয় স্ট্র্যাটেজি রচিত হয়েছে। গেল বছর (মার্চ) ভারতের
উড়িষ্যার ভুবনেশ্বরে ভারতীয় মহাসাগরভুক্ত দেশগুলোর সমন্বয়ে গঠিত ‘ইন্ডিয়ান
ওশেন রিম’ এর একটি শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। বাংলাদেশও তাতে অংশ
নিয়েছিল। ওই সম্মেলনে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ সুস্পষ্ট করেই
বলেছিলেন, ভারত মহাসাগরে চীনের প্রবেশ ভারতের কাছে কাক্সিক্ষত নয়।
ভুবনেশ্বর শীর্ষ সম্মেলনের আগে মোদি সরকার মরিশাসে একটি ভারতীয় ঘাঁটি
স্থাপনের ব্যাপারে একটি চুক্তি করেছে। মালদ্বীপ ও শ্রীলঙ্কার সঙ্গে একটি
মৈত্রী জোট গড়ারও উদ্যোগ নিয়েছিল ভারত। এ জোটে মরিশাস ও সিসিলিকে
পর্যবেক্ষক হিসেবে রাখারও উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তাই এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল
তথা ভারত মহাসাগর আগামী দিনে প্রত্যক্ষ করবে এক ধরনের প্রভাব বিস্তার করার
প্রতিযোগিতা। এ দুইটি অঞ্চলে সাম্প্রতিক বেশকিছু ‘সামরিক তৎপরতা’ লক্ষণীয়।
দক্ষিণ চীন সাগরে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার সমন্বয়ে একটি সামরিক
ঐক্যজোট গঠিত হয়েছে। উদ্দেশ্য হচ্ছে, চীনের ওপর ‘চাপ’ প্রয়োগ করা। অন্যদিকে
ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীন তার নৌবাহিনীর তৎপরতা বাড়িয়েছে। দক্ষিণ চীন
সাগর থেকে মালাক্কা প্রণালি হয়ে ভারত মহাসাগর অতিক্রম করে অ্যারাবিয়ান গালফ
পর্যন্ত যে সমুদ্রপথ, তার নিয়ন্ত্রণ নিতে চায় চীন। কারণ এ পথ তার জ্বালানি
সরবরাহের পথ। চীনের জ্বালানি চাহিদা প্রচুর। এদিকে ভারতও ভারত মহাসাগরে
তার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে চায়। ভারতের নৌবাহিনীর ‘নিউ ইস্টার্ন ফ্লিট’ এ
যুক্ত হয়েছে বিমানবাহী জাহাজ। রয়েছে পারমাণবিক শক্তিচালিত সাবমেরিন।
আন্দামান ও নিকোবরে রয়েছে তাদের ঘাঁটি। ফলে এক ধরনের প্রতিযোগিতা এরই মধ্যে
চীন ও ভারতের মাঝে সৃষ্টি হয়েছে। এশিয়া-প্যাসিফিক ও দক্ষিণ এশিয়ার
কর্তৃত্ব নিয়ে চীন এবং ভারতের অবস্থান এখন অনেকটা পরস্পরবিরোধী। যেখানে
চীনা নেতৃত্ব একটি নয়া ‘মেরিটাইম সিল্ক রুট’ এর কথা বলছে, সেখানে মোদি
সরকার বলছে ‘ইন্দো-প্যাসিফিক ইকোনমিক করিডোর’ এর কথা। স্বার্থ মূলত এক ও
অভিন্ন এ অঞ্চলে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা। আর কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে গিয়েই
এশিয়ার এ দুইটি বড় দেশের মাঝে দ্বন্দ্ব অনিবার্য। আর এটাকেই কাজে লাগাতে
চায় যুক্তরাষ্ট্র। ট্রাম্প প্রশাসনের ভূমিকা কী, সেটাই এখন দেখার বিষয়।
একসময় মার্কিনি গবেষকরা একটি সম্ভাব্য চীন-ভারত অ্যালায়েন্সের কথা
বলেছিলেন। জনাথন হোলসলাগ ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনে লিখিত একটি প্রবন্ধে
Chindia (অর্থাৎ চীন-ভারত) এর ধারণা দিয়েছিলেন। চীনা প্রেসিডেন্টের ভারত
সফরের (২০১৪ ও ২০১৬) পর ধারণা করা হয়েছিল, দেশ দুইটি আরও কাছাকাছি আসবে।
কিন্তু শ্রীলঙ্কার অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারতের ভূমিকা, চীন-ভারত সীমান্ত
নিয়ে দ্বন্দ্ব এবং সর্বশেষ চীনের আন্দামান-নিকোবর অঞ্চল দাবি দেখে মনে
হয়েছে, এই সম্ভাবনা এখন ক্ষীণ। নতুন আঙ্গিকে ‘ইন্ডিয়া ডকট্রিনের’ ধারণা
আবার ফিরে এসেছে। এ ‘ইন্ডিয়া ডকট্রিন’ মনরো ডকট্রিনের দক্ষিণ এশীয় সংস্করণ।
অর্থাৎ দক্ষিণ এশিয়ায় অন্য কারও কর্তৃত্ব ভারত স্বীকার করে নেবে না। একসময়
এ এলাকা, অর্থাৎ ভারত মহাসাগরীয় এলাকা ঘিরে ‘প্রিমাকভ ডকট্রিন’ (২০০৭ সালে
রচিত। শ্রীলঙ্কা, চীন, ইরান ও রাশিয়ার মধ্যকার ঐক্য) এর যে ধারণা ছিল,
শ্রীলঙ্কায় সিরিসেনার বিজয়ের সঙ্গে সঙ্গে এ ধারণা এখন আর কাজ করছে না। ফলে
বাংলাদেশ তার পূর্বমুখী ধারণাকে আরও শক্তিশালী করতে বিসিআইএম (বাংলাদেশ,
চীনের ইউনান রাজ্য, ভারতের সাতবোন, মিয়ানমার) যে আগ্রহ দেখিয়েছিল, তাতে এখন
শ্লথগতি আসতে পারে। সামরিক ও অর্থনৈতিক নিরাপত্তার প্রশ্নে ভারত এখন আর
বিসিআইএম ধারণাকে ‘প্রমোট’ করবে না। আর বাংলাদেশের একার পক্ষে চীনকে সঙ্গে
নিয়ে বিসিআইএম ধারণাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে না। শুধু তাই নয়, ভারত
নয়া উপআঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা বিবিআইএনকে (বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল)
বেশি গুরুত্ব দেয়ায় বিসিআইএম এখন গুরুত্বহীন হয়ে পড়বে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ছাত্ররা জানেন, সাম্প্রতিক যুক্তরাষ্ট্রের নৌ
স্ট্র্যাটেজি এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলকে ঘিরেই আবর্তিত হচ্ছে। অর্থাৎ একসময়
যুক্তরাষ্ট্রের নৌ স্ট্র্যাটেজি শুধু প্যাসিফিক অঞ্চলকে ঘিরে রচিত হলেও এখন
তা সম্প্রসারিত হয়েছে ভারত মহাসাগরে। একই স্ট্র্যাটেজির আওতায় নিয়ে আসা
হয়েছে ভারত মহাসগারকে, যাকে ওবামা আখ্যায়িত করেছেন ‘Pivot to Asia’ হিসেবে।
বাংলাদেশ এ স্ট্র্যাটেজির আওতায়। এ স্ট্র্যাটেজির অন্তর্ভুক্ত চীন, জাপান ও
দক্ষিণ কোরিয়াও। উল্লেখ করা প্রয়োজন, এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্র
তার অবস্থানকে শক্তিশালী করার জন্য এখানে মোতায়েনরত যুক্তরাষ্ট্রের ষষ্ঠ
ফ্লিটের ছয়টি যুদ্ধজাহাজকে ভারত মহাসাগরে মোতায়েনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ফলে এ
অঞ্চলের গুরুত্ব আরও বেড়েছে। এতে চীনা নেতাদের উদ্বেগ ও শঙ্কা বাড়ছে।
অতি সম্প্রতি ওয়াশিংটনের (১ এপ্রিল) যে চতুর্থ পারমাণবিক নিরাপত্তা সম্মেলন
অনুষ্ঠিত হয়ে গেল, সেখানে ওবামার সঙ্গে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের
আলাপচারিতায় চীনা নেতা তাদের উদ্বেগ ও শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। এর কারণ হচ্ছে,
যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে Terminal High Altitude Area Defense
(THAAD) আলোচনা শুরু করেছে। যদিও বলা হচ্ছে, THAAD এক ধরনের মিসাইল
প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা (৪০ থেকে ১৫০ কিলোমিটার উচ্চতায় আগত শত্রুপক্ষের
মিসাইল ধ্বংস করা। THAAD ব্যাটারি প্রতিস্থাপনে খরচ পড়বে ৮২৭ দশমিক ৬
মিলিয়ন ডলার), কিন্তু চীন মনে করছে, এ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা তাদের বিরুদ্ধে
ব্যবহৃত হবে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক দক্ষিণ চীন সাগরে যুদ্ধজাহাজ
পাঠানোকে চীন মনে করছে তাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতি এটি এক ধরনের
হুমকি। ওবামা-শি জিনপিং আলোচনায় এ প্রসঙ্গগুলো উত্থাপিত হয়েছিল এবং শি
জিনপিং এটা স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন যে, চীন এ ধরনের ‘কর্মকা-’ সহ্য করবে না।
স্পষ্টতই এশীয়-প্যাসিফিক অঞ্চলজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘ভূমিকা’ নানা প্রশ্নের
জন্ম দিয়েছে। এতে করে এটা স্পষ্ট, এ ভূমিকা এ অঞ্চলে চীনা স্বার্থকে আঘাত
করবে। ফলে এ অঞ্চল, অর্থাৎ ভারত মহাসাগরভুক্ত অঞ্চল আগামী দিনগুলোতে যে এক
ধরনের প্রভাব বলয় বিস্তার করার প্রতিযোগিতার সৃষ্টি হবে, তা আর বলার
অপেক্ষা রাখে না। সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন এখানে যে, ট্রাম্পের প্রশাসন এ
বিষয়গুলোকে কীভাবে দেখবে? ট্রাম্পের সময়ে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক আরও উন্নত
হবে। ব্যবসায়িক সম্পর্ক আরও বাড়বে। তবে চীনের ব্যাপারে তার দৃষ্টিভঙ্গি কী
হবে, তা স্পষ্ট নয়। ফলে আমরা ২০১৭ সালের দিকে একটি নয়া মার্কিন
পররাষ্ট্রনীতি পাব কিনা, সে ব্যাপারে আমাদের কৌতূহল থাকবেই। ২০ জানুয়ারি
(২০১৭) তিনি দায়িত্ব নেবেন। সুতরাং ওই সময় পর্যন্ত আমাদের অপেক্ষা করা ছাড়া
কোনো বিকল্প নেই।
Daily Alokito Bangladesh
20.11.2016
0 comments:
Post a Comment