এককথায় অবিশ্বাস্য, অকল্পনীয়। ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হলেন, এটা কেউই যেন বিশ্বাস করতে পারছিলেন না। কিন্তু সেটাই ঘটল। সব জনমত জরিপকে মিথ্যা প্রমাণ করে নির্বাচকম-লীর ২৭৯টি ইলেক্টোরাল ভোট পেয়ে বিজয়ী হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সে সঙ্গে রচিত হলো ইতিহাস। এটা কেউ কোনো দিন চিন্তাও করতে পারেনি, রিপাবলিকান রাজনীতির সঙ্গে ২ বছর আগেও যার কোনো সম্পর্ক ছিল না, যিনি কোনো দিন কোনো ‘রাজনৈতিক পদ’ (সিনেটর, প্রতিনিধি পরিষদ, গভর্নর) অলংকিত করেননি, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হবেন! তিনি এখন প্রেসিডেন্ট হলেন। একসময় মনে করা হতো, তিনি আদৌ তার প্রার্থিতা ঘোষণা করবেন না। তিনি করেছিলেন। একসময় মনে করা হতো, দলের প্রাইমারিগুলোতে তার প্রার্থীপদ কর্মীরা সমর্থন করবেন না। কিন্তু করেছিল। যেখানে রিপাবলিকান পার্টির শীর্ষ নেতা, যেমন মার্কো রুবিও, টেডক্রুস, পল রায়ান, জেব বুশ, বেন কারসনকে মনে করা হতো এদের কেউ একজন রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন পাবেন। কিন্তু কেউ পাননি। পেয়েছিলেন ট্রাম্প। সাবেক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট বুশ সিনিয়র এবং জুনিয়র বুশÑ এ ফ্যামিলি প্রকাশ্যেই বলেছিল, তারা ট্রাম্পকে ভোট দেবেন না। কিন্তু তাতে কিছু হয়নি। ট্রাম্প জিতেছেন। ১১ জন নারী প্রকাশ্যেই বলেছিলেন, তারা ট্রাম্প কর্তৃক যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন। কিন্তু তাদের ওইসব অভিযোগকে গুরুত্বের সঙ্গে নেননি ভোটাররা। যিনি যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্টলেডি হতে যাচ্ছেন, সেই মেলানি ট্রাম্পের (ট্রাম্পের তৃতীয় স্ত্রী, মডেল) নগ্ন ছবি ছাপা হয়েছিল ২ মাস আগে নিউইয়র্কের একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকায়। কিন্তু মানুষ তা গুরুত্বের সঙ্গে নেয়নি। মানুষ ট্রাম্পকেই ভোট দিয়েছে। তিনি ১৮ বছর কোনো ট্যাক্স দেন না। অথচ তিনি বিলিয়ন ডলারের মালিক। থাকেন নিউইর্য়কের ফিফ্থ অ্যাভিনিউর ট্রাম্প টাওয়ারে। অথচ ট্যাক্সের ভারে হতাশাগ্রস্ত সাধারণ মধ্যবিত্ত ট্রাম্পকেই বেছে নিল পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে। একজন ট্রাম্প, অত্যন্ত উচ্চাকাক্সক্ষী, যিনি ২০০০ সালে চেষ্টা করেছিলেন রিফর্ম পার্টির হয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে, এখন তিনিই কিনা রিপাবলিকান পার্টির প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউসে যাচ্ছেন। এই ‘অসম্ভব’কে সম্ভব করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কোনো দিক থেকেই ট্রাম্পের সঙ্গে হিলারি ক্লিনটনকে তুলনা করা যাবে না। হিলারির গ্রহণযোগ্যতা, শিক্ষাগত অভিজ্ঞতা, দীর্ঘদিন প্রশাসনে কাজ করার অভিজ্ঞতা, সফল কূটনৈতিক, বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনÑ কোনো দিক থেকেই কমতি ছিল না হিলারি ক্লিনটনের। তারপরও তিনি হেরে গেলেন। ইতিহাস অস্বীকার করল একজন নারীকে প্রথমবারের মতো প্রেসিডেন্ট হতে। ১৯২০ সালে মাত্র নারীরা যুক্তরাষ্ট্রে ভোটের অধিকার পেয়েছিল। আর এর ৯৬ বছর পর একটি সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল একজন নারী যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হবেন। এখন সেই সম্ভাবনাও পিছিয়ে গেল আরও অনেক অনেক বছরের জন্য!
কেন এমনটি হলো? কেন মানুষ এমন একজন বিতর্কিত মানুষকেই হোয়াইট হাউসে পাঠাল? আগামীতে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে, সন্দেহ নেই তাতে। কিন্তু সাদা চোখে এ মুহূর্তে যে কারণগুলো পাওয়া যায়, তা হচ্ছেÑ ১. মানুষ একটি পরিবর্তন চেয়েছে। সাধারণ মানুষ মনে করেছে, একজন ডেমোক্র্যাটের চেয়ে একজন রিপাবলিকান প্রার্থী তাদের স্বার্থ রক্ষা করবে বেশি; ২. যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ এখনও একজন নারী প্রেসিডেন্টকে গ্রহণ করার ব্যাপারে অতটা উদার নন; ৩. বর্ণবাদ এখানে অনেক শক্তিশালী। সংবিধানে অনেক সুন্দর সুন্দর কথা লেখা আছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, বর্ণবিদ্বেষ, ধর্মবিদ্বেষ এ সমাজে অত্যন্ত শক্তিশালী, ৪. হিলারি ক্লিনটনের ইমেইল কেলেঙ্কারি সাধারণ মানুষ তার নেতৃত্বের অদক্ষতা হিসেবেই দেখেছে। এটাই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। ৫. নারী ও তরুণ সমাজের সমর্থন হিলারি পেলেও বয়স্ক শ্বেতাঙ্গ আর রুরাল মানুষের সমর্থন ট্রাম্প পেয়েছেন। সেই সঙ্গে শ্বেতাঙ্গ কর্মজীবী, যারা গ্রাজুয়েট নন, তাদের সমর্থনও নিশ্চিত করতে পেরেছিলেন ট্রাম্প; ৬. ট্রাম্পের ট্যাক্স রিফর্মকে সাধারণ মানুষ সমর্থন করেছে। তার চাকরির ক্ষেত্র তৈরি করার প্রস্তাব সমর্থন পেয়েছিল। অন্যদিকে এসব ক্ষেত্রে হিলারির প্রস্তাব আদৌ কোনো আবেদন রাখতে পারেনি; ৭. ট্রাম্পের প্রচ- অভিবাসীবিরোধী ভূমিকা ব্যাপক সমর্থন পেয়েছিল। এক্ষেত্রে হিলারি ক্লিনটনের অভিবাসীদের ব্যাপারে একটি ‘সমন্বিত কর্মসূচি’ জনগণ সমর্থন করেনি। ট্রাম্পের মুসলমানবিরোধী ভূমিকার ব্যাপারেও সমর্থন পাওয়া গেছে ব্যাপক জনগোষ্ঠীর; ৮. ট্রাম্পের ‘ট্রেড পলিসি’কে মানুষ সমর্থন করেছে। বিশেষ করে তার চীনা ও মেক্সিকান পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব ভোটাররা সমর্থন করেছে। টিপিপি চুক্তির কারণে যুক্তরাষ্ট্রে মানুষ চাকরি হারাবে, ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাবে, ট্রাম্পের এ বক্তব্য মানুষ গ্রহণ করেছে। হিলারির বক্তব্য এক্ষেত্রে ছিল অস্পষ্ট; ৯. স্বাস্থ্যসেবার ব্যাপারে হিলারি ক্লিনটনের ‘ওবামা কেয়ার’ অব্যাহত রাখার প্রস্তাব ব্যাপক জনসমর্থন পায়নি। এক্ষেত্রে ট্রাম্পের বক্তব্য ছিল স্পষ্ট; ১০. ট্রাম্পের মেক্সিকানবিরোধী ভূমিকা স্প্যানিশ ভাষাভাষীদের ওপর আদৌ কোনো প্রভাব ফেলেনি। ফ্লোরিডার কিউবান-আমেরিকানরা প্রকারান্তরে ট্রাম্পকেই সমর্থন করেছিল। হিলারি এই সমর্থন নিশ্চিত করতে পারেননি। ৯০’র দশক থেকেই একটি ধারা লক্ষ করা যায়। দুই টার্মের (৮ বছর) পরপরই রাজনীতিতে পরিবর্তন আসে। ক্লিনটন, বুশ ও ওবামা। ডেমোক্র্যাট, রিপাবলিকান, ডেমোক্র্যাট। সেই ধারাবাহিকতায় এখন আসছেন ট্রাম্প। ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি তিনি শপথ নেবেন। ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি ক্ষমতায় থাকবেন ২০২০ সাল পর্যন্ত। কিন্তু তার জন্য খারাপ খবর আছে অনেক। তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে সর্বত্র। নারী, সমকামী মানুষ, অভিবাসীরা সবাই বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভের ভাষা যে শুধু ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ছিল তা নয়, বরং ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই বিজয় যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বের কাছে হেয় করেছে, এমন বক্তব্যও ছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘মেইক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’Ñ এ বক্তব্য রেখে জনমতকে তার পক্ষে নিয়ে গেছেন। এসব উসকানিমূলক বক্তব্যে একশ্রেণীর মানুষ অখুশি হয়েছে। সন্দেহ নেই, তার অনেক বক্তব্য সমাজকে দ্বিধাবিভক্ত করেছে। তার মুসলমানবিদ্বেষ, অভিবাসীবিরোধী মনোভাব, হিলারি ক্লিনটনকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করা ইত্যাদি নানা ঘটনায় সমাজকে বিভক্ত করেছে। অভিবাসীদের নিয়ে একটা সমস্যা আছে। প্রায় ২০ মিলিয়ন অভিবাসী (শতকরা ৪৭ ভাগ) এখন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। বাকি ৫৩ ভাগ, অর্থাৎ ২২ দশমিক ৪ মিলিয়ন অভিবাসী আইনসিদ্ধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে থাকছেন (গ্রিনকার্ড, ছাত্র, ব্যবসায়ী)। প্রায় ২০ মিলিয়ন মানুষ অবৈধ রয়েছেনÑ এটা সত্য। কিন্তু থাকতে পারছেন যুক্তরাষ্ট্রের আইনে ফাঁকফোকর রয়েছে বিধায়। যুক্তরাষ্ট্র অভিবাসীদের দেশ। ট্রাম্প ও হিলারি দুইজনই অভিবাসীর সন্তান। ট্রাম্পের দাদা এসেছিলেন (ফ্রেডেরিক ট্রাম্প, ১৮৮৫) জার্মানির রাইনল্যান্ড প্রদেশের কালস্ট্রাড নামক ছোট এক শহর থেকে। আর হিলারির পূর্বপুরুষ এসেছিলেন ওয়েলস ও ফ্রান্স থেকে। এরা পেনসেলভেনিয়ায় শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। দুই পরিবারই অর্থনৈতিক অভিবাসী। সুতরাং অভিবাসী নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্য সাজে না। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের জনগোষ্ঠীর মাত্র ১ ভাগ (৩ দশমিক ৩ মিলিয়ন) মুসলমান। এই এক ভাগ কখনোই নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে না।
যুক্তরাষ্ট্র এখন কোন দিকে যাবে? চীনের সঙ্গে সম্পর্ক কী হবে? দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা কী হবে? হিলারি চীনের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেন। এক্ষেত্রে দক্ষিণ চীন সাগর একটি সমস্যা। স্ট্র্যাটেজিক কারণে দক্ষিণ চীন সাগর যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটা তার সাপ্লাই লাইন। উপরন্তু এখানে রয়েছে প্রচুর জ্বালানি সম্পদ (তেল ও গ্যাস)। মার্কিন তেল কোম্পানিগুলোর বেশ আগ্রহ রয়েছে এ অঞ্চলের ব্যাপারে। চীনেরও আগ্রহ রয়েছে। অতি সম্প্রতি এ অঞ্চলের সমুদ্রসীমার অধিকারের ব্যাপারে ফিলিপাইনের দাবিকে সমর্থন করেছে আন্তর্জাতিক আদালত। চীনের দাবিকে সমর্থন করেনি। তবে চীনের একটা প্লাসপয়েন্ট হচ্ছে, চীন ফিলিপাইনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করেছে। ফিলিপাইনের নয়া প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি চীনে গিয়েছিলেন। তার যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী ভূমিকা একটা বড় প্রশ্ন রাখলÑ এ অঞ্চলের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা আগামীতে কী হবে? যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এ অঞ্চল ঘিরেই ওবামা তার ‘চরাড়ঃ ঃড় অংরধ’ পলিসি গ্রহণ করেছিলেন। এখন একজন নয়া প্রেসিডেন্ট কীভাবে এ বিষয়টি দেখবেন, সেটাই দেখার বিষয়। ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের যথেষ্ট স্বার্থ রয়েছে। ব্যবসায়িক স্বার্থের পাশাপাশি ভারতের স্ট্র্যাটেজিক গুরুত্ব অনেক। আগামীতে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক চীনের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হতে পারেÑ এমন কথাও বলছেন কোনো কোনো বিশ্লেষক। চীনের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ কর্মসূচিও যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। চীন ৬০টি দেশকে এই ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ কর্মসূচির আওতায় আনছে, যার মাঝে মধ্য এশিয়ার জ্বালানি সম্পদসমৃদ্ধ দেশগুলোও আছে। এটা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের বিরুদ্ধে। এক্ষেত্রে একজন নয়া প্রেসিডেন্ট পেন্টাগনের স্বার্থের বাইরে যেতে পারবেন না। মেক্সিকোর সঙ্গে সীমান্তে উঁচু দেয়াল নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এর খরচ তিনি বহন করবেন না। অবৈধ মেক্সিকানদের বিরুদ্ধে তিনি গুপ্তহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছিলেন। তিনি এদের স্বদেশে ফেরত পাঠাতে চান। কিন্তু বাস্তবতা বলে ভিন্ন কথা। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে মেক্সিকানরা একটা বড় অবদান রাখছে। সুতরাং ট্রাম্প এটা অস্বীকার করতে পারবেন না। এমনকি এ সমাজে এমন অনেক কাজ আছে, যা মেক্সিকানদের ছাড়া চলে না। যেমন ধরা যাক, নিউইয়র্কের কথা। এখানে পরিচ্ছন্নতা কর্মী যারা আছেন, তারা প্রচুর অর্থ আয় করেন। এ পেশায় কোনো শ্বেতাঙ্গ আসেন না। গ্র্যাজুয়েট নন, এমন অনেক শ্বেতাঙ্গ আছেন, যারা অন্য কাজ করবেন। কিন্তু পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে কাজ করবেন না। ফলে নিউইয়র্ক অচল হয়ে যাবে, যদি এই কাজে মেক্সিকানদের পাওয়া না যায়। অবৈধ মেক্সিকানরা আছে, সন্দেহ নেই তাতে। এরা নির্মাণ শ্রমিক হিসেবেই কাজ করছেন। এদের জন্য ট্রাম্প এক ধরনের ‘ওয়ার্ক পারমিট’ চালু করতে পারেন। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তার প্রশাসন কঠোর হবে সন্দেহ নেই তাতে।
যুক্তরাষ্ট্রের এ নির্বাচনের ব্যাপারে বাংলাদেশীদেরও যথেষ্ট আগ্রহ ছিল। যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের স্বার্থ রয়েছে। আমরা জেএসপি সুবিধা এখনও ফিরে পাইনি। ট্রাম্প বাংলাদেশকে জানেন না তেমন একটা। তিনি প্রেসিডেন্ট হয়েছেন; কিন্তু আমরা জেএসপি ফিরে পাব, তার কোনো গ্যারান্টি নেই। তৈরি পোশাকের শুল্কমুক্ত সুবিধা আমাদের জন্য অন্যতম অগ্রাধিকার। দক্ষিণ এশিয়া তথা বাংলাদেশে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের উত্থান রোধে মার্কিন সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন। সে সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করা, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা কিংবা নবায়নকৃত জ্বালানি ক্ষেত্রে সাহায্য ও সহযোগিতা আমাদের দরকার। কেরির ঢাকা সফরের সময় এ সংক্রান্ত একটি চুক্তিও হয়েছিল। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে কে এখন দায়িত্ব নেবেন, সেটা আমাদের দেখতে হবে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো মানসিকতার অধিকারী কোনো ব্যক্তি যদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন, তাহলে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোনো অগ্রগতি হবে না। একটা ‘স্ট্যাটাস কো’ বজায় থাকবে। অর্থাৎ সম্পর্ক যা ছিল, তাই থাকবে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তুলনামূলক বিচারে ভারতকে তিনি পছন্দ করবেন বেশি। নিউজার্সিতে হিন্দু কমিউনিটি, যারা বিজেপির সমর্থক, তারা ডোনাল্ডের নির্বাচনী তহবিলে ৯ লাখ ডলার চাঁদা দিয়েছিলেন, আমরা যেন এটা ভুলে না যাই। তবে আমার ধারণা, বৈদেশিক সম্পর্কের চেয়ে তিনি অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও অর্থনীতির ওপর বেশি গুরুত্ব দেবেন। বিভক্ত সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করার ওপর গুরুত্ব দেবেন তিনি। তবে এতে করে অসন্তোষ কতটুকু দূর হবে, সেটা ভিন্ন কথা। আমরা নতুন বছরে ‘ট্রাম্পের যুগে’ প্রবেশ করতে যাচ্ছি। আর সেই ‘যুগ’টা কেমন হবে, তা দেখার জন্য আমাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে মাত্র।হ
নিউইয়র্ক থেকে
Daily Alokito Bangladesh
12.11.2016
কেন এমনটি হলো? কেন মানুষ এমন একজন বিতর্কিত মানুষকেই হোয়াইট হাউসে পাঠাল? আগামীতে এ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হবে, সন্দেহ নেই তাতে। কিন্তু সাদা চোখে এ মুহূর্তে যে কারণগুলো পাওয়া যায়, তা হচ্ছেÑ ১. মানুষ একটি পরিবর্তন চেয়েছে। সাধারণ মানুষ মনে করেছে, একজন ডেমোক্র্যাটের চেয়ে একজন রিপাবলিকান প্রার্থী তাদের স্বার্থ রক্ষা করবে বেশি; ২. যুক্তরাষ্ট্রের মানুষ এখনও একজন নারী প্রেসিডেন্টকে গ্রহণ করার ব্যাপারে অতটা উদার নন; ৩. বর্ণবাদ এখানে অনেক শক্তিশালী। সংবিধানে অনেক সুন্দর সুন্দর কথা লেখা আছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, বর্ণবিদ্বেষ, ধর্মবিদ্বেষ এ সমাজে অত্যন্ত শক্তিশালী, ৪. হিলারি ক্লিনটনের ইমেইল কেলেঙ্কারি সাধারণ মানুষ তার নেতৃত্বের অদক্ষতা হিসেবেই দেখেছে। এটাই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। ৫. নারী ও তরুণ সমাজের সমর্থন হিলারি পেলেও বয়স্ক শ্বেতাঙ্গ আর রুরাল মানুষের সমর্থন ট্রাম্প পেয়েছেন। সেই সঙ্গে শ্বেতাঙ্গ কর্মজীবী, যারা গ্রাজুয়েট নন, তাদের সমর্থনও নিশ্চিত করতে পেরেছিলেন ট্রাম্প; ৬. ট্রাম্পের ট্যাক্স রিফর্মকে সাধারণ মানুষ সমর্থন করেছে। তার চাকরির ক্ষেত্র তৈরি করার প্রস্তাব সমর্থন পেয়েছিল। অন্যদিকে এসব ক্ষেত্রে হিলারির প্রস্তাব আদৌ কোনো আবেদন রাখতে পারেনি; ৭. ট্রাম্পের প্রচ- অভিবাসীবিরোধী ভূমিকা ব্যাপক সমর্থন পেয়েছিল। এক্ষেত্রে হিলারি ক্লিনটনের অভিবাসীদের ব্যাপারে একটি ‘সমন্বিত কর্মসূচি’ জনগণ সমর্থন করেনি। ট্রাম্পের মুসলমানবিরোধী ভূমিকার ব্যাপারেও সমর্থন পাওয়া গেছে ব্যাপক জনগোষ্ঠীর; ৮. ট্রাম্পের ‘ট্রেড পলিসি’কে মানুষ সমর্থন করেছে। বিশেষ করে তার চীনা ও মেক্সিকান পণ্যের ওপর অতিরিক্ত শুল্ক আরোপ করার প্রস্তাব ভোটাররা সমর্থন করেছে। টিপিপি চুক্তির কারণে যুক্তরাষ্ট্রে মানুষ চাকরি হারাবে, ফ্যাক্টরি বন্ধ হয়ে যাবে, ট্রাম্পের এ বক্তব্য মানুষ গ্রহণ করেছে। হিলারির বক্তব্য এক্ষেত্রে ছিল অস্পষ্ট; ৯. স্বাস্থ্যসেবার ব্যাপারে হিলারি ক্লিনটনের ‘ওবামা কেয়ার’ অব্যাহত রাখার প্রস্তাব ব্যাপক জনসমর্থন পায়নি। এক্ষেত্রে ট্রাম্পের বক্তব্য ছিল স্পষ্ট; ১০. ট্রাম্পের মেক্সিকানবিরোধী ভূমিকা স্প্যানিশ ভাষাভাষীদের ওপর আদৌ কোনো প্রভাব ফেলেনি। ফ্লোরিডার কিউবান-আমেরিকানরা প্রকারান্তরে ট্রাম্পকেই সমর্থন করেছিল। হিলারি এই সমর্থন নিশ্চিত করতে পারেননি। ৯০’র দশক থেকেই একটি ধারা লক্ষ করা যায়। দুই টার্মের (৮ বছর) পরপরই রাজনীতিতে পরিবর্তন আসে। ক্লিনটন, বুশ ও ওবামা। ডেমোক্র্যাট, রিপাবলিকান, ডেমোক্র্যাট। সেই ধারাবাহিকতায় এখন আসছেন ট্রাম্প। ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি তিনি শপথ নেবেন। ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি ক্ষমতায় থাকবেন ২০২০ সাল পর্যন্ত। কিন্তু তার জন্য খারাপ খবর আছে অনেক। তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছে সর্বত্র। নারী, সমকামী মানুষ, অভিবাসীরা সবাই বিভিন্ন শহরে বিক্ষোভ করেছে। বিক্ষোভের ভাষা যে শুধু ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ছিল তা নয়, বরং ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই বিজয় যুক্তরাষ্ট্রকে বিশ্বের কাছে হেয় করেছে, এমন বক্তব্যও ছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘মেইক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’Ñ এ বক্তব্য রেখে জনমতকে তার পক্ষে নিয়ে গেছেন। এসব উসকানিমূলক বক্তব্যে একশ্রেণীর মানুষ অখুশি হয়েছে। সন্দেহ নেই, তার অনেক বক্তব্য সমাজকে দ্বিধাবিভক্ত করেছে। তার মুসলমানবিদ্বেষ, অভিবাসীবিরোধী মনোভাব, হিলারি ক্লিনটনকে ব্যক্তিগতভাবে আক্রমণ করা ইত্যাদি নানা ঘটনায় সমাজকে বিভক্ত করেছে। অভিবাসীদের নিয়ে একটা সমস্যা আছে। প্রায় ২০ মিলিয়ন অভিবাসী (শতকরা ৪৭ ভাগ) এখন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। বাকি ৫৩ ভাগ, অর্থাৎ ২২ দশমিক ৪ মিলিয়ন অভিবাসী আইনসিদ্ধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে থাকছেন (গ্রিনকার্ড, ছাত্র, ব্যবসায়ী)। প্রায় ২০ মিলিয়ন মানুষ অবৈধ রয়েছেনÑ এটা সত্য। কিন্তু থাকতে পারছেন যুক্তরাষ্ট্রের আইনে ফাঁকফোকর রয়েছে বিধায়। যুক্তরাষ্ট্র অভিবাসীদের দেশ। ট্রাম্প ও হিলারি দুইজনই অভিবাসীর সন্তান। ট্রাম্পের দাদা এসেছিলেন (ফ্রেডেরিক ট্রাম্প, ১৮৮৫) জার্মানির রাইনল্যান্ড প্রদেশের কালস্ট্রাড নামক ছোট এক শহর থেকে। আর হিলারির পূর্বপুরুষ এসেছিলেন ওয়েলস ও ফ্রান্স থেকে। এরা পেনসেলভেনিয়ায় শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন। দুই পরিবারই অর্থনৈতিক অভিবাসী। সুতরাং অভিবাসী নিয়ে ট্রাম্পের মন্তব্য সাজে না। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের জনগোষ্ঠীর মাত্র ১ ভাগ (৩ দশমিক ৩ মিলিয়ন) মুসলমান। এই এক ভাগ কখনোই নিরাপত্তার জন্য হুমকি হতে পারে না।
যুক্তরাষ্ট্র এখন কোন দিকে যাবে? চীনের সঙ্গে সম্পর্ক কী হবে? দক্ষিণ চীন সাগর নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা কী হবে? হিলারি চীনের সঙ্গে সম্পর্ককে গুরুত্ব দেন। এক্ষেত্রে দক্ষিণ চীন সাগর একটি সমস্যা। স্ট্র্যাটেজিক কারণে দক্ষিণ চীন সাগর যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। এটা তার সাপ্লাই লাইন। উপরন্তু এখানে রয়েছে প্রচুর জ্বালানি সম্পদ (তেল ও গ্যাস)। মার্কিন তেল কোম্পানিগুলোর বেশ আগ্রহ রয়েছে এ অঞ্চলের ব্যাপারে। চীনেরও আগ্রহ রয়েছে। অতি সম্প্রতি এ অঞ্চলের সমুদ্রসীমার অধিকারের ব্যাপারে ফিলিপাইনের দাবিকে সমর্থন করেছে আন্তর্জাতিক আদালত। চীনের দাবিকে সমর্থন করেনি। তবে চীনের একটা প্লাসপয়েন্ট হচ্ছে, চীন ফিলিপাইনের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করেছে। ফিলিপাইনের নয়া প্রেসিডেন্ট সম্প্রতি চীনে গিয়েছিলেন। তার যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী ভূমিকা একটা বড় প্রশ্ন রাখলÑ এ অঞ্চলের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকা আগামীতে কী হবে? যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতিতে এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। এ অঞ্চল ঘিরেই ওবামা তার ‘চরাড়ঃ ঃড় অংরধ’ পলিসি গ্রহণ করেছিলেন। এখন একজন নয়া প্রেসিডেন্ট কীভাবে এ বিষয়টি দেখবেন, সেটাই দেখার বিষয়। ভারতে যুক্তরাষ্ট্রের যথেষ্ট স্বার্থ রয়েছে। ব্যবসায়িক স্বার্থের পাশাপাশি ভারতের স্ট্র্যাটেজিক গুরুত্ব অনেক। আগামীতে ভারত-যুক্তরাষ্ট্র সম্পর্ক চীনের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হতে পারেÑ এমন কথাও বলছেন কোনো কোনো বিশ্লেষক। চীনের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ কর্মসূচিও যুক্তরাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। চীন ৬০টি দেশকে এই ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ কর্মসূচির আওতায় আনছে, যার মাঝে মধ্য এশিয়ার জ্বালানি সম্পদসমৃদ্ধ দেশগুলোও আছে। এটা যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের বিরুদ্ধে। এক্ষেত্রে একজন নয়া প্রেসিডেন্ট পেন্টাগনের স্বার্থের বাইরে যেতে পারবেন না। মেক্সিকোর সঙ্গে সীমান্তে উঁচু দেয়াল নির্মাণ করতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট জানিয়ে দিয়েছেন, এর খরচ তিনি বহন করবেন না। অবৈধ মেক্সিকানদের বিরুদ্ধে তিনি গুপ্তহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ এনেছিলেন। তিনি এদের স্বদেশে ফেরত পাঠাতে চান। কিন্তু বাস্তবতা বলে ভিন্ন কথা। যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিতে মেক্সিকানরা একটা বড় অবদান রাখছে। সুতরাং ট্রাম্প এটা অস্বীকার করতে পারবেন না। এমনকি এ সমাজে এমন অনেক কাজ আছে, যা মেক্সিকানদের ছাড়া চলে না। যেমন ধরা যাক, নিউইয়র্কের কথা। এখানে পরিচ্ছন্নতা কর্মী যারা আছেন, তারা প্রচুর অর্থ আয় করেন। এ পেশায় কোনো শ্বেতাঙ্গ আসেন না। গ্র্যাজুয়েট নন, এমন অনেক শ্বেতাঙ্গ আছেন, যারা অন্য কাজ করবেন। কিন্তু পরিচ্ছন্নতা কর্মী হিসেবে কাজ করবেন না। ফলে নিউইয়র্ক অচল হয়ে যাবে, যদি এই কাজে মেক্সিকানদের পাওয়া না যায়। অবৈধ মেক্সিকানরা আছে, সন্দেহ নেই তাতে। এরা নির্মাণ শ্রমিক হিসেবেই কাজ করছেন। এদের জন্য ট্রাম্প এক ধরনের ‘ওয়ার্ক পারমিট’ চালু করতে পারেন। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে তার প্রশাসন কঠোর হবে সন্দেহ নেই তাতে।
যুক্তরাষ্ট্রের এ নির্বাচনের ব্যাপারে বাংলাদেশীদেরও যথেষ্ট আগ্রহ ছিল। যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের স্বার্থ রয়েছে। আমরা জেএসপি সুবিধা এখনও ফিরে পাইনি। ট্রাম্প বাংলাদেশকে জানেন না তেমন একটা। তিনি প্রেসিডেন্ট হয়েছেন; কিন্তু আমরা জেএসপি ফিরে পাব, তার কোনো গ্যারান্টি নেই। তৈরি পোশাকের শুল্কমুক্ত সুবিধা আমাদের জন্য অন্যতম অগ্রাধিকার। দক্ষিণ এশিয়া তথা বাংলাদেশে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের উত্থান রোধে মার্কিন সহযোগিতা আমাদের প্রয়োজন। সে সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তন রোধ করা, স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা কিংবা নবায়নকৃত জ্বালানি ক্ষেত্রে সাহায্য ও সহযোগিতা আমাদের দরকার। কেরির ঢাকা সফরের সময় এ সংক্রান্ত একটি চুক্তিও হয়েছিল। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে কে এখন দায়িত্ব নেবেন, সেটা আমাদের দেখতে হবে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের মতো মানসিকতার অধিকারী কোনো ব্যক্তি যদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হন, তাহলে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে তেমন কোনো অগ্রগতি হবে না। একটা ‘স্ট্যাটাস কো’ বজায় থাকবে। অর্থাৎ সম্পর্ক যা ছিল, তাই থাকবে। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। তুলনামূলক বিচারে ভারতকে তিনি পছন্দ করবেন বেশি। নিউজার্সিতে হিন্দু কমিউনিটি, যারা বিজেপির সমর্থক, তারা ডোনাল্ডের নির্বাচনী তহবিলে ৯ লাখ ডলার চাঁদা দিয়েছিলেন, আমরা যেন এটা ভুলে না যাই। তবে আমার ধারণা, বৈদেশিক সম্পর্কের চেয়ে তিনি অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও অর্থনীতির ওপর বেশি গুরুত্ব দেবেন। বিভক্ত সমাজকে ঐক্যবদ্ধ করার ওপর গুরুত্ব দেবেন তিনি। তবে এতে করে অসন্তোষ কতটুকু দূর হবে, সেটা ভিন্ন কথা। আমরা নতুন বছরে ‘ট্রাম্পের যুগে’ প্রবেশ করতে যাচ্ছি। আর সেই ‘যুগ’টা কেমন হবে, তা দেখার জন্য আমাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে মাত্র।হ
নিউইয়র্ক থেকে
Daily Alokito Bangladesh
12.11.2016
0 comments:
Post a Comment