যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট
হিসেবে গত ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব নিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। পেশায় একজন
ব্যবসায়ী ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দায়িত্ব গ্রহণের মধ্য দিয়ে কী বার্তা দিলেন
বিশ্বকে? সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার দীর্ঘ ৮ বছরের শাসনামলে বিশেষ
স্থিতিশীলতা ছিল হয়তো এটা বলা যাবে না। কিন্তু তার নেতৃত্বের প্রতি
যুক্তরাষ্ট্রের জনগণের যেমনি আস্থা ছিল, তেমনি অনেক আন্তর্জাতিক ইস্যুতে
তার ভূমিকা প্রশংসিত হয়েছিল। এখন কি বিশ্ব সেই নীতিতে একটি ‘ইউটার্ন’ দেখতে
পারে? দায়িত্ব নেওয়ার আগে ট্রাম্পের অনেক বক্তব্যে সারা বিশ্বের মানুষ
আশাহত হয়েছে। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ ওইসব বক্তব্য ভালো চোখে দেখেনি। গেল বছর
জার্মানি কয়েক লাখ সিরীয় তথা ইরাকি অভিবাসীকে সে দেশে আশ্রয় দেওয়ার ঘটনাকে
ট্রাম্প আখ্যায়িত করেছিলেন ‘সর্বনাশা ভুল’ হিসেবে। জার্মানরা এটা পছন্দ
করেনি। জার্মান চ্যান্সেলর মেরকেল এর প্রত্যুত্তরে বলেছিলেন, তাদের ভাগ্য
তাদের হাতে ছেড়ে দেওয়ার জন্য। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ওঁলাদ এক ধাপ এগিয়ে
গিয়ে বলেছিলেন, তাদের বাইরের কোনো লোকের উপদেশের প্রয়োজন নেই। ট্রাম্প
ন্যাটোকে আখ্যায়িত করেছিলেন ‘সেকেলে’ হিসেবে। এটা নিয়ে ন্যাটোভুক্ত
দেশগুলোয় এক ধরনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। ট্রাম্প ব্রেক্সিটকে সমর্থন করেছিলেন।
ব্রিটেন এখন ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আলাদা হয়ে যাচ্ছে। অন্যান্য ইউরোপীয়
রাষ্ট্র ব্রিটেনকে অনুসরণ করুক, এটাও ট্রাম্প চান। ফলে ইইউর সঙ্গে
যুক্তরাষ্ট্রের যে ট্রেডিশনাল সম্পর্ক, তাতে এখন একটি অবিশ্বাসের জন্ম
হয়েছে। নির্বাচনে বিজয়ের পর তাইওয়ানের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তার ‘ফোনালাপ’-এ
একটি সম্ভাবনার জন্ম হয়েছে যে, যুক্তরাষ্ট্র এক চীনানীতি পরিত্যাগ করতে
পারে। চীন বিষয়টাকে খুব সহজভাবে নেয়নি। চীন তার টুইটার কূটনীতি বন্ধের
আহ্বান জানিয়েছে। তবে একটা বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন রেস্ক টিলারসন, যিনি
হতে যাচ্ছেন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী পররাষ্ট্রমন্ত্রী। টিলারসন বলেছেন,
দক্ষিণ চীন সাগরে চীন যে কৃত্রিম দ্বীপ বানাচ্ছে, যুক্তরাষ্ট্রের উচিত
সেখানে চীনাদের যাওয়ার পথ বন্ধ করে দেওয়া। এর প্রতিবাদে চীন বলছে,
যুক্তরাষ্ট্র যদি তা করে তাহলে তা এক ভয়ঙ্কর সংঘাতে রূপ নেবে। তবে রাশিয়া
সম্পর্কে তিনি বরাবরই নরম মনোভাব দেখিয়ে আসছেন। যুক্তরাষ্ট্র ওবামার
শাসনামলে রাশিয়ার বিরুদ্ধে অর্থনৈতিক অবরোধ আরোপ করে। এমনকি রাশিয়াকে জি-৮
থেকে বহিষ্কার করা হয়। এখন পরিস্থিতি কি বদলে যাবে? নির্বাচনের আগে ট্রাম্প
বলেছিলেন, তিনি রাশিয়ার ওপর থেকে অর্থনৈতিক অবরোধ প্রত্যাহারের পক্ষে। ৮
নভেম্বরের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর টেলিফোনে ট্রাম্পের সঙ্গে পুতিনের কথা
হয়েছিল। এই দু’জনের ফোনালাপকে তখন গভীর বন্ধুত্বের সুর হিসেবে আখ্যায়িত করা
হয়েছিল। ১৯৯১ সালের ডিসেম্বরে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের পর
স্নায়ুযুদ্ধের অবসান হয়েছিল। কিন্তু বিশ্ব রাজনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের একক
কর্তৃত্ব করার প্রবণতা ও বিভিন্ন অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক আগ্রাসন
নতুন করে স্নায়ুযুদ্ধর (স্নায়ুযুদ্ধ-২) জন্ম হয়েছিল এবং রাশিয়া
যুক্তরাষ্ট্রের একক কর্তৃত্ব করার প্রবণতাকে চ্যালেঞ্জ করতে শুরু করেছিল।
এখন কি যুক্তরাষ্ট্র তার এই অবস্থানে পরিবর্তন আনবে? এতে করে
যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থ কতটুকু রক্ষিত হবে? যুক্তরাষ্ট্রের প্রশাসনের
বিভিন্ন স্তরে, বিশেষ করে পেন্টাগনে যেসব কট্টরপন্থি রয়েছেন, তারা কি
‘রাশিয়ার প্রতি ঝুঁকে যাওয়ার’ এই প্রবণতাকে মেনে নেবেন? সিনিয়র জেনারেলদের
ভূমিকাই বা কী হবে এখন? রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র ‘মৈত্রী’ কি ইতিহাসকে আবার
স্মরণ করিয়ে দেবে? দ্বিতীয় ইয়াল্টার কী জন্ম হচ্ছে? পাঠক স্মরণ করতে পারেন,
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ পর্যায়ে ইউরোপের ভূমিকা কী হবে এটা নিয়ে আলোচনার
জন্য ইয়াল্টায় (১৯৪৪ সালের ফেব্রুয়ারি) চার্চিল (যুক্তরাজ্য), রুজভেল্ট
(যুক্তরাষ্ট্র) ও স্টালিন (সোভিয়েত ইউনিয়ন) এক শীর্ষ বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন।
সেই পরিস্থিতি কি তাহলে আবার ফিরে আসছে? এ ক্ষেত্রে যে কোনো রুশ-মার্কিন
‘ঐক্য’ সিরিয়ার পরিস্থিতির ওপর প্রভাব ফেলবে? আসাদ ইতোমধ্যে এই আশাবাদ
ব্যক্ত করেছেন। সম্ভাব্য এই ঐক্য আসাদকে আরও কিছুদিন ক্ষমতায় থাকার সুযোগ
করে দেবে মাত্র। কিন্তু তাতে করে যুদ্ধ সেখানে থামবে বলে মনে হয় না। যদিও
ট্রাম্প বলেছেন, তিনি আসাদবিরোধী নুসরা ফ্রন্টকে (পরিবর্তিত নাম জাবহাত
ফাতেহ আলশাস) অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করবেন না। কিন্তু তাতে করে কি
আইএসকে ধ্বংস করা সম্ভব হবে? অনেকেই জানেন, আইএস পরোক্ষভাবে যুক্তরাষ্ট্র
থেকে ‘সহযোগিতা’ পেয়ে থাকে। ট্রাম্পের সময় আইএস কি তার অস্তিত্ব বজায় রাখতে
পারবে? এ ক্ষেত্রে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে এক ধরনের ‘স্নায়ুযুদ্ধ’-এর জন্ম হবে!
ট্রাম্প যদি সত্যি সত্যিই ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক সমঝোতা চুক্তি সমর্থন
করতে অস্বীকার করেন, তাহলে ইরান এই স্নায়ুযুদ্ধের সম্ভাবনাকে উসকে দেবে। আল
কায়েদা কিংবা আইএসের মতো সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো সেই পুরনো ধারণায় ফিরে যাবে।
বাড়বে সন্ত্রাস। এরা ছোট ছোট গ্রুপে বিভক্ত হয়ে গুপ্তহামলা চালাবে। ফলে
একটি স্থিতিশীল মধ্যপ্রাচ্য দেখার সম্ভাবনা ক্ষীণ। চীনের সঙ্গে বাণিজ্য
সম্পর্ক নিয়েও প্রশ্ন আছে। চীনের সঙ্গে এক ধরনের ‘ট্রেড ওয়ার’ শুরু হয়ে
যেতে পারে। চীনা পণ্যের ওপর শতকরা ৪৫ ভাগ হারে শুল্ক আরোপ করলে (যা তিনি
প্রস্তাব করেছেন), চীন বিষয়টি খুব সহজভাবে নেবে বলে মনে হয় না। মেক্সিকোর
সঙ্গে সীমান্তে উঁচু দেয়াল নির্মাণের বিষয়টিও অত সহজ হবে না। তবে একটা
আশঙ্কার জায়গা হচ্ছে, নয়া প্রশাসনে জাতীয় নিরাপত্তাপ্রধান হিসেবে
অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল মাইকেল ফ্লাইনের নিযুক্তি। ফ্লাইন অত্যন্ত কট্টরপন্থি,
ইসলামবিরোধী এবং পুতিনের মতো নেতৃত্বকে পছন্দ করেন। তিনি সম্প্রতি একটি বই
লিখেছেন। তাতে তিনি যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের হেরে যাওয়ার পেছনে ‘রাজনৈতিক
সঠিক লাইন’-এর অভাব বলে মনে করেন এবং ইসলামবিদ্বেষকে তিনি যুক্তিযুক্ত বলে
মনে করেন। ফলে ফ্লাইনের মতো কট্টরপন্থিদের নিযুক্তি প্রমাণ করে, ট্রাম্প
তার আগের অবস্থান থেকে সরে আসছেন না। ট্রাম্প যদি তার আগের অবস্থানে দৃঢ়
থাকেন এবং মুসলমানদের যুক্তরাষ্ট্র প্রবেশে বিধিনিষেধ আরোপ করার আইন প্রণয়ন
করেন, তাহলে বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের ভাবমূর্তি নষ্ট হতে বাধ্য। দু-একটি
মুসলমানপ্রধান দেশে সন্ত্রাসী কর্মকা- রয়েছে এবং এর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের
নীতিকেই দায়ী করা হয়। এ জন্য সব মুসলমানপ্রধান দেশকে দায়ী করা ঠিক হবে না।
কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, ট্রাম্পের প্রশাসনে একের পর এক যেভাবে কট্টরপন্থিদের
ভিড় বাড়ছে, তাতে করে তারা ট্রাম্পকে একটি কঠোর ইসলামবিরোধী ভূমিকা নিতে
বাধ্য করতে পারেন। এ ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান সংখ্যালঘুদের (এ
ক্ষেত্রে মুসলমানদের) অধিকার নিশ্চিত করলেও সংবিধানের এই ‘অধিকার’ এখন
অকার্যকর হয়ে যেতে পারে। কেননা নতুন করে আইন প্রণয়ন করতে এবং কংগ্রেসে তা
পাস করিয়ে নিতে ট্রাম্পের কোনো সমস্যা হবে না। সিনেট এবং প্রতিনিধি পরিষদে
এখন রিপাবলিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতা রয়েছে। এমনকি সুপ্রিম কোর্টে তিনজন
কনজারভেটিভ বিচারপতিকে তিনি নিয়োগ দিতে পারেন। সেই ক্ষমতা এখন তার আছে। ফলে
তিনি যদি সংবিধান সংশোধন করার কোনো উদ্যোগ নেন, তা পারবেন। ন্যূনতম
অভিবাসনবিরোধী তথা ইসলামবিরোধী কোনো আইন পাস করতে তার সমস্যা হবে না।
আন্তর্জাতিক সম্পর্কের বিশেষজ্ঞরা তাই ৯টি ক্ষেত্রকে চিহ্নিত করছেন,
যেখানে ট্রাম্প পরিবর্তন আনবেন। এই ৯টি জায়গা বা ক্ষেত্র হচ্ছে : ১.
ইসলামিক স্টেটের ক্ষেত্রে, ২. আফগানিস্তানের ক্ষেত্রে, ৩. উত্তর কোরিয়ার
পারমাণবিক কর্মসূচি, ৪. ইউক্রেনে সংকট ও রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক, ৫. চীনের
সঙ্গে সম্পর্ক ও সম্ভাব্য একটি বাণিজ্যযুদ্ধ, ৬. ইউরোপীয় ঐক্যের প্রশ্নে
তার অবস্থান, ৭. ইরানের সঙ্গে পারমাণবিক সমঝোতার ভবিষ্যৎ, ৮. ইসরায়েল ও
ফিলিস্তিনির প্রশ্নে তার ভূমিকা এবং ৯. মেক্সিকোর সঙ্গে তার সম্পর্ক। তিনি
‘মেইক আমেরিকা গ্রেট’ এই সেøাগান তুলে বিজয়ী হয়েছিলেন। বলেছিলেন, ২৪ মিলিয়ন
চাকরির ব্যবস্থা করবেন। জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪-এ নিয়ে যাবেন। কিন্তু বাস্তবতা
হচ্ছে, ‘অটোমেশনের’ কারণে শিল্প প্রতিষ্ঠানে এখন শতকরা ১৮ ভাগ লোক কম
লাগে। ‘আউটসোর্সিং’-এর মাধ্যমে উৎপাদিত পণ্য বাইরে থেকে এনে যুক্তরাষ্ট্রের
প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করা হয়। ফলে চাকরির ব্যবস্থা করার কথা বলা যত সহজ,
বাস্তব ক্ষেত্রে অত সহজ নয়। তিনি শপথ নেওয়ার পর উদ্বোধনী ভাষণেও তেমন নতুন
কিছু শোনাননি। তিনি বারাক ওবামা ও তার স্ত্রীর প্রশংসা করেছেন। এটা তার
বদৌন্যতা। তার উদ্বোধনী বক্তব্যে শঙ্কা আছে, আশার কথাও আছে। তিনি আবারও
আশার কথা শুনিয়েছেন। স্বপ্নের যুক্তরাষ্ট্র গড়ার প্রতিজ্ঞা করেছেন। বলেছেন,
তার কাজ হবে সবার ওপরে যুক্তরাষ্ট্রের স্থান দেওয়া। কিন্তু বাস্তবতা বলে
ভিন্ন কথা। সমসাময়িককালে সবচেয়ে কম জনপ্রিয়তা নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প
প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিলেন। ওয়াশিংটন পোস্টের জরিপে দেখা গেছে, শতকরা
মাত্র ৪০ জন মানুষ তাকে সমর্থন করছে এখন, শতকরা ৫৪ জনই তাকে সমর্থন করছে
না। অথচ ওবামা যখন দায়িত্ব নিয়েছিলেন (২০০৯) তখন শতকরা ৭৯ ভাগ মানুষ তাকে
সমর্থন করেছিল। আর ক্লিনটন (১৯৯৩) ও সিনিয়র বুশের (১৯৮৯) এই জনপ্রিয়তা ছিল
যথাক্রমে ৬৮ ভাগ ও ৬৫ ভাগ। তিনি যখন ক্যাপিটল হিলে শপথ নিচ্ছিলেন তখন
ওয়াশিংটন ডিসি ও নিউইয়র্কের মতো শহরে তার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছিল। পুলিশ
কর্তৃক বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করার দৃশ্য টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে মানুষ
বাংলাদেশে দেখেছে। তাই তার যাত্রাটা ভালো হলো না। তিনি বলেছেন, জাতিকে
ঐক্যবদ্ধ রাখবেন। কিন্তু কীভাবে? তিনি যে মন্ত্রিপরিষদের নাম প্রস্তাব
করেছেন, সেখানে একজনও লাতিন আমেরিকা থেকে আসা অভিবাসী বংশধরের সন্তান নেই।
যেখানে ওবামা প্রশাসনের আমলে লাতিনো মানুষের প্রতিনিধিত্ব ছিল, ট্রাম্পের
প্রশাসনে তা নেই। তার ক্যাবিনেটে শতকরা প্রায় ১৫ জন আছেন যারা বিলিওনিয়ার।
অথচ ওবামা কিংবা বুশ প্রশাসনের আমলে ক্যাবিনেটে বিলিওনিয়ার ছিল না।
অবসরপ্রাপ্ত জেনারেলদের হার তার আমলে শতকরা ৯ জন। ওবামা প্রশাসনে ছিল শতকরা
৪ জন। যেখানে ওবামা প্রশাসনের আমলে ক্যাবিনেটে অতীতে সরকারি কাজে দক্ষতার
অধিকারীÑ এ সংখ্যা ছিল শতকরা ৮৭ ভাগ। ট্রাম্পের প্রশাসনে অর্থাৎ ক্যাবিনেটে
এ সংখ্যা মাত্র ৫৫ ভাগ। তাই বোঝাই যায়, অনভিজ্ঞ, কিন্তু সেনাবাহিনী থেকে
অবসর নেওয়া কট্টর দক্ষিণপন্থিদের নিয়ে ট্রাম্প তার যাত্রা শুরু করলেন। ফলে
তার প্রশাসন নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকে গেলই। তিনি একশ দিনের একটি পরিকল্পনার
কথা জানাবেন বটে। কিন্তু আন্তর্জাতিক সম্পর্কে তার নিজের অজ্ঞতা এবং তার
প্রশাসনে যথেষ্ট যোগ্য লোকের অভাব থাকায় আগামী দিনের মার্কিন
যুক্তরাষ্ট্রের একটা ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই গেল। উপরন্তু জলবায়ু
পরিবর্তন সংক্রান্ত কপ-২১ চুক্তি (যা প্যারিসে ও জাতিসংঘে স্বাক্ষরিত
হয়েছে) সমর্থন না করা, কিউবার সঙ্গে ‘সমঝোতা’কে অস্বীকার করা, চীনের সঙ্গে
এক ধরনের ‘বাণিজ্যযুদ্ধ’, ন্যাটোয় যুক্তরাষ্ট্রের অংশগ্রহণ কমিয়ে আনা,
রাশিয়ার সঙ্গে তার আঁতাত, মুক্তবাণিজ্য চুক্তি বাতিল ইত্যাদি আগামীতে
বিশ্বে তার ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করবে না। তার গ্রহণযোগ্যতা হ্রাস পাবে। এখন
আমাদের দেখতে হবে, তার এই ‘রাজনীতি’ একুশ শতকের তৃতীয় দশকে যুক্তরাষ্ট্রকে
কোথায় নিয়ে যায়। আমাদের ভুলে গেলে চলবে না, যুক্তরাষ্ট্রের যে কোনো
সিদ্ধান্ত বিশ্বে বড় পরিবর্তন ডেকে আনার জন্য যথেষ্ট।
Daily Amader Somoy
22.01.2017
0 comments:
Post a Comment