রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

নতুন বছর রাজনীতিতে পাঁচ চ্যালেঞ্জ


চলতি বছরের রাজনীতি কেমন হবেÑ এ নিয়ে আলাপ-আলোচনার শেষ নেই। টিভি টক শোতে ‘বিজ্ঞ’রা বলছেন নানাকথা। এর মাঝে প্রত্যাশার কথাও আছে। আছে হতাশার কথাও। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন নিয়ে অনেক আশার কথা আমরা শুনেছি। এর সঙ্গে নির্বাচনী সংস্কৃতির প্রশ্নটি জড়িত। তাই ২০১৭ সালের রাজনীতি আবর্তিত হবে পাঁচ চ্যালেঞ্জ সামনে রেখে। প্রথমত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের নির্বাচন একটি সম্ভাবনার জন্ম দিয়েছে দুটি বড় দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে আস্থার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করার। বিএনপি নির্বাচনে এসেছে এবং শেষ পর্যন্ত নির্বাচনী প্রতিযোগিতায় থেকেছে। বাংলাদেশের চলমান রাজনীতির জন্য এটা একটা ইতিবাচক দিক। এর মধ্য দিয়ে বিএনপি জানান দিল, তারা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় থাকতে চায়। যদিও বিএনপি নেত্রী এই নির্বাচন নিয়ে খুব খুশি হননি। তবে মনে রাখতে হবে, ডা. আইভীর মতো জনপ্রিয় ব্যক্তির সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে গিয়েছিলেন সাখাওয়াত হোসেন খান। রাজনীতিতে তিনি নতুন। তবে যে ভোট তিনি পেয়েছেন পরিসংখ্যান বলে এটাই বিএনপির মূল ভোট। অর্থাৎ জাতীয় পর্যায়ে শতকরা ৩৩ থেকে ৩৬ ভাগ ভোট বিএনপির। এই ভোটই বিএনপি প্রার্থী পেয়েছেন নারায়ণগঞ্জে। সম্ভবত জামায়াতের ভোট এখানে খুব একটা যোগ হয়নি। তবে যে বিষয়টি আমাদের আশান্বিত করেছে, তা হচ্ছে নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ডা. আইভী সরাসরি চলে গেছেন সাখাওয়াত হোসেনের বাসায়। বিজয়ের পর ডা. আইভীর বক্তব্যও উল্লেখ করার মতো। তিনি বলেছিলেন, সাখাওয়াতের পরামর্শ নিয়েই নারায়ণগঞ্জের উন্নয়ন প্রক্রিয়া এগিয়ে নেবেন। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে এ ধরনের ঘটনা ও বক্তব্য বিরল। পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষ আর কুৎসা ছড়ানোর যে রাজনীতি তাতে আওয়ামী লীগের একজন নির্বাচিত মেয়র বিএনপির প্রার্থীর সঙ্গে পরামর্শ করে প্রশাসন পরিচালনা করবেন এটা শুধু অকল্পনীয়ই নয়, অবাস্তবও। এ ক্ষেত্রে ডা. আইভী একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারেন। এই দৃষ্টান্ত জাতীয় পর্যায়ে কতটুকু প্রতিফলিত হবে, সেটা একটা বড় প্রশ্ন। চলতি বছর এটা হবে একটা বড় চ্যালেঞ্জÑ দুটি বড় দলের সঙ্গে আস্থার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠা করা। দ্বিতীয় চ্যালেঞ্জটি নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে। এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপতি সব দলের সঙ্গে সংলাপ করছেন। বেশ কয়েকটি দল তাদের প্রস্তাব দিয়েছে। রাষ্ট্রপতির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাষ্ট্রপতি মনে করেন বিএনপিসহ অন্য দলগুলোর প্রস্তাব নির্বাচন কমিশন গঠনে সহায়ক। রাষ্ট্রপতির ওপরও আস্থা রেখেছে বিএনপিসহ অন্য রাজনৈতিক দল। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, রাষ্ট্রপতি একটা সিদ্ধান্ত দেবেন। সেই সিদ্ধান্ত বিএনপি মানলে তো? এই নির্বাচন কমিশনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে। কেননা এই নির্বাচন কমিশনই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করবে। তাই নির্বাচন কমিশনের ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। নির্বাচন কমিশনের জন্য এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জÑ তারা কীভাবে তাদের গ্রহণযোগ্যতা বাড়াবেন। বিশেষ করে বিএনপির কাছে গ্রহণযোগ্যতা বাড়ানোই হবে বড় চ্যালেঞ্জ। চলতি বছর নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হওয়ার পরই বোঝা যাবে কমিশন কীভাবে এই চ্যালেঞ্জকে সামাল দেবে।
গেল বছরের শেষের দিকে রাষ্ট্রপতি রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে যে সংলাপ শুরু করেছিলেন, তা চলতি বছরের প্রথমদিকেও অব্যাহত থাকবে। এর মধ্য দিয়ে চলতি বছর আমরা নতুন একটি নির্বাচন কমিশন পাব। নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে যে আইন প্রণয়ন করার কথা সংবিধানে বলা হয়েছে (১১৮-১) দীর্ঘ ৪৫ বছরে কোনো সরকারই এই আইনটি প্রণয়ন করেনি। ডিসেম্বরে (২০১৬) রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আলোচনায় এই বিষয়টি উঠে আসে। একই সঙ্গে একটি ‘নিরপেক্ষ’ ও ‘যোগ্যতাসম্পন্ন’ নির্বাচন কমিশনের দাবিও ওঠে। রাষ্ট্রপতি তার সাংবিধানিক অধিকারবলে (১১৮-১ ও ৪৮) সিইসি ও কমিশনারদের নিয়োগ দেবেন। কিন্তু তা সব পক্ষকে কতটুকু খুশি করতে পারবে সে প্রশ্ন রইলই। কেননা সিইসিসহ কমিশনারদের নিয়োগে রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা থাকলেও ৪৮(৩) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী দুটি ক্ষেত্র ছাড়া (প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতিকে নিয়োগ) অন্য সব নিয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি ‘প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শ’ নিতে বাধ্য। ফলে রাষ্ট্রপতি যাদেরই নিয়োগ দেন না কেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ’-এর বাধ্যবাধকতা একটি ‘সূক্ষ্ম অসন্তোষ’ সৃষ্টি করতে বাধ্য। এই নির্বাচন কমিশনের গুরুত্ব অনেক। কেননা তাদের ঘাড়ে বর্তাবে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করা। সে ক্ষেত্রে সব দলের অংশগ্রহণ ও একটি নির্বাচন আয়োজন করা চাট্টিখানি কথা নয়। আমরা স্বাধীনতার ৪৫ বছর পার করেছি। কিন্তু একটা বড় ব্যর্থতার জায়গা হচ্ছে নির্বাচন প্রশ্নে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে আস্থার অভাব। এই ‘আস্থার অভাব’-এর কারণে গণতন্ত্র বারবার মুখ থুবড়ে পড়ছে। আমরা একটি ভোটারবিহীন জাতীয় সংসদ নির্বাচন (২০১৪) দেখেছি। ফলে যে নির্বাচন কমিশনটি গঠিত হতে যাচ্ছে, চলতি বছরটি তাদের জন্য হবে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। অর্থাৎ পরীক্ষার সময়। তারা তাদের গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু বাড়াতে পারবেন, সেটাই হবে মূল আলোচিত বিষয়। সংবিধানের ১১৮-৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নির্বাচন কমিশন স্বাধীন। তারা সংবিধানের কাছে দায়বদ্ধ। কিন্তু কাজী রকিবউদ্দীনের কমিশন সংবিধানের এই অনুচ্ছেদ ব্যবহার করে স্পষ্টভাবে নির্বাচন পরিচালনা করতে পারেনি। সরকারের ‘চাপ’ তারা অস্বীকার করতে পারেননি। ফলে একটা শঙ্কা থেকেই গেল, যে নির্বাচন কমিশনটি গঠিত হতে যাচ্ছে তার ‘ভূমিকা’ নিয়ে। একটি সার্চ কমিটি সব সমস্যার সমাধান বয়ে আনবে না। যদি আস্থার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত না হয়, তাহলে নির্বাচন কমিশন নিয়ে প্রশ্ন থাকবেই। এই প্রশ্নটি ওঠেনি নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়ে। তাই নির্বাচন কমিশনের জন্য এটা হবে একটা বড় চ্যালেঞ্জ চলতি বছরে।
তৃতীয় চ্যালেঞ্জটি দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান নিয়ে। এটি একটি জাতীয় ইস্যু। জাতীয় ইস্যুর প্রশ্নে একটি ঐকমত্য হওয়া উচিত ছিল। কিন্তু তা হয়নি। জঙ্গিবাদের উত্থানটি গেল বছর ব্যাপকভাবে আলোচিত হয় এবং চলতি বছরও এটি আলোচিত হবে। এই জঙ্গিবাদের উত্থানের পাশাপাশি আমরা লক্ষ করেছি আত্মঘাতী নারী জঙ্গিদের উত্থান। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে জঙ্গিবাদের উত্থান সাম্প্রতিককালে ঘটলেও নারী আত্মঘাতী বোমারুদের সংবাদ ছিল এই প্রথম। ঢাকার আশকোনায় নারী আত্মঘাতী বোমারু একটি বড় সংবাদের জন্ম দিয়েছে বটে কিন্তু বাংলাদেশকে নিয়ে রেখে গেছে অনেক প্রশ্ন। এই ঘটনা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ সম্পর্কে যে একটি নেতিবাচক ঘটনার জন্ম দেবে, এটাই স্বাভাবিক। ২০১৫ সালেও আমরা জঙ্গিবাদের তৎপরতা লক্ষ করেছিলাম। ওই সময় একজন ইতালিয়ান ও একজন জাপানি নাগরিককে হত্যা করা হয়েছিল। অভিযোগ করা হয়েছিল, ওইসব হত্যাকা-ের সঙ্গে আইএস জড়িত। কিন্তু সরকারের পক্ষ থেকে আইএসের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করা হয়েছিল। ২০১৬ সালে এসে বিদেশিদের হত্যাকা-ের মতো ঘটনা ঘটেনি সত্য, কিন্তু জুনে ঢাকার গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে সন্ত্রাসী হামলায় বেশ কয়েকজন জঙ্গিসহ ২৮ জন মানুষের মৃত্যুর খবর বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আলোচিত হয়। এই জঙ্গি তৎপরতার সঙ্গে জড়িয়ে আছে একটি নাম ‘নিউ জেএমবি’ বা নব্য জেএমবি। জেএমবির একটা অংশ নতুন করে সংগঠিত হয়েছে। সবচেয়ে ভয়ের কারণ যেটা তা হচ্ছে, নব্য জেএমবি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বিশেষ করে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু তরুণকে আকৃষ্ট করতে পেরেছে। বিদেশ থেকে আসছে অর্থ ও অস্ত্র। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা লক্ষ করেছি, আশকোনায় জঙ্গিদের সমাবেশ এবং বড় ধরনের একটি জঙ্গি হামলার আশঙ্কা। ওই জঙ্গি হামলা শেষ পর্যন্ত গোয়েন্দাদের তৎপরতার কারণে সফল হয়নি। তবে ২০১৬ সালজুড়ে জঙ্গিদের সংগঠিত হওয়ার একটি উদ্যোগ লক্ষ করা যায়। আশকোনার মতো ঢাকার কল্যাণপুরেও জঙ্গিরা সমবেত হয়েছিল। ফলে ভয়ের কারণ হচ্ছে, ২০১৭ সালেও জঙ্গিরা তাদের অপতৎপরতা চালাতে পারে। তাই আমাদের সবার জন্য জঙ্গি দমনের বিষয়টি একটি চ্যালেঞ্জ হয়েই রয়ে গেল। গেল দু’বছরে জঙ্গি দমনে ব্যাপক সরকারি উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কাউন্টার টেররিজম ফোর্স গঠন করা হয়েছে। এর পাশাপাশি রয়েছে সোয়াতের মতো সংস্থাও। সরকার জঙ্গিদের মূলধারায় ফিরিয়ে নিয়ে আসতে আর্থিক সহযোগিতাও দিচ্ছে। কিন্তু তার পরও জঙ্গি তৎপরতা বন্ধ করা যাচ্ছে না। সবচেয়ে বড় আতঙ্কের কারণ হচ্ছে, নারী আত্মঘাতী বোমারুদের জন্ম! এটা প্রমাণ করে জঙ্গি সংস্কৃতি কত গভীরে আমাদের সমাজে প্রবেশ করেছে। এরা বিভ্রান্ত। শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ব্যবহার করে জঙ্গি দমন করা যাবে না। প্রয়োজন সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করা। ইসলামিক স্কলারদের ব্যবহার করাও জরুরি। ইসলামিক স্কলারের নামে যারা টিভি পর্দায় আসেন, তাদের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন আছে। ক্যাম্পাসগুলোতে নজরদারি বাড়ানোর কথা আমরা বলেছিলাম। সেটা খুব একটা হয়নি। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র নিখোঁজ হয়ে গেছে বা নিখোঁজ হয়ে আছে, তাদের সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এতটুকু খোঁজখবর নিয়েছে বলে মনে হয় না। ফলে জঙ্গি রোধে মাঝে মধ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর হয়ে ওঠে, তার পর সব যেন ঝিমিয়ে যায়। পরে জঙ্গি দমনে তেমন কোনো তৎপরতাও আমরা দেখি না। তাই চলতি বছর এই জঙ্গিদের বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। ইসলামের নামে যে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে তা রোধ করার উদ্যোগ নিতে হবে। ইন্টারনেটে নজরদারি বাড়াতে হবে।
চতুর্থ চ্যালেঞ্জটি হচ্ছে দুটি বড় দলের মাঝে নয়া তরুণ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করা। তুলনামূলক বিচারে এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ অনেক এগিয়ে আছে। সেখানে কেন্দ্রীয় পর্যায়ে নতুন মুখ এসেছে। কিন্তু মূল নেতৃত্বে পরিবর্তন আসেনি। চলতি বছর অর্থাৎ ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বরে ৭০ বছরে পা দেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ৩৫ বছর তিনি দলকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। যদিও একাধিকবার তিনি বলেছেন, তিনি খুশি হতেন যদি তিনি অবসরে যেতে পারতেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, তিনি ছাড়া দলের নেতৃত্ব দেওয়ার এই মুহূর্তে কেউ নেই। ফলে সঙ্গত কারণেই তিনি নেতৃত্বে থেকে যাচ্ছেন এবং তার নেতৃত্বেই আওয়ামী লীগ ২০১৯ সালের অনুষ্ঠেয় একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যাবে। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন জন্ম নেওয়া আওয়ামী লীগের রাজনীতির ৩৫ বছরই অর্থাৎ অর্ধেক সময়েরও বেশি সময় নেতৃত্ব দিচ্ছেন শেখ হাসিনা। বোধ করি এটা একটা রেকর্ড, যা হয়তো ইতিহাসে খুব বেশি খুঁজে পাওয়া যাবে না। অন্যদিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলটির (বিএনপি) বয়স প্রায় ৩৯ বছর। ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর জন্ম নেওয়া এই দলটির ১৯৮৩ সাল থেকেই নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন বেগম খালেদা জিয়া। সেই অর্থে দীর্ঘ ৩৩ বছর তিনি দলটির চেয়ারম্যান। দলটি ২০১৬ সালে কাউন্সিল করেছে। কিন্তু কাউন্সিল কোনো নয়া নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি। দুটি দলই কাউন্সিল করেছিল।
কিন্তু পুরনো নেতৃত্বই বিএনপিতে রয়ে গেছে। বয়স্ক, পুরনো ধ্যান-ধারণায় আবদ্ধ বিএনপির এই নেতৃত্ব আগামী দিনে বিএনপির হাজার হাজার কর্মীর প্রত্যাশা কতটুকু পূরণ করতে পারবে, সেটা একটা প্রশ্ন। ২০১৭ সালে বিএনপির জন্য এটা একটা বড় চ্যালেঞ্জ।
পঞ্চমত ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দলের অভ্যন্তরে ‘দলীয় কোন্দল’ ও ‘ক্ষমতার দ্বন্দ্ব’ দূর করা। একই সঙ্গে স্থানীয় পর্যায়ে টেন্ডারবাজি, দুর্নীতি, ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের দৌরাত্ম্য রোধ করা হবে দলের জন্য একটা বড় চ্যালেঞ্জ। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দলীয় শীর্ষ নেতারা যদি কঠোর অবস্থান না নেন, তাহলে দলীয় ভাবমূর্তির জন্য তা কোনো ভাল সংবাদ বয়ে আনবে না। এই পাঁচটি চ্যালেঞ্জই চলতি ২০১৭ সালের রাজনীতিকে প্রভাবান্বিত করবে।
Daily Amader Somoy
04.01.2017

0 comments:

Post a Comment