রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কোন পথে






বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের অনাকাঙ্ক্ষিত অনেক ঘটনা আমাদের দেশের উচ্চশিক্ষাকে একটি বড় ধরনের ঝুঁকির মাঝে ঠেলে দিয়েছে। সদ্য প্রতিষ্ঠিত রংপুরের রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ছোড়া এসিডে আহত হয়েছেন দু'জন শিক্ষক। ভিসির পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলনের মুখে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পারিবারিককরণ, স্বজনপ্রীতি, দলীয়করণের চরমে উঠেছে নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয়টি। ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ক্যাডাররা শিক্ষকদের পিটিয়েছিল। সেখানে দীর্ঘদিন অস্থিরতা বিরাজ করছিল। একপর্যায়ে সেখানে ভিসি ও প্রো-ভিসিকেও অব্যাহতি দেয়া হয়। এর আগে ঢাকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের ক্যাডারদের হাতে সাধারণ একজন দর্জি বিশ্বজিৎ দাসের হত্যাকা-ের ঘটনা সারাদেশে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিল। ওই ঘটনায় ছাত্রলীগের ভূমিকা সমালোচিত হয়েছিল। রাজশাহীতেও চাঁদাবাজির সূত্র ধরে খুন হয়েছিল একজন ছাত্র। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়েই এক ধরনের অস্থিরতা বিরাজ করছে। কোথাও শুরু হয়েছে ভিসি খেদাও আন্দোলন, কোথাও ছাত্রলীগের উন্মত্ততা শিক্ষার পরিবেশকে বিঘি্নত করছে। দেশে ৩৪টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। বলতে গেলে সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে এই অশান্তি, অস্থিরতা আমাদের উচ্চশিক্ষার মানকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আমরা যদি মোটাদাগে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অস্থিরতা নিয়ে আলোচনা করি, তাহলে বেশ কিছু চিত্র আমাদের চোখের সামনে ভেসে উঠবে। এই অস্থিরতার সঙ্গে দেশের চলমান রাজনীতির সম্পৃক্ততা কম। দেশীয় রাজনীতি আদৌ প্রভাব ফেলেনি। বরং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কারণেই এই অস্থিরতা বেড়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রে দেখা গেছে সরকার সমর্থক শিক্ষকদের একটি অংশ এই আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এই আন্দোলনে বিরোধী দল সমর্থক শিক্ষকরা শরিক হলেও তারা বড় কোনো ভূমিকা পালন করছেন না। জাবিতে যারা ভিসিকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছিলেন, তারাই এখন নয়া ভিসির বিরুদ্ধে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বুয়েটে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগ তথা বাম আদর্শের শিক্ষকরা। বিএনপি তথা ইসলামপন্থী শিক্ষকদের অংশগ্রহণ কম ছিল। ওই আন্দোলনে শিক্ষকদের সঙ্গে কর্মচারী ও ছাত্ররাও সংহতি প্রকাশ করেছিল। এরকমটি অতীতে কখনো হয়নি। আন্দোলন দমানের ক্ষেত্রে ভিসিরা নিজ উদ্যোগে তার সমর্থিত শিক্ষকদের নিয়ে একটা পাল্টা 'শো-ডাউন'র চেষ্টা করেন। জাবিতে চেষ্টা করেছিলেন সাবেক ভিসি। কিন্তু তাতে তিনি ব্যর্থ হয়েছিলেন। বর্তমানে ভিসিও নিজস্ব একটি বলয় সৃষ্টি করার চেষ্টা করছেন। রাজশাহীতেও এমনটি আমরা লক্ষ্য করি। বুয়েটেও শেষ পর্যায়ে এক ভিসি তার সমর্থিত শিক্ষকদের মাঠে নামিয়েছিলেন। এখানে ছাত্রলীগের ভূমিকাও লক্ষ্য করার বিষয়। জাবিতে সাবেক ভিসি নিজস্ব একটি ছাত্রলীগ তৈরি করেছিলেন। মূলধারার ছাত্রলীগের সমর্থন তিনি পাননি। আর বুয়েটে ছাত্রলীগ ভিসির পক্ষেই অবস্থান নিয়েছিলেন। রাজশাহী বা জুয়েটের ছাত্রলীগের ভূমিকা অনেকটা একই। প্রায় ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে সরকার প্রধানকে একসময় হস্তক্ষেপ করতে হয়েছে। জাবিতে তিনি করেছেন এবং একটি সমাধানও দিয়েছিলেন। বুয়েটের ক্ষেত্রেও দেখা গেছে আন্দোলন থামাতে শিক্ষামন্ত্রীর একটি উদ্যোগ কোনো সিদ্ধান্ত ছাড়াই শেষ হয়েছিল এবং শেষ পর্যন্ত সরকার প্রধানকেই হস্তক্ষেপ করতে হয়েছিল। এই প্রবণতা ভালো নয়। কাম্যও নয়। যিনি রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত থাকেন বা তাকে থাকতে হয়, তিনি কেন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকা-ে হস্তক্ষেপ করবেন? তাহলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা মজুরি কমিশন কেন আছে? প্রয়োজনে ইউজিসির 'অথরিটি' বাড়াতে হবে। সরকার প্রধান নিঃসন্দেহে আমাদের সবার মুরুব্বী। কিন্তু প্রতিটি কাজে তার সিদ্ধান্তের দিকে তাকিয়ে থাকা, কোনো ভালো কথা নয়। প্রায় প্রতিটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির বিরুদ্ধে দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, অঞ্চলপ্রীতি, আত্মীয়প্রীতির অভিযোগ উঠেছে। জাবিতে শিক্ষক নিয়োগে টাকার লেন-দেন হয়েছে, এ অভিযোগ ছিল সংবাদকর্মীদের তথা আন্দোলনকারী শিক্ষকদের। এটা অস্বীকার করা যাবে না জাবিতে কম মেধাসম্পন্নরা শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন। টাকার বিষয়টি প্রমাণ করা যায়নি, কেউ উদ্যোগও নেয়নি। কিন্তু ৩০ হাজার টাকা ঘুষ দেয়ার একটি ঘটনায় আশুলিয়া থানায় জিডি হয়েছিল। যিনি ঘুষ দিয়েছেন তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষক প্রার্থী ছিলেন। এই ঘটনা কি প্রমাণ করে না অতীতেও এরকমটা হয়েছিল। ১০ লাখ টাকা নিয়ে ধরা পড়েছিলেন এক ভদ্রলোক। তিনিও জাবির লোক। কর্মচারী নিয়োগ দেয়ার জন্য তিনি অনেকের কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন। প্রতিটি ক্ষেত্রে অতিরিক্ত শিক্ষক, দলবাজ শিক্ষক নিয়োগে অভিযুক্ত হয়েছেন ভিসিরা। খুলনায় ভিসি থাকার সময়ও বুয়েটের ভিসি একই ধরনের ঘটনায় অভিযুক্ত হয়েছিলেন। অঞ্চলপ্রীতিতে তিনি সর্বকালের রেকর্ড ভেঙেছেন (বাড়ি তার গোপালগঞ্জে)। তবে আত্মীয়প্রীতিতে সবার শীর্ষে আছে রোকেয়া ও পাবনা প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি। তারা নিজস্ব আত্মীয়স্বজনসহ নিজ গ্রামের অর্ধশত লোককে কর্মচারী তথা কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিও বাদ যাননি। আরেকটি নতুন প্রবণতা আমরা লক্ষ্য করছি_ আর তা হচ্ছে নিজস্ব বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভিসি নিয়োগের দাবি। জাবির বর্তমান ভিসিকে প্রত্যাখ্যান করেছিল জাবির শিক্ষক সমিতি। এখন ডুয়েট বা ঢাকার শেরে বাংলার নগর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও একই দাবি উঠেছে। সেখান থেকেই ভিসি দিতে হয়েছে। এটা ভালো নয় এবং সমর্থনযোগ্যও নয়। ডুয়েটকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে উন্নীত করা হয়েছে অতি সম্প্রতি। সেখানে উপাচার্য হওয়ার মতো সিনিয়র ও মেধাসম্পন্ন শিক্ষকের অভাব রয়েছে। একই কথা প্রযোজ্য শেরেবাংলার কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রেও। জাবিতে যে আন্দোলন চলছিল, সেই আন্দোলনকে 'স্বেচ্ছাচারী' হিসেবে অভিহিত করেছিলেন নয়া ভিসি। তার এই মূল্যায়ন ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় আইনকে (সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য প্রযোজ্য নয়) একটি প্রশ্নের মুখে ফেলেছে। এই আইন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের এক ধরনের অধিকার দিয়েছে। তাদের 'স্বেচ্ছাচারী' বলা ঠিক না। জাবি ভিসি নিজে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় আইন বাস্তবায়নে সবসময় অগ্রণী ভূমিকায় ছিলেন। 'ওয়ান ইলেভেন'র ঘটনায় তিনি যখন গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, তখন যুুক্তি তুলে ধরেছিলেন ১৯৭৩ সালের এই আইনটির, যে আইনবলে শিক্ষকরা কিছুটা হলেও স্বাধীনতা ভোগ করে থাকেন। তখন জাবিতে শিক্ষকরা যে 'আন্দোলন' করছিলেন, তার সঙ্গে তিনি দ্বিমত পোষণ করতেই পারেন। এটাও তার গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু 'স্বৈরাচারী' বলাটা শোভন হয়নি। শিক্ষকরা সিনেটে ভিসি প্যানেল নির্বাচনের আগে পর্যায়ক্রমে সিন্ডিকেট, শিক্ষক প্রতিনিধি (সিনেট) নির্বাচনের যে দাবি করেছিল, তা মেনে নিয়েছেন তিনি। ইতোমধ্যে সব নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। সবাইকে নিয়েই তো বিশ্ববিদ্যালয়। সবাইকে নিয়েই তাকে চলতে হবে। আন্দোলনরত শিক্ষকরাও তো চেয়েছিলেন ভিসি প্যানেল নির্বাচন। এ ক্ষেত্রে বিরোধিতা থাকার তো কথা ছিল না। তখন গণতান্ত্রিকভাবে তিনি নির্বাচিত হয়েছেন। এটা তার জন্য একটা প্লাস পয়েন্ট। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর বর্তমান অবস্থান আমাদের জন্য একটা আশঙ্কার কারণ। বুয়েট তার ঐতিহ্য হারিয়ে ফেলেছে। বুয়েটে এরকমটি কখনো হয়নি। এখানে শীর্ষে থাকা সিনিয়র শিক্ষকই অতীতে সবসময় ভিসি হয়েছেন। প্রো-ভিসির আদৌ কোনো প্রয়োজন ছিল না। তবুও সিনিয়রিটির দিক থেকে ৫৯ নাম্বারে থাকা একজন অধ্যাপককে প্রো-ভিসি করা হয়েছিল শুধুমাত্র দলীয় স্বার্থে। এর ফলে যে ট্র্যাডিশন ভাঙল, তা কি আজ বুয়েটে ফিরে আসবে? বুয়েটের ভিসি ক্ষমতায় আছেন এখনও, তবে প্রোভিসি ক্ষমতা হারিয়েছেন। কিন্তু তাতে ভিসির সম্মান বাড়েনি। মুক্তিযোদ্ধা ও জাবির ভিসি জাবির শিক্ষক, ছাত্রদের স্বপ্নের কথা শুনিয়েছিলেন। মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে তিনি শিক্ষকদের গ্রহণযোগ্যতা হারালেন। তিনি সবার ভিসি হতে পারলেন না। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে তার সিদ্ধান্তে শিক্ষক সমিতি আপত্তি করেছে। আন্তঃদ্বন্দ্বে ঢাবির ভিসি 'বিজয়ী' হয়েছেন। কিন্তু টিকতে পারবেন কি? আসলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো পরিচালনার বিষয়টি নিয়ে নতুন করে ভাবনা-চিন্তা করতে হবে। ১৯৭৩ সালের বিশ্ববিদ্যালয় আইনেরও ত্রুটি রয়েছে। একুশ শতকে এই আইনটি অচল। অতিরিক্ত স্বায়ত্তশসান পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর অচলাবস্থার একটা কারণ। ১৯৭৩ সালের আইন (যা আবার মাত্র ৪টি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য প্রযোজ্য) ভিসিকে অঘাত ক্ষমতা দিয়েছে। শিক্ষক হিসেবে তার ব্যক্তিগত পছন্দ, দলীয় আনুগত্য, আত্মীয়তা প্রাধান্য পাচ্ছে। মেধাবীরা শিক্ষক হিসেবে বাদ পড়ছেন। তাই শিক্ষক নিয়োগের বিষয়টি রাখতে হবে ইউজিসির হাতে অথবা পিএসসির মতো একটি সংস্থা গঠন করতে হবে, যার মাধ্যমে শিক্ষকরা নিয়োগ পাবেন। এ ক্ষেত্রে চারটি স্টেজ বিবেচনায় নিতে হবে (লিখিত পরীক্ষা, ডেমো, মৌখিক পরীক্ষা ও অতীত শিক্ষা রেকর্ড)। শিক্ষকদের অবসরের বয়স আমরা বাড়িয়েছি। কিন্তু তরুণ শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও তাদের যোগ্য শিক্ষক হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ আমরা নেইনি। যারা ক্ষমতায় আছেন, তারা যদি জাবি ও বুয়েটের ঘটনাবলী দিয়ে কিছুট শেখেন এবং সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো তাদের হারানো গৌরব কিছুটা হলেও উদ্ধার করতে পারবে। জোর করে ক্ষমতা ধরে রাখার পেছনে কোনো সার্থকতা নেই। রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি একটি উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে পারিবারিককরণের পরও যদি ক্ষমতা ধরে রাখেন, সেটা হবে দুঃখের এবং লজ্জারও। ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের হামলায় পুনরায় ৩০ জন শিক্ষকের আহত হওয়ার ঘটনায় ভিসি যদি পদত্যাগ করেন, সেটা তার সহকর্মীদের প্রতি শুধু সম্মান জানানোই হবে না, বরং তিনি একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারেন। জাবির নয়া ভিসি সরকারি এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে গিয়ে শিক্ষক সমিতির সঙ্গে দ্বন্দ্বে জড়িয়ে পড়েছেন। অথচ ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক মান প্রশ্নবিদ্ধ। সদ্য প্রতিষ্ঠিত সাংবাদিকতা বিভাগের ছাত্ররা ক্লাস করতে পারে না শ্রেণীকক্ষের অভাবে। এদিকে তার দৃষ্টি নেই। তাই পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিয়ে একটা প্রশ্ন থেকেই গেল।Daily JAI JAI DIN15.01.13

0 comments:

Post a Comment