রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

ভারতের উপর নির্ভরশীলতা ক্রমেই বাড়ছে


প্রধানমন্ত্রীর রাশিয়া সফরের সময় বাংলাদেশ রাশিয়ার সাথে প্রায় ৮ হাজার কোটি টাকার অস্ত্র ক্রয় সংক্রান্ত দু’টি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে। যে কোনো বিবেচনায় এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ চুক্তি এবং এই চুক্তি নিয়ে ইতোমধ্যেই নানা কথা উঠেছে। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী তথা সামরিক বাহিনীর জন্য ব্যবহৃত সমরাস্ত্র রাশিয়া নির্ভর নয়। উপরন্তু রাশিয়ার সমরাস্ত্র নিয়ে নানা কথা আছে। আওয়ামী লীগ যখন ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে প্রথমবারের মতো সরকার গঠন করেছিল, তখন রাশিয়া থেকে ৮টি মিগ-২৯ বিমান ক্রয় করা হয়েছিল। ওই মিগ বিমানগুলো নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি। অনেকগুলোই এখন আর উড়ছে না। কারণ মিগের খুচরা যন্ত্রাংশের অভাব। বাংলাদেশের বিমান বাহিনীর অফিসারদের কাছে মিগ জনপ্রিয় নয়। খুচরা যন্ত্রাংশ পাওয়াও যায় না। পেলে দাম অত্যাধিক। ফলে পরিস্থিতি এমন দাঁড়িয়েছে যে মিগ বহরের অনেকগুলো বিমান এখন গ্রাউনডেড। উড়তে পারছে না। এখন আবার সেনাবাহিনীর জন্য অস্ত্রশস্ত্র কেনা হলো। এই অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সেনাবাহিনী কোনো ‘ঝামেলায়’ জড়িয়ে পড়বে কীনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়। এই অস্ত্র ক্রয় আমাদেরকে ও আমাদের সেনাবাহিনীকে পরোক্ষভাবে আরো বেশি মাত্রায় ভারত নির্ভর করে তুলবে। যারা আন্তর্জাতিক রাজনীতির কিছুটা খোজ-খবর রাখেন, তারা জানেন গেল বছর রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের ভারত সফরের সময় ভারত-রাশিয়ার সাথে একটি বড় ধরনের অস্ত্র চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছিল। প্রায় ৭৫০ কোটি ডলারের ওই চুক্তিতে ভারত ৪২টি সুখোই এস ইউ-৩০ এমকেআই যুদ্ধ বিমানসহ দীর্ঘমেয়াদে ৯৭০টি বিমান ইঞ্জিন পাবে। সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে ভারতের সামরিক সম্পর্ক একসময় পশ্চিমা বিশ্বে ব্যাপক আলোড়ন তুলেছিল। সোভিয়েত লাইসেন্স নিয়ে ভারত মিগ বিমান তৈরি করতো। মিগের খুচরা যন্ত্রাংশ ভারত সরবরাহ করতো। এখন ভারত সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রযুক্তি নিয়ে অস্ত্রশস্ত্রও তৈরি করে। এখন দেখতে হবে রাশিয়ান অস্ত্রশস্ত্র ও খুচরা যন্ত্রাংশ সরাসরি রাশিয়া থেকে আসে নাকি ভারত থেকে আসে। চুক্তির বিস্তারিত বিবরণ, সুদের হিসাব, পরিশোধের সময়সীমা ইত্যাদি বিস্তারিত আমরা জানি না। কোনো সংবাদপত্রেও তা প্রকাশিত হয়নি। আমরা আশা করবো চুক্তির বিস্তারিত বিবরণ সংসদে উপস্থাপিত হবে। তখন বিস্তারিত মন্তব্য করা সহজ হবে। এই মুহূর্তে যা বলা যায়, তা হচ্ছে এই অস্ত্র চুক্তি আমাদের বৈদেশিক ও সামরিক নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তনের ইঙ্গিত। কেননা আমাদের বৈদেশিক নীতি ও নিরাপত্তার প্রয়োজনীয়তার পরিপ্রেক্ষিতে আমরা চীনের উপর নির্ভরশীল। আমাদের বিমান বাহিনী চীনা বিমান ব্যবহার করে। সেনাবাহিনীর অস্ত্রশস্ত্রও চীনের তৈরি। আমাদের সামরিক নেতৃত্ব চীনা যুদ্ধাস্ত্রের উপর অনেক দিন থেকেই নির্ভরশীল। আমাদের উন্নয়নে চীন অন্যতম অংশীদার। চীন আমাদের নিকট প্রতিবেশীও। আমাদের উন্নয়নে চীনের উপস্থিতি ও প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করেই সরকার প্রধান চীনে গিয়েছিলেন। এমনকি বিরোধী দলীয় নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াও অতি সম্প্রতি চীনে গিয়েছিলেন এবং তারা দু’জন লালগালিচা সংবর্ধনা পেয়েছিলেন। চীন সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী কুনমিং-কক্সবাজার সড়ক ও গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণে চীনের সহযোগিতা চেয়েছিলেন। বাংলাদেশের উন্নয়নের প্রেক্ষিতে এই মহাসড়ক ও গভীর সমুদ্র বন্দর বাংলাদেশের চেহারা আগামী দশকে বদলে দিতে পারে। বাংলাদেশ হতে পারে এ অঞ্চলের উন্নয়নের কেন্দ্রবিন্দু। গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণে চীনের অভিজ্ঞতা রয়েছে। চীন শ্রীলংকার হাম্মানটোটায় (প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসের জন্মস্থান) গভীর সমুদ্র বন্দর তৈরি করে দিয়েছে। সেখানে একটি বিমানবন্দরও চীন তৈরি করে দিয়েছে। সোনাদিয়ায় একটি গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণে চীন আগ্রহও দেখিয়েছিল। এটা নির্মিত হলে অদূর ভবিষ্যতে ভারতের সাতবোন রাজ্যগুলো যেমনি এটি ব্যবহার করতে পারবে, তেমনি পারবে চীন তথা মিয়ানমারও। এখন সঙ্গত কারণেই রাশিয়ার সাথে বাংলাদেশের এই সামরিক চুক্তি চীন খুব সহজভাবে নেবে বলে মনে হয় না। চীনারা এসব ক্ষেত্রে খুবই রক্ষণশীল। তারা খুব দ্রুতই প্রতিক্রিয়া দেখায় না। বোধকরি এ ব্যাপারে কোনো সরকারি মন্তব্যও আমরা পাবো না। তবে যা হবে, তা হচ্ছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে চীনা আগ্রহের ঘাটতি আমরা দেখতে পাবো। আগামী মার্চে চীনে নয়া নেতৃত্ব দায়িত্ব গ্রহণ করছেন। শিজিন পিং ইতোমধ্যে পার্টি প্রধানের দায়িত্ব নিয়েছেন এবং মার্চে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বও নেবেন। বাংলাদেশ সম্পর্কে তার ধারণা রয়েছে। তিনি বাংলাদেশে এসেছিলেন এবং বেগম জিয়া যখন চীনে গিয়েছিলেন, তখন তার সাথে দেখা করেছিলেন। এখন এই অস্ত্র ক্রয় চুক্তিতে চীনে বাংলাদেশ ইমেজ সংকটের মুখে পড়বে।
এখানে আরো একটা কথা বলা প্রয়োজন। আর তা হচ্ছে বাংলাদেশের এই মুহূর্তে অস্ত্রশস্ত্রের প্রয়োজন হলো কেন? বাংলাদেশের নিরাপত্তা এই মুহূর্তে কোনো ঝুঁকির মুখেও নেই। এত বিপুল অস্ত্রের আদৌ প্রয়োজন ছিল না। অস্ত্রশস্ত্রের চাইতে এই মুহূর্তে অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলোর দিকে নজর দেয়া প্রয়োজন। বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর সম্প্রতি একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, বাংলাদেশের এক চতুর্থাংশ মানুষ গরিব। এদের দিকে নজর দেয়া প্রয়োজন। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশ বড় ধরনের ঝুঁকির মুখে। শত শত মানুষ জলবায়ু শরণার্থী হিসেবে ঢাকাসহ বড় বড় শহরে আশ্রয় নিয়েছে। এদের পেশার পরিবর্তন হয়েছে। এদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা জরুরি। ‘আইলা’ ও ‘সিডর’ এর কারণে দক্ষিণাঞ্চলে যে ক্ষতি হয়েছিল, তা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। জোয়ারের পানি ঠেকাতে উঁচু বাঁধ নির্মাণ করা যায়নি। সুপেয় পানির অভাব ওই সব অঞ্চলে। ন্যুনতম এই নাগরিক অধিকার আমরা নিশ্চিত করতে পারিনি। আমরা বৈদেশিক সহায়তার উপর গুরুত্ব দিয়েছি। কিন্তু এই সহায়তাও আমরা নিশ্চিত করতে পারিনি। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে আমাদের যে ক্ষতি হয়েছে, তাতে আমরা Millenium Development Goals (MDG) এর লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবো না। জাতিসংঘ কর্তৃক নির্ধারিত বেশ কিছু ক্ষেত্রে ২০১৫ সালের মধ্যে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে হবে। যেমন, প্রাথমিক শিক্ষায় লৈঙ্গিক সমতা, সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা, শিশু মৃত্যু হার কমানো, মাতৃস্বাস্থ্যের উন্নয়ন, এইচআইভি/এইডস, ম্যালেরিয়া, অন্যান্য সংক্রামক রোগের বিস্তার কমানো, পরিবেশগত স্থিতিশীলতা ইত্যাদি। যেখানে ‘আইলা’ ও ‘সিডর’ আক্রান্ত এলাকায় শত শত পরিবার নিজেদের গৃহে ফিরে যেতে পারেনি এবং এখনো বেড়িবাঁধের উপর তাদের বসবাস, সেখানে বাচ্চাদের স্কুলে যাবার সুযোগ কোথায়? ওই এলাকায় স্বাস্থ্য সেবা চরমে উঠেছে। মাতৃস্বাস্থ্যেরও যথেষ্ট অবনতি ঘটেছে। তাই বাংলাদেশ যে ২০১৫ সালের মধ্যে এমডিজির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবে না, তা একরকম নিশ্চিত। ‘সিডর’ ও ‘আইলা’ আক্রান্ত এলাকায় সরকারের নীরবতা ইতোমধ্যে নানা প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। সরকার স্ব-উদ্যোগে কোনো বড় কর্মসূচি নেয়নি। সরকার গুরুত্ব দিয়েছে বৈদেশিক অর্থ প্রাপ্তির। যে কারণে সেখানকর মানুষ এক মানবেতর জীবন-যাপন করছে।
এই যখন পরিস্থিতি তখন হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়ে রাশিয়া থেকে অস্ত্র কিনছে। এই অস্ত্র দিয়ে সাধারণ মানুষের কোনো উপকার হবে না। এমনিতেই জনজীবন নানা সমস্যায় আক্রান্ত। এই শীতেও লোড শেডিং হচ্ছে। নিজস্ব অর্থায়নে বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করার কোনো উদ্যোগে নেই। বরং দলীয় লোকদের রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার সুযোগ করে দিয়ে সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাটের সুযোগ করে দিয়েছে। কোনো রকম নিয়ম-নীতি ছাড়াই জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। এর ফলে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাবে। কেননা পরিবহন খরচ অনেকগুণ বেড়ে যাবে। বর্তমান সরকারের আমলে ২০০৯ সালে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির হার যেখানে ছিল ৭.৪১ ভাগ, সেখানে ২০১২ সালে তা দাঁড়িয়েছে ১৩ ভাগে। আর চলতি ২০১৩ সালে তা যদি ১৫ ভাগকে অতিক্রম করলে আমি অবাক হবো না। একই সময় ২০০৯ সালে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির হার ছিল ৬ দশমিক ১৯ ভাগ। আর ২০১২ সালে এ হার ছিল ৬ দশমিক ৪২। আর ২০১৩ সালে এই হার যে বাড়বে, তা তো কাউকে বলে দিতে হবে না। সরকারের এই সিদ্ধান্তে, ডিজেলের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে কৃষকদের। লিটার প্রতি ৭ টাকা দাম বাড়ায়, প্রতি কেজি ধান উৎপাদনে গতবছরের চেয়ে প্রায় ১ টাকা খরচ বেশি হবে। বোরো উৎপাদনে প্রায় ৪১ শতাংশ খরচ হয় সেচকাজে। ডিজেলের দাম বাড়ায় এ ব্যয় বেড়ে ৪৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে। অঙ্কের হিসাবে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা কৃষকের পকেট কাঁটা যাবে। জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির ফলে জনগণকে বাড়তি ভাড়া গুনতে হবে অন্তত ৯০০ কোটি টাকা। এই তথ্য বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশনের মতে। কর্পোরেশনের মতে কৃষি ক্ষেত্রে উৎপাদন ব্যয় বাড়তি ৩৫০ কোটি টাকা, আর কেরোসিনের মূল্যবৃদ্ধিতে বিদ্যুৎবিহীন অঞ্চলে জনগণকে বাড়তি গুণতে হবে অন্তত ৩১৬ কোটি টাকা।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন অর্থের পরিমাণ আরো বাড়তে পারে। এই বাড়তি অর্থ যে মূল্যস্ফীতিকে আরো উসকে দেবে, তা কাউকে বলে দিতে হয় না। তাহলে সরকারের দায়িত্বটি কী? শুধু ক্ষমতায় থাকা আর হাজার হাজার কোটি টাকা অনুৎপাদনশীল খাতে খচর করা? এই ৮ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করার মধ্য দিয়ে সেনাবাহিনীর কোনো উপকার হবে বলে মনে হয় না। সেনাবাহিনী জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশগ্রহণের কারণে জাতিসংঘ থেকেই আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র পায়। সেই অস্ত্রশস্ত্র তারা দেশেও নিয়ে আসতে পারে। এ ক্ষেত্রে এই ৮ হাজার কোটি টাকা দিয়ে অস্ত্রশস্ত্র কেনার প্রয়োজন ছিল না। বাংলাদেশের এই মুহূর্তে কোনো শত্রু রাষ্ট্র দ্বারা আক্রান্ত হবার সম্ভাবনাও কম। ভারত ও মিয়ানমারের সাথে আমাদের সীমান্ত রয়েছে। এই দুটো দেশের সাথে বাংলাদেশ আদৌ কোনো সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়বেÑ তা শুধু বোকারাই চিন্তা করতে পারে। দিন বদলে গেছে। মানুষ সচেতন হয়েছে। সব তথ্যই আজকাল পাওয়া যায়। সুতরাং সাধারণ মানুষের দিকে নজর না দিয়ে ৮ হাজার কোটি টাকার সমরাস্ত্র ক্রয় বিতর্ক বাড়াবে। এর সাথে জড়িত রয়েছে তৃতীয় কোনো পক্ষের জড়িত থাকার বিষয়টি। আমরা এখনও নিশ্চিত নই। তবে মিগ বিমান ক্রয়ে একটি তৃতীয় পক্ষের উপস্থিতি আমরা দেখেছিলাম। আমরা নিঃসন্দেহে সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করতে চাই। সেনাবাহিনী আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক। কিন্তু এভাবে নয়। যে সমরাস্ত্রের সাথে আমাদের সেনাবাহিনীর পরিচয় নেই, সেই সমরাস্ত্র এনে আমাদের সেনাবাহিনীকে শক্তিশালী করা যাবে না। সমরাস্ত্র ক্রয়ের নাম করে আমাদেরকে ভারত নির্ভর করে তোলা, আমাদের প্রতিরক্ষা নীতির জন্য ভালো কোনো খবর নয়
25.01.13

0 comments:

Post a Comment