রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

তত্ত্বাবধায়ক নাকি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার


বছরের শুর্কটা আবার জমে উঠেছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। বিএনপি তথা আঠারো দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রেখেছে। বেগম জিয়া জানিয়ে দিয়েছেন তত্ত্বাবধায়ক ছাড়া অন্য কোনো কিছু তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে না। আর প্রধানমন্ত্রীর খুব আস্থাভাজন বেগম মতিয়া চৌধুরী বললেন ভিন্ন কথা। মতিয়া চৌধুরী বললেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের অধীনেই সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। অবশ্যই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের তত্ত্বটি স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর। গেল বছর লন্ডনে একটি অনুষ্ঠানে এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ধারণা দিয়েছিলেন, যেখানে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি নিজে থাকবেন। তার এই ধারণা কোনো একটি পক্ষ থেকেই সমর্থিত হয়নি। এমনকি মহাজোটের শরিকরাও এমনটি চান না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ব্যাপারে সরকারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় যে, এই ধারণাটি সংবিধান সম্মত নয়।  সম্প্রতি তিনটি পত্রিকার জনমত জরিপে দেখা গেছে শতকরা  প্রায় ৭০ ভাগ মানুষ তত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে মতামত দিয়েছে। প্রথম আলোর জনমত জরীপে ৭৬ ভাগ, ডেইলি স্টারের জরিপে ৬৭ ভাগ আর সমকালের জরিপে ৬২ ভাগ মানুষ তত্বাবধায়ক সরকারের পক্ষে তাদের মতামত দিয়েছে। সরকার বলছে অন্তবর্তীকালীন সরকারের কথা । কিন্তু সংবিধানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারেরও কোনো উল্লেখ নেই। তাহলে মতিয়া চৌধুরী যখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কথা বলেন, এই সরকার তিনি প্রতিষ্ঠা করবেন কোত্থেকে? সংবিধানে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যাখ্যা তো নেইই, নির্বাচনের আগে যে সরকার থাকবে, তাকেও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলা হয়নি। তাহলে মতিয়া চৌধুরী এই সরকারের ধারণাটাই পেলেন কোথায়? আসলে জনগণের দৃষ্টি অন্যদিকে নিয়ে যাবার জন্যই বিভ্রান্তিকর কথাবার্তা বলছে সরকার। কিছুদিন আগে বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য সৈয়দ আশরাফ বললেন, গোপনে গোপনে বিরোধী দলের সাথে আলাপ আলোচনা হচ্ছে! এটা যে একটি মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর বক্তব্য, তা পরিষ্কার করলেন বেগম জিয়া। ১ জানুয়ারি ছাত্রদলের ৩৪তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে বেগম জিয়া বললেন, তলে তলে আলোচনা হয় না, ষড়যন্ত্র হয়। মিথ্যা বলেননি বেগম জিয়া। আলোচনা হবে প্রকাশ্যে। এজেন্ডা থাকবে স্পষ্টÑ একটি নির্দলীয় সরকার। সেই সরকারকে তত্ত্বাবধায়কের পরিবর্তে অন্য যেকোনো নামেও ডাকা যেতে পারে। সুতরাং আলোচনা গোপনে কেন? আসলে জনগণকে বিভ্রান্ত করার এটা একটা সরকারি কৌশল মাত্র। তাহলে কী সরকার বিএনপির নামধারী কারো সাথে গোপনে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে? ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্বে’ যারা বিশ্বাস করেন, তারা এ কথাটা বলতেই পারেন। এটা তো সত্য বিএনপি থেকে বেড়িয়ে গিয়ে ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা নিজে একটি দল করেছেন। নির্বাচনের তারিখ যতই এগিয়ে আসবে, সুবিধাভোগীরা ততই হুদার পাশাপাশি থাকবেন। একটি ‘সরকারি বিএনপি’ গঠিত হলেও আমি অবাক হবো না। বাংলাদেশের রাজনীতির যে ইতিহাস, তা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় বিএনপিকে বাদ দিয়ে যে সংসদ নির্বাচন, তা কখনোই গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। আমরা তো জানি এ দেশে ১৯৮৬, ১৯৮৮ ও ১৯৯৬ সালে তিনটি নির্বাচন হয়েছিল। কিন্তু ওই নির্বাচনগুলো গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। এমনকি ১৯৮৬ সালে এরশাদীয় জমানায় আওয়ামী লীগ অংশ নিলেও, সেই সংসদ স্থায়ী হয়নি। আজ সরকারের পক্ষ থেকে যে সংবিধানের কথা বলা হয়েছে, তার মাঝে কোনো অসত্য নেই। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে জাতীয় ঐক্যের প্রশ্ন যেখানে বড়, সেখানে সংবিধান বড় হতে পারে না। সংবিধানে কোনো ধরনের সংশোধনী ছাড়াই নির্বাচন আয়োজন করার পেছনে একটি ঐকমত্যে পৌঁছান সম্ভব। যেমন ৫টি বিকল্প প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এক. প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে দু’দলের ৫ জন করে সদস্য নিয়ে একটি সরকার, যাদের দায়িত্ব শুধু সুষ্ঠু নির্বাচন পরিচালনা করা। নিরপেক্ষতার স্বার্থে ওই দশজন সদস্যের কেউই নির্বাচনে অংশ নেবেন না। অথবা দুই. স্পিকারের নেতৃত্বে দু’দলের পাঁচজন করে সদস্য নিয়ে একটি সরকার। উভয় ক্ষেত্রে তারা তিনমাসের মধ্যে নির্বাচন করতে বাধ্য থাকবেন এবং নীতিগত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না। এ ক্ষেত্রেও স্পিকারসহ কেউই নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। অথবা তিন. সাংবিধানিক অধিকারী (অর্থাৎ যারা শপথ নিয়েছেন) ব্যক্তিদের নিয়ে একটি সরকার, যারা নিরপেক্ষতার স্বার্থে নির্বাচনের পর পরই দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি নেবেন। অথবা চার. সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একজন ব্যক্তির নেতৃত্বে একটি সরকার, যেখানে সচিবরা সাময়িকভাবে মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করবেন। অথবা পাঁচ. তিনজন সাবেক প্রধান বিচারপতি অথবা আপিল বিভাগের তিজন বিচারপতির নেতৃত্বে একটি ‘এলডার্স কাউন্সিল’ যারা নির্বাচন পরিচালনা করবেন। এই পাঁচটি বিকল্পের যে কোনো একটি বিকল্প নিয়ে আলোচনা হতে পারে। তবে এর কোনো কিছুরই প্রয়োজন হতো না, যদি আমরা নির্বাচন প্রশ্নে একটি ঐকমত্যে পৌঁছতে পারতাম। আমরা সেই ঐকমত্যে পৌঁছতে পারিনি।
গণতন্ত্র আমাদের একটা কথা শিখিয়েছে। আর তা হচ্ছে পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা স্থাপন। সেই সাথে জনগণের প্রতি আস্থা রাখাটাও জরুরি। সরকার যদি জনগণের পক্ষে কাজ করে থাকে, তাহলে তাদের জনগণের আস্থা হারানোর কোনো ভয় নেই। সরকার এই জানুয়ারিতে চার বছর পার করছে। সরকার একটা তুলনামূলক বিচার-বিশ্লেষণ করে দেখতে পারে ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে দায়িত্ব নেয়ার সময়ের পরিস্থিতি, বিশেষ করে অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কেমন ছিল, আর আজকেইবা কেমন। সুশাসনের ব্যর্থতা চোখে লাগার মতো। সরকারের অর্জনগুলো ম্লান হয়ে গেছে অনেকগুলো ব্যর্থতার কারণে। এটা সত্য, বৈশ্বিক অর্থনীতির ঢেউ বাংলাদেশে তেমন একটা লাগেনি। নিঃসন্দেহে বলতে পারি গ্রীস বা স্পেনের মতো পরিস্থিতি এ দেশে এখনও সৃষ্টি হয়নি। রেমিট্যান্স এর প্রবাহ ভালো। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও ভালো। প্রবৃদ্ধি প্রত্যাশিত নয়। কিন্তু শেয়ারবাজার, হলমার্ক, ডেসটিনি, পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারি সরকারের ভাবমূর্তি দেশে ও বিদেশে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ছাত্রলীগের ভূমিকা, ক্যাম্পাসগুলোতে ভিসিদের ‘নিয়োগ বাণিজ্য’ একজন শিক্ষামন্ত্রীর ভূমিকাকে উজ্জ্বল করেনি। ইউজিসির ভূমিকাও এখানে চোখে লাগার মতো নয়। প্রতিটি ক্ষেত্রে সরকারের উচিত ছিল শক্ত অবস্থানে যাবার। কিন্তু সরকার যায়নি। কেন যায়নি, সে প্রশ্ন ভিন্ন। সাত দফায় বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলো। অথচ বিদ্যুতের মূল্য বাড়ালে যে সাধারণ মানুষ তিগ্রস্ত হয়, সে ব্যাপারে সরকার উদাসীন। এটা সরকারের সুশাসনে ব্যর্থতা হিসেবে  চিহ্নিত হতে বাধ্য। এ ক্ষেত্রে জনসাধারণকেই সুযোগ দেয়া উচিত তাদের প্রতিনিধি নির্বাচনের। গণতন্ত্রের এই মূল স্পিরিটটি আমাদের দেশে অনুপস্থিত।
চলতি ২০১৩ সালে রাজনৈতিক আলাপ-আলোচনা সীমাবদ্ধ থাকবে ওই একটি ইস্যুতেÑ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে একটি সরকার, যাদের কাজ হবে শুধু নির্বাচন পরিচালনা করা। এ ক্ষেত্রে একটি তত্ত্বাবধায়ক সরকার না হয়ে একটি অন্তর্বর্তী সরকারও হতে পারে। নামে কিছু যায় আসে না। মূল বিষয়টি হচ্ছে ওই সরকারের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা। প্রধানমন্ত্রী একটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন বটে, কিন্তু তার জট খোলেনি। কেননা সেখানে প্রধানমন্ত্রীকে রেখেই একটি সরকারের প্রস্তাব করা হয়েছিল। সেই প্রস্তাবের গ্রহণযোগ্যতাও পায়নি। আমরা সব সময়ই একটা ভুল করি। আমরা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির কথা বলি। কিন্তু সব সময়ই পশ্চিমা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির আদলে আমরা গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিকে বিনির্মাণ করতে চাই। আমাদের ভুলটা সেখানেই। পশ্চিমা সমাজ যেভাবে বিকশিত হয়েছে, সেখানকার সংস্কৃতি, শিক্ষা, সুশাসন, বিচার বিভাগের কর্তৃত্ব, সর্বোপরি ইতিহাস ও ঐতিহ্য তাদেরকে আজ এ পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। সেখানে ভোট ডাকাতি, ভোট জালিয়াতি হয় না। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অতীতে ‘ফোরিডার কেলেঙ্কারি’ সেখানকার নির্বাচন প্রক্রিয়াকে কালিমালিপ্ত করেছিল। কিন্তু তাই বলে একটি ‘ফোরিডা’র ঘটনা নিয়ে পুরো নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করা যায়নি। এমনকি আমরা ভারতের নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্তরেও যেতে পারিনি। আমরা ইতোমধ্যে ৪১ বছর পার করে ফেলেছি। ভারতের নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত শক্তিশালী। আইন সেখানকার কমিশনকে অনেক শক্তিশালী করেছে। কিন্তু আমরা তা পারিনি। আমাদের স্বদিচ্ছার অভাব ছিল। অনেকেই নির্বাচন কমিশনকে শক্তিশালী করার কথা বলেন। কিন্তু এখানে একটি শুভঙ্করের ফাঁকি হয়েছে। বর্তমান সরকার, অতীতে ও বর্তমানে, সত্যিকার অর্থে নির্বাচন কমিশনকে একটি স্বাধীন ও স্ব-শাসিত প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠার ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। ‘অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের’ জন্য বিগত নির্বাচন কমিশন সদস্যরা বারবার বিদেশে গেছেন। কিন্তু সেই ‘অভিজ্ঞতা’ তারা কোথায়, কীভাবে ব্যবহার করেছেন, আমরা জানি না। কিন্তু রাষ্ট্রের কোটি কোটি টাকা তাতে খরচ হয়েছে। সংবিধানে নির্বাচন কমিশনে সদস্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু আমরা ভুলে যাই সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে নির্বাচনের নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা যায় না। আর্থিক ভিত্তি, জনবল, ইত্যাদি প্রতিটির জন্য নির্বাচন কমিশন সরকারের ওপর নির্ভরশীল। সরকারের প্রভাব প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে নির্বাচন কমিশনের ওপর পরে। এমনি এক পরিস্থিতিতে একটি ফর্মূলার কথা বলেছেন ড. আকবর আলি খান। তার সাথে আমরা দ্বিমত করতেই পারি। কিন্তু আলোচনা হতে ক্ষতি কী? কিন্তু সরকার প্রধান অত্যন্ত অসৌজন্যমূলকভাবে ড. আকবর আলির সমালোচনা করেছেন। ড. আকবর আলি খান সুশীল সমাজের প্রতিনিধি। তিনি বিএনপি করেন না। বরং বিএনপির সমালোচকদের একজন তিনি। এর আগে ব্যারিস্টার রফিক-উল হক স্বপ্রণোদিত হয়ে বলেছিলেন, প্রয়োজনে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হতেও রাজি। কিন্তু অত্যন্ত অশালীন ভাষায় প্রধানমন্ত্রী ব্যারিস্টার হকেরও সমালোচনা করেছিলেন। তিনি হয়তো ভুলে গেছেন যে, এক-এগারোর ঘটনায় তার আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার হক। তিনি ভুললেও, জাতি ভোলেনি। বিভিন্ন আলোচনা ও টক-শোতে বলা হচ্ছে সরকার যদি জোর করে ক্ষমতায় থাকতে চায়, তার পরিণতিও ভালো নয়। প্রধান বিরোধী দল বিএনপি’র সাথে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনার ব্যাপারে একটা সমঝোতা হতেই হবে। আস্থা ও বিশ্বাসের সম্পর্ক গড়ে না উঠলে, আমাদের জন্য আরো খারাপ সংবাদ অপেক্ষা করছে। আজ তত্ত্বাবধায়ক  সরকার প্রশ্নে সরকার যদি একটি সংলাপে যায়, আমার বিবেচনায় সেটা সরকারের জন্যও মঙ্গল। সরকার সংবিধানের দোহাই দিচ্ছে। এটা সত্য।  সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নেই। কিন্তু তাই বলে নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করার স্বার্থে নতুন একটি ব্যবস্থা যে প্রবর্তন করা যাবে না, তা তো নয়। আমরা তো সর্বশেষ গ্রীসের সিদ্ধান্তটিও অনুসরণ করতে পারি। ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষস্থানীয় এক নেতা বেগম জিয়াকে গ্রেফতারেরও হুমকি দিয়েছেন। আমরা ভুলে যাই অতীত বড় নির্মম। বিগত সেনা নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার বেগম জিয়া ও শেখ হাসিনাকে গ্রেফতারও করেছিল। কিন্তু পরিণতি কী ভালো হয়েছে? নিশ্চয়ই সরকার যে কাউকে গ্রেফতার করতে পারে। সেটা তাদের অধিকার। কিন্তু সংঘাত যখন তীব্র হচ্ছে, তখন এ ধরনের কথাবার্তা না বলাই শ্রেয়। এ ধরনের বক্তব্য কোনো সমাধান বয়ে আনবে না। বরং তা আমাদের ভাবমূর্তি বহিঃবিশ্বে নষ্ট করবে। আমরা এ পরিস্থিতি থেকে বের হয়ে আসতে চাই। আর পথ খোলা একটাই- সংলাপ। সরকার জনগণকে বিভ্রান্ত না করে যদি সত্যিকার অর্থেই সংলাপের একটি উদ্যোগ নেয় এবং নির্দলীয় সরকারের কাঠামো নিয়ে বিরোধী দলের সাথে আলোচনা করে, তা শুধু সঙ্কট নিরসনই করবে না, বরং জাতিকে একটা বড় স্বস্তি এনে দেবে।
18.01.13

0 comments:

Post a Comment