সম্ভাবনাময় পোশাক তৈরি খাতকে আজ ধ্বংস করে দিয়েছে সরকারি দলের লোকেরা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশী পোশাক এখন ঝুঁকির মুখে। পোশাক শিল্পের দূরাবস্থা নিয়ে দু’জন পোশাক কর্মী এখন যুক্তরাষ্ট্রে। তারা তাজরীন গার্মেন্টস এ কর্মরত ছিলেন। গেল নভেম্বরে অগ্নিকাণ্ডে প্রায় একশ’ কর্মী মারা গিয়েছিলেন তাজরীনে। তাজরীন গার্মেন্টস এর দুই কর্মী এখন যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন সংস্থা, ট্রেড ইউনিয়ন ও মিডিয়ার সাথে কথা বলেছেন। বেশ ক’টি প্রভাবশালী পত্রিকা তাদের সাক্ষাৎকারও প্রকাশ করেছে। তারা মার্কিন কংগ্রেসম্যানদের কারো কারো সাথে দেখা করার চেষ্টাও করছেন। যেহেতু মার্কিন ট্রেড ইউনিয়নের আমন্ত্রণে তারা সেখানে গেছেন, সুতরাং কংগ্রেসম্যানদের সাথে তাদের সাক্ষাৎ হওয়াটাই স্বাভাবিক। তারা একদিকে যেমনি ওয়ালমার্ট থেকে ক্ষতিপূরণ আদায়ে স্বার্থক হয়েছেন, অন্য দিকে তারা পোশাক শিল্পে (বাংলাদেশে) যাতে একটি মানবিক ও নিরাপত্তামূলক পরিবেশ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা যায়, সে ব্যাপারে একটি ‘ক্যাম্পেইন’ এ অংশ নিচ্ছেন। সুমি নিজে তাজরীনের দুর্ঘটনায় আহত হলেও কল্পনা আক্তার মূলত ট্রেড ইউনিয়ন নেত্রী। ওয়ালমার্ট ইতোমধ্যে তাজরীন দুর্ঘটনার পর ক্ষতিপূরণ বাবদ ১ দশমিক ৬ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ করেছে। প্রশ্ন থেকে যায়, এই টাকার কত অংশ নিহতরা পেয়েছেন, কত অংশ ট্রেড ইউনিয়ন তথা বিজেএমইএর নেতাদের পকেটে গেছে! তাজরীন দুর্ঘটনার রেশ ফুরিয়ে যাবার আগেই রানা প্লাজার ধসের ঘটনাটি ঘটলো। খুব স্বাভাবিকভাবেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এটা মারাত্মক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। রাষ্ট্রদূত মজিনার বক্তব্য এই ইঙ্গিতই দেয়। রানা প্লাজার ঘটনা নিউইয়র্ক টাইমস কিংবা ওয়াশিংটন পোস্টে গুরুত্ব সহকারে একাধিক ছবিসহ ছেপেছে। মার্কিনী সংবাদপত্রে ৪টি পোশাক তৈরি কারখানার কথা উল্লেখ করা হয়েছে, যেগুলো রানা প্লাজায় অবস্থিত ছিল। এগুলো Phantom Aparels, Phantom Tack Ltd, New wave Style Ltd, New wave bottomes Ltd, এবং New wave brothers. এরা যুক্তরাষ্ট্রের চেইন Childrens place, যুক্তরাজ্যের Dress Baren ও Primark স্পেনের Mono এবং ইতালির কোম্পানি Benetton-এ এরা পোশাক সরবরাহ করতো। Walmart এ এরা সাব কণ্টাক্টে পোশাক সরবরাহ করতো বলে দাবি করা হলেও ওয়ালমার্ট থেকে তা অস্বীকার করা হয়েছে। কানাডার সংবাদপত্রেও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নেতিবাচক সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।
বাংলাদেশে প্রায় ৪ হাজার পোশাক তৈরির কারখানা রয়েছে, যার মধ্যে কিছু বন্ধ হয়ে গেছে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য, এর মাঝে কিছু ফ্যাক্টরি রয়েছে যাদের আদৌ কোনো অনুমোদন নেই। গেল বছর ঢাকার মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ এলাকায় একটি পোশাক তৈরি কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছিল। অগ্নিকাণ্ডের পরই জানা গেল ওই কারখানার কোনো অনুমোদন ছিল না। তৈরি পোশাক আমাদের জন্য এখনও একটি সম্ভাবনাময় খাত। বিশ্ববাজারে তৈরি পোশাকে বাংলাদেশ একটি ‘শক্তি’। বাংলাদেশকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয় চীন ও ভারতের সাথে। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে ৯৯টি বিভিন্ন ধরনের তৈরি পোশাকের ‘আইটেম’ সরবরাহ করে। ভারত ও চীনের এই সংখ্যা ১৬১ ও ১৬৭। অর্থাৎ অনেক ‘আইটেম’ বাংলাদেশ তৈরি করে না। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের ব্যাপারে আগ্রহ বাড়ার কারণ হচ্ছে চীন ধীরে ধীরে তৈরি পোশাক উৎপাদন থেকে নিজেদের গুটিয়ে আনছে। কেননা চীনে শ্রমিকদের বেতন বেড়ে গেছে। দ্বিতীয়তঃ, চীন এখন ভারি শিল্পের দিকে যাচ্ছে। এমন কথাও শোনা গিয়েছিল যে চীন তার তৈরি পোশাক কারখানাগুলো বাংলাদেশে স্থানান্তর করবে। কেননা বাংলাদেশের শ্রমিক সস্তা। কম মূল্যে এখানে শ্রমিক পাওয়া যায়। বৈদেশিক মুদ্রার ৭৫ ভাগ আসে এই তৈরি পোশাক খাত থেকে। এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় ১৯৯০ সালে যেখানে চীন, ভারত ও বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে সরবরাহ করেছে ৩.৬ বিলিয়ন ০.৮ বিলিয়ন ও ০.৪ বিলিয়ন মূল্যের তৈরি পোশাক, সেখানে ২০০৫ সালে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২.৪ বি. ৪.৬ বি. ও ২.৫ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশ এখনও চীনের কাছ থেকে অনেক পিছিয়ে আছে। তবে শতকরা ১৫ ভাগ হারে চাহিদা বাড়ছে। ২০০৫ সালের পরিসংখ্যানে দেখা যায়, যেখানে বিশ্বে ২৭৬ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাকের বাজার ছিল সেখানে বাংলাদেশ সরবরাহ করেছিল মাত্র ৬.৯ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক। সাত বছর পর এই বাজার এখন প্রায় ২০ বিলিয়ন ডলারের বাজার। শ্রমমূল্য কম হওয়ায় বাংলাদেশী তৈরি পোশাকের চাহিদা থাকবেই।
বাংলাদেশে তৈরি পোশাক কারখানাগুলো মানসম্মত নয়। পরিবেশ স্বাস্থ্য উপযোগী নয়। কারখানাগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা বলতে কিছুই নেই। উপরন্তু শ্রমিকদের বেতন আন্তর্জাতিক মানের নয়। এজন্য মার্কিন ক্রেতারা দীর্ঘদিন ধরে কারখানাগুলোতে ‘কমপ্লাইয়েন্স’-এর কথা বলে আসছিল। অর্থাৎ ক্রেতারা কিছু কিছু ক্ষেত্রে ‘একটা মান’ নির্ধারণ করেছিল। যেসব ফ্যাক্টরি ‘কমপ্লাইয়েন্স’ ফ্যাক্টরি নয়, সেসব কারখানা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে তৈরি পোশাক রফতানি নিষিদ্ধ। এখানে সমস্যা হচ্ছে কিছু কিছু কারখানা, যারা ‘কমপ্লাইয়েন্স’ ফ্যাক্টরি, তারা মার্কিন ক্রেতাদের বিশেষ করে বড় বড় চেইন স্টোরগুলোর (যেমন ওয়ালমার্ট, গ্যাপ ইত্যাদি) বিপুল অর্ডার গ্রহণ করে এবং এক পর্যায়ে বাধ্য হয় সাব কনট্রাক্ট দিতে। আর তখনই তৈরি হয় সমস্যা। কেননা সাব কনট্রাক্ট নেয়া কোম্পানিগুলো ‘কমপ্লাইয়েন্স’ নয়। তাজরীনের ঘটনার পর এটা ব্যাপকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রচারিত হয় যে, বাংলাদেশের কারখানাগুলো ‘কমপ্লাইয়েন্স’ এর মান অনুসরণ করছে না। রানা প্লাজায় অর্ধ সহস্রাধিক পোশাক কর্মীর মৃত্যুর পর আবারো শোনা গেলো সেই ক্ষোভের কথা। Global Labour & Human Rights এর নির্বাহী পরিচালক চার্লস কেরনাগান (Charles Kernaghan)-এর একটি বক্তব্য মার্কিন পত্রপত্রিকায় ছাপা হয়েছে এভাবে ÒYou can’t trust many building in Bangladesh. Its so corrupt that You can buy off anybody and there would be any retribution’। মিথ্যা বলেননি তিনি। গত কয়েক বছরে পোশাক কারখানায় যত দুর্ঘটনা ঘটেছে, প্রতিটি ক্ষেত্রে দেখা গেছে কোনো ভবনই ‘বিল্ডিং কোড’ অনুসরণ করে ভবন তৈরি করা হয়নি। তাজরীন গার্মেন্টস যে ভবনে ছিল, তার আইনগত কোনো অনুমোদন ছিল না। ২০০৫ সালে সাভারের পলাশবাড়ীতে ¯েপ্রকট্রাম গার্মেন্টস ধসে পড়েছিল। এরও কোনো অনুমোদন ছিল না। প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেখা যায় আইনের ফাঁক-ফোঁকড় দিয়ে কোম্পানির মালিকরা পার পেয়ে যান। কোনো একটি ক্ষেত্রে কোনো দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হয়নি। ¯েপ্রকট্রাম গার্মেন্টস-এর দুর্ঘটনায় হাইকোর্ট একটি রুল দিয়েছিলেন। দীর্ঘ ৮ বছর পরও সেই রুলের কোনো জবাব দেয়া হয়নি।
রানা প্লাজার দুর্ঘটনা আমাদের জন্য একটি অশনি সঙ্কেত। এক সাথে একদিনে অর্ধ সহস্রাধিক মানুষের মৃত্যু (এ সংখ্যা আরও বাড়বে) পৃথিবীর অন্য কোথাও ঘটেছে বলে আমার জানা নেই। এর একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বেই! যুক্তরাষ্ট্রে আমাদের তৈরি পোশাকের যে বাজার, সেখানে প্রতিবন্ধকতা আসতে পারে। মার্কিন ক্রেতারা ভিয়েতনাম কিংবা কম্বোডিয়ায় নতুন বাজার খুঁজবেন। এমনকি আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের বাজারেও যাবেন তৈরি পোশাকের ক্রেতারা। সম্ভাবনাময় এই খাতে ধস নামতে পারে। সরকার, বিজেএমইএ, ভবন মালিক, রাজউক সবাই মিলে আমরা এই খাতকে ধদ্বংস করতে বসেছি। একটি তথাকথিত তদারকি সংস্থা আছে। তাদের কী কাজ আল্লাহ মালুম! কারো কোনো দায়বদ্ধতা নেই। একে অপরের ওপর দোষ চাপাচ্ছি। ¯েপ্রকট্রাম, তাজরীন, আর এখন রানা প্লাজা প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা দেখি সেই পুরনো দৃশ্য বিল্ডিং কোড মেনে ভবন তৈরি করা হয়নি, রাজউক এর আওতাধীন হলেও কোনো তদারকি ছিল না রাজউকের। মালিক অভিযুক্ত হলেও বিজেএমইএ মালিকদের পক্ষেই অবস্থান নিয়েছে, আর এক একটি মৃত্যুর ‘সম্মানী’ এক লাখ টাকা! এখানেও বরাদ্দ করা হয়েছে ৪ কোটি টাকা। কিন্তু উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে মূল প্রশ্ন। আমরা জানি না যে, ৪০০০ তৈরি পোশাক কারখানা রয়েছে, সবগুলো নিরাপদ কী না? কর্মীদের সবার স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হয়েছে কী না? ভবনগুলোর পূর্ণ তদারকী রিপোর্ট বিজেএমইএ কিংবা সরকারের কাছে আছে কী না?
আমাদের সাধারণ পোশাক কর্মীরা মাত্র চার হাজার টাকার বিনিময়ে (মাসিক বেতন) ‘গিনিপিগ’ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছেন। জীবনের মূল্য এত কম, এটা বোধকরি বাংলাদেশেই সম্ভব।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর যে লুটপাটের রাজনীতি শুরু করেছে তার জলজ্যান্ত উদাহরণ হচ্ছে এই রানা প্লাজা। যুবলীগের নাম ভাঙ্গিয়ে মাত্র নবম শ্রেণী পাস ওই ব্যক্তি হিন্দুর জমি দখল করে আজ শত কোটি টাকার মালিক। সামান্য একজন তেল বিক্রেতা (কলু) হিসেবে জীবন শুরু করা এই সোহেল রানা আজ সাভারের সন্ত্রাস। সারা দেশ জুড়ে আওয়ামী লীগের নামধারী ব্যক্তিরা আজ যে সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে, সোহেল রানা তার বড় প্রমাণ। খুজলে দেখা যাবে ‘সারা দেশ জুড়েই প্রতিটি মহল্লাতেই রয়েছে এ রকম এক একজন সোহেল রানা।
রানা প্লাজার দুর্ঘটনাকে কোনো মতেই দুর্ঘটনা বলা যাবে না। এটা একটা পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। হত্যাকাণ্ডের বিচারের জন্য দেশে প্রচলিত আইন রয়েছে। সেই আইনে ভবনের মালিক সোহেল রানা, সেই সাথে ওই ভবনে অবস্থিত ৪টি গার্মেন্টস এর মালিকেরও বিচার হতে হবে। মুখ দেখানো মামলা ও পুলিশ দিয়ে তথাকথিত তদন্ত কমিটি গঠন করে সময় ক্ষেপণ করা মানুষ গ্রহণ করে নেবে না। ইতোমধ্যে কোনো কোনো মহল থেকে একটি ‘ষড়যন্ত্র তত্ত্ব’ এর কথাও বলা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে মানুষের সকল দৃষ্টি সাভারে সীমাবদ্ধ রাখার জন্য অত্যন্ত ধীরগতিতে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে এবং চিহ্নিত কিছু টিভি চ্যানেলকে সেখানে ‘ব্যস্ত’ রাখা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, উদ্ধার অভিযানে সেনাবাহিনীর অভিজ্ঞ ইঞ্জিনিয়ারিং কোরকে প্রথম দিনেই ব্যবহার করা হয়নি। ব্যবহার করা হয়েছে ধ্বংসস্তূপের তিনদিন পর। প্রশ্ন ওঠে কেন? একটি চ্যানেলে (এসএ টিভি) উদ্ধারকর্মীরা বারবার বলছিলেন যেখানে তারা ভবনের ভেতরে আটকে পড়াদের আর্তনাদ শুনেছেন, সেখানে সেনাবাহিনীর সদস্যদের কাছে ছুটে গেলেও তারা ছিলেন নির্লিপ্ত। তাহলে কী সেনা সদস্যদের ধীরগতিতে উদ্ধার অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল? তৃতীয়ত, ¯েপ্রকট্রাম গার্মেন্টসের ভবন ধ্বংসের পর ২০০ কোটি টাকা দিয়ে অত্যাধুনিক সব মেশিন কেনা হয়েছিল। কিন্তু কোথায় সেই মেশিন? সাভারে একবারও সেইসব মেশিন আনা হল না কেন? চতুর্থত, জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করা হয়েছিল বটে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী সংসদে যখন বক্তৃতা দিচ্ছিলেন, তখন তিনি শোকের প্রতীক হিসেবে ‘কালো ব্যাজ’ শাড়ীতে আটেননি (বেগম জিয়া কিন্তু তা করেছিলেন)। কেন? তাহলে কী সরকার ঘটনাটিকে গুরুত্ব দিতে চায়নি আদৌ? পঞ্চমত, শুক্রবার (২৬ জুলাই) একটি অনলাইন সংবাদপত্র আমাদের জানায় যে, সোহেল রানা পালিয়ে যাবার সময় সাভারের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ২৩ কোটি টাকা তুলে নিয়ে গেছেন। এই সংবাদটি যদি সত্য হয়, তাহলে ‘কোন পক্ষ’ কী তাকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে? তিনদিন পরও পুলিশ তার বাবা কিংবা তাকে খুঁজে পাবে না, তা কী বিশ্বাসযোগ্য? তবে গ্রেফতার করেছে তার স্ত্রী ও দুই আত্মীয়কে। এটা কী লোক দেখানো?
বিরোধী দল যখন সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনে লিপ্ত, যখন হেফাজতে ইসলামের উত্থান সরকারকে ভড়কে দিয়েছে, গণজাগরণ মঞ্চ তৈরি করে সরকারের সকল ষড়যন্ত্র উন্মোচিত হয়েছে এবং হেফাজতে ইসলাম আগামী ৫ মে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি হাতে নিয়েছে, ঠিক তখনই ঘটলো রানা প্লাজার ‘হত্যাকাণ্ড’।
রানা প্লাজায় নির্মাণ কাজে ত্রুটি ছিল সন্দেহ নেই তাতে। কিন্তু স্লথ গতিতে উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করা, অর্ধ সহস্রাধিক পোশাক কর্মীর মৃত্যর ঘটনাকে গুরুত্ব না দেয়ার কারণে মানুষের মনে সন্দেহ দানা বাঁধবেই। তবে সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়ে গেল আমাদের পোশাক শিল্পের। আর এর ফলে সুবিধা নেবে ভারত। কেননা পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেখা যায় তৈরি পোশাক খাতে আমাদের অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত, চীন নয়। সুতরাং রানা প্লাজার হত্যাকাণ্ডকে আমি স্বাভাবিকভাবে নিতে পারছি না। প্রয়োজন একটি বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন করা। না হলে মূল ঘটনা, এর পেছনের কাহিনী আমরা কোনোদিনই জানতে পারবো না।
03.05.13
0 comments:
Post a Comment