নির্বাচনে
ইশতেহার প্রকাশ করা আমাদের নির্বাচনী সংস্কৃতির একটি অংশ। জাতীয় পর্যায়ে
যেসব নির্বাচন হয় সেখানে বড় দলগুলো নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করে থাকে।
অর্থাৎ তারা কমিটমেন্ট করে থাকেন ক্ষমতায় গেলে কী কী প্রতিশ্রুতি পালন
করবেন। সাম্প্রতিক সময়ে এ নির্বাচনী ইশতেহার নিয়েও বেশ আলোচনা হয়। ২৮
এপ্রিল গুরুত্বপূর্ণ তিনটি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন। যে কোনো বিবেচনায় এ
নির্বাচনের গুরুত্ব অনেক বেশি। বিশেষ করে বিএনপি নির্বাচনে অংশ নেয়ায় এ
নির্বাচনের গুরুত্ব অনেক বেড়েছে। বলতে দ্বিধা নেই, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র ও
কাউন্সিলর নির্বাচনে একাধিক দল ও প্রার্থী থাকলেও মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা
হবে দুই বড় দল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির প্রার্থীদের মধ্যে। যদিও আইনে বলা আছে,
স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন দলনিরপেক্ষভাবে অনুষ্ঠিত হবে; কিন্তু বাস্তবতা
বলে ভিন্ন কথা। প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং তার দলের প্রার্থীদের (মেয়র) নাম ঘোষণা
করেছেন এবং নিজে কাউন্সিলর প্রার্থীদের তালিকা চূড়ান্ত করেছেন। বিএনপি
নেত্রীও নিজে উপস্থিত থেকে বিএনপির মেয়র প্রার্থীদের পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন।
তবে লক্ষণীয়, জাতীয় পর্যায়ে সরকারের ১৪ দলের প্রতিনিধিরা থাকলেও সিটি
কর্পোরেশন নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোটের সঙ্গে সম্পৃক্ত দলগুলো আওয়ামী লীগের
মনোনীত প্রার্থীদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। আবার একই কথা
প্রযোজ্য বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ক্ষেত্রেও। এক্ষেত্রে বড় দল
দুটি বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী। দেখা গেছে, ঢাকা সিটি (দুটি) কর্পোরেশন
নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াত আলাদা আলাদাভাবে (বিশেষ করে কাউন্সিলর
প্রার্থীদের ক্ষেত্রে) প্রার্থী দিয়েছে। এ ক্ষেত্রে জামায়াত কিছুটা নাখোশ
এমন খবরও পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
প্রার্থী নির্বাচনের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ
চমক দেখিয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা উত্তরের প্রার্থী নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী
সবাইকে চমক দিয়েছেন। নেতৃত্বের গুণে, গ্রহণযোগ্যতায় আনিসুল হক ভালো
প্রার্থী এবং যোগ্য প্রার্থী, তাতে কারও কোনো সন্দেহ নেই। তবে এটা তো
স্বীকার করতেই হবে, তার এ প্রার্থীপদ নানা বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। শত শত
কোটি টাকার মালিক হয়েও (তিনি ২২টি রফতানিকারক প্রতিষ্ঠানের মালিক) হলফনামায়
দেয়া তথ্য অনুযায়ী তার নিজের কোনো গাড়ি নেই! কোনো বাড়ি নেই! এমনকি তিনি
সম্পদের যে হিসাব দেখিয়েছেন, তা নিয়েও কম বিতর্ক হয়নি। অন্যদিকে ঢাকা
দক্ষিণের প্রার্থী সাঈদ খোকনের ব্যাপারেও বিতর্ক রয়েছে। ১১৮ কোটি টাকার
দাবিদার একটি বেসরকারি ব্যাংকের ঋণের কিছুটা অংশ পরিশোধ করে (তার মোট ঋণ
২০০ কোটি টাকা, দৈনিক মানবকণ্ঠ) তিনি তার প্রার্থিতা টিকিয়ে রেখেছেন।
কিন্তু একবার যদি তিনি বিজয়ী হয়ে যান, এ ব্যাংক ঋণ কি তিনি আদৌ পরিশোধ
করবেন? আনিসুল হকেরও ব্যাংক ঋণের পরিমাণ ১৫১ কোটি টাকা (দৈনিক মানবকণ্ঠ)।অন্যদিকে
তাবিথ আউয়ালের প্রার্থিতা খোদ বিএনপি সমর্থকদের যথেষ্ট চমক দিয়েছে। মির্জা
আব্বাস বিতর্কিত নানা কারণে। তার ব্যক্তিগত আচরণ, সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন
খোকার সঙ্গে তার দ্বন্দ্ব বিএনপি সমর্থকদের প্রভাবিত করবে। এ ক্ষেত্রে বেগম
জিয়ার ব্যক্তিগত ইমেজ এবং বিগত ৯২ দিনের আন্দোলন, গুলশান কার্যালয়ে
অবরুদ্ধ হয়ে থাকার কাহিনী সাধারণ ভোটারদের কতটুকু প্রভাবিত করবে- এটা একটা
বড় প্রশ্ন। অন্যদিকে তাবিথ আউয়াল আদৌ আনিসুল হকের বিরুদ্ধে কোনো
প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে পারবেন বলে মনে হয় না। প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আবদুল
আউয়াল মিন্টু থাকলে আজ ভিন্ন ইতিহাস রচিত হতে পারত। মিন্টু সাহেবের
প্রার্থিতা বাতিল হয়ে যাওয়া কোনো সমঝোতার অংশ কি-না, তা আগামী দিনেই বোঝা
যাবে। এখানে বিএনপির হাই কমান্ডকে কতটুকু অন্ধকারে রাখা হয়েছিল, কেন
হয়েছিল, এ প্রশ্ন উঠবেই। নিশ্চয়ই নির্বাচনের পর হাইকমান্ড এর হিসাব মেলাবে।
তবে আমি ঢাকা উত্তরের অনেক বিএনপি সমর্থক ভোটারের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি।
তাদের মধ্যে আমি এক ধরনের হতাশা দেখেছি। বাবা আর ছেলে এক হতে পারেন না।
তাবিথের বিএনপি সংশ্লিষ্টতার কোনো ইতিহাস নেই। জামায়াত কি পরোক্ষভাবে তাকে
সমর্থন করছে! এর চেয়ে মিসেস নাসরিন আউয়াল ভালো প্রার্থী হতে পারতেন।নির্বাচনী
ইশতেহার একটি নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে বলতে দ্বিধা নেই, ভোটাররা
নির্বাচনী ইশতেহার দেখে ভোট দেন না। ভোট দেন ব্যক্তি দেখে, মার্কা দেখে,
বিশেষ করে কে কোন দলের প্রার্থী- এটা বিবেচনায় নিয়েই ভোট দেন। তবুও
ইশতেহারে যেসব কথা বলা হয়েছে, তা নিয়ে আলোচনা করা যেতে পারে। আনিসুল হক
অনেক আগেই তার কর্মসূচি উপস্থাপন করেছেন। আনিসুল হক আলোকিত ও পরিবেশবান্ধব
নগরী উপহার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তার দেয়া প্রতিশ্রুতির মধ্যে
উল্লেখযোগ্য হচ্ছে : স্মার্ট ও অংশগ্রহণমূলক সুশাসিত ঢাকা, বর্জ্য
ব্যবস্থাপনা, গণপরিবহন, ধনী-গরিব সবার জন্য মানবিক এক ঢাকা, দুর্নীতিমুক্ত
সিটি কর্পোরেশন, বিনিয়োগ বাড়ানো, ৩৬টি ওয়ার্ডে আধুনিক ডে কেয়ার সেন্টার
প্রতিষ্ঠা, সিটি কার্ড, পৃথক সাইকেল লেন, ৩৬ ওয়ার্ডের ৭২ জন সুনাগরিককে
প্রতিবছর পুরস্কৃত করা, মশক নিধন কর্মসূচি, হকারমুক্ত ফুটপাত ইত্যাদি।
অন্যদিকে সাঈদ খোকন তার নির্বাচনী ইশতেহারে ৫ অগ্রাধিকার নিয়ে কাজ করার
প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। তার এ পাঁচ অগ্রাধিকার হচ্ছে- যানজট নিরসন,
দূষণমুক্ত ও স্বাস্থ্যকর মহানগরী, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে
যুদ্ধ, নাগরিকদের নিরাপদ জীবন। ঢাকাকে ডিজিটাল মহানগরী করা, বস্তি উন্নয়ন,
হরিজন সম্প্রদায়ের সামাজিক মর্যাদা, মহানগরের নিজস্ব পুলিশ বাহিনী গড়ে
তোলারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি।যদি
সরকারের সমর্থনপুষ্ট দুজন প্রার্থীর ইশতেহার বিশ্লেষণ করা যায় তাহলে দেখা
যাবে উভয় ইশতেহারই প্রতিশ্রুতিতে ভরা। অর্থাৎ তারা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
কিন্তু কীভাবে তারা এ কাজগুলো করবেন, তা সুস্পষ্ট করে বলেননি। ঢাকা
মহানগরীর সমস্যা অনেক। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, যানজট, সুশাসন, জলাবদ্ধতা,
খাদ্য নিরাপত্তা, পরিবেশ দূষণ, আবাসন ইত্যাদি। সিটি কর্পোরেশনের ২৮ ধরনের
কাজ করে সরকারের ৫৬টি সংস্থা। এদের মাঝে সমন্বয় করার কাজটি কঠিন। প্রশাসনের
সর্বত্র আমলাতন্ত্রের শক্ত অবস্থান রয়েছে। কোনো নির্বাচিত মেয়রের পক্ষে এ
আমলাতন্ত্রের প্রভাব উপেক্ষা করা কঠিন। মেয়ররা চাইলেও আমলাতন্ত্রের লালফিতা
সবকিছু আটকে দেবে। এজন্য সুস্পষ্ট পরিকল্পনার প্রয়োজন ছিল। যেমন
জলাবদ্ধতা। ঢাকার মতো চট্টগ্রামেও এটি বড় সমস্যা। একটু বৃষ্টি হলেই ঢাকার
বিশাল এলাকা ডুবে যায়। সাঈদ খোকনের নির্বাচনী এলাকার একটা বিশাল অংশ চলে
যায় পানির নিচে। কোনো ইশতেহারেই এ বিষয়ে কিছু বলা হয়নি। কেন? এখানে একটা
মাস্টার প্ল্যান করা দরকার। প্রয়োজনে সেনাবাহিনীর প্রকৌশলীদের সহযোগিতা
নিয়ে এ সমস্যার সমাধান করা যায়। তাদের দক্ষতা, কমিটমেন্ট, সততা ও নেতৃত্বকে
আমরা নগরবাসীর এ সমস্যার সমাধানে কাজে লাগাতে পারি। এ ধরনের একটি প্রকল্পে
শত শত কোটি টাকার প্রশ্ন জড়িত। সেনাবাহিনী ছাড়া দুর্নীতিমুক্তভাবে এ ধরনের
পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। অন্যান্য দেশের অভিজ্ঞতাও আমরা কাজে
লাগাতে পারি। কিন্তু জনাব খোকনের এ ধরনের কোনো চিন্তাধারার খবর আমার জানা
নেই। উপরন্তু বুড়িগঙ্গাকে দূষণমুক্ত ও এর নাব্য বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি তিনি
দিয়েছেন। কিন্তু কীভাবে তিনি এটি করবেন? তিনি কি আদৌ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা
বলেছেন? বুড়িগঙ্গার পানি এখন কুচকুচে কালো, বাজে গন্ধ এবং কোনো মাছ এই
পানিতে বাস করতে পারে না। একজন মেয়র চাইলেও তা পারবেন না। এর সঙ্গে পরিবেশ
মন্ত্রণালয় জড়িত। তবে রাইন নদীর ইতিহাস আমি জানি। এ প্রসঙ্গ নিয়ে আমি ২০১২
সালে তুরস্কে এক জার্মান বিশেষজ্ঞের মতামত নিয়েছিলাম। তিনি জানিয়েছিলেন,
ইইউ এ ব্যাপারে বিশেষজ্ঞ জ্ঞান ও আর্থিক সহায়তা দিতে পারে। আমি ঢাকায় এসে
যুগান্তরে এ কথা লিখেছিলাম। দুঃখজনক হচ্ছে, ওই সময় পরিবেশমন্ত্রী যিনি
ছিলেন, তার দৃষ্টি এতে আকৃষ্ট হয়নি। আমাদের পরিবেশমন্ত্রী ও পরিবেশ
মন্ত্রণালয়ের আমলারা বিদেশে যেতে পছন্দ করেন। তারা কী জ্ঞান অর্জন করেন,
তারাই জানেন। কিন্তু বুড়িগঙ্গাকে বাঁচানোর কোনো উদ্যোগ আমরা দেখি না!উভয়
প্রার্থীই যানজট নিরসনের কথা বলেছেন। কিন্তু আমরা ভুলে যাই এ কাজটি করার
দায়িত্ব তাদের নয়। এ ক্ষেত্রে ডিএমপির ভূমিকা সবচেয়ে বড়। অসাধু কর্মচারীদের
দিয়ে ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। যেখানে মন্ত্রী স্বয়ং বাস শ্রমিকদের
নিয়ন্ত্রণ করেন, সেক্ষেত্রে যে মানুষ খুন করেও ড্রাইভাররা পার পেয়ে যাবেন,
যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করে প্রতিনিয়ত যানজট সৃষ্টি করবেন- এর সমাধান
মেয়ররা কীভাবে দেবেন? একটা দৃষ্টান্ত দেই- যারা জাহাঙ্গীর গেট দিয়ে
সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রিত এলাকায় যান, তারা দেখেছেন সেখানে সুনিয়ন্ত্রিতভাবে
যানবাহন চলাফেরা করছে। রাতেও রিকশায় আলো দেখতে পাবেন। কই সেখানে তো যানজট
সৃষ্টি হয় না? তাহলে ঢাকার অন্যত্র হচ্ছে কেন? ওই এলাকায় বেপরোয়াভাবে গাড়ি
চালানোর কোনো সুযোগ নেই। শৃংখলা সেখানে মানতে হয়। আমাদের নির্বাচিত মেয়ররা এ
থেকে শিখতে পারেন।এটা বলার অপেক্ষা
রাখে না যে, নির্বাচনী প্রচারণায় সরকারি দলের প্রার্থীরা অনেক এগিয়ে আছেন।
অনেক আগে থেকেই আনিসুল হক ও সাঈদ খোকন স্ব স্ব প্রচারণা চালিয়ে আসছেন।
বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীদের একজন তাবিথ আউয়াল মাঠে থাকলেও মাঠে নেই মির্জা
আব্বাস। তার স্ত্রী তার হয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। বাংলা নববর্ষের দিন খালেদা
জিয়া পল্টনে জাসাসের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এক ধরনের নির্বাচনী
প্রচারণা শুরু করেছেন। একই দিন আদর্শ ঢাকা আন্দোলন সিটি নির্বাচন সামনে
রেখে একটি ১৭ দফা কর্মসূচি উপস্থাপন করেছে। এটাকেও নির্বাচনী ইশতেহার
হিসেবে ধরা যেতে পারে। যদিও তারা বলেছেন, আলাদাভাবে দুটি সিটি কর্পোরেশনের
জন্য দুটি নির্বাচনী ইশতেহার প্রকাশ করা হবে। এত দেরি করে নির্বাচনী
ইশতেহার প্রকাশ করলে তা ভোটারদের মাঝে পৌঁছে দেয়ার সময় তারা কম পাবেন। তবে
খালেদা জিয়া যদি ঢাকায় পথসভা করতে পারেন, তা ভোটারদের কিছুটা হলেও
উদ্দীপ্ত করবে। আদর্শ ঢাকা আন্দোলন যে ১৭ দফা উপস্থাপন করেছে, সেখানেও
সুস্পষ্ট কোনো কর্মসূচি নেই। এ ১৭ দফার মাঝে রয়েছে মহানগর ব্যবস্থাপনা, নগর
পরিকল্পনা, মহানগরীর সড়ক যানবাহন ও পরিবহন ব্যবস্থা,শিক্ষা
বিস্তার ও রোগ প্রতিরোধ, পরিবেশ সুরক্ষা, মাদক নিয়ন্ত্রণ, আইন-শৃংখলা ও
মানবাধিকার পরিস্থিতির উন্নয়ন ইত্যাদি। কিন্তু তারা কীভাবে এসব বাস্তবায়ন
করবেন, তার সুনির্দিষ্ট কোনো ব্যাখ্যা দেননি। সমস্যাটা এখানেই। যারা এটা
প্রণয়ন করেছেন, তাদের কোনো সুস্পষ্ট পরিকল্পনা নেই। একটি নির্বাচনী
ইশতেহারে সুস্পষ্ট পরিকল্পনা থাকে। বলা থাকে, তাদের প্রার্থীরা বিজয়ী হলে
তারা সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন। তাদের ১৭ দফা মূলত এক ধরনের দাবি।
কোনো পরিকল্পনা নেই। মজার ব্যাপার, ঢাকা মহানগরীর (দুটি সিটি কর্পোরেশন)
মূল সমস্যা সমাধানের জন্য একটি নগর সরকার গঠন ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। সরকার এ
ব্যাপারে কোনো ইতিবাচক মনোভাব দেখায়নি। তাই সরকারি দলের প্রার্থীরা এ
ব্যাপারে কোনো কমিটমেন্টও করেননি। পৃথিবীর অনেক দেশে বড় বড় শহরে নগর সরকার
রয়েছে।অবশ্য বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী
তাবিথ আউয়াল বৃহস্পতিবার তার যে ইশতেহার প্রকাশ করেছেন সেখানে বলা হয়েছে,
আদর্শ ঢাকা গড়ে তুলতে তার প্রথম পদক্ষেপই থাকবে নগর সরকার চালুর ইস্যু
বাস্তবায়ন। এছাড়া ইশতেহারে তার উল্লেখযোগ্য অঙ্গীকারের মধ্যে আরও রয়েছে-
ঢাকা উত্তরের সড়ক উন্নয়ন, নাগরিক সেবা, স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা,
প্রশাসনিক উন্নয়ন, পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়ন, আইনশৃংখলা ইত্যাদি।আমরা
একাধিক ইশতেহার এবং একই সঙ্গে ১৭ দফার একটি কর্মসূচি পেয়েছি। বাম সমর্থকরা
দ্বিধাবিভক্ত হয়ে নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। তারাও ইশতেহার প্রকাশ করেছেন। তবে
তাদের আবেদন কম। আমরা ইশতেহার তথা দাবি পেলাম বটে; কিন্তু কোনো
সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার কথা উল্লেখ না থাকায় ভোটারদের মাঝে এর কোনো আবেদন
থাকবে বলেও মনে হয় না। একটি নির্বাচন হবে সত্য; কিন্তু তাতে মহানগরীর লাখ
লাখ মানুষের সমস্যার সমাধান হবে- এটা মনে করার কোনো কারণ নেই।
Daily Juganytor
18.04.15
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
0 comments:
Post a Comment