একটি গুরুতর অভিযোগ উঠেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে। বাংলা বিভাগে একজন প্রভাষক হিসেবে যাকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে, তিনি আদৌ কোনো দিন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেননি। তিনি কলেজে পড়াশোনা করেছেন। তিনি উপাচার্য মহোদয়ের আশীর্বাদে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রভাষক হিসেবে যোগ দিতে যাচ্ছেন। অথচ এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র হিসেবে ভর্তি হওয়ার কোনো যোগ্যতাও তার ছিল না। শিক্ষক হিসেবে যোগ্যতা যা চাওয়া হয়েছিল, তা তার নেই। সেখানে তার সঙ্গে যারা নির্বাচন পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন,
তাদের মধ্যে অন্তত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ জন প্রার্থীর ৪টি করে প্রথম শ্রেণী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ জন প্রার্থীর ৪টি করে প্রথম শ্রেণী রয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ জন প্রার্থীর মধ্যে দুটি করে প্রথম শ্রেণী রয়েছে। এরই মধ্যে এই নিয়োগকে কেন্দ্র করে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন ও সমুন্নত রাখার ব্যাপারে শিক্ষকরা একত্রিত হয়েছেন। তারা উপাচার্য মহোদয়ের সঙ্গে দেখাও করেছেন, কিন্তু উপাচার্য মহোদয় জানিয়ে দিয়েছেন তিনি ওই ‘ভাগ্যবান’ প্রার্থীকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেবেন এবং ২৮ ফেব্রুয়ারির সিন্ডিকেটের মিটিংয়ে তা চূড়ান্ত করবেন।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে একের পর এক যেসব ঘটনা ঘটে চলছে, তা উচ্চ শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য আদৌ কোনো ভূমিকা রাখবে না। একজন কলেজে পড়ুয়া ছাত্র, কলেজে যেখানে গবেষণার সুযোগ কম, তিনি কলেজের শিক্ষক হতে পারেন বটে, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হন কীভাবে। পত্র-পত্রিকায় শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের এ অনিয়মের খবরটি পাঠ করে আমার মনে হয়েছে, এই নিয়োগের পেছনে স্বয়ং উপাচার্য মহোদয় কিংবা ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের ‘চাপ’ রয়েছে। মাত্র কিছুদিন আগে সদ্য প্রতিষ্ঠিত রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গণনিয়োগ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, উপাচার্য মহোদয় তাঁর নিজ ক্ষমতাবলে আপন দুই ভাই, নিজের মেয়ে, শ্যালিকার মেয়ে, ভাগ্নি, ভাইঝির দেবর, বন্ধুর মেয়ে, শ্যালক ও সেই সঙ্গে নিজের বাড়ি পীরগঞ্জ উপজেলার অনেক লোককে চাকরি দিয়েছেন। গত ২২ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ পত্র-পত্রিকায় ছাপা হয়। একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এটা কি কোনো শুভ সংবাদ? শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা ইউজিসির প্রতিক্রিয়ায়ই বা কি? মাননীয় রাষ্ট্রপতি এই নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর। অতীতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নিয়োগের ঘটনায় উপ-উপাচার্যকে তিনি তাঁর ক্ষমতাবলে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন। প্রয়াত ওই উপ-উপাচার্য ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের স্ত্রীকে একটি বিভাগে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। নিয়োগ কমিটিতে তিনিই সভাপতিত্ব করেছিলেন। উত্তরবঙ্গের এ নতুন বিশ্ববিদ্যালয়টির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সভাপতিত্ব করেছেন ভিসি স্বয়ং, যিনি নিজের ভাই, মেয়েসহ আত্মীয়-স্বজনদের চাকরি দিয়েছেন।
রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়টি নতুন। এখানে অনেক কিছু করার আছে। যোগ্য শিক্ষক তথা যোগ্য কর্মচারীও দরকার। শুরুতেই যদি অনিয়মের জালে আটকে যায় তাহলে শিক্ষার মানোন্নয়ন হবে কীভাবে? রাষ্ট্রপতি তো বারবার শিক্ষার মানোন্নয়নের কথা বলে আসছেন। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে হয়তো আত্মীয়করণ একটু বেশিই হয়েছে; কিন্তু সূক্ষ্মভাবে যদি পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদগুলোর ওপর নজর বুলানো যায় তাহলে দেখা যাবে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয়করণ ও আত্মীয়করণ হচ্ছে। এটা হয়েছে এ কারণে যে, ‘শিক্ষক রাজনীতিবিদদেরই’ ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যার অনার্স নেই, কোনো উচ্চতর গবেষণা নেই তিনি ভিসি হয়েছেন। এ সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩১ জন উপাচার্য, একজন করে উপ-উপাচার্য, একজন করে ট্রেজারার রয়েছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে দু’জন উপ-উপাচার্য রয়েছেন। যদিও দু’জন উপ-উপাচার্যের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে। বর্তমান সরকারের আমলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চপদগুলোয় যারা নিয়োগ পেয়েছেন তারা সবাই ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, কেউ দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কেউবা আবার বঙ্গবন্ধু পরিষদের সদস্য। দু’একজন উপাচার্য বাদে বাকিদের নামও কেউ কোনো দিন শোনেনি। শিক্ষক সমাজের কাছেও তারা ‘ভালো শিক্ষক বা ভালো গবেষক’ হিসেবেও পরিচিত নন। তাদের সবার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই আমি বলছি, তাদের অনেকেরই নিজস্ব কোনো টেক্সট বই নেই। এখানে শিক্ষাগত যোগ্যতা কিংবা গবেষণার চেয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে দলীয় আনুগত্যকে। আমি অনেক উপাচার্যকে চিনি, যারা চাকরি জীবন শুরু করেছিলেন অন্যত্র, বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়। সঙ্গত কারণেই তারা যখন উপাচার্য হন, তখন অনিয়মের আশ্রয় নেন বেশি। এ অনিয়মের খবর গত সপ্তাহে তিনটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ছাপা হয়েছে। প্রথমটি ঢাকা, দ্বিতীয়টি খুলনা, তৃতীয়টি রাজশাহী। আর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে একজন শিক্ষক নেতার মন্তব্যও ছাপা হয়েছে, যেখানে তিনি বলেছেন গত দু’বছরে নিয়ম-বহির্ভূতভাবে একশ’ ষাটজন শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে, যাদের কারণে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি হয়েছে। এর কোনো প্রতিবাদ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে দেয়া হয়নি।
আমরা বারবার লক্ষ্য করছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম হচ্ছে। সর্বশেষ অনিয়মে যুক্ত হয়েছে ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি অ্যান্ড ফার্মোকোলজি বিভাগে। অভিযোগ উঠেছে, যিনি মাস্টার্সে প্রথম হয়েছেন, তাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়নি। এ নিয়ে শিক্ষকদের একটি অংশ সংবাদ সম্মেলন পর্যন্ত করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় প্রতিটি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় (প্রভাষক ও সহকারী অধ্যাপক) এ ধরনের অভিযোগে এবং মামলার খবর পত্রিকায় ছাপা হয়। ফলে উপাচার্যের চেয়ে উপ-উপাচার্যের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বেশি। কেননা তিনি ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সভাপতিত্ব করেন। একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে মাস্টার্সে যখন প্রথম শ্রেণী পায়, বিদেশের একটি প্রকাশনা থাকে—এটাই তো তার শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা। তিনি শিক্ষক হবেন না কেন? বারবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে যখন বিতর্কের সৃষ্টি হয়, তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিয়ে আমি সন্দিহান হয়ে পড়ি। কিছুদিন আগে একটি সংবাদ পাঠ করেছিলাম (মানবজমিন, ২ আগস্ট, ২০১০)। তাতে বলা হয়েছিল, এশিয়ার শীর্ষ ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নেই। দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মান, গবেষণা তথা শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে (কনসেজো সুপেরিয়র ডি ইনভেসটিসিওন সিয়েন্টিফিকাস্থ-এর মতে) তাতে বুয়েটের অবস্থান ২৩, ব্র্যাকের ৫৬ আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬। ১২ হাজার বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে (বিশ্বব্যাপী), তাতে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাহাঙ্গীরনগর) অবস্থান ৮ হাজার ৭৮৯ নম্বরে। রাজশাহীর অবস্থান ৭ হাজার ১৯৬ নম্বরে আর ঢাকার ৫ হাজার ৫৩১ (বুয়েট ২৯১৯) নম্বরে।
অথচ ২০০৯ সালের ঢাকার অবস্থান ছিল ৪ হাজার ৯২২ নম্বরে। বুয়েট তার লেখাপড়ার মান বৃদ্ধি করতে পেরেছে। ৩ হাজার ৮০১ নম্বর থেকে ২ হাজার ৯১৬-তে দাঁড়িয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মান পরে যাওয়ার কারণ একটাই। কেননা যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। এক সময় আমিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। বিদেশি ডিগ্রি, বিদেশি প্রকাশনা নিয়েও আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিতর্কিত হয়েছেন সবচেয়ে বেশি। সেখানে বিজ্ঞপিত পদের বিপরীতে শিক্ষক নিয়োগে অত্যন্ত স্বাভাবিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে (আমার দেশ, ২৩ জানুয়ারি) জানা যায়, ওই বিভাগের ২৯টি বিভাগের বিজ্ঞপিত ১০৬টি পদের বিপরীতে এখন পর্যন্ত নিয়োগ দেয়া হয়েছে ১৮৫ জন। অথচ মজার ব্যাপার হচ্ছে, বর্তমান ভিসি বিগত জোট তথা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যুক্তি তুলেছিলেন অতিরিক্ত শিক্ষক তথা কর্মচারী নিয়োগের। এ নিয়ে তিনি আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। ইউজিসি যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল, আমি তার সদস্য ছিলাম। এখন স্বয়ং তার বিরুদ্ধেই অতিরিক্ত শিক্ষক তথা কর্মচারী নিয়োগের অভিযোগ উঠল। এর তদন্ত এখন কে করবে? খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা আরও মজার। উপাচার্য মহোদয় নিজে নিজেকে বাংলা বিভাগের সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত করেছেন। ডিন এ ব্যাপারে আপত্তি তুললে তিনি ডিনকেও সরিয়ে দেন। শিক্ষক সমিতি সেখানে আন্দোলনে গেছে।
এখন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে যা ঘটল, তা কোনো মতেই কাম্য নয়। একজন কলেজে পড়ুয়া ছাত্রকে কোনো মতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে গ্রহণ করে নেয়া যায় না। ব্যক্তিগতভাবে আমি শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহোদয়কে চিনি। সম্ভবত ইউজিসিতে থাকাকালীন কোনো এক সময় আমার সঙ্গে তার দেখা হয়েছে। পরবর্তীতে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়েও একদিন তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। কিছুদিন আগে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’দশক পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে তিনি গর্ব করেই বলেছিলেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যান্য যে কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে গবেষণা হয় বেশি। কথাটি যদি সত্য হয়ে থাকে, তাহলে তার কি নমুনা দেখালেন ভিসি মহোদয়? কলেজ ছাত্রকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বানিয়ে তিনি কি তার কাছ থেকে ভালো গবেষণা আশা করতে পারবেন? যিনি কলেজে পড়াশোনা করেছেন, তিনি সেখানে ভালো গ্রন্থাগার পাননি, ভালো শিক্ষকের সান্নিধ্য পাননি, তিনি কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পড়াবেন? যেখানে ৪টি প্রথম শ্রেণী পাওয়া একাধিক প্রার্থী রয়েছে, তাদের বাদ দিয়ে একজন কলেজ ছাত্রের (যার আদৌ ৪টি প্রথম শ্রেণী নেই) প্রার্থিতা চূড়ান্ত করেন, তাহলে বিতর্কের মাত্রা বাড়াবে। ভিসি মহোদয়, তিনি নিজে বিতর্কিত তো হবেনই, তার চেয়েও বড় কথা শিক্ষার মানের অবনতি ঘটাবে মারাত্মকভাবে। বিষয়টি উপাচার্য মহোদয়ের ব্যক্তিগত কোনো বিষয় নয়। এটা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে জড়িত। মাননীয় রাষ্ট্রপতি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর। তার সচিবালয়কে বিষয়টি অনুসন্ধান করে দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীও সিলেটের লোক। তাকেও ‘হস্তক্ষেপ’ করার অনুরোধ করছি। ব্যক্তিগত ইচ্ছা-অনিচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা, আত্মীয়করণ, দলীয়করণ যদি বন্ধ করা না যায়, তাহলে দেশের ৩১টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অচিরেই শিক্ষা ক্ষেত্রে বড় ধরনের ধস নামবে। মাননীয় রাষ্ট্রপতি যতই উচ্চ শিক্ষার মানোন্নয়নের কথা বলেন, এই মানোন্নয়ন কোনো দিনই সম্ভব হবে না। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ‘অবৈধ নিয়োগ’-এ রাষ্ট্রপতি হস্তক্ষেপ করেছিলেন। আজ সম্ভবত সে রকম একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের একটি নিয়োগকে কেন্দ্র করে।
লেখক : বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক সদস্য
tsrahmanbd@yahoo.com
তাদের মধ্যে অন্তত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৪ জন প্রার্থীর ৪টি করে প্রথম শ্রেণী, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ জন প্রার্থীর ৪টি করে প্রথম শ্রেণী রয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭ জন প্রার্থীর মধ্যে দুটি করে প্রথম শ্রেণী রয়েছে। এরই মধ্যে এই নিয়োগকে কেন্দ্র করে ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মাঝে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি অক্ষুণ্ন ও সমুন্নত রাখার ব্যাপারে শিক্ষকরা একত্রিত হয়েছেন। তারা উপাচার্য মহোদয়ের সঙ্গে দেখাও করেছেন, কিন্তু উপাচার্য মহোদয় জানিয়ে দিয়েছেন তিনি ওই ‘ভাগ্যবান’ প্রার্থীকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেবেন এবং ২৮ ফেব্রুয়ারির সিন্ডিকেটের মিটিংয়ে তা চূড়ান্ত করবেন।
বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে একের পর এক যেসব ঘটনা ঘটে চলছে, তা উচ্চ শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য আদৌ কোনো ভূমিকা রাখবে না। একজন কলেজে পড়ুয়া ছাত্র, কলেজে যেখানে গবেষণার সুযোগ কম, তিনি কলেজের শিক্ষক হতে পারেন বটে, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হন কীভাবে। পত্র-পত্রিকায় শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের এ অনিয়মের খবরটি পাঠ করে আমার মনে হয়েছে, এই নিয়োগের পেছনে স্বয়ং উপাচার্য মহোদয় কিংবা ক্ষমতাবান ব্যক্তিদের ‘চাপ’ রয়েছে। মাত্র কিছুদিন আগে সদ্য প্রতিষ্ঠিত রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের গণনিয়োগ নিয়ে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, উপাচার্য মহোদয় তাঁর নিজ ক্ষমতাবলে আপন দুই ভাই, নিজের মেয়ে, শ্যালিকার মেয়ে, ভাগ্নি, ভাইঝির দেবর, বন্ধুর মেয়ে, শ্যালক ও সেই সঙ্গে নিজের বাড়ি পীরগঞ্জ উপজেলার অনেক লোককে চাকরি দিয়েছেন। গত ২২ জানুয়ারি এ সংক্রান্ত একটি সংবাদ পত্র-পত্রিকায় ছাপা হয়। একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এটা কি কোনো শুভ সংবাদ? শিক্ষা মন্ত্রণালয় বা ইউজিসির প্রতিক্রিয়ায়ই বা কি? মাননীয় রাষ্ট্রপতি এই নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর। অতীতে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক নিয়োগের ঘটনায় উপ-উপাচার্যকে তিনি তাঁর ক্ষমতাবলে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়েছিলেন। প্রয়াত ওই উপ-উপাচার্য ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজের স্ত্রীকে একটি বিভাগে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দিয়েছিলেন। নিয়োগ কমিটিতে তিনিই সভাপতিত্ব করেছিলেন। উত্তরবঙ্গের এ নতুন বিশ্ববিদ্যালয়টির নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সভাপতিত্ব করেছেন ভিসি স্বয়ং, যিনি নিজের ভাই, মেয়েসহ আত্মীয়-স্বজনদের চাকরি দিয়েছেন।
রংপুর বিশ্ববিদ্যালয়টি নতুন। এখানে অনেক কিছু করার আছে। যোগ্য শিক্ষক তথা যোগ্য কর্মচারীও দরকার। শুরুতেই যদি অনিয়মের জালে আটকে যায় তাহলে শিক্ষার মানোন্নয়ন হবে কীভাবে? রাষ্ট্রপতি তো বারবার শিক্ষার মানোন্নয়নের কথা বলে আসছেন। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্ষেত্রে হয়তো আত্মীয়করণ একটু বেশিই হয়েছে; কিন্তু সূক্ষ্মভাবে যদি পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদগুলোর ওপর নজর বুলানো যায় তাহলে দেখা যাবে প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে দলীয়করণ ও আত্মীয়করণ হচ্ছে। এটা হয়েছে এ কারণে যে, ‘শিক্ষক রাজনীতিবিদদেরই’ ভিসি হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। যার অনার্স নেই, কোনো উচ্চতর গবেষণা নেই তিনি ভিসি হয়েছেন। এ সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। ৩১টি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩১ জন উপাচার্য, একজন করে উপ-উপাচার্য, একজন করে ট্রেজারার রয়েছেন। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়, যেখানে দু’জন উপ-উপাচার্য রয়েছেন। যদিও দু’জন উপ-উপাচার্যের নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছিল বিগত চারদলীয় জোট সরকারের আমলে। বর্তমান সরকারের আমলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চপদগুলোয় যারা নিয়োগ পেয়েছেন তারা সবাই ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, কেউ দলের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কেউবা আবার বঙ্গবন্ধু পরিষদের সদস্য। দু’একজন উপাচার্য বাদে বাকিদের নামও কেউ কোনো দিন শোনেনি। শিক্ষক সমাজের কাছেও তারা ‘ভালো শিক্ষক বা ভালো গবেষক’ হিসেবেও পরিচিত নন। তাদের সবার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই আমি বলছি, তাদের অনেকেরই নিজস্ব কোনো টেক্সট বই নেই। এখানে শিক্ষাগত যোগ্যতা কিংবা গবেষণার চেয়ে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে দলীয় আনুগত্যকে। আমি অনেক উপাচার্যকে চিনি, যারা চাকরি জীবন শুরু করেছিলেন অন্যত্র, বিশ্ববিদ্যালয়ে নয়। সঙ্গত কারণেই তারা যখন উপাচার্য হন, তখন অনিয়মের আশ্রয় নেন বেশি। এ অনিয়মের খবর গত সপ্তাহে তিনটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে ছাপা হয়েছে। প্রথমটি ঢাকা, দ্বিতীয়টি খুলনা, তৃতীয়টি রাজশাহী। আর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে একজন শিক্ষক নেতার মন্তব্যও ছাপা হয়েছে, যেখানে তিনি বলেছেন গত দু’বছরে নিয়ম-বহির্ভূতভাবে একশ’ ষাটজন শিক্ষক নিয়োগ হয়েছে, যাদের কারণে শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি হয়েছে। এর কোনো প্রতিবাদ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে দেয়া হয়নি।
আমরা বারবার লক্ষ্য করছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে অনিয়ম হচ্ছে। সর্বশেষ অনিয়মে যুক্ত হয়েছে ক্লিনিক্যাল ফার্মেসি অ্যান্ড ফার্মোকোলজি বিভাগে। অভিযোগ উঠেছে, যিনি মাস্টার্সে প্রথম হয়েছেন, তাকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়নি। এ নিয়ে শিক্ষকদের একটি অংশ সংবাদ সম্মেলন পর্যন্ত করেছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রায় প্রতিটি নিয়োগ প্রক্রিয়ায় (প্রভাষক ও সহকারী অধ্যাপক) এ ধরনের অভিযোগে এবং মামলার খবর পত্রিকায় ছাপা হয়। ফলে উপাচার্যের চেয়ে উপ-উপাচার্যের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে বেশি। কেননা তিনি ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় সভাপতিত্ব করেন। একজন শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে মাস্টার্সে যখন প্রথম শ্রেণী পায়, বিদেশের একটি প্রকাশনা থাকে—এটাই তো তার শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতা। তিনি শিক্ষক হবেন না কেন? বারবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে যখন বিতর্কের সৃষ্টি হয়, তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান নিয়ে আমি সন্দিহান হয়ে পড়ি। কিছুদিন আগে একটি সংবাদ পাঠ করেছিলাম (মানবজমিন, ২ আগস্ট, ২০১০)। তাতে বলা হয়েছিল, এশিয়ার শীর্ষ ১০০টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নেই। দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মান, গবেষণা তথা শিক্ষা কার্যক্রম নিয়ে যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে (কনসেজো সুপেরিয়র ডি ইনভেসটিসিওন সিয়েন্টিফিকাস্থ-এর মতে) তাতে বুয়েটের অবস্থান ২৩, ব্র্যাকের ৫৬ আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৬। ১২ হাজার বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে (বিশ্বব্যাপী), তাতে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাহাঙ্গীরনগর) অবস্থান ৮ হাজার ৭৮৯ নম্বরে। রাজশাহীর অবস্থান ৭ হাজার ১৯৬ নম্বরে আর ঢাকার ৫ হাজার ৫৩১ (বুয়েট ২৯১৯) নম্বরে।
অথচ ২০০৯ সালের ঢাকার অবস্থান ছিল ৪ হাজার ৯২২ নম্বরে। বুয়েট তার লেখাপড়ার মান বৃদ্ধি করতে পেরেছে। ৩ হাজার ৮০১ নম্বর থেকে ২ হাজার ৯১৬-তে দাঁড়িয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মান পরে যাওয়ার কারণ একটাই। কেননা যোগ্য শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। এক সময় আমিও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলাম। বিদেশি ডিগ্রি, বিদেশি প্রকাশনা নিয়েও আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারিনি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিতর্কিত হয়েছেন সবচেয়ে বেশি। সেখানে বিজ্ঞপিত পদের বিপরীতে শিক্ষক নিয়োগে অত্যন্ত স্বাভাবিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছে। সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে (আমার দেশ, ২৩ জানুয়ারি) জানা যায়, ওই বিভাগের ২৯টি বিভাগের বিজ্ঞপিত ১০৬টি পদের বিপরীতে এখন পর্যন্ত নিয়োগ দেয়া হয়েছে ১৮৫ জন। অথচ মজার ব্যাপার হচ্ছে, বর্তমান ভিসি বিগত জোট তথা তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে যুক্তি তুলেছিলেন অতিরিক্ত শিক্ষক তথা কর্মচারী নিয়োগের। এ নিয়ে তিনি আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। ইউজিসি যে তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল, আমি তার সদস্য ছিলাম। এখন স্বয়ং তার বিরুদ্ধেই অতিরিক্ত শিক্ষক তথা কর্মচারী নিয়োগের অভিযোগ উঠল। এর তদন্ত এখন কে করবে? খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঘটনা আরও মজার। উপাচার্য মহোদয় নিজে নিজেকে বাংলা বিভাগের সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত করেছেন। ডিন এ ব্যাপারে আপত্তি তুললে তিনি ডিনকেও সরিয়ে দেন। শিক্ষক সমিতি সেখানে আন্দোলনে গেছে।
এখন শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে যা ঘটল, তা কোনো মতেই কাম্য নয়। একজন কলেজে পড়ুয়া ছাত্রকে কোনো মতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে গ্রহণ করে নেয়া যায় না। ব্যক্তিগতভাবে আমি শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মহোদয়কে চিনি। সম্ভবত ইউজিসিতে থাকাকালীন কোনো এক সময় আমার সঙ্গে তার দেখা হয়েছে। পরবর্তীতে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়েও একদিন তার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। কিছুদিন আগে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দু’দশক পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানে তিনি গর্ব করেই বলেছিলেন, শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্যান্য যে কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে গবেষণা হয় বেশি। কথাটি যদি সত্য হয়ে থাকে, তাহলে তার কি নমুনা দেখালেন ভিসি মহোদয়? কলেজ ছাত্রকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বানিয়ে তিনি কি তার কাছ থেকে ভালো গবেষণা আশা করতে পারবেন? যিনি কলেজে পড়াশোনা করেছেন, তিনি সেখানে ভালো গ্রন্থাগার পাননি, ভালো শিক্ষকের সান্নিধ্য পাননি, তিনি কীভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পড়াবেন? যেখানে ৪টি প্রথম শ্রেণী পাওয়া একাধিক প্রার্থী রয়েছে, তাদের বাদ দিয়ে একজন কলেজ ছাত্রের (যার আদৌ ৪টি প্রথম শ্রেণী নেই) প্রার্থিতা চূড়ান্ত করেন, তাহলে বিতর্কের মাত্রা বাড়াবে। ভিসি মহোদয়, তিনি নিজে বিতর্কিত তো হবেনই, তার চেয়েও বড় কথা শিক্ষার মানের অবনতি ঘটাবে মারাত্মকভাবে। বিষয়টি উপাচার্য মহোদয়ের ব্যক্তিগত কোনো বিষয় নয়। এটা একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে জড়িত। মাননীয় রাষ্ট্রপতি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর। তার সচিবালয়কে বিষয়টি অনুসন্ধান করে দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি। একই সঙ্গে শিক্ষামন্ত্রীও সিলেটের লোক। তাকেও ‘হস্তক্ষেপ’ করার অনুরোধ করছি। ব্যক্তিগত ইচ্ছা-অনিচ্ছা, আকাঙ্ক্ষা, আত্মীয়করণ, দলীয়করণ যদি বন্ধ করা না যায়, তাহলে দেশের ৩১টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অচিরেই শিক্ষা ক্ষেত্রে বড় ধরনের ধস নামবে। মাননীয় রাষ্ট্রপতি যতই উচ্চ শিক্ষার মানোন্নয়নের কথা বলেন, এই মানোন্নয়ন কোনো দিনই সম্ভব হবে না। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ‘অবৈধ নিয়োগ’-এ রাষ্ট্রপতি হস্তক্ষেপ করেছিলেন। আজ সম্ভবত সে রকম একটি পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের একটি নিয়োগকে কেন্দ্র করে।
লেখক : বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক সদস্য
tsrahmanbd@yahoo.com
0 comments:
Post a Comment