রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

আরেকটি যুদ্ধ কি অনিবার্য?

মধ্যপ্রাচ্য কিংবা উত্তর আফ্রিকায় আরেকটি যুদ্ধ কি অনিবার্য? ভূমধ্যসাগরে দুটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজ প্রেরণ এবং সেই সঙ্গে লিবিয়ার পরিস্থিতি ক্রমেই জটিল হওয়ায় একটি যুদ্ধের আশঙ্কা নিয়ে নানা মহলে কথা হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্য এমনই একটি যুদ্ধ প্রত্যক্ষ করেছিল আজ থেকে আট বছর আগে, ২০০৩ সালে। ইরাকের কাছে তথাকথিত WMD (Weapons of Mass Destruction) বা ধ্বংসাত্মক মারণাস্ত্র রয়েছে, এই অভিযোগ তুলে ইঙ্গ-মার্কিন বাহিনী ইরাক আক্রমণ করেছিল। যুদ্ধের মাত্র তিন সপ্তাহের মাথায় ৯ এপ্রিল ইঙ্গ-মার্কিন বাহিনী বাগদাদ দখল করে নিয়েছিল। ইরাক আক্রমণের আগে ১৭ মার্চ এক টিভি বক্তৃতায় তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ
বলেছিলেন, 'We will deliver the food and medicine you need. We will tear down the apparatus of terror and we will help you to build a new Iraq that is prosperous and free.' কিন্তু ইরাক যুদ্ধের আট বছরের যদি হিসাবের খাতা মিলানো যায়, তাহলে কি বলা যাবে, সেখানে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়েছে? কিংবা সেখানে কি স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে? একটি স্বাধীন ও সমৃদ্ধিশালী ইরাকের কি জন্ম হয়েছে?

এর জবাব একটাই না। সেখানে স্থিতিশীলতা ফিরে আসেনি। একটি সরকার গঠিত হয়েছে বটে, কিন্তু গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়ে গেছে। সবচেয়ে বড় কথা, যে অভিযোগ তুলে ইরাক আক্রমণ করা হয়েছিল, সেই ডগউ বা মারণাস্ত্র আর ইরাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। কিন্তু ইরাক ধ্বংস হয়ে গেছে। কত লাখ শিশু ওষুধ এবং শিশুখাদ্যের অভাবে মারা গেছে, তার হিসাব কে করবে? শিশু হত্যার জন্য জর্জ বুশের বিচার কে করবে? এটা তো এখন স্পষ্ট, ইরাকের তেলের জন্য বুশ সেই যুদ্ধ শুরু করেছিলেন (বিশ্বের দ্বিতীয় তেলের রিজার্ভ ইরাকে, ১১৩ বিলিয়ন ব্যারেল)। আর ইরাক ধ্বংস হয়ে যাওয়ার পর দেশটির পুনর্গঠনের দায়িত্ব পেয়েছিল 'বেকটেল গ্রুপ'। এরা যুদ্ধ-পরবর্তী ইরাকের যোগাযোগব্যবস্থা, বিদ্যুৎ বিতরণ এবং পানি ও পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থা পুনর্গঠনের দায়িত্ব পেয়েছিল। বুশের ডেপুটি, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট ডিক চেনি একসময় 'বেকটেল গ্রুপ'-এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন। বুশের ইরাক আক্রমণের উদ্দেশ্য কী ছিল, তা এখন আর কাউকে বলে দিতে হয় না। আজ ইরাকের মতোই একটি পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে লিবিয়ায়। লিবিয়ার অভ্যন্তরীণ সংকট সেখানে বড় ধরনের মানবিক বিপর্যয় সৃষ্টি করেছে। লিবিয়ার সংকটে সেখানে এক হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে। উত্তর আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ, নাইজার ও মালি থেকে ভাড়াটে সৈন্য আনা হয়েছে, যারা বিদেশি নাগরিকদের হত্যা করছে। লিবিয়ার সীমান্তে 'নো-ম্যান্স ল্যান্ড'-এ লাখ লাখ মানুষ এখন অবস্থান করছে শুধু তাদের নিজ নিজ দেশে প্রত্যাবর্তনের আশায়। এমনই এক পরিস্থিতিতে 'মানবিক কারণে' একটি সামরিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা সৃষ্টি হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র এ ধরনের 'মানবিক কারণে' হস্তক্ষেপ করে থাকে_এর ইতিহাস রয়েছে। ১৯৯৫ সালে বসনিয়ায় পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্যোগে ন্যাটোর বিমানবহর সার্বীয় হেডকোয়ার্টারে বিমান হামলা চালিয়েছিল। এর আগে ১৯৯৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সৈন্যরা সোমালিয়ায় প্রবেশ করেছিল। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের 'সোমালিয়া অভিযান' খুব সুখের হয়নি।

সাম্প্রতিককালে উত্তর আফ্রিকা তথা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে যে বিপ্লব সৃষ্টি হয়েছে, তার ঢেউ এসে লেগেছে লিবিয়ায়ও। তবে পার্থক্যটা হলো, তিউনিসিয়ায় বেন আলী এবং মিসরে হোসনি মুবারক প্রবল গণ-আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে দিলেও ব্যতিক্রম লিবিয়ার ৪২ বছরের শাসক মুয়াম্মার গাদ্দাফি। তিনি 'শেষ রক্তবিন্দু' দিয়ে যুদ্ধ করে যাওয়ার প্রত্যয়ের কথা ঘোষণা করেছেন। ১৯৬৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর আজও তিনি নিজেকে একজন 'বিপ্লবী' হিসেবে মনে করেন। তিনি ক্ষমতা ছাড়বেন না। ফলে তাঁকে উৎখাত করতে হলে যুক্তরাষ্ট্রের সেখানে বিমান হামলা(?) ছাড়া আর কোনো বিকল্প নেই। ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র এ অঞ্চলে দুটি যুদ্ধজাহাজ পাঠিয়েছে। যুদ্ধজাহাজ দুটি বিমানবাহী জাহাজ নয়। আক্রমণের জন্য এই জাহাজ দুটি ব্যবহার করা যায়। তবে এ অঞ্চলের কাছাকাছি লোহিত সাগরে রয়েছে বিমানবাহী জাহাজ USS Enterprise। সেই সঙ্গে আরব সাগরে রয়েছে অন্য একটি বিমানবাহী জাহাজ USS carl Vinson। যুক্তরাষ্ট্রের নৌঘাঁটি রয়েছে সিসিলির সিগোনেল্লা এবং ক্রিট দ্বীপপুঞ্জের সৌদা বেতে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান ঘাঁটি রয়েছে ইতালির আভিয়ানো এবং তুরস্কের ইনসিরলিকে। যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ষষ্ঠ ফ্রিগেটের ঘাঁটি রয়েছে ইতালিতে, আর বাহরাইনে রয়েছে পঞ্চম ফ্রিগেটের ঘাঁটি। সুতরাং ক্ষেত্র তৈরি করাই আছে। এখন শুধু নির্দেশের অপেক্ষা।

আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ছাত্র মাত্রই বুশ ডকট্রিন সম্পর্কে সাধারণ ধারণা রাখেন। এই মতবাদেই বলা হয়েছে preemptive attack-এর কথা, অর্থাৎ 'আগাম আক্রমণ'। এই 'আগাম আক্রমণ'-এর সিদ্ধান্ত তখনই নেওয়া হয়, যখন শত্রু পক্ষ দ্বারা আক্রমণ আসন্ন এবং সব সময়ই একধরনের আক্রমণের সম্ভাবনা রয়েছে। ২০০২ সালের সেপ্টেম্বরে বুশের জাতীয় নিরাপত্তা পরিকল্পনায় এই মতবাদটি গ্রহণ করা হয়। এই মতবাদের মূলকথা হচ্ছে_বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্য প্রতিষ্ঠায় কোনো শক্তি যদি প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হয়, তাহলে ওই প্রতিদ্বন্দ্বীকে আক্রমণ করার অধিকার থাকবে যুক্তরাষ্ট্রের। বুশ এই 'আগাম আক্রমণ'-এর মতবাদ প্রয়োগ করেছিল ইরাকে। ওই আক্রমণের জন্য জাতিসংঘের কোনো অনুমতিও নেয়নি যুক্তরাষ্ট্র, যা আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের শামিল। আজ লিবিয়ার পরিস্থিতি সেদিকেই যাচ্ছে। ওবামা হোয়াইট হাউসে ক্ষমতাসীন হয়ে তাঁর পূর্বসূরি বুশের অনেক রীতি বাতিল করেছেন। ইতিমধ্যে ইরাক থেকে 'কমব্যাট সোলজার্স', অর্থাৎ যুদ্ধরত সেনাবাহিনী প্রত্যাহার করা হয়েছে। জুলাই মাসে আফগানিস্তান থেকেও সৈন্য প্রত্যাহার করার কথা। কিন্তু 'আগাম আক্রমণ'-এর ধারণা পরিত্যাগ করেছেন বলে মনে হয় না। যদিও ওবামা তাঁর 'কায়রো ভাষণ'-এর মধ্য দিয়ে মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে 'সম্পর্কের নতুন একটি ধারা' সৃষ্টির চেষ্টা করছেন। এ ক্ষেত্রে শেষ পর্যন্ত গাদ্দাফিকে উৎখাত করার জন্য ওবামা যদি বিমান আক্রমণের নির্দেশ দেন, তাহলে তা মুসলিম বিশ্বে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। পশ্চিমা বিশ্বের জন্য সত্যিকার অর্থেই 'লিবিয়া সংকট' একটি বড় ধরনের জটিলতা সৃষ্টি করেছে। ওবামা এবং ইউরোপীয় নেতারা গাদ্দাফিকে ক্ষমতা ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ জানালেও সেটাকে এতটুকুও গুরুত্ব দেননি গাদ্দাফি। কিন্তু সবাই যে লিবিয়ায় বিমান আক্রমণের পক্ষে, তা-ও নয়। ব্রিটেন কিংবা কানাডা লিবিয়ায় বিমান আক্রমণ সমর্থন করলেও ইতালি এবং জার্মানি জানিয়ে দিয়েছে, তারা কোনো ধরনের বিমান আক্রমণ সমর্থন করবে না। নিরাপত্তা পরিষদেও যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষে পূর্ণ সমর্থন নেই। চীন এবং রাশিয়ার সমর্থনও পাবে না যুক্তরাষ্ট্র। সুতরাং ওবামার পক্ষে এ ধরনের একটি সিদ্ধান্ত নেওয়াও বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। কোনো কোনো মহল থেকে অলিখিত একটি 'নো-ফ্লাই জোন' তৈরির কথা বলা হয়েছে। অর্থাৎ লিবিয়ার আকাশে সব ধরনের বিমান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া। ফলে লিবিয়ার বিমান হয়তো উড়বে না, কিন্তু তাতে যে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তার অবসান হবে না।

তিউনিসিয়া ও মিসরের পরিস্থিতির সঙ্গে লিবিয়ার পরিস্থিতিকে মিলানো যাবে না। গাদ্দাফি নিজে পদত্যাগের যেকোনো সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন। কেননা তিনি বলেছেন, তিনি লিবিয়ায় কোনো সরকারি পদে নেই। এটা সত্য। লিবিয়ায় তাঁর পদ হচ্ছে 'বিপ্লবের নেতা'। এই 'বিপ্লবের নেতা' কার কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেবেন? কোনো সংবিধানও নেই, যেখানে পরবর্তী নেতা খোঁজা সম্ভব হবে। তিউনিসিয়া ও মিসরে এ ধরনের সমস্যা নেই। তিউনিসিয়ায় আগামী ২৪ জুলাই সংসদ নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। আর মিসরেও নতুন সংবিধানের পক্ষে একটি গণভোট হবে। স্পষ্টতই তিউনিসিয়া ও মিসরে একধরনের নিয়মতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। কিন্তু লিবিয়ার প্রেক্ষাপট সম্পূর্ণ ভিন্ন। এখানে তথাকথিত নির্বাচনেরও কোনোই সম্ভাবনা নেই। শেষ পর্যন্ত লিবিয়া দুই ভাগ হয়ে যায় কি না, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। কেননা পূর্বাঞ্চলে গাদ্দাফির কোনো কর্তৃত্ব নেই। সেখানে ইতিমধ্যে মুক্তাঞ্চল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও সেখানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সাবেক এক বিচারমন্ত্রীর নেতৃত্বে। ঐতিহাসিকভাবেই এই পূর্বাঞ্চল গাদ্দাফিবিরোধী হিসেবে পরিচিত। ক্ষমতাচ্যুত বাদশাহ ইদ্রিস (১৯৬৯) এই পূর্বাঞ্চলের মানুষ। এখন পূর্বাঞ্চলে প্রতিষ্ঠিত একটি সরকারকে স্বীকৃতি দিয়ে পশ্চিমা বিশ্ব লিবিয়াকে ভাগ করার উদ্যোগ নিতে পারে। কেননা পূর্বাঞ্চলেও তেল রয়েছে। আর পশ্চিমা বিশ্ব কিছুটা হলেও লিবিয়ার তেলের ওপর নির্ভরশীল। তেলের সরবরাহ নিশ্চিত করার স্বার্থেই যুক্তরাষ্ট্র এ ধরনের একটি উদ্যোগ নিতে পারে। তবে একটি 'রাজনৈতিক সমাধান'-এর কথাও শোনা যাচ্ছে। ভেনিজুয়েলার প্রেসিডেন্ট হুগো শাভেজ এই 'রাজনৈতিক সমাধান'-এর কথা বলেছেন বটে, কিন্তু তার রূপরেখা তিনি উপস্থাপন করেননি। এ ক্ষেত্রে মূল সমস্যা আটকে আছে এক জায়গায়_রাজনৈতিক সমাধানটা কী গাদ্দাফিকে নিয়ে, নাকি গাদ্দাফিকে বাদ দিয়ে?

৩ মার্চ ওয়াশিংটনে ওবামা এবং মেক্সিকোর প্রেসিডেন্ট ফিলিপ ক্যালডেরোন যখন সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন, তখন ওবামা লিবিয়ায় সামরিক পদক্ষেপের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেননি। তবে সত্যি সত্যিই যদি ওবামা এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেন, তাহলে গোটা মুসলিম বিশ্বে এর প্রতিক্রিয়া দেখা দেবে। এমনিতেই মুসলিম বিশ্বে যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী একটি জনমত রয়েছে। ওবামা মুসলিম বিশ্বের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করার চেষ্টা চালালেও লিবিয়ায় যেকোনো সামরিক পদক্ষেপ মুসলিম বিশ্বে তাঁর ইমেজ নষ্ট করবে। এতে বরং আল-কায়েদার মতো সংগঠন আরো শক্তিশালী হবে। মধ্যপ্রাচ্যে আল-কায়েদা অতটা শক্তিশালী না হলেও উত্তর আফ্রিকায় অত্যন্ত শক্তিশালী। মনে রাখতে হবে, আল-কায়েদার জন্ম এই অঞ্চলে। উত্তর আফ্রিকার মাগরেবভুক্ত অঞ্চলে গঠিত হয়েছিল Al-Qaeda in the Islamic Maghreb (AQIM)। এদের ধর্মীয় নেতা ছিলেন আবদেল মালেক ড্রকদেল (Abdel Malek Droukdel)। আলজেরিয়াভিত্তিক ওই সংগঠনটির কট্টরপন্থীরা ২০০৭ সালে গঠন করে Salafist Group for Preaching & Combat (GSPC)। এই ঝেচঈ-র পরিবর্তিত নামই হচ্ছে আল-কায়েদা। আল-কায়েদার দ্বিতীয় ব্যক্তি জাওয়াহিরি একসময় মিসরের ইসলামিক ব্রাদারহুডের নেতা ছিলেন। আলজেরিয়ার বাইরে মালি, মৌরিতানিয়া এবং লিবিয়ায়ও আল-কায়েদার তৎপরতা রয়েছে। আজ যদি ত্রিপোলিতে বিমান হামলা হয়, তাহলে নিঃসন্দেহে তা এ অঞ্চলে মার্কিনবিরোধী জনমতকে উসকে দেবে। আর এতে আল-কায়েদাই শক্তিশালী হবে। সুতরাং লিবিয়ায় একটি যুদ্ধ অনিবার্য হলেও ওবামার পক্ষে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়াটা সত্যিই কঠিন। এ ক্ষেত্রে জাতিসংঘের ভূমিকাও উল্লেখযোগ্য নয়। লিবিয়ার সংকট আরব বিশ্বের জন্য একটি 'টেস্ট কেস'। গাদ্দাফি যদি টিকে যান, তাহলে অন্য আরব বিশ্বের একনায়কতন্ত্রী শাসকরা এতে আরো উৎসাহী হবেন। আর যদি হেরে যান, তাহলে আরব বিশ্বের সর্বত্রই ব্যাপক পরিবর্তন আসবে।

লেখক : অধ্যাপক, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়; এবং আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিশ্লেষক
tsrahmanbd@yahoo.com

0 comments:

Post a Comment