রাজনীতি, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং সমসাময়িক ঘটনাবলীর বিশ্লেষণ সংক্রান্ত অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমানের একটি ওয়েবসাইট। লেখকের অনুমতি বাদে এই সাইট থেকে কোনো লেখা অন্য কোথাও আপলোড, পাবলিশ কিংবা ছাপাবেন না। প্রয়োজনে যোগাযোগ করুন লেখকের সাথে

গাবুরা থেকে কোপেনহেগেন কতদূর?

বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের একটি ছোট্ট গ্রাম গাবুরা থেকে ডেনমার্কের রাজধানী কোপেনহেগেনের দূরত্ব কত, তা আমার জানা নেই। কিন্তু এই দুই অঞ্চলের দুটি সংবাদ আমার জানা আছে। গেল ২৭ নভেম্বর ঈদুল আজহার আগের দিন সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছিল একটি সংবাদ। তাতে বলা হয়েছিল, আইলাউপদ্রুত তিন লাখ মানুষ এবারও ঈদ আনন্দ থেকে বঞ্চিত। সাতক্ষীরা থেকে সংবাদকর্মী আমাদের জানিয়েছিলেন, ২৫ মের আইলার আঘাতের পর শ্যামনগর, গাবুরা কিংবা পার্শ্বেমারি গ্রামের লাখ লাখ মানুষের ঈদের আনন্দ নেই। আইলার আঘাতের ছয় মাস পরও এ অঞ্চলের মানুষের ঘর নেই, বাড়ি নেই, পেটে পর্যাপ্ত খাদ্য নেই
, নেই কৃষি জমি। ভাঙা বেড়িবাঁধ দিয়ে এখনও পানি আসে আর যায়। জলাবদ্ধতা দূর হয়নি দীর্ঘ ছয় মাস পরও। আইলাউপদ্রুত মানুষের দুর্ভোগের খবর যখন আমরা পাঠ করছি, তখন পাঠ করছি আরও একটি খবর- কোপেনহেগেনে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বিশ্বের উষ্ণতা রোধসংক্রান্ত আরেকটি শীর্ষ সম্মেলন। সেখানে নতুন একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা। বিশ্বের উষ্ণতা বেড়ে যাচ্ছে। এর ফলে একদিকে যেমনি বাড়ছে সাগর-মহাসাগরের পানির পরিমাণ, অন্যদিকে বাড়ছে ঘূর্ণিঝড় আর জলোচ্ছ্বাসের সংখ্যা। বাংলাদেশে যে আইলা ও সিডরে আক্রান্ত হচ্ছে, বিশ্বের উষ্ণতা বেড়ে যাওয়ার এটা একটা বড় কারণ। বিশ্বের উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য কার্বন-ডাই অক্সাইড নির্গমন হারকে দায়ী করা হয়েছিল। এ নিয়ে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো ও উন্নত বিশ্ব পরস্পর বিরোধী অবস্থান গ্রহণ করেছিল। তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো বিশ্বের উষ্ণতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী করেছে যুক্তরাষ্ট্রসহ শিল্পোন্নত দেশগুলোকে, যারা কার্বনডাই অক্সাইড বেশি ছড়ায়। যুক্তরাষ্ট্র যেখানে বছরে কার্বনডাই অক্সাইড নির্গমন করে ৫ দশমিক ৯ মিলিয়ন টন। সেখানে তাইওয়ানের মতো নব্য শিল্পোন্নত দেশ ছড়ায় ৩০৮ মিলিয়ন টন। বিশ্বের উষ্ণতা রোধকল্পে জাপানের প্রাচীন রাজধানী কিয়োটোতে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ১৯৯৭ সালের ডিসেম্বরে। যুক্তরাষ্ট্র ওই চুক্তিতে স্বাক্ষর করার পরও চুক্তিটি কার্যকর হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র ওই চুক্তি থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করে নিলে চুক্তি বাস্তবায়নে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছিল। এরপর ২০০৭ সালের ডিসেম্বরে ইন্দোনেশিয়ার বালিতে বিশ্বের উষ্ণতা রোধসংক্রান্ত আরেকটি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেখানে সিদ্ধান্ত হয়েছে কোপেনহেগেন সম্মেলনেই একটি চুক্তি স্বাক্ষর করতে হবে। কিন্তু গত প্রায় দু’বছর বিশ্বের উষ্ণতা রোধ নিয়ে যত সম্মেলন হয়েছে, যত গবেষণাপত্র উত্থাপন করা হয়েছে, তত বেশি চুক্তির ব্যাপারে অনিশ্চয়তার সৃষ্টি হয়েছে। মূলত সমস্যা ছিল উন্নত দেশগুলোকে নিয়ে। তারা কোন চুক্তিতে উপনীত হতে রাজি ছিল না। চলতি বছরে জি-৮ ও জি-২০ এর দু’দুটো শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়- একটি ইতালির লা-আকুইলায়, অপরটি গেল নভেম্বরে স্কটল্যান্ডের সেইন্ট অ্যান্ডুজ শহরে। ধনীদের ক্লাব হিসেবে পরিচিত জি-২০ এর শীর্ষ সম্মেলন শেষ হয়েছিল ফটোসেশনের মধ্য দিয়ে। লা-আকুইলায় একটি সিদ্ধান্ত তারা নিয়েছিলেন বটে (২০৫০ সালের মধ্যে কার্বন নির্গমনের পরিমাণ ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ কমানো), কিন্তু তা ছিল হাস্যকর। বিশ্বের উষ্ণতা যদি কমানো না যায় তাহলে ২০৫০ সালের মধ্যে মালদ্বীপ ও তুভালুর মতো দ্বীপ রাষ্ট্রগুলো পৃথিবীর বুক থেকে চিরদিনের জন্য হারিয়ে যাবে। তাই কোপেনহেগেন সম্মেলন নিয়ে একটি অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। তবে নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের দুটো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত দেখে মনে হচ্ছে, শেষ পর্যন্ত কোপেনহেগেনে একটি চুক্তি হতে পারে। চীন ঘোষণা করেছে, ২০০৫ সালের হিসাব ধরে ২০২০ সালের মধ্যে চীন তার কার্বন ঘনত্ব ৪০ থেকে ৫০ ভাগ কমাবে। চীনের প্রেসিডেন্ট কোপেনহেগেন যাবেন না। দেশটির প্রতিনিধিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়া বাও। অন্যদিকে প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কোপেনহেগেনে যাচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্র সম্প্রতি ঘোষণা করেছে, তারা কার্বন নির্গমনের হার শতকরা ১৭ ভাগ কমাবে। ভারতের কার্বন নির্গমন নিয়েও কথা উঠেছিল উন্নত বিশ্বে। বলা হয়েছিল ভারতকেও কার্বন নির্গমন কমাতে হবে। বিশ্বের কার্বন নির্গমনের শীর্ষে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, ভারতের অবস্থান পঞ্চম। আশার কথা শেষ পর্যন্ত ভারতও কার্বন নির্গমনের হার কমাতে রাজি হয়েছে।

কোপেনহেগেন সম্মেলনে একটি সিদ্ধান্ত হলেও এর বাস্তবায়ন নিয়ে একটা সমস্যা থাকবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। প্রথমত, কার্বন নির্গমনকে আমরা পরিমাপ করব কিভাবে? জাতিসংঘ দূষণ পরিমাপ করার জন্য একটি মানদণ্ড নির্ধারণ করেছে। দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা মোট আয়ের (জিডিপি) অনুপাতে কার্বন-ডাই অক্সাইড উঞ্ছিগরণের হারকে কার্বন ঘনত্ব বা গ্রিনহাউস গ্যাসের ঘনত্ব (প্রতি ১০ লাখ ডলার জিডিপিপিছু মেট্রিক টনে গ্রিনহাউস গ্যাস) হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। কিন্তু উন্নয়নশীল বিশ্ব মনে করে, এ হার মাথাপিছু জনসংখ্যা ধরে করা উচিত। এটা নিয়ে একটা মতপার্থক্য রয়েই গেছে। দ্বিতীয় সমস্যা হচ্ছে, অর্থ জোগাবে কে? উষ্ণতা রোধ করার জন্য যে বিপুল অর্থের প্রয়োজন হবে, সেই অর্থ পাওয়া যাবে কোন সূত্র থেকে- এটা একটা অন্যতম চিন্তার কারণ। অর্থের যে হিসাব করা হয়েছে, তার পরিমাণ প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার বছরে। যুক্তরাষ্ট্র এ ফান্ডে ১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার দেয়ার কথা ঘোষণা করেছে। কিন্তু বাকি অর্থের সংস্থান এখনও হয়নি। ইউরোপীয় ইউনিয়নও কোন ‘কমিটমেন্ট’ করেনি। তৃতীয়ত, গ্রিনহাউস গ্যাস কমানোর জন্য যে প্রযুক্তি দরকার, উন্নয়নশীল বিশ্বের কাছে সেই প্রযুক্তি নেই। এমনকি উন্নত বিশ্ব এই প্রযুক্তি যে উন্নয়নশীল বিশ্বে হস্তান্তর করবে, সে ব্যাপারেও নিশ্চিত করে কেউ কিছু বলতে পারছে না। অথচ কার্বন-ডাই অক্সাইড হ্রাসের জন্য এই প্রযুক্তির প্রয়োজন রয়েছে। চতুর্থত, বিকল্প জ্বালানি বা গ্রিন এনার্জির কথা কেউ কেউ বলছেন বটে। কিন্তু পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রক্রিয়াকে যদি গ্রিন এনার্জির আওতাভুক্ত করা হয়, তাহলে সেখানেও সমস্যা রয়েছে। শক্তিধর দেশগুলো কখনও চাইবে না উন্নয়নশীল বিশ্বের দেশগুলো পারমাণবিক শক্তির অধিকারী হোক। এক একটি পারমাণবিক চুল্লির দাম বিলিয়ন ডলারের ওপরে। এর সঙ্গে জড়িত রয়েছে ইউরিনিয়াম সরবরাহের প্রশ্নটি। ইরানের অভিজ্ঞতা সবার জানা। সুতরাং পারমাণবিক বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনাও ক্ষীণ। সৌরবিদ্যুতের একটি সম্ভাবনা রয়েছে। বায়ু-বিদ্যুতের একটি সম্ভাবনা থাকলেও এটি ব্যয়বহুল, যা উন্নয়নশীল দেশগুলোর পক্ষে মেটানো সম্ভব নয়।

বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সদ্য সমাপ্ত কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে বৈশ্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবেলায় একটি আলাদা ফান্ড গঠন করার আহ্বান জানিয়েছেন। এটি নিঃসন্দেহে একটি ভালো প্রস্তাব। কিন্তু সেই ফান্ড গঠিত হবে কিংবা ফান্ড পরিচালনায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত হবে- এ ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। সুতরাং আগামী ৭ ডিসেম্বর কোপেনহেগেনে বিশ্বের উষ্ণতা কমানোর জন্য কার্বন-ডাই অক্সাইড নিঃসরণের মাত্রা হ্রাস করার ব্যাপারে একটি সিদ্ধান্ত হলেও আমাদের জন্য আশাবাদী হওয়ার মতো কোন সংবাদ থাকবে বলে মনে হয় না। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় এবার আমাদের বাজেটে ৭০০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর আগের বছরের অব্যবহৃত ৩০০ কোটি টাকা নিয়ে মোট অর্থের পরিমাণ এক হাজার কোটি টাকা। গেল বছরের ১০ সেপ্টেম্বর লন্ডনে অনুষ্ঠিত ইউকে বাংলাদেশ ক্লাইমেট কনফারেন্সে বাংলাদেশকে আগামী ৫ বছরের জন্য ৭৫ মিলিয়ন পাউন্ড প্রদানের অঙ্গীকার করা হয়েছিল। গ্লোবাল এডাপটেশন ফান্ড নিয়ে একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। বাংলাদেশ তার সদস্য। ক্লিন ডেভেলপমেন্ট মেকানিজম সিস্টেমের শতকরা ২ ভাগ দিয়ে একটি ফান্ডও হবে। সব মিলিয়ে অর্থ পাওয়া গেছে বা যাবে। কিন্তু তারপরও যে প্রশ্নটি করা যায়, তা হচ্ছে, আইলার আঘাতের ছয় মাস পার হয়ে যাওয়ার পরও কেন বেড়িবাঁধের ফাটল বন্ধ করা হল না? এ প্রশ্নের জবাব কে দেবে? জনগণের প্রতিনিধি হয়ে এ অঞ্চল থেকে যারা নির্বাচিত হয়েছেন জাতীয় সংসদে, তারা কি সংসদে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন কখনও? আমার তা মনে হয় না। বিরোধী দলের পক্ষ থেকেও সংসদের কাছে এর জবাব চাওয়া হয়নি। পার্শ্বেমারি গ্রামের জনৈক নবীন সরদারের বক্তব্য যখন ওই জাতীয় দৈনিকে ছাপা হয় (আমার দেশ, ২৭ নভেম্বর), তখন এর জবাব আমার কাছেও জানা নেই। গাবুরা, শ্যামনগর কিংবা পার্শ্বেমারি গ্রামের মানুষরা জানে না কোপেনহেগেন সম্মেলনের কথা। জানে না মিটিগেশন বা গ্রিনহাউস গ্যাস কমানোর কথা। জানে না অভিযোজন বা জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে খাপখাইয়ে নেয়ার কথা। তারা বোঝে তাদের সরকার বাঁধ মেরামত করে দেবে, যাতে করে লবণপানি ঢুকবে না। তাদের জলাবদ্ধতা দূর হবে। এক ধরনের খাপখাইয়ে তো তারা নিয়েছেনই। জলাবদ্ধতা আর বেড়িবাঁধের ওপরই তাদের বসবাস। নৌকায় করে তারা এক স্থান থেকে অন্য স্থানে যায়। বেড়িবাঁধ পুনর্নির্মাণ হলেই তারা সুখী। ঈদ তাদের হয়নি। এনজিওগুলোর দেয়া সাহায্যও তাদের কাছে পৌঁছেনি। তবুও এ মানুষগুলো বেঁচে থাকতে চায়। আমাদের সেনাবাহিনী শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে বিদেশে যেতে ভালোবাসেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বিদেশে বাংলাদেশী শান্তিরক্ষীদের সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। এর সঙ্গে আর্থিক প্রশ্নটি জড়িত সে কারণেই আগ্রহ বাড়ছে। কিন্তু বিদেশী নাগরিকদের মুখে হাসি ফিরিয়ে আনার আগে গাবুরা, শ্যামনগরের মানুষদের মুখে হাসি ফিরিয়ে আনা খুবই জরুরি। অতীতে তো তারা এ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন।

তবুও কোপেনহেগেনে একটি চুক্তি হোক। ৭ থেকে ১৮ তারিখ সময়টা বেশ লম্বা। কিয়োটোতে দীর্ঘ ১১ দিন আলোচনার পর একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। তার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে ২০১২ সালে। এজন্যই কোপেনহেগেনের গুরুত্ব বিশ্ববাসীর কাছে অনেক বেশি। আলগোর, সাবেক মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট, যিনি কিয়োটা প্রটোকলে স্বাক্ষর করেছিলেন, তিনি একটি বই লিখেছেন, -------যা কিনা বেস্ট সেলারের মর্যাদা পেয়েছে। পরিবেশ দূষণের ফলে মানবজাতি কী ভয়ংকর বিপদের মধ্যে পড়েছে, তা তিনি ডকুমেন্ট আকারে তুলে ধরেছেন ওই গ্রন্থে। তিনি একটি ডকুমেন্টারিও তৈরি করেন, ------, যা ২০০৬ সালে সেরা ডকুমেন্টারি হিসেবে অস্কার পুরস্কার পেয়েছে। আলগোর তার গ্রন্থে লিখেছেন, পরিবেশ সংকট ও ইরাক অভিযানের (২০০৩) মধ্যে বড় মিল হচ্ছে উভয় ক্ষেত্রেই ভালো সাক্ষ্য-প্রমাণ উপেক্ষিত হয়েছে। যে কোন সাধারণ মানুষই ওইসব সাক্ষ্য-প্রমাণ আগে জানলে বুঝতেন যে, ইরাক অভিযান হবে একটি বিরাট মারাত্মক ভুল। ঠিক তেমনি যে কোন সাধারণ মানুষই বুঝতেন কার্বন-ডাই অক্সাইড কমানোর ব্যর্থতা হবে আরও একটি ভুল। সেই ভুলটি হোক- আমরা তা চাই না। প্রধানমন্ত্রী কোপেনহেগেনে যাবেন। আমরা শুনব ‘সাইডলাইনে’ তার সঙ্গে ওই সম্মেলনে অংশ নেয়া ১৯২ জন সরকার তথা রাষ্ট্র প্রধানের কথা হয়েছে। আমরা শহরবাসী ওই সংবাদে খুশি হতে পারি। কিন্তু গাবুরার মানুষ এসব বুঝবেন না। তাদের কাজ নেই। সুপেয় পানি নেই। সাহায্যের আশায় তারা বসে থাকেন। যেদিন সাহায্য আসে সেদিন খাওয়া হয়, যেদিন আসে না সেদিন উপোস থাকতে হয় তাদের। উপোস এখন তাদের নিত্যসঙ্গী। বেড়িবাঁধের ফাটলে মাটি ফেলে লবণপানি ঢোকার পথ বন্ধ করাটা জরুরি। এ কাজটা তো জরুরি ভিত্তিতেই করা উচিত! নয় কি?
ড· তারেক শামসুর রেহমানঃ নিরাপত্তা বিশ্লেষক, অধ্যাপক, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (সুত্র, যুগান্তর, ০৫/১২/২০০৯)

0 comments:

Post a Comment