চলতি বছর এইচএসসির ফলাফল প্রকাশিত হওয়ার পর একটা বড় ধরনের উৎকণ্ঠা শিক্ষার্থীদের মাঝে কাজ করছে। তাদের অনেকেই হয়তো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পড়াশোনার কোন সুযোগ পায় না। যদিও শিক্ষামন্ত্রী গত ৩০ জুলাই সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিদের সঙ্গে মিটিং করে জানিয়েছেন, এবার আসনসংখ্যা বাড়ানো হবে। শুধু আসনসংখ্যা বাড়ালেই কি সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে? না, এটা সমাধানের কোন পথ নয়। দেশে ভর্তি ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা বাড়ছে। এটা বিবেচনায় নিয়ে একটি সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনার আওতায় এ সমস্যার সমাধান করতে হবে।
এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০ হাজার ১৩৬ জন শিক্ষার্থী। আর ২৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাতীয় ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় বাদে) প্রথম শর্ত সম্মান শ্রেণীতে আসন সংখ্যা ১৭ হাজারের কিছু বেশি। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আসনসংখ্যা ১ লাখ ৬৫ হাজার। দেশের প্রায় ১৭৫টি কলেজে এই আসনসংখ্যা নির্ধারিত।
সাধারণত শিক্ষার্থীরা কলেজগুলোতে ভর্তি হতে চায় না। তাদের টার্গেট থাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় ও সেই সঙ্গে মেডিকেল কলেজগুলোর দিকে। কেউ কেউ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয় বটে, কিন্তু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার মান নিয়ে নানা প্রশ্ন থাকায় এখনও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেই ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করে শিক্ষার্থীরা। আর যাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির কোন সুযোগ থাকে না, তারাই ভর্তি হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে, শুধু সার্টিফিকেট পাওয়ার আশায়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট বাণিজ্যের খবর গত বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচিত হয়ে আসছে। কোন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট বাণিজ্যের খবর সংবাদপত্রে প্রকাশিত হলে মাননীয় রাষ্ট্রপতি গত ২৭ জুলাই ওই বিশ্ববিদ্যালয়টির সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বিরত থাকেন। শুধু তাই নয়, চ্যান্সেলরের ক্ষমতাবলে তিনি ইতিমধ্যে এই সার্টিফিকেট বাণিজ্যের বিষয়টি তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা অপেক্ষায় থাকলাম ওই তদন্ত রিপোর্টের জন্য। তবে সর্ষের মধ্যে যদি ভূত থাকে, তাহলে ওই ভূত তাড়ানো যাবে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভেতরেই দুর্নীতিপরায়ণ লোকজন রয়েছেন। তাদের কারণেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট বাণিজ্য বেড়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সার্টিফিকেট বাণিজ্য আজ এদেশের সুধী সমাজকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষার ব্যাপারে আস্থাহীন করে ফেলেছে। অথচ এ দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উচ্চশিক্ষার অন্যতম একটি ক্ষেত্র হতে পারত। পারত বিকল্প হতে। কিন্তু দুর্ভাগ্য এ জাতির। শিক্ষা নিয়ে যখন বাণিজ্য হয় তখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোন ভূমিকা আমাদের চোখে পড়ে না। ইউজিসির ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ। যে কারণে বেশ ক’টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোন কিছুর তোয়াক্কা না করেই এই সার্টিফিকেট বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। এখন জিপিএ-৫ পাওয়া ছাত্রছাত্রীরাই যদি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সুযোগ না পায়, তাহলে জিপিএ-৫ এর নিচে যারা পেয়েছে তারা যাবে কোথায়? বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে যারা আছেন তারা কী বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন? তাহলে সমাধানটা কোন পথে? এ ব্যাপারে আমার কিছু সুপারিশ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা ভেবে দেখতে পারেন।
এক· অবিলম্বে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ‘ডবল শিফট’ চালু করা হোক। এটা সম্ভব। কেননা অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে দুপুরের পর কোন ক্লাস থাকে না। ক্লাস রুমগুলো খালি থাকে। এ সময়টা ব্যবহার করা যায়। তবে ল্যাবনির্ভর বিষয়গুলোতে কিছুটা সমস্যা হতে পারে। এটাও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে সলাপরামর্শ করে সমাধান করতে পারেন। প্রয়োজন কেবল উদ্যোগের। আর এ উদ্যোগটি নিতে হবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে। তবে এটাও বিবেচনায় নিতে হবে যে, শিক্ষকদের যদি অতিরিক্ত সম্মানীর ব্যবস্থা করা না হয় তাহলে তারা ক্লাস নিতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলবেন। প্রয়োজনে ভিন্ন ব্যবস্থাপনায় এ দ্বিতীয় শিফট পরিচালিত হতে পারে। দ্বিতীয় শিফটের জন্য প্রয়োজনে আলাদা শিক্ষকও নিয়োগ দেয়া যেতে পারে।
দুই· সদ্য প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুব কম সংখ্যক বিভাগ নিয়ে চালু হয়েছে। এখানে প্রয়োজনে আরও বেশ কিছু চাহিদাসম্পন্ন বিভাগ চালু করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। পুরনো কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে (যেমন জাহাঙ্গীরনগর) নতুন কিছু বিষয় (যেমন আইন, ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি) চালু করে ছাত্র ভর্তি করা যেতে পারে।
তিন· কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় (যেমন জাহাঙ্গীরনগর) এর চরিত্র পরিবর্তন করে (আইন করে) সেখানে আরও ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা যেতে পারে। বর্তমান আইনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় একটি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়। এর অর্থ যে ছাত্রটি এখানে প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়, কর্তৃপক্ষ তাকে থাকার একটি সুযোগ করে দেন। এখন এটি যদি অনাবাসিক করা হয়, তাহলে ব্যক্তি উদ্যোগে অনেক ছাত্রাবাস গড়ে উঠবে এবং ছাত্ররা সেখানে থেকেই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে।
চার· দেশে ইতিমধ্যে বেশ কিছু প্রযুক্তিবিদ্যার বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। বিআইটিগুলোকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করা হয়েছে। সাধারণত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রযুক্তিবিদ্যা সম্পর্কিত বিষয়াদি পড়ানো হয়। এক্ষেত্রে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেলকে সামনে রেখে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কলা ও সামাজিক অনুষদের কিছু বিষয় চালু করা যেতে পারে। এর ফলে কিছু ছাত্রছাত্রী উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবে।
পাঁচ· জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো ভেঙে ৬টি বিভাগীয় শহরে ৬টি পুরনো কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করে সেখানে বেশ কিছু শিক্ষার্থীর জন্য উচ্চশিক্ষার একটি সম্ভাবনা আমরা সৃষ্টি করতে পারি। ঐতিহ্যমণ্ডিত ওইসব কলেজ দীর্ঘদিনের। সেখানকার অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা যথেষ্ট। সেই সঙ্গে পিএইচডি ডিগ্রিধারী বেশ কিছু শিক্ষকও রয়েছেন। আইন করে যদি বিশ্ববিদ্যালয় করা যায় তাহলে সেখানে নতুন নতুন শিক্ষক নিয়োগের সুযোগও সৃষ্টি হবে। একই সঙ্গে ল্যাব সুবিধা থাকায়, সেখানে সরকারের ল্যাব প্রতিষ্ঠায় বিপুল অর্থ ব্যয় করতে হবে না। প্রয়োজনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেল এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ব্যাপারে অনুসরণ করা যেতে পারে। ইতিমধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছয়টি বিভাগে ছয়টি রিজিওনাল সেন্টার করার একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছে। এতে করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যার সমাধান করা যাবে না। নতুন ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার মধ্য দিয়েই সমস্যার সমাধান সম্ভব। আর বর্তমান প্রেক্ষাপটে নতুন ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে সেখানে বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী পড়াশোনার সুযোগ পাবে। ছয়· গাজীপুরস্থ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে অবকাঠামো সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। সেখানে একটি বহুতল ভবন রয়েছে, যা অব্যবহৃত। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ক্যাম্পাসে অনার্স পর্যায়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা যায়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনও তা অনুমোদন করে। প্রয়োজনে মঞ্জুরি কমিশন বিষয়টি খতিয়ে দেখে সরকারের কাছে সুপারিশ করতে পারে। এর ফলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের (যাদের ছাত্র পড়ানোর কোন সুযোগ নেই) জন্য একটি সম্ভাবনার সৃষ্টি হবে। তারা শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান নেতৃত্ব যে বিষয়টি বুঝছেন না তা হচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বাহ্যত পরিণত হয়েছে সার্টিফিকেট বিক্রির একটি প্রতিষ্ঠানে। আমাদের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে অতীতে গ্রামগঞ্জে কলেজ জাতীয়করণ করা হয়েছে। সেখানে শিক্ষক নেই। কিন্তু অনার্স কোর্স চালু করা হয়েছে। ছাত্ররা গাইড বই পড়ে আর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তাদের অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি দেয়। শত শত ছাত্রছাত্রী বছরে পর বছর ক্লাস না করেই সার্টিফিকেট নিয়ে যাচ্ছে। দেখার কেউ নেই। বর্তমান সরকার তাই যখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো ভেঙে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল, আমি সেই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিলাম। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের এটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে দেয়নি। ভাবতে অবাক লাগে, বর্তমান উপাচার্য মহোদয়ও ওই স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর ‘হাতের পুতুল’ হয়ে গেলেন। বিপুল সংখ্যক ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান কাঠামো ভেঙে নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে নতুন করে এটি পরিচালনা করা সম্ভব।
সাত· বরিশালে একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত হয়ে আছে অনেক আগে থেকেই। এটি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নামে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু তিন বছর হয়ে গেল, বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হল না। সরকারকে উদারতার পরিচয় দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হলে বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবে। নামের ব্যাপারটি যেন প্রাধান্য না পায়।
আট· পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি করে ক্যাম্পাস রয়েছে। প্রয়োজনে সরকার দ্বিতীয় একটি ক্যাম্পাস চালু করে সেখানে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে পারে। যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় একটি ক্যাম্পাস গাজীপুর অথবা ঢাকা বিভাগের যেকোন এক জায়গায় চালু করা যেতে পারে। সরকার এক্ষেত্রে খাস জমি দেবে, অবকাঠামো নির্মাণে সহায়তা দেবে আর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একাডেমিক বিষয়গুলো দেখবে। ঠিক তেমনি পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস বরিশাল শহরে কিংবা শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস হবিগঞ্জ বা মৌলভীবাজারে হতে পারে। এতে করে আরও কিছু ছাত্রের পড়াশোনার সুযোগ আমরা তৈরি করে দিতে পারি। পাকিস্তানে এ ধরনের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস আমি দেখেছি।
উচ্চশিক্ষা প্রতিটি নাগরিকের অধিকার। এটা মানবাধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাদের এ অধিকারের প্রতি সম্মান দেয়া প্রতিটি রাষ্ট্রের দায়িত্ব। দেশে জনসংখ্যা যেমনি বাড়ছে তেমনি বাড়ছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করা ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা। এখন জিপিএ-৫ পাওয়া একটি ছাত্র যদি তার উচ্চশিক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকে তাহলে এর চেয়ে আর দুঃখজনক কিছু থাকতে পারে না। এর বাইরে যারা জিপিএ-৫ পায়নি, তারাও কী তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাবে না? নাকি তাদের আমরা বাধ্য করব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সার্টিফিকেট বাণিজ্যে’র ফাঁদে পা দিতে? পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারলে তারা ওই দিকেই পা বাড়াবে, আমরা বাধা দিতে পারব না। আমি জানি না যারা শিক্ষার সঙ্গে জড়িত ও উচ্চশিক্ষার ব্যাপারে নীতি প্রণয়ন করেন, তারা বিষয়টি নিয়ে কী ভাবছেন? বিষয়টি জনগুরুত্বপূর্ণ। ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করার আগেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। উপরে উল্লিখিত পরামর্শগুলো নিয়ে আলোচনা হলে আমি খুশি হব। মঞ্জুরি কমিশন কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় চাইলে এ ব্যাপারে আরও বিস্তারিত আলোচনা করা যেতে পারে।
লেখকঃ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক সদস্য
এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ২০ হাজার ১৩৬ জন শিক্ষার্থী। আর ২৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাতীয় ও উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় বাদে) প্রথম শর্ত সম্মান শ্রেণীতে আসন সংখ্যা ১৭ হাজারের কিছু বেশি। তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আসনসংখ্যা ১ লাখ ৬৫ হাজার। দেশের প্রায় ১৭৫টি কলেজে এই আসনসংখ্যা নির্ধারিত।
সাধারণত শিক্ষার্থীরা কলেজগুলোতে ভর্তি হতে চায় না। তাদের টার্গেট থাকে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, প্রযুক্তি ও বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয় ও সেই সঙ্গে মেডিকেল কলেজগুলোর দিকে। কেউ কেউ বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয় বটে, কিন্তু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার মান নিয়ে নানা প্রশ্ন থাকায় এখনও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেই ভর্তি হওয়ার চেষ্টা করে শিক্ষার্থীরা। আর যাদের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির কোন সুযোগ থাকে না, তারাই ভর্তি হয় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে, শুধু সার্টিফিকেট পাওয়ার আশায়। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট বাণিজ্যের খবর গত বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচিত হয়ে আসছে। কোন একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট বাণিজ্যের খবর সংবাদপত্রে প্রকাশিত হলে মাননীয় রাষ্ট্রপতি গত ২৭ জুলাই ওই বিশ্ববিদ্যালয়টির সমাবর্তন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বিরত থাকেন। শুধু তাই নয়, চ্যান্সেলরের ক্ষমতাবলে তিনি ইতিমধ্যে এই সার্টিফিকেট বাণিজ্যের বিষয়টি তদন্ত করে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন। আমরা অপেক্ষায় থাকলাম ওই তদন্ত রিপোর্টের জন্য। তবে সর্ষের মধ্যে যদি ভূত থাকে, তাহলে ওই ভূত তাড়ানো যাবে না। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ভেতরেই দুর্নীতিপরায়ণ লোকজন রয়েছেন। তাদের কারণেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্টিফিকেট বাণিজ্য বেড়েছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের এই সার্টিফিকেট বাণিজ্য আজ এদেশের সুধী সমাজকে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উচ্চশিক্ষার ব্যাপারে আস্থাহীন করে ফেলেছে। অথচ এ দেশে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো উচ্চশিক্ষার অন্যতম একটি ক্ষেত্র হতে পারত। পারত বিকল্প হতে। কিন্তু দুর্ভাগ্য এ জাতির। শিক্ষা নিয়ে যখন বাণিজ্য হয় তখন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোন ভূমিকা আমাদের চোখে পড়ে না। ইউজিসির ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ। যে কারণে বেশ ক’টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কোন কিছুর তোয়াক্কা না করেই এই সার্টিফিকেট বাণিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে। এখন জিপিএ-৫ পাওয়া ছাত্রছাত্রীরাই যদি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সুযোগ না পায়, তাহলে জিপিএ-৫ এর নিচে যারা পেয়েছে তারা যাবে কোথায়? বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনে যারা আছেন তারা কী বিষয়টি নিয়ে ভাবছেন? তাহলে সমাধানটা কোন পথে? এ ব্যাপারে আমার কিছু সুপারিশ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তা ভেবে দেখতে পারেন।
এক· অবিলম্বে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ‘ডবল শিফট’ চালু করা হোক। এটা সম্ভব। কেননা অধিকাংশ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে দুপুরের পর কোন ক্লাস থাকে না। ক্লাস রুমগুলো খালি থাকে। এ সময়টা ব্যবহার করা যায়। তবে ল্যাবনির্ভর বিষয়গুলোতে কিছুটা সমস্যা হতে পারে। এটাও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষকদের সঙ্গে সলাপরামর্শ করে সমাধান করতে পারেন। প্রয়োজন কেবল উদ্যোগের। আর এ উদ্যোগটি নিতে হবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে। তবে এটাও বিবেচনায় নিতে হবে যে, শিক্ষকদের যদি অতিরিক্ত সম্মানীর ব্যবস্থা করা না হয় তাহলে তারা ক্লাস নিতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলবেন। প্রয়োজনে ভিন্ন ব্যবস্থাপনায় এ দ্বিতীয় শিফট পরিচালিত হতে পারে। দ্বিতীয় শিফটের জন্য প্রয়োজনে আলাদা শিক্ষকও নিয়োগ দেয়া যেতে পারে।
দুই· সদ্য প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো খুব কম সংখ্যক বিভাগ নিয়ে চালু হয়েছে। এখানে প্রয়োজনে আরও বেশ কিছু চাহিদাসম্পন্ন বিভাগ চালু করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে দ্রুত শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। পুরনো কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে (যেমন জাহাঙ্গীরনগর) নতুন কিছু বিষয় (যেমন আইন, ম্যানেজমেন্ট ইত্যাদি) চালু করে ছাত্র ভর্তি করা যেতে পারে।
তিন· কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় (যেমন জাহাঙ্গীরনগর) এর চরিত্র পরিবর্তন করে (আইন করে) সেখানে আরও ছাত্রছাত্রী ভর্তি করা যেতে পারে। বর্তমান আইনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় একটি আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়। এর অর্থ যে ছাত্রটি এখানে প্রথম বর্ষে ভর্তি হয়, কর্তৃপক্ষ তাকে থাকার একটি সুযোগ করে দেন। এখন এটি যদি অনাবাসিক করা হয়, তাহলে ব্যক্তি উদ্যোগে অনেক ছাত্রাবাস গড়ে উঠবে এবং ছাত্ররা সেখানে থেকেই পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারবে।
চার· দেশে ইতিমধ্যে বেশ কিছু প্রযুক্তিবিদ্যার বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে উঠেছে। বিআইটিগুলোকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরিত করা হয়েছে। সাধারণত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রযুক্তিবিদ্যা সম্পর্কিত বিষয়াদি পড়ানো হয়। এক্ষেত্রে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেলকে সামনে রেখে প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে কলা ও সামাজিক অনুষদের কিছু বিষয় চালু করা যেতে পারে। এর ফলে কিছু ছাত্রছাত্রী উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবে।
পাঁচ· জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো ভেঙে ৬টি বিভাগীয় শহরে ৬টি পুরনো কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নীত করে সেখানে বেশ কিছু শিক্ষার্থীর জন্য উচ্চশিক্ষার একটি সম্ভাবনা আমরা সৃষ্টি করতে পারি। ঐতিহ্যমণ্ডিত ওইসব কলেজ দীর্ঘদিনের। সেখানকার অবকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধা যথেষ্ট। সেই সঙ্গে পিএইচডি ডিগ্রিধারী বেশ কিছু শিক্ষকও রয়েছেন। আইন করে যদি বিশ্ববিদ্যালয় করা যায় তাহলে সেখানে নতুন নতুন শিক্ষক নিয়োগের সুযোগও সৃষ্টি হবে। একই সঙ্গে ল্যাব সুবিধা থাকায়, সেখানে সরকারের ল্যাব প্রতিষ্ঠায় বিপুল অর্থ ব্যয় করতে হবে না। প্রয়োজনে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মডেল এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ব্যাপারে অনুসরণ করা যেতে পারে। ইতিমধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ছয়টি বিভাগে ছয়টি রিজিওনাল সেন্টার করার একটি সিদ্ধান্ত দিয়েছে। এতে করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যার সমাধান করা যাবে না। নতুন ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার মধ্য দিয়েই সমস্যার সমাধান সম্ভব। আর বর্তমান প্রেক্ষাপটে নতুন ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হলে সেখানে বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী পড়াশোনার সুযোগ পাবে। ছয়· গাজীপুরস্থ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ক্যাম্পাসে অবকাঠামো সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। সেখানে একটি বহুতল ভবন রয়েছে, যা অব্যবহৃত। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এই ক্যাম্পাসে অনার্স পর্যায়ে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করা যায়। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনও তা অনুমোদন করে। প্রয়োজনে মঞ্জুরি কমিশন বিষয়টি খতিয়ে দেখে সরকারের কাছে সুপারিশ করতে পারে। এর ফলে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের (যাদের ছাত্র পড়ানোর কোন সুযোগ নেই) জন্য একটি সম্ভাবনার সৃষ্টি হবে। তারা শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিতে পারছেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান নেতৃত্ব যে বিষয়টি বুঝছেন না তা হচ্ছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বাহ্যত পরিণত হয়েছে সার্টিফিকেট বিক্রির একটি প্রতিষ্ঠানে। আমাদের ভুল সিদ্ধান্তের কারণে অতীতে গ্রামগঞ্জে কলেজ জাতীয়করণ করা হয়েছে। সেখানে শিক্ষক নেই। কিন্তু অনার্স কোর্স চালু করা হয়েছে। ছাত্ররা গাইড বই পড়ে আর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় তাদের অনার্স ও মাস্টার্স ডিগ্রি দেয়। শত শত ছাত্রছাত্রী বছরে পর বছর ক্লাস না করেই সার্টিফিকেট নিয়ে যাচ্ছে। দেখার কেউ নেই। বর্তমান সরকার তাই যখন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কাঠামো ভেঙে দেয়ার উদ্যোগ নিয়েছিল, আমি সেই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছিলাম। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের এটি স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে দেয়নি। ভাবতে অবাক লাগে, বর্তমান উপাচার্য মহোদয়ও ওই স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর ‘হাতের পুতুল’ হয়ে গেলেন। বিপুল সংখ্যক ছাত্রছাত্রীর ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান কাঠামো ভেঙে নতুন নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে নতুন করে এটি পরিচালনা করা সম্ভব।
সাত· বরিশালে একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত হয়ে আছে অনেক আগে থেকেই। এটি শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নামে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা। কিন্তু তিন বছর হয়ে গেল, বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করা হল না। সরকারকে উদারতার পরিচয় দিতে হবে। বিশ্ববিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হলে বেশ কিছু ছাত্রছাত্রী উচ্চশিক্ষার সুযোগ পাবে। নামের ব্যাপারটি যেন প্রাধান্য না পায়।
আট· পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি করে ক্যাম্পাস রয়েছে। প্রয়োজনে সরকার দ্বিতীয় একটি ক্যাম্পাস চালু করে সেখানে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করতে পারে। যেমন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় একটি ক্যাম্পাস গাজীপুর অথবা ঢাকা বিভাগের যেকোন এক জায়গায় চালু করা যেতে পারে। সরকার এক্ষেত্রে খাস জমি দেবে, অবকাঠামো নির্মাণে সহায়তা দেবে আর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একাডেমিক বিষয়গুলো দেখবে। ঠিক তেমনি পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস বরিশাল শহরে কিংবা শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস হবিগঞ্জ বা মৌলভীবাজারে হতে পারে। এতে করে আরও কিছু ছাত্রের পড়াশোনার সুযোগ আমরা তৈরি করে দিতে পারি। পাকিস্তানে এ ধরনের দ্বিতীয় ক্যাম্পাস আমি দেখেছি।
উচ্চশিক্ষা প্রতিটি নাগরিকের অধিকার। এটা মানবাধিকারের সঙ্গে সম্পর্কিত। তাদের এ অধিকারের প্রতি সম্মান দেয়া প্রতিটি রাষ্ট্রের দায়িত্ব। দেশে জনসংখ্যা যেমনি বাড়ছে তেমনি বাড়ছে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাস করা ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা। এখন জিপিএ-৫ পাওয়া একটি ছাত্র যদি তার উচ্চশিক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকে তাহলে এর চেয়ে আর দুঃখজনক কিছু থাকতে পারে না। এর বাইরে যারা জিপিএ-৫ পায়নি, তারাও কী তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাবে না? নাকি তাদের আমরা বাধ্য করব বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘সার্টিফিকেট বাণিজ্যে’র ফাঁদে পা দিতে? পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারলে তারা ওই দিকেই পা বাড়াবে, আমরা বাধা দিতে পারব না। আমি জানি না যারা শিক্ষার সঙ্গে জড়িত ও উচ্চশিক্ষার ব্যাপারে নীতি প্রণয়ন করেন, তারা বিষয়টি নিয়ে কী ভাবছেন? বিষয়টি জনগুরুত্বপূর্ণ। ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করার আগেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। উপরে উল্লিখিত পরামর্শগুলো নিয়ে আলোচনা হলে আমি খুশি হব। মঞ্জুরি কমিশন কিংবা শিক্ষা মন্ত্রণালয় চাইলে এ ব্যাপারে আরও বিস্তারিত আলোচনা করা যেতে পারে।
লেখকঃ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সাবেক সদস্য
0 comments:
Post a Comment